বিমানের টিকেটের দুর্বৃত্তায়ন রোধে কঠোর অবস্থানে সরকার

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ২৫ আগস্ট ২০২৫, ২০: ৫০

সরকার বিমান টিকেটের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ও প্রতারনা রোধে এবং যাত্রীদের স্বার্থ রক্ষায় সরকার কঠোর অবস্থান নিয়েছে। টিকেটের দুর্বৃত্তায়ন রোধে প্রতিটি টিকেটে এজেন্সির নাম, লাইসেন্স নম্বর এবং টিকেটের দাম স্পষ্টভাবে উল্লেখ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যাতে আকাশপথের যাত্রীরা সহজেই মূল্য যাচাই করে নিশ্চিত হতে পারেন। এর ব্যাত্যয় ঘটলে ট্রাভেল এজেন্সির লাইসেন্স বাতিলসহ আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সোমবার সচিবালয়ে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন এক সংবাদ সম্মেলনে উপদেষ্টা এ কথা বলেছেন।

বিজ্ঞাপন

উপদেষ্টা বলেন, একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি ১৩টি ট্রাভেল এজেন্সিকে অবৈধভাবে টিকেট ব্লক করা এবং উচ্চমূল্যে বিক্রির জন্য চিহ্নিত করেছে। তাদের নিবন্ধন বাতিলের আইনি প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত নির্দেশনা দ্রুত বাস্তবায়িত হলে বিমানবন্দরে যাত্রীসেবা আরো স্বচ্ছ ও গতিশীল হবে। সংশ্লিষ্টদের আরো কঠোর হতে হবে।

তিনি জানান, আইন ও বিধিমালা সংশোধন করে সরকার বিদ্যমান আইনগুলোকে আরও কার্যকর ও যুগোপযোগী করতে কাজ করছে। বর্তমান আইন সংশোধনের জন্য একটি খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে, যা আরও কঠোর হবে। অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সিকে রাষ্ট্রীয় নিয়ন্ত্রণ ও পর্যবেক্ষণের আওতায় আনতে একটি খসড়া গাইডলাইন এবং নীতিমালাও তৈরি করা হয়েছে।

সেবার স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ ট্রাভেল এজেন্সি ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম এর মাধ্যমে এবং অন্যান্য প্রশাসনিক কাজ অনলাইনে সম্পন্ন করা হচ্ছে। সরকার এখন আরও উন্নত এবং স্বয়ংক্রিয় সফটওয়ার তৈরির কাজ করছে, যা ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর উপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ ও পর্যবেক্ষণ সহজ করবে।

সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। ট্রাভেল এজেন্সি সংক্রান্ত আইন ছাড়াও মোবাইল কোর্ট আইন, ভোজন অধিকার আইন, মানিলন্ডারিং আইন, মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইন এবং অন্যান্য বিদ্যমান আইন অনুযায়ী সামগ্রিকভাবে এয়ার টিকেট সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর কার্যক্রম শুরু করেছে।

উপদেষ্টা উল্লেখ করেন, ফ্লাইট এক্সপার্ট ঘটনার প্রেক্ষিতে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। 'ফ্লাইট এক্সপার্টি' নামক ট্রাভেল এজেন্সির আর্থিক অনিয়মের পরিপ্রেক্ষিতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সরকার সকল এয়ারলাইন্স ও সিএএবি-কে ক্ষতিগ্রস্ত আকাশপথের যাত্রীদের টিকিট বহাল রাখার জন্য নির্দেশ দিয়েছে।

এছাড়া এজেন্সিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং তার পরিবারের সদস্যরা কোন দেশে পলায়ন করেছে সে বিষয়ে তথ্য প্রদানের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এবং অর্থ পাচার রোধে আদের ব্যাংক আকাউন্ট বন্ধ করার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংককে অনুরোধ করা হয়েছে।

তিনি জানান, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫-এ অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে ১৪ সদস্যের একটি টাস্কফোর্স গঠন করা হয়। এ প্রধান লক্ষ্য হলো টিকিটের উচ্চমূল্য পর্যবেক্ষণ করা, এর কারণগুলো চিহ্নিত করা এবং যাত্রীদের স্বার্থ রক্ষায় প্রয়োজনীয় সুপারিশ করা।

এই টাস্কফোর্সকে অধিকতর কার্যকর করা হয়েছে।লাইসেন্সবিহীন এজেন্সির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সরকার সকল জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে লাইসেন্সবিহীন ট্রাভেল এজেন্সিগুলোর বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে আইনি ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়েছে। জেলা প্রশাসকগণ। মাঠে সক্রিয় রয়েছেন এবং মন্ত্রণালয় থেকে বিষয়টি মনিটর করা হচ্ছে।

বিমান উপদেষ্টা বলেন, নন-রিফান্ডেবল টিকিটের ট্যাক্স ফেরত দিতে মন্ত্রণালয় সিভিল এভিয়েশন অথরিটি অব বাংলাদেশ (ক্যাব) -কে অনুরোধ করেছে, যেন তারা এয়ারলাইন্সগুলোকে নন-রিফান্ডেবল টিকিটের ক্ষেত্রেও যাত্রীদের ভ্রমণ না করলে দ্রুত টাক্স বাবদ প্রদত্ত অর্থ ফেরত দেওয়ার নির্দেশনা দেয়।

এছাড়াও মন্ত্রণালয় অপরাধমূলক কার্যক্রমে জড়িত অন্যান্য এজেন্সির নিবন্ধন বাতিল করছে এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে অনুরোধ জানিয়েছে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত