আব্দুর রাজ্জাক
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গত বছরের জুলাই মাস অগ্নিগর্ভ ছিল পুরো দেশ। শেষের কয়েকদিন খবরের শিরোনামই হতো নিহতের সংখ্যা নিয়ে। হতাহতদের মধ্যে অনেক শিশুও রয়েছে, যাদের পৃথিবী চেনার আগেই দুনিয়া থেকে চিরতরে বিদায় করে দিয়েছে পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। এসব ঘটনা অনেকের হৃদয়ে নাড়া দেয়, অন্যদিকে লাখ লাখ মানুষকে করেছিল বিক্ষুব্ধ। প্রতিবাদের আগুনে জ্বলে তারা ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন রাজপথে। তাদের অন্যতম ছিলেন নূর হোসেন।
তখন বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএসএস ডিগ্রি প্রোগ্রামে পড়াশোনা করছিলেন নূর। তিনি ও তার কয়েক বন্ধু মিলে রাজধানীর মিরপুরে একটি মেসে থাকতেন। প্রতিনিয়ত সামাজিকমাধ্যম ও গণমাধ্যমে মৃত্যুর খবর শুনে নিজেকে ঘরে আটকে রাখতে পারেননি এ তরুণ। সহপাঠী ও বন্ধুদের নিয়ে শামিল হন আন্দোলনে।
২০২৪ সালের ১৮ জুলাই মিরপুর ২ নম্বর এলাকায় মিছিল করার সময় তাদের ওপর গুলি চালায় পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। একটি গুলি নূরের ডান চোখে লাগে। মুহূর্তেই ঘোলা হয়ে যায় তার পৃথিবী। সহযোদ্ধারা তাকে উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী হাসপাতালে ভর্তি করে। ধারদেনা করে গোপনে তার চিকিৎসা চালান সহপাঠীরা। এভাবেই কেটে যায় অন্তত ২০ দিন।
নূর টিউশনি করে নিজের পড়ালেখার খরচ জোগানোর পাশাপাশি সহায়তা করতেন মাদারীপুরের শিবচরের গোওয়ালকান্দা গ্রামে অবস্থান করা পরিবারকে। সেখানে তার অসুস্থ বাবা, মা ও বোনেরা থাকেন। সংগ্রামী এই তরুণের আহত হওয়ার খবর বাড়িতে জানালে পরিবারের সদস্যরা আরো ভেঙে পড়বেনÑ এই ভেবে কয়েক মাস তথ্যটি গোপন রাখা হয়। বন্ধু ও সহপাঠীরা বিভিন্নজনের কাছ থেকে চাঁদা তুলে নূরের চিকিৎসা করিয়েছেন। কিন্তু তাতে কোনো ফল হয়নি। নিভে গেছে ডান চোখের আলো, অপরটিও নিভু নিভু।
জুলাইযোদ্ধা নূর বলেন, গুলিবিদ্ধ হওয়ার বিষয়টি তাৎক্ষণিক টের পাননি তিনি। চালিয়ে যাচ্ছিলেন আন্দোলন। যখন রক্ত বেয়ে পড়ে জামা ভিজে যায় এবং চোখে ব্যথা শুরু হয় তখন তিনি বিষয়টি উপলব্ধি করেন। এরপরও মাঠ ছাড়তে না চাইলে বন্ধুরা জোর করে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান।
তিনি বলেন, ‘আমি আহত হওয়ার পর বেশ কিছুদিন গোপনে এ হাসপাতাল থেকে ও হাসপাতালে ঘুরে ঘুরে চিকিৎসা নিয়েছি। কিন্তু অর্থাভাবে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আওয়ামী গুণ্ডাদের কারণে সুচিকিৎসা পাইনি। শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর সেনাবাহিনীর উদ্যোগে যখন সিএমএইচে ভর্তি করা হয়, তখন কিছুদিন ভালো সেবা পাই। কিন্তু তার আগেই নষ্ট হয়ে যায় চোখটি। চিকিৎসকরা বলেছিলেন যে, শুরু থেকেই সুচিকিৎসা পেলে হয়তো চোখটি বাঁচানো যেত। দ্বিতীয় চোখটি নিয়ে সহসাই কোনো ঝুঁকি না থাকলেও অন্য সমস্যায় ভুগতে হচ্ছে।’
নূর জানান, মাঝে মধ্যেই দ্বিতীয় চোখটি ঝাঁপসা হয়ে যায়। আবার প্রায়ই প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করেন, তখন আর কোনো কাজ করতে পারেন না। মাঝে একটি কোম্পানিতে কাজ পেলেও তা চালিয়ে যেতে পারেননি। আবারো একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ নিয়েছেন, কিন্তু তা কতদিন অব্যাহত রাখতে পারবেনÑ তা নিয়ে সন্দিহান।
নূরের বাবা দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমরা চিন্তা করে আরো ভেঙে পড়ব ভেবে চোখ হারানোর কথা শুরুতে বাড়িতে জানায়নি নূর। পরে এ খবর শোনার পর আমরা হাউ মাউ করে কেঁদেছি। আমাদের সংসারই চলে না, তার চিকিৎসা করব কীভাবে? উন্নত চিকিৎসার অভাবে অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে নূরের পৃথিবী।’
আহত নূরের মা হালিমা খাতুন বলেন, ‘নূর পরিবারে সবার ছোট হওয়ায় সবচেয়ে আদরেরও। কিন্তু অর্থাভাবে অল্প বয়স থেকে কর্ম করতে হচ্ছে তাকে। ছেলেকে নিয়ে আমাদের অনেক স্বপ্ন ছিল। তেমন কোনো সহায়তা না মেলায় পুলিশের গুলিতে সেই স্বপ্ন ধূলিসাৎ হতে বসেছে। উন্নত চিকিৎসাসহ তার নূরের পুনর্বাসন প্রয়োজন। অন্যথায় পরিবারের হাল ধরার আগেই নিভে যেতে পারে আশার আলো।’
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে গত বছরের জুলাই মাস অগ্নিগর্ভ ছিল পুরো দেশ। শেষের কয়েকদিন খবরের শিরোনামই হতো নিহতের সংখ্যা নিয়ে। হতাহতদের মধ্যে অনেক শিশুও রয়েছে, যাদের পৃথিবী চেনার আগেই দুনিয়া থেকে চিরতরে বিদায় করে দিয়েছে পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। এসব ঘটনা অনেকের হৃদয়ে নাড়া দেয়, অন্যদিকে লাখ লাখ মানুষকে করেছিল বিক্ষুব্ধ। প্রতিবাদের আগুনে জ্বলে তারা ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন রাজপথে। তাদের অন্যতম ছিলেন নূর হোসেন।
তখন বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের বিএসএস ডিগ্রি প্রোগ্রামে পড়াশোনা করছিলেন নূর। তিনি ও তার কয়েক বন্ধু মিলে রাজধানীর মিরপুরে একটি মেসে থাকতেন। প্রতিনিয়ত সামাজিকমাধ্যম ও গণমাধ্যমে মৃত্যুর খবর শুনে নিজেকে ঘরে আটকে রাখতে পারেননি এ তরুণ। সহপাঠী ও বন্ধুদের নিয়ে শামিল হন আন্দোলনে।
২০২৪ সালের ১৮ জুলাই মিরপুর ২ নম্বর এলাকায় মিছিল করার সময় তাদের ওপর গুলি চালায় পুলিশ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। একটি গুলি নূরের ডান চোখে লাগে। মুহূর্তেই ঘোলা হয়ে যায় তার পৃথিবী। সহযোদ্ধারা তাকে উদ্ধার করে পার্শ্ববর্তী হাসপাতালে ভর্তি করে। ধারদেনা করে গোপনে তার চিকিৎসা চালান সহপাঠীরা। এভাবেই কেটে যায় অন্তত ২০ দিন।
নূর টিউশনি করে নিজের পড়ালেখার খরচ জোগানোর পাশাপাশি সহায়তা করতেন মাদারীপুরের শিবচরের গোওয়ালকান্দা গ্রামে অবস্থান করা পরিবারকে। সেখানে তার অসুস্থ বাবা, মা ও বোনেরা থাকেন। সংগ্রামী এই তরুণের আহত হওয়ার খবর বাড়িতে জানালে পরিবারের সদস্যরা আরো ভেঙে পড়বেনÑ এই ভেবে কয়েক মাস তথ্যটি গোপন রাখা হয়। বন্ধু ও সহপাঠীরা বিভিন্নজনের কাছ থেকে চাঁদা তুলে নূরের চিকিৎসা করিয়েছেন। কিন্তু তাতে কোনো ফল হয়নি। নিভে গেছে ডান চোখের আলো, অপরটিও নিভু নিভু।
জুলাইযোদ্ধা নূর বলেন, গুলিবিদ্ধ হওয়ার বিষয়টি তাৎক্ষণিক টের পাননি তিনি। চালিয়ে যাচ্ছিলেন আন্দোলন। যখন রক্ত বেয়ে পড়ে জামা ভিজে যায় এবং চোখে ব্যথা শুরু হয় তখন তিনি বিষয়টি উপলব্ধি করেন। এরপরও মাঠ ছাড়তে না চাইলে বন্ধুরা জোর করে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যান।
তিনি বলেন, ‘আমি আহত হওয়ার পর বেশ কিছুদিন গোপনে এ হাসপাতাল থেকে ও হাসপাতালে ঘুরে ঘুরে চিকিৎসা নিয়েছি। কিন্তু অর্থাভাবে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও আওয়ামী গুণ্ডাদের কারণে সুচিকিৎসা পাইনি। শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যাওয়ার পর সেনাবাহিনীর উদ্যোগে যখন সিএমএইচে ভর্তি করা হয়, তখন কিছুদিন ভালো সেবা পাই। কিন্তু তার আগেই নষ্ট হয়ে যায় চোখটি। চিকিৎসকরা বলেছিলেন যে, শুরু থেকেই সুচিকিৎসা পেলে হয়তো চোখটি বাঁচানো যেত। দ্বিতীয় চোখটি নিয়ে সহসাই কোনো ঝুঁকি না থাকলেও অন্য সমস্যায় ভুগতে হচ্ছে।’
নূর জানান, মাঝে মধ্যেই দ্বিতীয় চোখটি ঝাঁপসা হয়ে যায়। আবার প্রায়ই প্রচণ্ড ব্যথা অনুভব করেন, তখন আর কোনো কাজ করতে পারেন না। মাঝে একটি কোম্পানিতে কাজ পেলেও তা চালিয়ে যেতে পারেননি। আবারো একটি প্রতিষ্ঠানে কাজ নিয়েছেন, কিন্তু তা কতদিন অব্যাহত রাখতে পারবেনÑ তা নিয়ে সন্দিহান।
নূরের বাবা দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমরা চিন্তা করে আরো ভেঙে পড়ব ভেবে চোখ হারানোর কথা শুরুতে বাড়িতে জানায়নি নূর। পরে এ খবর শোনার পর আমরা হাউ মাউ করে কেঁদেছি। আমাদের সংসারই চলে না, তার চিকিৎসা করব কীভাবে? উন্নত চিকিৎসার অভাবে অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে নূরের পৃথিবী।’
আহত নূরের মা হালিমা খাতুন বলেন, ‘নূর পরিবারে সবার ছোট হওয়ায় সবচেয়ে আদরেরও। কিন্তু অর্থাভাবে অল্প বয়স থেকে কর্ম করতে হচ্ছে তাকে। ছেলেকে নিয়ে আমাদের অনেক স্বপ্ন ছিল। তেমন কোনো সহায়তা না মেলায় পুলিশের গুলিতে সেই স্বপ্ন ধূলিসাৎ হতে বসেছে। উন্নত চিকিৎসাসহ তার নূরের পুনর্বাসন প্রয়োজন। অন্যথায় পরিবারের হাল ধরার আগেই নিভে যেতে পারে আশার আলো।’
জুলাই আন্দোলনে গুলিতে দৃষ্টিশক্তি হারানো এক যোদ্ধাকে বাদী দেখিয়ে অভিনব কায়দায় মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ করা হয়েছে।
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫২০২৪ সালের ৪ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে মৌলভীবাজার শহরে অন্যান্য শ্রমিকদের সঙ্গে মিছিলে অংশ নেন জসিমও। চৌমুহনায় মিছিলকারী ছাত্র-জনতার সঙ্গে পুলিশ ও আ.লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। তবুও পিছু হটেনি সাহস নিয়ে পুলিশের বন্দুকের সামনে বুক পেতে পুলিশ ও ছাত্রলীগকে লক্ষ্য
৩১ আগস্ট ২০২৫চব্বিশের জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম একজন যোদ্ধা তরুণ আলেম মাওলানা শফিকুর রহমান। আন্দোলন ঘিরে যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকায় পতিত আওয়ামী সরকারের পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে তার বাগবিতন্ডার একটি ছবি ভাইরাল হয়ে যায়। রামপুরা এলাকায় আন্দোলনকারীদের মাঝে খাবার বিতরণ করতে দেখা যায় তাকে।
২৯ আগস্ট ২০২৫তাইমুরের বাবা পুলিশের এসআই মো. ময়নাল হোসেন ভুঁইয়া তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বলেছিলেন, ‘একজন মানুষকে মারতে কয়টা গুলি লাগে স্যার’। আমার ছেলের কি দোষ ছিল, কেন তাকে এত কষ্ট দিয়ে মারা হলো? কেন তার শরীরে দুইশ গুলি মারা হলো।
১৯ আগস্ট ২০২৫