ইলিশের উৎপাদন কমার কারণ জানালেন মৎস্য উপদেষ্টা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ : ২৫ আগস্ট ২০২৫, ২১: ৩৫

অবৈধ জাল ও জাটকা নিধন পুরোপুরি বন্ধ না হওয়া এবং প্রাকৃতিক নানা কারণে ইলিশের উৎপাদন কমেছে বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।

সোমবার উপকূলীয় এলাকায় মহিষের চারণভূমি সংকুচিত হওয়া ও এর উন্নয়নের সম্ভাবনা এবং সমাধান নিয়ে অনুষ্ঠিত এক কর্মশালায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, নদীর নাব্যতা, জলবায়ু পরিবর্তন, তথাকথিত উন্নয়নসহ নানা প্রাকৃতিক কারণে ইলিশের উৎপাদন কমছে। তবে ইলিশের উৎপাদন বাড়াতে অভিযান পরিচালনাসহ শক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

উপদেষ্টা বলেন, কারেন্ট জাল ও অন্যান্য জালের কারণে ইলিশের প্রাপ্যতা কমে যাচ্ছে। এগুলোর জন্য শক্ত ব্যবস্থা নিচ্ছি। অভিযান চালিয়ে অবৈধভাবে মাছ ধরাটা বন্ধ করছি। আশা করি আগামীতে উৎপাদন বাড়বে এবং দামও কমবে।

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা আরও বলেন, ইলিশের দাম নির্ধারণের ব্যপ্যারে নদী থেকে বাজারে আসার পরে যে হাত বদল হয় সেটা যাতে বন্ধ করা যায় সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়ার পরিকল্পনার কথা জানান তিনি।

এদিকে চাঁদপুরে ইলিশের বাজার নিয়ন্ত্রণে অভিযান চালিয়েছে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। রোববার চাঁদপুরের সবচেয়ে বড় ইলিশ অবতরণকেন্দ্র বড় স্টেশন মাছঘাটে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চাঁদপুর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল ইমরান এ অভিযান পরিচালনা করেন। এসময় চাঁদপুর মাছঘাটে উপস্থিত সব ইলিশ ব্যবসায়ীর কাছ থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই করা হয় ও ব্যবসায়ীদের মৌখিকভাবে সতর্ক করা হয়।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর চাঁদপুর জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আব্দুল্লাহ আল ইমরান আমার দেশকে বলেন, এই অভিযানের মূল উদ্দেশ্য ছিল ইলিশের বাজারে অযৌক্তিক মূল্য বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ, ক্রেতাদের স্বার্থ রক্ষা ও ব্যবসায়ীদের স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা। আমরা নিয়মিত বাজার মনিটর করছি। মাছঘাটে আড়তদার, খুচরা ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলেছি।

তিনি আরও বলেন, কোথাও অনিয়ম হচ্ছে কিনা মূলত সেটা দেখার জন্য আজকের অভিযান। ব্যবসায়ীরা যদি ইচ্ছাকৃতভাবে মূল্য নিয়ন্ত্রণের বাইরে রাখে বা কৃত্রিম সংকট তৈরি করে তবে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

অভিযানে জেলা মৎস্য অফিসের কর্মকর্তা ফারহানা আক্তার রুমা, কৃষি বিপণন অধিদপ্তরের প্রতিনিধি, জেলা স্যানেটারি ইন্সপেক্টর মো. নজরুল ইসলাম এবং বাংলাদেশ আনসার ও গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যরা সহযোগিতা করেন।

এদিকে ভরা মৌসুমেও ইলিশের দেখা মিলছে না নদীতে। এতে হতাশায় দিন কাটছে উপকূলীয় অঞ্চলের জেলে ও আড়তদারদের। ইলিশের সংকটের বাজারে দাম বেশি হওয়ায় সাধারণ মানুষের নাগালে বাইরে চলে গেছে।

জেলেদের ভাষ্য, ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে নদীতে গেলেও কাঙ্ক্ষিত ইলিশের দেখা মিলছে না। শূন্য হাতে ফিরতে হচ্ছে তাদের। অস্বাভাবিক আবহাওয়া ও ডুবোচরে মাছের বিচরণ কমে গেছে বলে ধারণা তাদের।

বিশেষজ্ঞদের মতে, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, অতিবৃষ্টি-অনাবৃষ্টি, তীব্র তাপপ্রবাহ, নদীর নাব্যতা হ্রাস ও দূষণের কারণে ইলিশের মাইগ্রেশনে বড় বাধা তৈরি হয়েছে। ফলে ডিম ছাড়তে মা ইলিশ মিঠাপানির নদীতে আসতে পারছে না। এছাড়া জাটকা ধ্বংস, বাধাজাল ও কারেন্ট জালের ব্যবহার এই সংকট আরও বাড়াচ্ছে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত