মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বৃষ্টির সঙ্গে বাড়ছে এডিস মশা

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ০৮ জুন ২০২৫, ১৩: ০৬

দেশে মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি বাতাসে আর্দ্রতা বেড়েছে। যা এডিস মশার প্রজনন ও বংশবৃদ্ধির জন্য সহায়ক বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। এতে ডেঙ্গুর প্রকপ আরও বাড়ার শঙ্কা রয়েছে। ইতোমধ্যে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে ২৬ জন দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।

আবহাওয়াবিদদের মতে সাধারণত পয়লা জুন থেকে দেশে মৌসুমি বায়ু প্রবেশ করে। কিন্তু এবার সেটি গত ২৪ মে কক্সবাজারের টেকনাফ উপকূলে এ বায়ু প্রবেশ করেছে। এর আগে সর্বশেষ ২০০৯ সালে জুনের আগে মৌসুমি বায়ু প্রবেশ করেছিল বাংলাদেশে। সে হিসেবে ১৬ বছর পরে এবার সপ্তাহখানেক আগে প্রবেশ করল মৌসুমি বায়ু। এটি মূলত জলবায়ুর পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে হয়ে থাকে; যা দেশের কৃষি ও পরিবেশের জন্য ইতিবাচক।

বিজ্ঞাপন

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন নেসা বলেন, মৌসুমি বায়ু প্রবেশের ফলে সারা দেশে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেড়ে ভারি বর্ষণ হতে পারে। এতে দেশে বন্যাও দেখা দিতে পারে। এর অন্য একটি নেতিবাচক দিকও আছে। যখন বৃষ্টি দরকার হবে তখন বৃষ্টিহীন হয়ে পড়তে পারে দেশ।

বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি বাতাসে আর্দ্রতা বাড়ায় এডিস মশার প্রজনন ও বংশবৃদ্ধি বেড়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কীটতত্ত্ব বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘শীতকালে তাপমাত্রা সহ্যক্ষমতার বাইরে থাকায় মশার প্রজননক্ষমতা কমে যায়। ফলে বংশবৃদ্ধিও কমে। অতি তাপমাত্রায়ও একই থাকে। তবে বৃষ্টি হলে, বাতাস ভেজা থাকলে মশার প্রজননক্ষমতা বাড়ে। বৃষ্টিপাতের সময়ে বিভিন্ন স্থানে পানি জমে থাকে, যা মশার প্রজননের জন্য খুবই সহায়ক। এ সময়ে মশা সর্বোচ্চ বংশবৃদ্ধি করে। আর ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশা। তাই মশা যত বাড়বে ডেঙ্গুর প্রবণতা তত বাড়বে।’

এদিকে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, নতুন করে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে ২৬ জন দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে ঢাকা বিভাগে (সিটি করপোরেশনের বাইরে) ১০ জন, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে চারজন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে তিনজন, চট্টগ্রাম বিভাগে তিনজন ও ময়মনসিংহ বিভাগে দুজন রয়েছে। এছাড়া ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি ১৭ রোগী সুস্থ হওয়ায় হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে।

বিজ্ঞপ্তি জানানো হয়, চলতি বছরে এ পর্যন্ত ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে ৪ হাজার ৯৩০ জন। এর মধ্যে ৫৯ দশমিক ৫ শতাংশ পুরুষ এবং ৪০ দশমিক ৫ শতাংশ নারী। তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ২৩ জনের। আর সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র পেয়েছে ৪ হাজার ৪৮৬ জন।

মৌসুমি বায়ুর শুরু থেকে এডিস মশার বংশবৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে বলে জানিয়েছেন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ডা. লেলিন চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘বৃষ্টির জমে থাকা পানি, অনুকূল তাপমাত্রা ও বাতাসের আর্দ্রতায় মশার প্রজননক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে। হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীও বেড়েছে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত