কনকনে শীতে কাঁপছে রাজধানীসহ সারা দেশের মানুষ। তাপমাত্রা কমে ঘনকুয়াশা বেড়ে যাওয়া এবং উত্তরের দিকে থেকে ঠাণ্ডা বাতাস প্রবাহিত হওয়ায় শীতের অনুভূতি বেড়েছে। আগামী ৫দিনে তাপমাত্রা আরো কমতে পারে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে। তবে দেশের কোথাও শৈত্য প্রবাহ নেই।
সিনপটিক অবস্থা সম্পর্কে সংস্থাটি বলছে, উপমহাদেশীয় উচ্চচাপ বলয়ের বর্ধিতাংশ পশ্চিমবঙ্গ এবং তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থান করছে। মৌসুমের স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে, এর বর্ধিতাংশ উত্তরপূর্ব বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এতে অস্থায়ীভাবে আংশিক মেঘলা আকাশসহ সারা দেশের আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। তবে মধ্যরাত থেকে সারা দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে। সেই সাথে সারা দেশে রাতের তাপমাত্রা ১ থেকে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে এবং দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে। এতে ধীরে ধীরে শীতের অনুভূতি আরো বাড়তে পারে।
বুধবার রাত পৌনে ৯টার দিকে আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক আমার দেশকে বলেন, দেশের কোথাও শৈত্য প্রবাহ নেই। তবে ঘনকুয়াশা বেড়ে যাওয়া এবং উত্তরের দিকে থেকে ঠান্ডা বাতাস প্রবাহিত হওয়ায় শীতের অনুভূতি বেড়েছে। ধীরে ধীরে তাপমাত্রা আরো কমে শীতের অনুভূতি বাড়তে পারে। এছাড়া আগামী মাসের শুরুতে তীব্র শীত অনুভূত হতে পারে।
বুধবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয় চুয়াডাঙ্গা জেলায়। এছাড়াও উত্তরের জেলাগুলোতে সর্বনিম্ন ১১ থেকে ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়। এদিন রাজধানীতে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় ১৫ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
দেশের কোথাও শৈত্যপ্রবাহ নেই এরপরও শীত বেশি। বুধবার সন্ধ্যার পর থেকে রাজধানীসহ সারা দেশে হিমেল হাওয়া বইছে, সাথে ঘন কুয়াশা। ঘন কুয়াশার কারণে দিনের বেশির ভাগ সময় সূর্যের আলো দেখা না দেওয়ায় শীত বেশি অনুভূত হচ্ছে। এ অবস্থা আরো কয়েকদিন থাকতে পারে এমনটি জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
কনকনে শীতে খেটে খাওয়া ও নিম্ন আয়ের মানুষের কষ্টে বেড়েছে। সন্ধ্যার পর রাজধানীর কাওয়ান বাজার, ফার্মগেট, বাংলামোটর, প্রেসক্লাব, পল্টন ও গুলিস্তান রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অনেক হতদরিদ্র মানুষকে শীতে জবুথবু হয়ে রাস্তার ধারে বসে থাকতে দেখা গেছে। আর হঠাৎ ঠান্ডা পড়ায় শীতের কাপড়ের দোকানে ও ফুটপাতের দোকানে বেশ ভিড় লক্ষ্য করা গেছে।
কারওয়ান বাজারের মসজিদের সামনে ফুটপাতের ব্যবসায়ী আলী আহসান বলেন, সন্ধ্যার পর থেকে শীতের অনুভূতি বেড়ে যাওয়ায় দোকানে ক্রেতাদের ভিড় বেড়েছে। বিক্রিও আগের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে।
প্রসঙ্গত, দেশের কোনো এলাকায় তাপমাত্রা সর্বনিম্ন ৮ দশমিক ১ থেকে ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকলে আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভাষায় তাকে মৃদু শৈত্যপ্রবাহ বলে। একইভাবে তাপমাত্রা ৬ দশমিক ১ থেকে ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তাকে বলা হয় মাঝারি শৈত্যপ্রবাহ; তাপমাত্রা ৪ দশমিক ১ থেকে ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তা তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বলে গণ্য করা হয়; আর তাপমাত্রা ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে গেলে তাকে অতি তীব্র শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়। এদিক থেকে বর্তমানে দেশের কোথাও শৈত্যপ্রবাহ নেই; কিন্তু এরপরও বেশি শীত অনুভূত হচ্ছে।
আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

