জানালেন আসিফ নজরুল

গণভোট নিয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত দেবেন প্রধান উপদেষ্টা

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৭: ৫৭
আপডেট : ৩০ অক্টোবর ২০২৫, ১৮: ৩৩
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল। ছবি: সংগৃহীত

জুলাই সনদ বাস্তবায়নের উপায় এবং কবে গণভোট হবে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস সেই সিদ্ধান্ত নিবেন বলে জানিয়েছেন আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল। প্রধান উপদেষ্টা যে সিদ্ধান্ত নিবে অন্তর্বর্তী সরকার সেই সিদ্ধান্তে দৃঢ় থাকবে বলেও জানান তিনি।

বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক নিয়ে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিরোধী তীব্রতম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে। এসব ব্যাপারে একটা সময় সরকারকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সিদ্ধান্ত নিবেন প্রধান উপদেষ্টা।

গণভোট নিয়ে বিএনপি-জামায়াতসহ রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে তীব্র বিরোধ নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, এটা দুর্ভাগ্যজনক। ২৭০ দিন যাবত আলাপ আলোচনার পর প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর বক্তব্যের মধ্যে যে অনৈক্যের সুর দেখছি এটা হতাশাব্যাঞ্জক। এই তীব্র বিরোধের মধ্যে কীভাবে সমঝোতার দলিল পাশ; এটা খুব দুরুহু একটা চ্যালেঞ্জ আমাদের সামনে এনে দিয়েছে।

আসিফ নজরুল বলেন, উনাদের (রাজনৈতিক দল) তো আসলে ঐক্যমত হয় নাই। কিছু ভাইটাল (গুরুত্বপূর্ণ) প্রশ্নে এর আগে আমরা জেনেছিলাম কন্টেন্ট নিয়ে বিরোধ ছিল, যে সংস্কার হবে সেই বিষয়বস্তু নিয়ে বিরোধ ছিল। এখন আবার দেখলাম আরও দুই ধরনের বিরোধ তৈরি হয়েছে; একটা হচ্ছে আপনার এটা (জুলাই সনদ) কি পদ্ধতিতে পাস করা হবে, আরেকটা হচ্ছে এই জন্য গণভোট হলে গণভোট কবে হবে।

তিনি বলেন, (রাজনৈতিক দলগুলোর বিরোধ) এত দৃঢ় এবং পরস্পর বিরোধী। কী বলব? যে উত্তেজিত ভূমিকা নিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো, যারা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের পক্ষে ছিল আপনারা যদি এরকম একটা ভূমিকা নেন তাহলে সরকার কী করবে? আমরা ঠিক বুঝতে পারছি না।

আইন উপদেষ্টা বলেন, এতদিন আলোচনার পর যদি আপনাদের ঐক্যমত না আসে, এখন আমরা আসলে কীভাবে কী করব এটা নিয়ে সত্যি আমাদের একটু চিন্তা করতে হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে এ নিয়ে সাধারণ আলোচনা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, অনৈক্যের বিষয়গুলো একটা হচ্ছে- আপনারা জানেন ঐক্যমত কমিশন দুইটা বিকল্প দিয়েছে। একটা হচ্ছে আপনার জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশ তারপর গণভোট; তারপরে ২৭০ দিনের মধ্যে না হলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে সংবিধান সংশোধন হয়ে যাবে। তো এরকম কোনো নজীর আছে কিনা বা এটা আদৌ সম্ভব কিনা এটা আমরা দেখবো। আরেকটা হচ্ছে এই দায় দায়িত্ব নির্বাচিত সংসদের হাতে ছেড়ে দেওয়া। এই দুইটা বিকল্পের মধ্যে কোনটা আসলে বেশি গ্রহণযোগ্য সেটা নিয়ে রাজনৈতিক দলের মধ্যে তীব্র মতবিরোধ রয়েছে। আর গণভোট কবে হবে ওটা নিয়ে তো বিরোধ তীব্রতম পর্যায়ে পৌঁছে গেছে বোধ হয়।

জুলাই সনদ বাস্তবায়ন পদ্ধতি এবং গণভোটের সময় নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা সিদ্ধান্ত নেবেন জানিয়ে আসিফ নজরুল বলেন, এসব ব্যাপারে একটা সময় আমাদেরকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সিদ্ধান্ত নিবেন প্রধান উপদেষ্টা। প্রধান উপদেষ্টা নেতৃত্বে আমরা থাকব। আমরা উনাকে সহায়তা করার জন্য থাকব। সিদ্ধান্ত, এটা কোনো পার্টিকুলার কেউ নিবে না। এটা আপনারা নিশ্চিত থাকেন। এই সিদ্ধান্ত প্রধান উপদেষ্টা নিবেন। আমাদের সঙ্গে পরামর্শ করার প্রয়োজন হলে উনি পরামর্শ করবেন এবং আমরা যে সিদ্ধান্ত নেব সেখানে আমরা দৃৃঢ় থাকব। সিদ্ধান্ত খুব দ্রুত হবে।

রাজনৈতিক দলগুলোর আল্টিমেটাম নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আইন উপদেষ্টা বলেন, কোনো রাজনৈতিক দল যদি এককভাবে তাদের অবস্থান নেওয়ার জন্য আমাদেরকে আল্টিমেটাম বেঁধে দেয় বা জোর করে। তার মানে হচ্ছে উনাদের মধ্যে ঐকমত্য নাই এবং উনারা চাচ্ছেন উনাদের দলীয় পজিশনটা যেন এই সরকার আপহোল্ড (সমুন্নত) করে। এটা দুর্ভাগ্যজনক। উনাদেরকে তো যথেষ্ট আলোচনার সময় দেওয়া হয়েছে। উনারা যে অনৈক্য দেখাচ্ছেন জুলাই স্পিরিটকে উনারা কোথায় নিয়ে গেছেন এটা উনাদের বিবেচনা করা উচিত।

অপর এক প্রশ্নের জবানে আসিফ নজরুল বলেন, আমরা তো কমিশনের সুপারিশ নিয়েছি, সুপারিশটা আমরা কীভাবে বাস্তবায়ন করব সেখানে সরকারের স্বাধীনতা রয়েছে। এটা আমাদের প্রধান উপদেষ্টা সিদ্ধান্ত নিবেন।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত