রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক ও ঢাকা-৮ আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী শরিফ ওসমান হাদি এখনো আশঙ্কামুক্ত নন। তাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ। পাশাপাশি তার পরবর্তী চিকিৎসা নিয়ে করণীয় ঠিক করতে মেডিকেল বোর্ড গঠন হয়েছে বলে হাসপাতালটির প্রশাসনিক সূত্রে জানা গেছে।
ইনকিলাব মঞ্চের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, অবস্থা অনেকটা আগের মতোই। ৪৮ ঘণ্টার আগে শারীরিক অবস্থা নিয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না।
শনিবার সকাল সোয়া ১০টার দিকে ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যসচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের গণমাধ্যমকে জানান, ওসমান হাদির ইন্টারনাল রেসপন্স আছে। তবে এখনো আশঙ্কামুক্ত নন। চিকিৎসকরা তাকে ৪৮ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে রেখেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এভারকেয়ার হাসপাতালের একজন প্রশাসনিক কর্মকর্তা আমার দেশকে জানান, হাদির চিকিৎসায় মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। শনিবার সকাল ১১টা থেকে সাড়ে পর্যন্ত বোর্ড হাদির শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করেছে। অবস্থা স্থিতিশীল রয়েছে।
এয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন গতকাল শুক্রবার রাজধানীর বিজয়নগর বক্স কালভার্ট এলাকায় ওসমান হাদিকে গুলি করা হয়। শুরুতে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। গুলি মাথার এক পাশ দিয়ে অপর পাশ হয়ে বের হওয়ায় ব্যাপক রক্তক্ষরণ হয়। কার্ডিয়াক এরেস্ট হলে তাকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়।
পরে আরো উন্নত চিকিৎসার জন্য সন্ধ্যায় এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হয় হাদিকে। সেখানে নেওয়ার পরও রক্তক্ষরণ চলে। মস্তিষ্ক প্রচণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তরুণ এই রাজনীতিকের শারীরিক অবস্থা এখনো আশঙ্কামুক্ত নয় বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
গতকাল প্রধান উপদষ্টার বিশেষ সহকারী (স্বাস্থ্য) অধ্যাপক ডা. সায়োদুর রহমান বলেন, গুলি বাম কানের ওপর দিয়ে ঢুকে ডান পাশ দিয়ে বেরিয়ে যাওয়ায় হাদির মস্তিষ্কের কাণ্ড বা ব্রেনস্টেম পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত করেছে, যা চিকিৎসাশাস্ত্রে ‘ম্যাসিভ ব্রেন ইনজুরি’ হিসেবে বিবেচিত।
সায়েদুর রহমান বলেন, ‘এটা আমরা ম্যাসিভ ব্রেন ইনজুরি হিসেবে বিবেচনা করছি। এখন কোনো ধরনের ইন্টারভেনশন সম্ভব না। রোগীকে কেবল লাইফ সাপোর্টে ধরে রাখার চেষ্টা চলছে। রোগীকে এখন কৃত্রিম শ্বাসপ্রশ্বাস দিয়ে বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে। তবু একটুখানি আশার জায়গা আছে, রোগীর শরীরে এখনো সাইন অফ লাইফ আছে। অপারেশনের সময় তার নিজের শ্বাস নেওয়ার কিছু প্রচেষ্টা দেখা গিয়েছিল।’
তবে পথটা সহজ নয় বলেও জানান ডা. সায়েদুর। তার মতে, হাদি অস্ত্রোপচারের আগেই একবার শকে চলে গিয়েছিলেন। পরে অ্যাম্বুলেন্সে স্থানান্তরের সময় তার নাক ও গলা দিয়ে প্রবল রক্তক্ষরণ শুরু হয়। যদিও আপাতত সেটি নিয়ন্ত্রণে আনা গেছে।
বিশেষ সহকারী আরো জানান, এখনই কোনো আশার গল্প শোনানোর মতো পরিস্থিতি নেই। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।


যেভাবে জামিন পান হাদিকে গুলি করা সেই ফয়সাল
ওসমান হাদির গ্রামের বাড়িতে চুরি