জুলাইয়ে সারাদেশে বাড়লেও তিন বিভাগে কমেছে বৃষ্টি

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ০৪ আগস্ট ২০২৫, ২১: ৪২

চলতি বছরের জুলাই মাসে সারাদেশে স্বাভাবিকের চেয়ে ২৩ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এদিকে গত কয়েকদিনের বৃষ্টিতে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৪ ডিগ্রিতে নামলেও গরমের দাপট এখনো বিদ্যমান। এরমধ্যেই গত ২৪ ঘণ্টায় নীলফামারীর সৈয়দপুরে সর্বোচ্চ ১৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

সংস্থাটি জানায়, বাংলাদেশে সাধারণত জুলাই মাসেই সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়। জুলাই মাসে গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৫২৩ মিলিমিটার। তবে এবার সারাদেশে স্বাভাবিকের চেয়ে ২৩ দশমিক ৫ শতাংশ বেশি বৃষ্টি হলেও রংপুরে ৩৮ দশমিক ১, ময়মনসিংহে ০ দশমিক ৫ এবং সিলেটে ৭ দশমিক ৯ শতাংশ কম বৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া অন্যান্য বিভাগে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে।

এছাড়া দপ্তরটি দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাসে জানিয়েছে, চলতি আগস্ট মাসে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হতে পারে। এ মাসে সাগরে এক থেকে দুটি লঘুচাপ এবং এরমধ্যে একটি মৌসুমি নিম্নচাপে রূপ নিতে পারে। তবে ঘুর্ণিঝড়ের কোনো সম্ভাবনা নেই।

এদিকে সক্রিয় মৌসুমি বায়ু বর্তমানে উত্তরাঞ্চলে বেশি বৃষ্টি ঝরাচ্ছে। এ ধারা আগামী ৩ থেকে ৪দিন অব্যাহত থাকতে পারে বলে আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে।

সহকারী আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেসা স্বাক্ষরিত এক সতর্কবার্তায় সংস্থাটি জানিয়েছে, সক্রিয় দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে রোববার দুপুর ২ টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় রাজশাহী, রংপুর, ঢাকা, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় ভারী থেকে অতি ভারী বর্ষণ হতে পারে।

সংস্থাটির মতে, ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তা ভারি এবং ৮৮ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি রেকর্ড হলে সেটিকে বলা হয়ে থাকে অতিভারি বৃষ্টিপাত।

সোমবার রাতে আবহাওয়াবিদ মো. তরিফুল নেওয়াজ কবির আমার দেশকে বলেন, বৃষ্টিপাতের এ ধারা আরো কয়েকদিন অব্যাহত থাকতে পারে। তবে আগের দেওয়া ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কবার্তার সময় পার হওয়ার পর পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে নতুন সতর্কবার্তা দেওয়া হতে পারে।

সোমবার সংস্থাটির পূর্বাভাসে আবহাওয়ার সিনপটিক অবস্থা সম্পর্কে বলা হয়, মৌসুমি বায়ুর অক্ষের বর্ধিতাংশ রাজস্থান, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল হয়ে আসাম পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের উপর সক্রিয় এবং উত্তর বঙ্গোপসাগরে মাঝারি অবস্থায় রয়েছে।

সোমবার সন্ধ্যা ৬টায়, এর আগের ২৪ ঘণ্টায় আবহাওয়া অধিদপ্তরের ৫১টি সেন্টার এলাকায় তাপমাত্রা ও বৃষ্টিপাতের পরিমাণ রেকর্ড ও পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, দেশের সব এলাকায় কমবেশি বৃষ্টি হয়েছে। তবে সিলেট রংপুর ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগে বেশি বৃষ্টি হয়েছে। এরমধ্যে সর্বোচ্চ নীলফামারীর সৈয়দপুরে ১৮৫ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়। এ দিন ঢাকায় বৃষ্টি হয়েছে ৬৪ মিলিমিটার। রোববার রাতভর বৃষ্টির পর সোমবার সারাদিন থেমে থেমে রাজধানীতে বৃষ্টি হয়েছে। এতে নগরজীবনে অনেকটাই স্থবিরতা দেখা দেয়। এছাড়া বৃষ্টির কারণে দিনভর নগরীর ব্যস্ত এলাকাসমূহে তীব্র যানজটও লক্ষ্য করা গেছে।

প্রসঙ্গত, ২৪ ঘণ্টায় ১ থেকে ১০ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তা হালকা, ১১ থেকে ২২ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে মাঝারি, ২৩ থেকে ৪৩ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে মাঝারি ধরনের ভারি, ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তা ভারি এবং ৮৮ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি রেকর্ড হলে সেটিকে বলা হয়ে থাকে অতিভারি বৃষ্টিপাত।

অন্যদিকে তাপমাত্রা ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত থাকলে তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ বলা হয়। তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তা মাঝারি তাপপ্রবাহ। তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৪১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তীব্র তাপপ্রবাহ ধরা হয়। তাপমাত্রা ৪২-এর বেশি হলে তা অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বলে গণ্য হয়।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিষয়:

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত