আমার দেশ জনপ্রিয় বাংলা নিউজ পেপার

ব্রিফিংয়ে ইসি সানাউল্লাহ

নির্বাচনে ড্রোন ব্যবহার করতে পারবে বিমানবাহিনী

স্টাফ রিপোর্টার

নির্বাচনে ড্রোন ব্যবহার করতে পারবে বিমানবাহিনী
ফাইল ছবি

শরীফ ওসমান হাদি হত্যাকাণ্ড ভোটের মাঠের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে প্রভাব ফেলেছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন আবুল ফজল সানাউল্লাহ।

রোববার বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী প্রধান এবং আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর সঙ্গে বৈঠক শেষে এক ব্রিফিংয়ে তিনি এ কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

ইসি সানাউল্লাহ বলেন, শহীদ ওসমান হাদির হত্যাকাণ্ড ডেফিনেটলি একটা বড় ঘটনা এবং মাঠ পর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সার্বিকভাবে প্রভাব ফেলেছে। তিনি বলেন, এখন থেকে মাঠপর্যায়ে যৌথবাহিনীর অভিযান চালু হবে। তারা অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, আটক শুরু করবে। পুলিশের পক্ষ থেকেও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হচ্ছে।

তিনি বলেন, যারা নির্বাচনকে বিঘ্নিত করতে চায় তাদের টার্গেট শহর এলাকা। তারা খুব অর্গানাইজভাবে সম্ভবত টার্গেটেড কর্মকাণ্ড করছে। যাতে, এটার প্রভাব এত বেশি হয় যেন জনমনে যেন এটার হত্যাকাণ্ড ছড়িয়ে পড়ে। আমরা এগুলো চিহ্নিত করেছি। জনমনে যাতে স্বস্তি ফেরত আসে, রাজনৈতিক দলগুলো যথাযথভাবে যেন তাদের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড করতে পারেন। নির্বাচনি তফসিল অনুযায়ী সকল কাজ যেন নির্বিঘ্ন সম্পন্ন হতে পারে সে ব্যাপারে আমরা নির্দেশনা দিয়েছি।

তফসিল ঘোষণার পরে দুটি গণমাধ্যম অফিসে সহিংসতার ঘটনায় সাংবাদিকরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে - এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে ইসি সানাউল্লাহ বলেন, এগুলো আমাদেরও কনসার্ন, কারণ এটার সাথে ডেফিনেটলি নির্বাচনের পরিবেশের সম্পৃক্ততা আছে। কারণ তফসিল ঘোষণার পরে যাই হোক না কেন, সেটার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ প্রভাব তো নির্বাচনের উপর পড়ে।

যৌথ বাহিনীর অভিযান চলমান আছে জানিয়ে তিনি বলেন, এই অভিযান চলবে। ১৩ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া অভিযান গড়ে প্রতদিন ২ হাজার জন সন্ত্রাসী গ্রেফতার করা হয়েছে। এছাড়া শুধুমাত্র একটি বাহিনী ৫৬টি অস্ত্র উদ্ধার করেছে। অন্যদিকে অবৈধ গাড়ি বিশেষ করে মোটরসাইকেল কয়েক হাজার চেক করা হয়েছে এবং আইনের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে।

এক প্রশ্নের জবাবে ইসি সানাউল্লাহ বলেন, ২০২৪ সালের ৫ই আগস্টের পর থেকে পুলিশকে হিউম্যান রাইটসের জায়গাগুলো সমুন্নত রেখে কাজ করার ব্যাপারে এক ধরনের নির্দেশনা ছিল। এই ভালো উদ্যোগের সুযোগ নিয়ে কেউ কেউ খারাপ কাজ করেছে। নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে কঠোরভাবে বাহিনী ও সংস্থাগুলোকে বলা হয়েছে- যারা মানবিক তাদের প্রতি মানবিক হবো। কিন্তু যারা দোষুতা করতে চাই, নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করতে চাই, আমার ভাইকে হত্যা করতে চাই, তাদের প্রতি মানবিক হওয়ার দরকার নেই। মেসেজ ইজ ভেরি ক্লিয়ার।

ডেইলি স্টারে আটকে পড়াদের উদ্ধারের জন্য যাওয়া ফায়ার সার্ভিস, সেনাবাহিনী, পুলিশসহ অন্য সংস্থাকে মব সৃষ্টিকারী দল ২০ মিনিট সময় দেয়, এই ঘটনাকে আপনি কীভাবে দেখবেন? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, বিষয়টি আমাদের আলোচনায় এসেছে। কারণ, এটাও পরিবেশের উপরে প্রভাব ফেলছে। ঘটনাটা কিন্তু নির্বাচনের সাথে সরাসরি রিলেটেড না হলেও আলোচনা করার কারণ হিসেবে তিনি বলেন, এটার সাথে আমাদের স্বার্থ জড়িত আছে। একটা বৃহত্তর আবেগ এবং অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে দুষ্টচক্র যে কাজটি করেছে, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে মর্মে আমাদেরকে আশ্বস্ত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে অন্ততপক্ষ ২০ জনকে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের আইনে আয়তা নিয়ে আসা হয়েছে মর্মে আমরা নিশ্চিত হয়েছি। অপকর্মের প্রতিদান তারা পাবেন।

তিনি বলেন, যারা হেরে যায় তাদের একটা কৌশল চোরাগোপ্তা হামলা এবং এগুলোকে প্রতিহত করার জন্য যা যা নেওয়া প্রয়োজন সেগুলো নিতে হবে। তারপরে যদি কেউ এগুলো ঘটানোর দুঃসাহস দেখায়, তারা যেন পালাতে না পারে, সেই জন্য আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে। গোয়েন্দা সংস্থাসহ বাহিনীসমূহকে আমরা এটার ব্যাপারে সচেতন করেছি।

রাজনীতিক দল এবং প্রার্থীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, নিজেদের নিরাপত্তা সম্পর্কে সামান্যতম যদি আপনাদের মাঝে কোন আশঙ্কা থাকে, দয়া করে স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সহায়তা নিবেন।

সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনী প্রধানের সঙ্গে নির্বাচন কমিশনের সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তিন বাহিনী প্রধান জানিয়েছে একটি সুষ্ঠু, সুন্দর নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি তারা নিয়ে রেখেছে। এক লাখ সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হবে, যার ওয়ান থার্ড অলরেডি মাঠে মোতায়েন আছে। বাকি টু থার্ড এখন থেকে স্লোলি মোতায়েন হয়ে যাবে। এবং শুধু পাঁচ দিনের জন্য না, তারও আগেই এক লাখ মাঠে মোতায়েন করা হবে।

তিনি বলেন, তারা আশ্বস্ত করেছেন যে মাঠ পর্যায়ে সমন্বিতভাবে তারা কাজ করছেন এবং দেশের কোথাও একজনও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য কমানো হয় নাই। আরো বেড়ে যাবে। তারা পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েই কাজ করছেন। আমাদের পক্ষ থেকে যৌথবাহিনী অপারেশনের ব্যাপারে বলেছি এবং কোঅর্ডিনেট করতে বলেছি। তিনি আরও বলেন, আমরা অস্ত্র উদ্ধার ও সন্ত্রাসী কার্যক্রমের ব্যাপারে বিশেষভাবে জোর দিয়েছি। তারা আমাদেরকে আশ্বস্ত করেছেন যে তাদের বাহিনীসমূহ পুরোপুরিভাবে প্রস্তুত আছে এবং তারা একটা ভালো নির্বাচন করার জন্য বদ্ধপরিকর।

নির্বাচনের সার্বিক পরিবেশ নিয়ে আপনাদের মূল্যায়ন কী? উৎসবমুখর পরিবেশ আছে কিনা এবং কতটুকু থাকবে? এমন প্রশ্নের জবাবে ইসি সানাউল্লাহ বলেন, ধরুন, একটি বড় উৎসবের সময় যদি কোনো দুর্ঘটনা ঘটে, তাহলে কি উৎসবের আমেজ ব্যাহত হয় না? আমাদের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। শহীদ হাদি হত্যাকাণ্ড, এখন আমাদের এই শোকটাকে শক্তিতে পরিণত করে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। যারা আমাদের উৎসবের পরিবেশ নষ্ট করতে চায়, তারা ব্যর্থ হবে। উৎসবের পরিবেশ আবারও ফিরে আসবে।

Google News Icon

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

সর্বশেষ

এলাকার খবর

খুঁজুন