আমার দেশ জনপ্রিয় বাংলা নিউজ পেপার

ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন

ভোটকক্ষ ও গোপন বুথ বাড়ছে দেড় লাখ

গাজী শাহনেওয়াজ

ভোটকক্ষ ও গোপন বুথ বাড়ছে দেড় লাখ

একই দিনে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট আয়োজনকে সামনে রেখে ভোটারদের চাপ কমাতে বড় ধরনের প্রস্তুতি নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ভোটকক্ষ ও গোপন বুথের সংখ্যা ব্যাপকভাবে বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিশেষ করে ব্যালটে সিল মারার কক্ষ বা গোপন বুথের সংখ্যা প্রায় দেড় লাখ বাড়ানো হচ্ছে।

তবে ভোটকেন্দ্রের সংখ্যা মোটামুটি অপরিবর্তিত থাকবে। কেবল বিশেষ পরিস্থিতিতে জনপ্রতিনিধি ও স্থানীয়দের সুবিধার্থে শেষ মুহূর্তে দুই থেকে চারটি কেন্দ্র বাড়তে পারে। পাশাপাশি প্রথমবারের মতো চালু হচ্ছে আইটি–সাপোর্টেড পোস্টাল ব্যালট, যা নির্বাচনি ব্যবস্থাপনায় নতুন মাত্রা যোগ করছে। ইসির দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

বিজ্ঞাপন

নির্বাচন কমিশনের হিসাব অনুযায়ী, ৩০০ সংসদীয় আসনে সম্ভাব্য ভোট কেন্দ্রের সংখ্যা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪২ হাজার ৭৬৬টি। এর মধ্যে ৪২ হাজার ৭৫১টি স্থায়ী এবং ১৫টি অস্থায়ী কেন্দ্র। সম্ভাব্য ভোটকক্ষ দুই লাখ ৪৫ হাজার ১৯৫টি, যার মধ্যে স্থায়ী ভোটকক্ষ দুই লাখ ৩৩ হাজার ২১৬টি এবং অস্থায়ী ১১ হাজার ৯৭৯টি। এর সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে দেড় লাখের বেশি নতুন গোপন বুথ। ফলে মোট গোপন বুথের সংখ্যা দাঁড়াবে ৪ লাখের বেশি এবং ভোটকক্ষ হবে আড়াই লাখেরও বেশি।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে, একই দিনে দুটি ভোট অনুষ্ঠিত হওয়ায় ভোটকক্ষে ভোটার সংখ্যাও কমিয়ে আনা হয়েছে। নতুন ভোটকক্ষ ও গোপন কক্ষ বাড়ানোর সিদ্ধান্তের আগে প্রতিটি কক্ষে ৬০০ পুরুষ ও ৫০০ নারী ভোটার ভোট দেওয়ার সুযোগ পেতেন। নতুন ব্যবস্থায় তা কমিয়ে ৩৫০ থেকে ৪০০ জনে নামানো হয়েছে। এতে প্রতি ঘণ্টায় গড়ে ১৫টি ভোট বেশি পড়বে বলে ইসি মনে করছে। ফলে ভোটারদের দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হবে না। এ ছাড়া ভোট গ্রহণের সময়ও এক ঘণ্টা বাড়ানো হয়েছে। আগের সময়সূচির আগে ও পরে আধা ঘণ্টা করে সময় যুক্ত করা হয়েছে।

তবে মাঠপর্যায়ে কিছু চ্যালেঞ্জও দেখা দিয়েছে। অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বড় শ্রেণি কক্ষকে দুটি বুথে ভাগ করতে গিয়ে পর্যাপ্ত দরজা বা প্রবেশপথের অভাব দেখা দিচ্ছে। এ কারণে উপজেলা ও থানা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের বাড়তি চাপ মোকাবিলা করতে হচ্ছে বলে ইসি সূত্র জানিয়েছে।

বিশাল জনবল নিয়োগ

আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় ভোটগ্রহণ কার্যক্রম পরিচালনায় নিয়োগ দেওয়া হয়েছে মোট সাত লাখ ৭৮ হাজার ৩৫১ জন কর্মকর্তা। এর মধ্যে রয়েছেন প্রিসাইডিং অফিসার ৪২ হাজার ৭৬৬ জন, সহকারী প্রিসাইডিং অফিসার দুই লাখ ৪৫ হাজার ১৯৫ জন এবং পোলিং অফিসার চার লাখ ৯০ হাজার ৩৯০ জন।

এছাড়া নির্বাচনের সার্বিক তদারকিতে থাকবেন ৬৯ জন রিটার্নিং অফিসার, যাদের মধ্যে ৬৪ জন জেলা প্রশাসক ছাড়াও বিভাগীয় কমিশনার ও আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তারা রয়েছেন।

​প্রথমবারের মতো আইটি সাপোর্টেড পোস্টাল ব্যালট

এবারের নির্বাচনে প্রথমবারের মতো চালু হচ্ছে আইটি–সাপোর্টেড পোস্টাল ব্যালট। প্রবাসী বাংলাদেশি, নিজ এলাকার বাইরে কর্মরত সরকারি চাকরিজীবী, নির্বাচনি দায়িত্বে নিয়োজিত কর্মকর্তা এবং কারাবন্দিদের জন্য এই বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।

সরকারি চাকরিজীবী ও আইনি হেফাজতে থাকা ভোটারদের নিবন্ধনের শেষ সময় ৩১ ডিসেম্বর। পোস্টাল ব্যালটে ভোট দিয়ে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে তা ডাকবাক্সে ফেলতে হবে—এই সময়সূচি চূড়ান্ত করতে নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নির্দেশনা দিয়েছেন। গতকাল রোববার সকালে কর্ম-নির্ধারণী সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

Google News Icon

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন