আমার দেশ জনপ্রিয় বাংলা নিউজ পেপার

হাদির মৃত্যু মস্তিষ্কে ব্যাপক ক্ষতির কারণে

আজাদুল আদনান

হাদির মৃত্যু মস্তিষ্কে ব্যাপক ক্ষতির কারণে
ছবি : সংগৃহীত

জুলাই বিপ্লবের অগ্রনায়ক ও ভারতীয় আধিপত্যবাদবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম কণ্ঠস্বর শরীফ ওসমান হাদি গুলিবিদ্ধ হওয়ার এক সপ্তাহের মাথায় মারা গেছেন। দেশে সরকারি ও সর্বোচ্চ মানের বেসরকারি হাসপাতালের পাশাপাশি দেশের বাইরে চিকিৎসা দিয়েও বাঁচানো সম্ভব হয়নি এই বিপ্লবীকে। মূলত ম্যাসিভ ব্রেন টিস্যু ইনজুরি বা মস্তিষ্কের ব্যাপক ক্ষতি হওয়ায় ফেরানো যায়নি তাকে।

চিকিৎসকরা বলছেন, খুব কাছ থেকে গুলি করার কারণে মস্তিষ্কে বড় আকারে ক্ষতি হয় হাদির। এই ধরনের রোগীর ক্ষেত্রে ৯০ ভাগই মারা যান। ফলে ক্ষীণ আশা নিয়েই এতদিন হাদির চিকিৎসা চলছিল।

বিজ্ঞাপন

গত ১২ ডিসেম্বর রাজধানীর বিজয়নগরের কালভার্ট এলাকায় রিকশায় থাকা অবস্থায় হাদিকে পেছন থেকে এসে মাথায় গুলি করে পালিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা। গুলি মাথার ডান পাশে ঢুকে বামপাশ দিয়ে বের হয়ে যায়। তাৎক্ষণিকভাবে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেক), পরে বেসরকারি হাসপাতাল এভারকেয়ারে নেওয়া হয় হাদিকে। অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তিনদিন পর ১৫ ডিসেম্বর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরের জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয় তাকে। নিউরো সার্জারির বিশেষায়িত এ স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে মৃত্যু হয় হাদির। এর মধ্যে তার একটি অস্ত্রোপচার করার কথা ছিল। শেষ পর্যন্ত সেটি আর সম্ভব হয়নি।

জুলাই বিপ্লবে হাদির মতো মস্তিষ্কে মারাত্মক ক্ষত নিয়ে রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস হাসপাতালে আসেন বহু আহত রোগী। তবে বড় অংশকেই বাঁচানো সম্ভব হয়নি বলে জানান প্রতিষ্ঠানটির নিউরোট্রমা সার্জারি বিভাগের অধ্যাপক ডা. মো. মাহফুজুর রহমান।

ওসমান হাদির বিষয়ে জানতে চাইলে মাহফুজুর রহমান আমার দেশকে বলেন, ‘সাধারণত এই ধরনের রোগীদের ক্ষেত্রে ৯০ ভাগই মারা যায়। গুলির যে শক্তি, তা অত্যন্ত গতিতে আসায় মস্তিষ্কে সরাসরি আঘাত হানে। গুলি সেফ সাইডে না লাগলে এ ধরনের রোগীকে বাঁচানো প্রায় অসম্ভব হয়ে যায়। হাদির ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, ‘গুলিতে হাদির ব্রেন স্টেম ইনজুরি উইথ ডিফিউজ বা ম্যাসিভ ব্রেন টিস্যু ইনজুরি হয়। অর্থাৎ মস্তিষ্ক ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত। দেশে চিকিৎসার কোনো ঘাটতি আসলে ছিল না। তারপরও আমাদের বাইরে যদি উন্নত দেশের হাসপাতালে কিছু থেকে থাকে, সেই আশায় মূলত বিশ্বের অন্যতম সেরা নিউরো স্বাস্থ্যপ্রতিষ্ঠান সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে পাঠানো হয়েছিল। হাদির পরিবার কিংবা দেশের কেউ যাতে বলতে না পারে, সরকার গুরুত্ব দেয়নি। তাই তার চিকিৎসার সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নিয়েছে সরকার।’

হাদির চিকিৎসায় দেশে ১২ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছিল। ওই বোর্ড হাদির মাথার কয়েক দফা সিটি স্ক্যান করে। অধ্যাপক মাহফুজ জানান, মস্তিষ্কের মারাত্মক ক্ষতি হওয়ায় দীর্ঘ সময় ধরে মস্তিষ্ক ফুলে ছিল হাদির। এতে মস্তিষ্কে অক্সিজেন স্বল্পতা দেখা দেয়। যা রোগীর জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক।

Google News Icon

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর

খুঁজুন