আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেছেন, ভারত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অঘোষিত যুদ্ধ ঘোষণা করেছে এবং এর বিরুদ্ধে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ এবং সিকিউরিটি কাউন্সিলে আমাদের অবিলম্বে যেতে হবে।
সোমবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ইনকিলাব মঞ্চ আয়োজিত সর্বদলীয় ঐক্য সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।
মাহমুদুর রহমান বলেন, 'আন্তর্জাতিক আইনে বলা আছে, আপনি যখন আপনার দেশে সন্ত্রাসীদের আশ্রয় দিয়ে তাদের মাধ্যমে অন্য কোনো দেশের অভ্যন্তরে বিশৃঙ্খলা এবং সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড করবেন- তার অর্থ হচ্ছে, সেই দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছেন। তিনি বলেন, আমি সরকারের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি আপনারা অনতিবিলম্বে জাতিসংঘে ভারতের বিরুদ্ধে নালিশ উত্থাপন করুন। ভারত বাংলাদেশের বিরুদ্ধে অঘোষিত যুদ্ধ ঘোষণা করেছে এবং এর বিরুদ্ধে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদ এবং সিকিউরিটি কাউন্সিলে আমাদের অবিলম্বে যেতে হবে।
রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে আমার দেশ সম্পাদক বলেন, অনেক রাজনৈতিক নেতা বলে থাকেন যে, ভারতের সাথে বন্ধুত্ব করা ছাড়া নাকি ক্ষমতায় যাওয়া যায় না কিংবা ক্ষমতায় গেলেও টিকে থাকা যায় না। তিনি বলেন, ভারতের সাথে বন্ধুত্ব করে যদি ক্ষমতায় টিকে থাকা যেত, তাহলে শেখ হাসিনাকে পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নিতে হতো না।
মাহমুদুর রহমান আরো বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পর ১৬ মাস পেরিয়ে গেলেও দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির আশানুরূপ উন্নতি ঘটেনি। এ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার পর্যাপ্ত দক্ষতা, যোগ্যতা ও তৎপরতার ঘাটতি স্পষ্ট। ফলে অবনতিশীল নিরাপত্তা পরিস্থিতিতে শুধু এসব সংস্থার ওপর নির্ভর করে আওয়ামী ফ্যাসিস্টদের মরিয়া খুনের কার্যক্রম বন্ধ করা সম্ভব নয়। বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের ওপর ক্রমবর্ধমান এ হুমকি রুখতে হলে দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধ করে সর্বস্তরে জননিরাপত্তার নিজস্ব সংস্থা গড়ে তুলতে হবে।
এ লক্ষে আগামীকাল থেকে দেশের সবগুলো ওয়ার্ডে ‘আইনশৃঙ্খলা রক্ষার গণকমিটি’ গড়ে তোলার আহ্বান জানান আমার দেশ সম্পাদক। এসব কমিটির কাজ হবে-
এক. ফ্যাসিস্ট রাজনীতির নেতাকর্মী ও তাদের সমর্থক এবং অনুচরদের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করা এবং এদের মধ্যে যাদের ঝুঁকিপূর্ণ বলে মনে হবে, এদের ধরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে সোপর্দ করা। এক্ষেত্রে আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না এবং সন্দেহভাজন ব্যক্তির ওপর সব ধরনের শারীরিক নির্যাতন থেকে বিরত থাকবেন।
দুই. স্থানীয় প্রশাসনের ওপর কঠোর নজরদারি বজায় রাখতে হবে, কারণ তাদের মধ্যে অনেকেই পতিত সরকারের সহযোগী ও অনুচর হিসেবে গোপনে এখনও সক্রিয় রয়েছে। তারা যেনো কোনোভাবেই এসব সন্দেহভাজন অপরাধীকে ছেড়ে দিতে না পারে, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
তিন. স্থানীয় আদালতগুলোর আইনজীবীদের প্রতি অনুরোধ জানাতে হবে, যাতে তারা বড় অঙ্কের টাকার বিনিময়ে এসব অপরাধীর জামিনের ব্যবস্থা করা বা তাদের বিরুদ্ধে করা মামলা দুর্বল করার মতো কোনো অসৎ কার্যকলাপে জড়িয়ে না পড়েন। একই সঙ্গে স্থানীয় আদালতের সার্বিক কার্যক্রমের ওপরও কঠোর নজরদারি নিশ্চিত করতে হবে।

