রোহিঙ্গাদের ফিরে যাওয়ার পরিবেশ তৈরি করতে হবে: ড. ইউনূস

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ০৪ এপ্রিল ২০২৫, ১০: ০৩
আপডেট : ০৪ এপ্রিল ২০২৫, ১১: ৩৮

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, রোহিঙ্গাদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার পরিবেশ তৈরি করতে হবে। শুক্রবার স্থানীয় সময় সকালে থাইল্যান্ডের ব্যাংককে বিমসটেক শীর্ষ সম্মেলনে তিনি একথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, রোহিঙ্গা সংকট সমাধান না হলে পুরো অঞ্চলে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি হতে পারে। বিমসটেক এ সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধানে ভূমিকা রাখতে পারে। বাংলাদেশ সবসময় উন্মুক্ত আঞ্চলিক সহযোগিতার পক্ষে। আমরা এমন একটি অঞ্চল গঠনের স্বপ্ন দেখি, যেখানে সব দেশ সমতার ভিত্তিতে পারস্পরিক স্বার্থ ও সমৃদ্ধি অর্জনের জন্য কাজ করবে।

yunus-12

তিনি বলেন, বিমসটেক অঞ্চল বিশ্বের এক-পঞ্চমাংশ জনগোষ্ঠীর আবাসস্থল। অনেকেই এ বিশাল জনসংখ্যাকে ‘সমস্যা’ হিসেবে দেখলেও সঠিক নীতি গ্রহণের মাধ্যমে এ জনসংখ্যাই সবচেয়ে বড় সম্পদে পরিণত হতে পারে। নানা চ্যালেঞ্জ থাকলেও সঠিকভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করা হলে এ অঞ্চল বিশাল সম্ভাবনাময় হয়ে উঠতে পারে

তিনি বলেন, আমি আমাদের জনগণকে আশ্বস্ত করেছি- একবার আমাদের দায়িত্ব সম্পন্ন হলে এবং প্রয়োজনীয় সংস্কার কার্যকর হলে, আমরা একটি মুক্ত, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন আয়োজন করবো।

yunus-11

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দেশের প্রতিটি নাগরিকের সংবিধানগত অধিকার নিশ্চিত করতে, বিশেষ করে নারী, জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অধিকার সংরক্ষণের ক্ষেত্রে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।

তিনি বলেন, শেখ হাসিনার দুর্নীতিবাজ ও স্বৈরাচারী শাসন থেকে মুক্ত করে ছাত্র নেতারা আমাকে দেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। আমি জনগণের স্বার্থে দায়িত্ব নিতে রাজি হয়েছি।

yunus-9

ড. ইউনূস বলেন, ১৯৭১ সালে নৃশংস সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে নয় মাস ধরে গণহত্যায় লাখ লাখ সাধারণ নারী, পুরুষ, শিশু এবং যুবক-যুবতী সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ করেছিলেন। আমাদের জনগণ এমন একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, ন্যায়সঙ্গত এবং মুক্ত সমাজের আকাঙ্ক্ষা করেছিল যেখানে প্রতিটি সাধারণ মানুষ তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে পারে।

সরকার প্রধান বলেন, আমরা সুশাসন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই এবং অর্থনীতির প্রতিটি ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা আনার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এই বিষয়গুলোই আমাদের পরিকল্পিত সংস্কারের মূল লক্ষ্য।

তিনি বলেন, সরকার ইতিমধ্যে বিচার ব্যবস্থা, নির্বাচন ব্যবস্থা, জনপ্রশাসন, পুলিশ, দুর্নীতি দমন কমিশন ও সংবিধান সংস্কারের জন্য ছয়টি কমিশন গঠন করেছে, যাতে জনগণের মালিকানা, জবাবদিহিতা ও কল্যাণ নিশ্চিত করা যায়।

yunus-8

প্রধান উপদেষ্টা জানান, এই কমিশনগুলো ইতিমধ্যে তাদের সুপারিশ জমা দিয়েছে, যা বর্তমানে সরকারের সক্রিয় বিবেচনায় রয়েছে।

তিনি বলেন, আমরা ৭ সদস্যবিশিষ্ট একটি ‘জাতীয় ঐকমত্য কমিশন’ গঠন করেছি। আমি নিজেই যার নেতৃত্ব দিচ্ছি এবং এতে ছয়টি কমিশনের প্রধানরা রয়েছেন। এই কমিশনগুলো যে সুপারিশগুলো জমা দিয়েছে, তা পর্যালোচনা এবং গ্রহণ করার জন্য এ কমিশন গঠন করা হয়েছে।’

সরকার প্রধান আরও জানান, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সম্প্রতি আরো চারটি কমিশন গঠন করেছে, গণমাধ্যম, স্বাস্থ্য, শ্রম এবং নারী অধিকার সংক্রান্ত নীতিগত সুপারিশ দেওয়ার লক্ষ্যে।

তিনি বলেন, আমরা যখন বাংলাদেশকে পুনর্গঠন করছি, তখন আমরা দেশের প্রতিটি নাগরিকের সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করতে অবিচলভাবে কাজ চালিয়ে যাব, তারা নারী হোক কিংবা জাতিগত ও ধর্মীয় সংখ্যালঘু হোক।

অনুষ্ঠানে থাই প্রধানমন্ত্রী এবং সম্মেলনের চেয়ারপার্সন পেতংতার্ন শিনাওয়াত্রা, বিমসটেক মহাসচিব রাষ্ট্রদূত ইন্দ্র মনি পান্ডে এবং বিমসটেক সদস্য রাষ্ট্রের প্রতিনিধিদলের প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিষয়:

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত