প্রফেসর ড. শাহ জে মিয়া
ভুয়া খবর বা ভুল তথ্যে ভরা খবর আসলে কী এবং এগুলো আমাদের সমাজে কী ধরনের বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে, তা নিয়েই আজকের এই আলোচনা। এটা জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এজন্য যে, ভুয়া খবর এখন সমাজে অন্যতম মারণাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়াসহ সর্বত্রই এ বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা চলছে। ভুয়া খবরের বিস্তৃতি এতটাই ডালপালাযুক্ত যে এটাকে সাধারণ মানুষের বুদ্ধি বা মেধা দিয়ে শনাক্ত ও রোধ করা কঠিন। ভুয়া খবরের উৎসগুলোর মধ্যেও শক্তিশালী বন্ধন থাকে, যা সাধারণভাবে বোঝা বা উদ্ঘাটন করা প্রায় অসম্ভব। তাই ভুয়া খবরের সূত্র ও এর বিস্তৃতি বন্ধ করা এবং এর উৎসগুলোর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার কীভাবে করতে হবে, তা জানা যতটা জরুরি, তার থেকে বেশি জরুরি এর প্রয়োগ সম্পর্কে জানা।
প্রথমেই আমাদের জানা প্রয়োজন ভুয়া খবরটা আসলে কী। ভুয়া খবর এমন একটি খবর বা সংবাদ, যা কিছু অসত্য বা অর্ধসত্য তথ্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তথ্যের উৎসটাও অসত্য বা অর্ধসত্য বা অতিরঞ্জিত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে থাকে। ভুয়া খবর বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বর্ণনা-সংবলিত খবর উপস্থাপিত হয় মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকর তথ্যের ওপর ভিত্তি করে। যেহেতু সংবাদমাধ্যমকে সমাজের দর্পণ হিসেবে দেখা হয়, তাই সাধারণ মানুষ মনে করে, সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত সব তথ্যই সত্য। এক্ষেত্রে আমরা বিচার-বিশ্লেষণ অথবা সত্যতা যাচাইকে প্রাধান্য দিই না। কিন্তু ভুয়া খবর এতটাই বিপজ্জনক যে, কিছু ক্ষেত্রে তা সমাজ ও সভ্যতাকে মুহূর্তের মধ্যে ওলটপালট করে দিতে পারে। ফলে ভুয়া খবরের প্রতিক্রিয়ায় জনমনে অস্বস্তি বা বিভ্রান্তি এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে অযাচিত প্রভাব পড়ে। বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম যখন অন্যতম প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে, তখন এর মাধ্যমে ভুয়া খবরের বিস্তৃতি রোধে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো আধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োজন অনস্বীকার্য।
বর্তমানে বেশিরভাগ সংবাদপত্র অনলাইন ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয় এবং একইসঙ্গে প্রতিটি সংবাদমাধ্যমই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর নিজস্ব পেজগুলোয় দৈনন্দিন খবর হিসেবে প্রচারিত হয়। ডিজিটাল মিডিয়ার কল্যাণে সদ্য ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো দ্রুতই অনলাইন ভার্সন অথবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করা এখন সহজ কাজ। তাই বেশিরভাগ সময় এটি সংবাদমাধ্যমগুলোর জন্য সত্যের সঙ্গে মিথ্যার মিশ্রণের সুযোগ করে দেয়।
সাংবাদিকতার স্বাধীনতা, এর মান ও দেশীয় বহুল প্রচারিত কিছু সংবাদপত্রকে সরকারিভাবে আর্কাইভ রেকর্ডের অংশ হিসেবে দেখা গেলেও ইন্টারনেটের জনপ্রিয়তার সঙ্গে সঙ্গে অনেক সংবাদপত্র এখন সম্পূর্ণ ডিজিটাল হয়ে গেছে। বিশ্বব্যাপী এই সংবাদমাধ্যমগুলোর অনলাইন সংস্করণকে এখন প্রধান সংবাদমাধ্যম হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে, যা বেশিরভাগ পাঠক ব্যবহার করেন। তাদের মুদ্রিত সংস্করণটি অনেকাংশে গৌণ ভূমিকা পালন করছে, কেননা বর্তমানে অল্পসংখ্যক গ্রাহকই মুদ্রিত পত্রিকা পড়েন।
বর্তমানে ডিজিটাল টেকনোলজি ও হ্যান্ডহেল্ড ডিভাইস ব্যবহার করে যে কেউ যেকোনো কিছু খবর হিসেবে প্রকাশ, সম্প্রসারণ ও সম্পাদনা করতে পারে। সম্পাদকদের প্রত্যক্ষ ভূমিকা এখন পরোক্ষ ভূমিকায় পর্যবসিত হয়েছে। আগে সম্পাদকরা খবর প্রকাশের আগে যাচাই-বাছাই করে অসত্য খবরগুলোকে আলাদা করতেন এবং সঠিক খবরই প্রকাশ করতেন। কিন্তু এখন সত্য ও অসত্য সবই খবরের অংশে পরিণত হয়ে যাচ্ছে, যেটা বিভ্রান্তিকর তথ্য (ডিসইনফরমেশন) তৈরিতে সহায়ক।
জার্মানির বিখ্যাত পরিসংখ্যান প্রতিষ্ঠান স্ট্যাটিস্টার ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারির এক রিপোর্ট অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি মিথ্যা সংবাদ প্রচারিত হয় যে জনপ্রিয় পাঁচটি বিষয়ের ওপর, সেগুলো হলো—রাজনীতি, কোভিড-১৯, অর্থনীতি ও দৈনন্দিন জীবনযাত্রার খরচ, ইসরাইল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ ও ইউক্রেন যুদ্ধ-সম্পর্কিত বিষয়। এসব বিষয়ভিত্তিক খবর মূলত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর দ্বারাই বিস্তৃত হয়ে থাকে। স্ট্যাটিস্টার আরেক রিপোর্ট অনুযায়ী, বহুল জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মিথ্যা খবর প্রকাশিত হয় টিকটকের মাধ্যমে। এর পরেই আছে এক্স, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, লিংকডইন ও হোয়াটসঅ্যাপ।
কী কী উপায়ে মিথ্যা খবর প্রকাশে বাধা দেওয়া সম্ভব, তা নিয়ে আলোচনা করা প্রয়োজন। স্ট্যাটিস্টার মতে, জটিল খবরের সহজ ও ভালো ব্যাখ্যা প্রদান, সমাধান বা গঠনমূলক সাংবাদিকতা, অনুপ্রেরণামূলক ও ইতিবাচক মানবিক খবর প্রকাশ, পেশাদার সাংবাদিক দল দ্বারা খবর সংগ্রহ এবং সম্পাদনা এর অন্যতম উপায় হতে পারে। সেইসঙ্গে সহজ ভাষা বা সুলভ বিন্যাসের মাধ্যমে খবর প্রকাশ এবং বস্তুনিষ্ঠ খবর প্রকাশের মাধ্যমেই মিথ্যা খবরের প্রচার কমানো সম্ভব।
একটি কথা না বললেই নয়, বিভ্রান্তিকর বা ভুয়া খবর প্রতিরোধে উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জগুলোর ব্যাপ্তি অনেক বেশি। কারণ এর সঙ্গে বিভিন্ন সামাজিক পক্ষপাত জড়িত। এসব চ্যালেঞ্জের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিপুলসংখ্যক টেক্সট, মিক্সড ডেটা, ভিডিও ও ছবির মধ্য থেকে সঠিক ও সত্য ডেটা খুঁজে বের করা।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা হচ্ছে এমন একটা প্রযুক্তি, যেটা অসংখ্য মানুষের মস্তিষ্কের বিশ্লেষণ ক্ষমতা ধারণ করতে পারে। সেই বিশ্লেষণ ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে বিপুলসংখ্যক ডেটা, যেগুলো সংবাদমাধ্যম এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে উদ্ভূত, সেগুলো সঠিকভাবে প্রি-প্রসেস, আইডেন্টিফিকেশন ও ক্লাসিফিকেশন করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বলতে পারে, কোনটি সত্য এবং কোনটি ভুয়া বা অসত্য উৎস থেকে তৈরি।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার টেকনিকগুলো সাধারণত তিন ধরনের হয়ে থাকে—১. বিষয়বস্তুভিত্তিক পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে সাধারণত ভাষাগত বিশ্লেষণ, যেমন অনুভূতি, ব্যাকরণ, শব্দের ধ্বনি বিশ্লেষণ অথবা গভীর শিক্ষার মডেল, যেগুলো কিনা সিএনএন, আরএনএন অথবা ট্রান্সফরমারের মতো অ্যালগোরিদম দিয়ে পরিচালিত। ২. প্রতিক্রিয়াভিত্তিক পদ্ধতি, যেখানে পাঠকদের প্রতিক্রিয়া, যেমন কমেন্ট, শেয়ার, অথবা এর সঙ্গে খবরের সম্পৃক্ততার ধরন ও প্রচার কাঠামো বিশ্লেষণ করা হয়। ৩. হাইব্রিড পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে শক্তিশালী শনাক্তকরণের জন্য বিষয়বস্তু ও পাঠকদের প্রতিক্রিয়া একত্র করা হয়।
এই তিনটি টেকনিকের মাধ্যমে ভুয়া খবরের উৎস শনাক্ত ও প্রতিরোধ করার জন্য নানা ধরনের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অ্যালগোরিদম ব্যবহার করা হয়। তার মধ্যে রয়েছে নেইভ বায়াস, ডিসিশন ট্রি, রেন্ডম ফরেস্টের মতো মেশিন লার্নিং অ্যালগোরিদম। এই অ্যালগরিদমগুলো প্রথমে বিপুলসংখ্যক সংবাদ বাক্যমালাকে ছোট ছোট বাক্যে ভাগ করা থেকে শুরু করে এবং পাশাপাশি শব্দের মধ্যে সম্পর্কগুলো নির্ণয় করতে পারে। সেই শব্দভিত্তিক সম্পর্কগুলোর ওপর ভিত্তি করে ভুয়া খবরের উৎস, সম্পর্ক ও সম্পৃক্ততা যাচাই-বাছাইয়ের নিরিখে এর প্রভাব সমাজে কতটুকু পড়তে পারে এবং কোন কোন ক্ষেত্রে তার ব্যাপ্তি কীরকম, তা নির্ণয় করা সম্ভব।
মেশিন লার্নিং অ্যালগোরিদমগুলোর পাশাপাশি ডিপ লার্নিং অ্যালগরিদম, যেমন কনভোলিউশনাল নিউরাল নেটওয়ার্ক ও রিকারেন্ট নিউরাল নেটওয়ার্ক আরও গভীরভাবে বিভিন্ন ধরনের খবরের প্যাটার্ন, সময়কাল, বিষয়বস্তু, সামাজিক প্রেক্ষাপট এবং খবর প্রকাশক ও পাঠকদের কার্যকলাপের ওপর ভিত্তি করে ভুয়া খবরের উৎপত্তি, বিস্তার ও প্রতিকারের উপায় খুঁজে বের করতে পারে। তারই সঙ্গে ছবি, অডিও ও ভিডিওর মতো ডেটাকে বিশ্লেষণ করে তার সত্যতা নির্ণয় করতে পারে। সবশেষে হাইব্রিড টেকনিকে বেশকিছু বৈশিষ্ট্যকে বিশ্লেষণ করা হয়, যেমন সামাজিক নেটওয়ার্ক-ভিত্তিক খবর ও এসব খবরের ভাষাগত বিশ্লেষণ, নেটওয়ার্ক-ভিত্তিক বৈশিষ্ট্য এবং বিষয়বস্তুভিত্তিক বৈশিষ্ট্যের বিশ্লেষণ। বিভিন্ন ধরনের ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিং অ্যালগরিদমের সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রতারণামূলক সংবাদ ও নিবন্ধ শনাক্ত করা যায়।
আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ভুয়া খবর শনাক্ত করার জন্য বেশকিছু উন্নত মানের সফটওয়্যার সারা পৃথিবীর সংবাদমাধ্যম প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংবাদ পর্যবেক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবহার করে থাকে। সেগুলো হলো—Facticity.AI, Grover, Sensity AI, RevEye, Factiverse, McAfee’s Deepfake Detector, Pinpoint, Fact Check Explorer ও google Gemini। একটি কথা বলে রাখতে হচ্ছে, এই টুলসগুলো ব্যবহারের জন্য সংবাদমাধ্যমকর্মীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ অপরিহার্য। এই প্রশিক্ষণগুলো তিন থেকে ছয় মাসের কোর্স কারিকুলাম-সম্পর্কিত হতে পারে। আজকের আলোচনায় আমরা শুধু তিনটা টুলসের ওপর আলোকপাত করছি।
Facticity.AI: এই টুলটি মূলত সিঙ্গাপুরভিত্তিক একটি স্টার্ট-আপ প্রজেক্টের ফসল। Facticity.AI হলো একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাচালিত ফ্যাক্ট-চেকিং টুল, যা ভুল তথ্য শনাক্ত করার জন্য খবরের ভাষা ও ভিডিও কনটেন্ট বিশ্লেষণ করে থাকে। এই টুলের বেটা ভার্সনটি চালু হয় ২০২৪ সালের জুন মাসে। এটি ৯২ শতাংশ নির্ভুলতার হার নির্ণয় করে, যা Bing CoPilot ও Originality.AI-এর মতো প্রতিযোগীদের ছাড়িয়ে গেছে। এই টুলটি রিয়েল-টাইম পরিস্থিতিতে পরীক্ষা করা হয়েছে। যেমন একটি কেস স্টাডিতে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে প্রার্থীদের মধ্যে বিতর্কের সময় নির্বাচন প্রার্থীর দাবি করা প্রায় ২৫০টি দাবির সত্যতা এই টুলটি রিয়েল টাইমে যাচাই করতে পেরেছে।
ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের দ্বারা তৈরি ‘গ্রোভার’ হলো আরেকটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুল, যা জাল খবর তৈরি ও শনাক্ত করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুল বিষয়বস্তুর শৈলীগত সূক্ষ্মতা বোঝার মাধ্যমে উচ্চ নির্ভুলতার সঙ্গে কৃত্রিম সংবাদ নিবন্ধগুলো শনাক্ত করতে পারে। ‘সেন্সিটি এআই’ আরেকটি জনপ্রিয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-চালিত টুল, যা সংবাদ পর্যবেক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবহার করে থাকে। ডিপফেক শনাক্তকরণে বিশেষজ্ঞ, সেন্সিটি এআই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-চালিত ছবি ও ভিডিও শনাক্তকরণের ওপর জোর দেয়। এই টুলটি ভিজ্যুয়াল ভুল তথ্যের উত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে ভিজ্যুয়াল মিডিয়ার অখণ্ডতা বজায় রাখার জন্য ব্যবহার করা হয়, যা সংবাদ পর্যবেক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলো এবং এর প্রভাব নির্ণয়কারী সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
লেখক : প্রফেসর অব বিজনেস অ্যানালিটিক্স; উপপরিচালক, সেন্টার ফর অ্যাপ্লাইড অ্যান্ড রেসপন্সিবল এআই, নিউক্যাসল ইউনিভার্সিটি, নিউ সাউথ ওয়েলস, অস্ট্রেলিয়া
ভুয়া খবর বা ভুল তথ্যে ভরা খবর আসলে কী এবং এগুলো আমাদের সমাজে কী ধরনের বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে, তা নিয়েই আজকের এই আলোচনা। এটা জানা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এজন্য যে, ভুয়া খবর এখন সমাজে অন্যতম মারণাস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়াসহ সর্বত্রই এ বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা চলছে। ভুয়া খবরের বিস্তৃতি এতটাই ডালপালাযুক্ত যে এটাকে সাধারণ মানুষের বুদ্ধি বা মেধা দিয়ে শনাক্ত ও রোধ করা কঠিন। ভুয়া খবরের উৎসগুলোর মধ্যেও শক্তিশালী বন্ধন থাকে, যা সাধারণভাবে বোঝা বা উদ্ঘাটন করা প্রায় অসম্ভব। তাই ভুয়া খবরের সূত্র ও এর বিস্তৃতি বন্ধ করা এবং এর উৎসগুলোর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার কীভাবে করতে হবে, তা জানা যতটা জরুরি, তার থেকে বেশি জরুরি এর প্রয়োগ সম্পর্কে জানা।
প্রথমেই আমাদের জানা প্রয়োজন ভুয়া খবরটা আসলে কী। ভুয়া খবর এমন একটি খবর বা সংবাদ, যা কিছু অসত্য বা অর্ধসত্য তথ্যের ওপর প্রতিষ্ঠিত। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তথ্যের উৎসটাও অসত্য বা অর্ধসত্য বা অতিরঞ্জিত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে থাকে। ভুয়া খবর বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বর্ণনা-সংবলিত খবর উপস্থাপিত হয় মিথ্যা বা বিভ্রান্তিকর তথ্যের ওপর ভিত্তি করে। যেহেতু সংবাদমাধ্যমকে সমাজের দর্পণ হিসেবে দেখা হয়, তাই সাধারণ মানুষ মনে করে, সংবাদমাধ্যমে প্রচারিত সব তথ্যই সত্য। এক্ষেত্রে আমরা বিচার-বিশ্লেষণ অথবা সত্যতা যাচাইকে প্রাধান্য দিই না। কিন্তু ভুয়া খবর এতটাই বিপজ্জনক যে, কিছু ক্ষেত্রে তা সমাজ ও সভ্যতাকে মুহূর্তের মধ্যে ওলটপালট করে দিতে পারে। ফলে ভুয়া খবরের প্রতিক্রিয়ায় জনমনে অস্বস্তি বা বিভ্রান্তি এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণে অযাচিত প্রভাব পড়ে। বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম যখন অন্যতম প্ল্যাটফর্মে পরিণত হয়েছে, তখন এর মাধ্যমে ভুয়া খবরের বিস্তৃতি রোধে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো আধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োজন অনস্বীকার্য।
বর্তমানে বেশিরভাগ সংবাদপত্র অনলাইন ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয় এবং একইসঙ্গে প্রতিটি সংবাদমাধ্যমই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর নিজস্ব পেজগুলোয় দৈনন্দিন খবর হিসেবে প্রচারিত হয়। ডিজিটাল মিডিয়ার কল্যাণে সদ্য ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো দ্রুতই অনলাইন ভার্সন অথবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করা এখন সহজ কাজ। তাই বেশিরভাগ সময় এটি সংবাদমাধ্যমগুলোর জন্য সত্যের সঙ্গে মিথ্যার মিশ্রণের সুযোগ করে দেয়।
সাংবাদিকতার স্বাধীনতা, এর মান ও দেশীয় বহুল প্রচারিত কিছু সংবাদপত্রকে সরকারিভাবে আর্কাইভ রেকর্ডের অংশ হিসেবে দেখা গেলেও ইন্টারনেটের জনপ্রিয়তার সঙ্গে সঙ্গে অনেক সংবাদপত্র এখন সম্পূর্ণ ডিজিটাল হয়ে গেছে। বিশ্বব্যাপী এই সংবাদমাধ্যমগুলোর অনলাইন সংস্করণকে এখন প্রধান সংবাদমাধ্যম হিসেবে উপস্থাপন করা হচ্ছে, যা বেশিরভাগ পাঠক ব্যবহার করেন। তাদের মুদ্রিত সংস্করণটি অনেকাংশে গৌণ ভূমিকা পালন করছে, কেননা বর্তমানে অল্পসংখ্যক গ্রাহকই মুদ্রিত পত্রিকা পড়েন।
বর্তমানে ডিজিটাল টেকনোলজি ও হ্যান্ডহেল্ড ডিভাইস ব্যবহার করে যে কেউ যেকোনো কিছু খবর হিসেবে প্রকাশ, সম্প্রসারণ ও সম্পাদনা করতে পারে। সম্পাদকদের প্রত্যক্ষ ভূমিকা এখন পরোক্ষ ভূমিকায় পর্যবসিত হয়েছে। আগে সম্পাদকরা খবর প্রকাশের আগে যাচাই-বাছাই করে অসত্য খবরগুলোকে আলাদা করতেন এবং সঠিক খবরই প্রকাশ করতেন। কিন্তু এখন সত্য ও অসত্য সবই খবরের অংশে পরিণত হয়ে যাচ্ছে, যেটা বিভ্রান্তিকর তথ্য (ডিসইনফরমেশন) তৈরিতে সহায়ক।
জার্মানির বিখ্যাত পরিসংখ্যান প্রতিষ্ঠান স্ট্যাটিস্টার ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারির এক রিপোর্ট অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি মিথ্যা সংবাদ প্রচারিত হয় যে জনপ্রিয় পাঁচটি বিষয়ের ওপর, সেগুলো হলো—রাজনীতি, কোভিড-১৯, অর্থনীতি ও দৈনন্দিন জীবনযাত্রার খরচ, ইসরাইল-ফিলিস্তিন যুদ্ধ ও ইউক্রেন যুদ্ধ-সম্পর্কিত বিষয়। এসব বিষয়ভিত্তিক খবর মূলত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর দ্বারাই বিস্তৃত হয়ে থাকে। স্ট্যাটিস্টার আরেক রিপোর্ট অনুযায়ী, বহুল জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি মিথ্যা খবর প্রকাশিত হয় টিকটকের মাধ্যমে। এর পরেই আছে এক্স, ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, লিংকডইন ও হোয়াটসঅ্যাপ।
কী কী উপায়ে মিথ্যা খবর প্রকাশে বাধা দেওয়া সম্ভব, তা নিয়ে আলোচনা করা প্রয়োজন। স্ট্যাটিস্টার মতে, জটিল খবরের সহজ ও ভালো ব্যাখ্যা প্রদান, সমাধান বা গঠনমূলক সাংবাদিকতা, অনুপ্রেরণামূলক ও ইতিবাচক মানবিক খবর প্রকাশ, পেশাদার সাংবাদিক দল দ্বারা খবর সংগ্রহ এবং সম্পাদনা এর অন্যতম উপায় হতে পারে। সেইসঙ্গে সহজ ভাষা বা সুলভ বিন্যাসের মাধ্যমে খবর প্রকাশ এবং বস্তুনিষ্ঠ খবর প্রকাশের মাধ্যমেই মিথ্যা খবরের প্রচার কমানো সম্ভব।
একটি কথা না বললেই নয়, বিভ্রান্তিকর বা ভুয়া খবর প্রতিরোধে উল্লেখযোগ্য চ্যালেঞ্জগুলোর ব্যাপ্তি অনেক বেশি। কারণ এর সঙ্গে বিভিন্ন সামাজিক পক্ষপাত জড়িত। এসব চ্যালেঞ্জের মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য হলো, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিপুলসংখ্যক টেক্সট, মিক্সড ডেটা, ভিডিও ও ছবির মধ্য থেকে সঠিক ও সত্য ডেটা খুঁজে বের করা।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা হচ্ছে এমন একটা প্রযুক্তি, যেটা অসংখ্য মানুষের মস্তিষ্কের বিশ্লেষণ ক্ষমতা ধারণ করতে পারে। সেই বিশ্লেষণ ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে বিপুলসংখ্যক ডেটা, যেগুলো সংবাদমাধ্যম এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে উদ্ভূত, সেগুলো সঠিকভাবে প্রি-প্রসেস, আইডেন্টিফিকেশন ও ক্লাসিফিকেশন করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বলতে পারে, কোনটি সত্য এবং কোনটি ভুয়া বা অসত্য উৎস থেকে তৈরি।
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার টেকনিকগুলো সাধারণত তিন ধরনের হয়ে থাকে—১. বিষয়বস্তুভিত্তিক পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে সাধারণত ভাষাগত বিশ্লেষণ, যেমন অনুভূতি, ব্যাকরণ, শব্দের ধ্বনি বিশ্লেষণ অথবা গভীর শিক্ষার মডেল, যেগুলো কিনা সিএনএন, আরএনএন অথবা ট্রান্সফরমারের মতো অ্যালগোরিদম দিয়ে পরিচালিত। ২. প্রতিক্রিয়াভিত্তিক পদ্ধতি, যেখানে পাঠকদের প্রতিক্রিয়া, যেমন কমেন্ট, শেয়ার, অথবা এর সঙ্গে খবরের সম্পৃক্ততার ধরন ও প্রচার কাঠামো বিশ্লেষণ করা হয়। ৩. হাইব্রিড পদ্ধতি। এই পদ্ধতিতে শক্তিশালী শনাক্তকরণের জন্য বিষয়বস্তু ও পাঠকদের প্রতিক্রিয়া একত্র করা হয়।
এই তিনটি টেকনিকের মাধ্যমে ভুয়া খবরের উৎস শনাক্ত ও প্রতিরোধ করার জন্য নানা ধরনের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার অ্যালগোরিদম ব্যবহার করা হয়। তার মধ্যে রয়েছে নেইভ বায়াস, ডিসিশন ট্রি, রেন্ডম ফরেস্টের মতো মেশিন লার্নিং অ্যালগোরিদম। এই অ্যালগরিদমগুলো প্রথমে বিপুলসংখ্যক সংবাদ বাক্যমালাকে ছোট ছোট বাক্যে ভাগ করা থেকে শুরু করে এবং পাশাপাশি শব্দের মধ্যে সম্পর্কগুলো নির্ণয় করতে পারে। সেই শব্দভিত্তিক সম্পর্কগুলোর ওপর ভিত্তি করে ভুয়া খবরের উৎস, সম্পর্ক ও সম্পৃক্ততা যাচাই-বাছাইয়ের নিরিখে এর প্রভাব সমাজে কতটুকু পড়তে পারে এবং কোন কোন ক্ষেত্রে তার ব্যাপ্তি কীরকম, তা নির্ণয় করা সম্ভব।
মেশিন লার্নিং অ্যালগোরিদমগুলোর পাশাপাশি ডিপ লার্নিং অ্যালগরিদম, যেমন কনভোলিউশনাল নিউরাল নেটওয়ার্ক ও রিকারেন্ট নিউরাল নেটওয়ার্ক আরও গভীরভাবে বিভিন্ন ধরনের খবরের প্যাটার্ন, সময়কাল, বিষয়বস্তু, সামাজিক প্রেক্ষাপট এবং খবর প্রকাশক ও পাঠকদের কার্যকলাপের ওপর ভিত্তি করে ভুয়া খবরের উৎপত্তি, বিস্তার ও প্রতিকারের উপায় খুঁজে বের করতে পারে। তারই সঙ্গে ছবি, অডিও ও ভিডিওর মতো ডেটাকে বিশ্লেষণ করে তার সত্যতা নির্ণয় করতে পারে। সবশেষে হাইব্রিড টেকনিকে বেশকিছু বৈশিষ্ট্যকে বিশ্লেষণ করা হয়, যেমন সামাজিক নেটওয়ার্ক-ভিত্তিক খবর ও এসব খবরের ভাষাগত বিশ্লেষণ, নেটওয়ার্ক-ভিত্তিক বৈশিষ্ট্য এবং বিষয়বস্তুভিত্তিক বৈশিষ্ট্যের বিশ্লেষণ। বিভিন্ন ধরনের ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিং অ্যালগরিদমের সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রতারণামূলক সংবাদ ও নিবন্ধ শনাক্ত করা যায়।
আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে ভুয়া খবর শনাক্ত করার জন্য বেশকিছু উন্নত মানের সফটওয়্যার সারা পৃথিবীর সংবাদমাধ্যম প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি সংবাদ পর্যবেক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবহার করে থাকে। সেগুলো হলো—Facticity.AI, Grover, Sensity AI, RevEye, Factiverse, McAfee’s Deepfake Detector, Pinpoint, Fact Check Explorer ও google Gemini। একটি কথা বলে রাখতে হচ্ছে, এই টুলসগুলো ব্যবহারের জন্য সংবাদমাধ্যমকর্মীদের বিশেষ প্রশিক্ষণ অপরিহার্য। এই প্রশিক্ষণগুলো তিন থেকে ছয় মাসের কোর্স কারিকুলাম-সম্পর্কিত হতে পারে। আজকের আলোচনায় আমরা শুধু তিনটা টুলসের ওপর আলোকপাত করছি।
Facticity.AI: এই টুলটি মূলত সিঙ্গাপুরভিত্তিক একটি স্টার্ট-আপ প্রজেক্টের ফসল। Facticity.AI হলো একটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাচালিত ফ্যাক্ট-চেকিং টুল, যা ভুল তথ্য শনাক্ত করার জন্য খবরের ভাষা ও ভিডিও কনটেন্ট বিশ্লেষণ করে থাকে। এই টুলের বেটা ভার্সনটি চালু হয় ২০২৪ সালের জুন মাসে। এটি ৯২ শতাংশ নির্ভুলতার হার নির্ণয় করে, যা Bing CoPilot ও Originality.AI-এর মতো প্রতিযোগীদের ছাড়িয়ে গেছে। এই টুলটি রিয়েল-টাইম পরিস্থিতিতে পরীক্ষা করা হয়েছে। যেমন একটি কেস স্টাডিতে দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে প্রার্থীদের মধ্যে বিতর্কের সময় নির্বাচন প্রার্থীর দাবি করা প্রায় ২৫০টি দাবির সত্যতা এই টুলটি রিয়েল টাইমে যাচাই করতে পেরেছে।
ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের দ্বারা তৈরি ‘গ্রোভার’ হলো আরেকটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুল, যা জাল খবর তৈরি ও শনাক্ত করার জন্য ডিজাইন করা হয়েছে। এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা টুল বিষয়বস্তুর শৈলীগত সূক্ষ্মতা বোঝার মাধ্যমে উচ্চ নির্ভুলতার সঙ্গে কৃত্রিম সংবাদ নিবন্ধগুলো শনাক্ত করতে পারে। ‘সেন্সিটি এআই’ আরেকটি জনপ্রিয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-চালিত টুল, যা সংবাদ পর্যবেক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যবহার করে থাকে। ডিপফেক শনাক্তকরণে বিশেষজ্ঞ, সেন্সিটি এআই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-চালিত ছবি ও ভিডিও শনাক্তকরণের ওপর জোর দেয়। এই টুলটি ভিজ্যুয়াল ভুল তথ্যের উত্থানের পরিপ্রেক্ষিতে ভিজ্যুয়াল মিডিয়ার অখণ্ডতা বজায় রাখার জন্য ব্যবহার করা হয়, যা সংবাদ পর্যবেক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলো এবং এর প্রভাব নির্ণয়কারী সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
লেখক : প্রফেসর অব বিজনেস অ্যানালিটিক্স; উপপরিচালক, সেন্টার ফর অ্যাপ্লাইড অ্যান্ড রেসপন্সিবল এআই, নিউক্যাসল ইউনিভার্সিটি, নিউ সাউথ ওয়েলস, অস্ট্রেলিয়া
এই বছর অর্থনীতির নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে উদ্ভাবন ও সৃজনশীল ধ্বংসের প্রক্রিয়া (creative destruction) কীভাবে দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে সেই গবেষণার ওপর। নতুন প্রযুক্তি ও ধারণা পুরোনো ব্যবস্থাকে প্রতিস্থাপন করে সমাজ যখন পরিবর্তনের জন্য উন্মুক্ত থাকে, তখনই টেক
১১ ঘণ্টা আগে‘মনের তালা খুলল কে, চাবিওয়ালা, চাবিওয়ালা!’ প্রখ্যাত শিল্পী রুনা লায়লার সেই সুরেলা প্রশ্নের উত্তর আজও খুঁজে বেড়াচ্ছি! তবে ব্যক্তিগত জীবনে নয়, রাষ্ট্রীয় জীবনে। এই রাষ্ট্রের জীবনেও একটা বিশেষ তালা আছে, আর তার নাম আর্টিকেল ৭০! এই তালা লাগানো হয়েছিল সেই সব মাননীয়র জন্য, যাদের মধ্যে ‘ছাগলীয়’ প্রবৃত্তি রয়ে
১১ ঘণ্টা আগেভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইসরাইলের যুদ্ধাপরাধী প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে প্রায়ই তার পরম বন্ধু বলে বেশ গৌরবের সঙ্গে প্রচার করে থাকেন। ভিন্ন দেশের এ দুই রাজনীতিবিদের প্রগাঢ় বন্ধুত্বের মূল সূত্র হলো মুসলমানদের প্রতি তাদের তীব্র ঘৃণা। বর্তমান বিশ্বে ইসলামোফোবিয়ায় আক্রান্ত শীর্ষ দুটি
১২ ঘণ্টা আগেগাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে যখন হতাশা চরমে, তখনই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন এক নতুন ‘২০ দফার শান্তি পরিকল্পনা’। সেখানে তিনি নিজেকে বসিয়েছেন একটি তথাকথিত ‘বোর্ড অব পিস’-এর চেয়ারম্যান হিসেবে।
১ দিন আগে