বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য, শিক্ষা, প্রযুক্তি ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়াতে চায় আলজেরিয়া। বৃহস্পতিবার আলজেরিয়া দূতাবাস আয়োজিত ১৯৬০-এর গণবিক্ষোভ স্মরণ অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রদূত আব্দেলওয়াহাব সাইদানি এসব কথা বলেন।
আলজেরিয়ার স্বাধীনতা সংগ্রামের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় ১৯৬০ সালের বিক্ষোভ দিবস উপলক্ষ্যে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ঢাকার আলজেরিয়া দূতাবাস। অনুষ্ঠানের শুরুতে আলজেরিয়ার জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। ১৯৬০ সালের বিক্ষোভে প্রাণ হারানো শহীদদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করেন উপস্থিত অতিথিরা। এরপর পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত করা হয়।
রাষ্ট্রদূত সাইদানি তার বক্তব্যে বলেন, শার্ল দ্য গোলের সীমিত স্বায়ত্তশাসনের ‘থার্ড ওয়ে’ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে আলজেরিয়ানরা যে বিক্ষোভে রাস্তায় নেমেছিলেন, তা স্বাধীনতা আন্দোলনে এক যুগান্তকারী মোড় এনে দেয়। ফরাসি বাহিনীর দমন-পীড়ন, গণগ্রেপ্তার ও হত্যাকাণ্ড সেই আন্দোলনকে আরও তীব্র করে এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আলজেরিয়ার দাবি আরও জোরালোভাবে তুলে ধরে।
রাষ্ট্রদূত সাইদানি জানান, ১১ ডিসেম্বরের বিক্ষোভ আলজেরিয়ার জাতীয় ঐক্যকে সুদৃঢ় করে। পরবর্তীতে জাতিসংঘ আলজেরিয়ার আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের স্বীকৃতি দেয় এবং ধারাবাহিক রাজনৈতিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে ফ্রান্স আলোচনায় বসতে বাধ্য হয়। শেষ পর্যন্ত আলজেরিয়া স্বাধীনতা অর্জন করে।
তিনি বর্তমান আলজেরিয়ার উন্নয়ন, উদ্ভাবন, যুবশক্তির বিকাশ এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। পাশাপাশি বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সঙ্গে আলজেরিয়ার লড়াইয়ের মিল তুলে ধরে দুই দেশের কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদারের আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, যে সম্মান এবং আত্মনির্ভরতায় ভিত্তি করে দুই দেশের মধ্যে শক্তিশালী সম্পর্ক গড়ে উঠেছে তা অব্যাহত রাখতে হবে। বাংলাদেশের সঙ্গে বাণিজ্য, শিক্ষা, প্রযুক্তি ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়াতে চায় আলজেরিয়া।
তিনি আলজেরিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে অব্যাহত সহযোগিতার আহ্বান জানান, বিশেষ করে বাণিজ্য, শিক্ষা, প্রযুক্তি এবং নবায়নযোগ্য শক্তির ক্ষেত্রে, এবং দুই দেশের মধ্যে স্থায়ী বন্ধুত্বের প্রতি শ্রদ্ধা জানান।
অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে প্রদর্শিত হয়, ১৯৬০ সালের ১১ ডিসেম্বর বিক্ষোভ নিয়ে নির্মিত একটি প্রামাণ্যচিত্র। এতে আলজেরিয়ার স্বাধীনতার জন্য আত্মদানকারী বীরদের স্মরণ করা হয়।
আলজেরিয়া দূতাবাস জানায়, কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়িয়ে বাংলাদেশ ও আলজেরিয়া বন্ধুত্ব আরও গভীর করতে তাদের উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে।

