ভারতীয় উপমহাদেশ গবেষণার নয়া দিগন্ত ইস্তানবুলের হাকামের

মিনহাজুল আবেদীন, ইস্তানবুল
প্রকাশ : ১১ মে ২০২৫, ১২: ৩৯

পৃথিবীর দুই মহাদেশের মিলনস্থল ইস্তাম্বুলের উপকূলে ২০২৩ সালে যাত্রা শুরু করে একটি ব্যতিক্রমী গবেষণা প্রতিষ্ঠান—হাকামের (HAKAMER)। “সেন্টার ফর ইন্ডিয়ান সাবকন্টিনেন্ট স্টাডিজ” নামক এই প্রতিষ্ঠানটির উদ্দেশ্য ভারতীয় উপমহাদেশ নিয়ে নিরপেক্ষ, মৌলিক ও গভীর গবেষণা পরিচালনা করা এবং সংশ্লিষ্ট গবেষকদের উৎসাহ ও সহায়তা প্রদান করা।

বিজ্ঞাপন

হাকামেরের মূল লক্ষ্য রাজনৈতিক প্রভাবের বাইরে থেকে ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা এবং আফগানিস্তানের ইতিহাস, ধর্ম, সংস্কৃতি, ভাষা ও সমাজ ব্যবস্থা নিয়ে অ্যাকাডেমিক গবেষণাকে এগিয়ে নেওয়া। প্রতিষ্ঠানটি গবেষকদের জন্য বৃত্তি প্রদান, গবেষণাগার সুবিধা ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার পথ উন্মুক্ত করে দিয়েছে।

হাকামেরের পেছনের প্রেরণা ও প্রতিষ্ঠাতা হচ্ছেন মারমারা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. আব্দুল হামিদ বিরিশিক। ভারতীয় উপমহাদেশে তার দীর্ঘ গবেষণা অভিজ্ঞতা, বিশেষত উর্দু তাফসির ও আহলে কুরআন আন্দোলন নিয়ে তার পিএইচডি অভিসন্দর্ভ, হাকামের প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।

প্রতিষ্ঠানটি ইতোমধ্যে তুরস্কে অধ্যয়নরত বাংলাদেশি, ভারতীয় ও পাকিস্তানি শিক্ষার্থীদের জন্য বৃত্তি প্রদান শুরু করেছে। এছাড়া সপ্তাহে একটি করে সেমিনার, সার্টিফিকেট কোর্স, ইউটিউব চ্যানেল, এবং ভবিষ্যতে উপমহাদেশের ভাষাগুলোর (উর্দু, ফারসি, হিন্দি, বাংলা) শিক্ষাক্রম চালুর পরিকল্পনা হাকামেরকে অ্যাকাডেমিক হাবে পরিণত করছে।

প্রতিষ্ঠানটির লাইব্রেরিতে রয়েছে উপমহাদেশ বিষয়ক শতাধিক বই, গবেষণা থিসিস ও দুর্লভ পাণ্ডুলিপি। ওসমানীয় আমল থেকে বর্তমান পর্যন্ত তুর্কী-উপমহাদেশীয় সম্পর্কও তাদের গবেষণার গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র।

ড. বিরিশিক বলেন, “আমাদের ভারতীয় ভাইয়েরা তাদের কোট বিক্রি করে আমাদের সহায়তা করতে এসেছিলেন। এমন আত্মত্যাগ আমরা ভুলতে পারি না। হাকামের সেই বন্ধনকে আরো দৃঢ় করতে কাজ করছে।”

উপমহাদেশের গবেষণায় আগ্রহী যে কোনো গবেষকের জন্য হাকামের হতে পারে একটি নতুন দিগন্ত। শুধু গবেষণার ক্ষেত্রেই নয়, ইতিহাস ও সংস্কৃতির সেতুবন্ধন তৈরিতেও এটি হয়ে উঠছে একটি অগ্রণী প্ল্যাটফর্ম।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত