বিশ্ব নাগরিক জেনারেশন জি

শাহীদ কামরুল
প্রকাশ : ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১: ১০

শুধু বাংলাদেশ নয়, গোটা পৃথিবীর সবচেয়ে আলোচিত শব্দগুচ্ছ হলো Generation Z। ধারণা করা হয় বর্তমান পৃথিবীর প্রায় ৩০ শতাংশ জনসংখ্যাই হলো Generation Z। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সংস্কৃতি ও সভ্যতা বিকাশের মঞ্চে যুগপৎভাবে বদলেছে মানুষের জীবনধারণ ও দৃষ্টিভঙ্গি। পুরোনো জায়গায় নতুনের স্থলাভিষিক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে প্রগতিশীলতার প্রাণ প্রতিষ্ঠা পেয়েছে ঐতিহ্যের ভিত্তিপ্রস্তরে।

তারা বর্তমান পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রাজনৈতিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে তাদের অবস্থান সংহত করছে। আশা করা যাচ্ছে, আগামীর বিশ্বে বিশেষ করে ২০৩০ সালের মধ্যে তারা তাদের এই অবস্থানকে আরো বেশি পাকাপোক্ত করে নেতৃত্বে আসীন হবে।

বিজ্ঞাপন

মূল আলোচনায় যাওয়ার আগে জেনারেশন নিয়ে একটু ধারণা দেওয়া জরুরি মনে করছি।

আসলে Generation-কে (প্রজন্মকে) ভাগ করা বা শ্রেণিবদ্ধ করা হয় সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও ঐতিহাসিক অভিজ্ঞতা দ্বারা, যা তাদের বৈশিষ্ট্য, বিশ্বাস ও আচরণকে গঠন করে থাকে। সাধারণত বর্তমান পৃথিবীতে স্বীকৃত কয়েকটি জেনারেশন হলো—The Greatest Generation (1901–1927), The Silent Generation (1928–1945), Baby Boomers (1946–1964), Generation X (1965–1980), Millennials (Generation Y) (1981–1996), Generation Z (Zoomers) (1997–2012) ও Generation Alpha (2013–2025)। আর তাদের মধ্যেই একটি জেনারেশন হলো জেনারেশন জেড (Generation Zoomers) বা জেন জি (Gen Z)।

এই শব্দযুগল যুগের চাহিদার সঙ্গে সমসাময়িক জীবনধারার সম্পৃক্ততা নিয়ে প্রতিনিধিত্ব করছে মানবসভ্যতার এক বিশাল শ্রেণিকে। ১৯৯৭ থেকে ২০১২ সালের মধ্যে জন্মগ্রহণকারীদের বলা হয় জেন জি। যুগে যুগে যত সরকার, যত ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান কিংবা বড় বড় entity ডাউনফল করেছে, তারা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ফল করেছে একটা জেনারেশনের পর আরেকটা জেনারেশনের ট্রানজিশনটা ধরতে না পারায়।

বিশ্লেষকদের মতে, জেন জির মূল বৈশিষ্ট্য হলো তারা কর্মদক্ষতার চেয়ে বুদ্ধিমত্তাকে বেশি গুরুত্ব দেয়। তারা যেকোনো ধরনের সমালোচনাকে থোরাই পাত্তা দেয়। তারা সবসময় বাস্তবসম্মত শিক্ষার প্রতি আগ্রহী হয়। পূর্ববর্তী প্রজন্ম যেখানে পাঁচ-দশ বছরের দীর্ঘমেয়াদি অধ্যয়নে অভ্যস্ত ছিল, সেখানে এই প্রজন্ম সর্বোচ্চ চার বছর মেয়াদি স্নাতকে সীমাবদ্ধ থাকে। জেন জি’দের সাধারণত নিজস্ব কাজের ধরন থাকে। তারা তাদের মতো করে কাজ করতে পছন্দ করে। কর্মক্ষেত্রেও যোগাযোগের ক্ষেত্রে দেখা যায় ভিন্নতা। কেউ কেউ সামনাসামনি মিটিং করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে, আবার কেউ কেউ অনলাইন প্ল্যাটফরমে মিটিংয়ে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে।

জেন জি’রা তাদের কর্মজীবন ও ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে খুবই উৎফুল্ল থাকতে পছন্দ করে। অন্যান্য জেনারেশনের সদস্যদের তাদের সঙ্গে কাজ করতে বেশ বেগ পেতে হয়। তাদের দক্ষতা ও কাজ করার প্রক্রিয়া অন্যদের তুলনায় খানিকটা আলাদা হয়। জেনারেশন জি’র সদস্যরা সাধারণত কোনো নিয়ম মেনে চলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে না। তারা সবার সঙ্গে যেমন একই রকম আগ্রহ, উৎসাহ ও উদ্দীপনা নিয়ে কাজ করতে চায়, তেমনি পাশাপাশি অফিসের ড্রেস কোড মানতেও আগ্রহী নয় তারা।

তারা সম্পূর্ণ আলাদা ধাঁচে বড় হয়েছে। তারা সোশ্যাল মিডিয়া আর ইন্টারনেট দিয়ে তাদের জীবন চালায়। তাদের কোনো ব্যারিয়ার নেই। তারা Global Citizen। দেশের সীমানা তাদের আটকায় না।

আপনি টিভিতে যা খুশি দেখান, কোনো লাভ নেই; কেননা তারা টিভি দেখে খুবই কম, তারা স্বাধীন ও স্বশিক্ষিত। তাদের learning source তারা নিজেরাই। শেয়ারিং বেসিসে একজন আরেকজনের কাছ থেকে শেখে এবং পাশে থাকে। আর এজন্যই Online School এত জনপ্রিয়। তারা তাদের মতোই কারো কাছ থেকে শিখতে চায় এবং খুব দ্রুত শিখতে চায়।

এই যে দেশের আইটি সেক্টর নিয়ে আমরা এত শ্লাঘা করি—এই সেক্টরের লাইফলাইন কারা জানেন? এই Gen Z-ই তো। আমাদের দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কি এগুলো শেখানো হয়? না, হয় না! তা হলে তারা শিখল কাদের কাছ থেকে এবং কীভাবে? আসলে তারা নিজে নিজে শিখেছে online platform-এ। মাসে লাখ লাখ টাকা কামাই করছে তাদের স্বশিক্ষা দিয়ে, যা আপনার-আমার মতো পুরোনো প্রজন্মের কাছে কল্পনাতীত। তাই আমরা এখনো প্রাগৈতিহাসিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের গৌরব নিয়ে বড়াই করি।

এই যে মীর মুগ্ধ ছেলেটা কপালে গুলি খেয়ে মারা গেল, তার ফাইভার প্রোফাইল দেখলাম। সে নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ বেতন স্কেলের চেয়ে বেশি টাকা মাসে আয় করত। সে কেন এসেছিল আন্দোলনে? সে দেখেছে তার বন্ধুরা স্ট্রাগল করছে। সে এসেছিল স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে। নিজের কামাই করা টাকায় পানি কিনে দিচ্ছিল বন্ধুদের। পানি খাওয়াতে এসে কপালে গুলি খেল এবং বন্ধুদের জন্য এবং দেশের জন্য জীবন উৎসর্গ করে শাহাদাত বরণ করল। আইইউটি’র একটা ছেলে মারা গেল। প্যারালাল ল্যান্ডিং করতে পারে, এমন ড্রোন বানিয়েছে সে, যার বাজারমূল্য প্রায় ১২ লাখ টাকা। কে বা কারা শিখিয়েছে তাকে এসব? সে নিজে নিজেই শিখেছে। বাকি আন্দোলনকারীদের খোঁজ নিয়ে দেখেন বেশিরভাগই এরকম। স্বশিক্ষিত ছেলেমেয়ে, যারা উল্টোপাল্টা একদম সহ্য করতে পারে না।

আর এই স্বশিক্ষা ও স্বনির্ভরতা এই দুইয়ের কারণে তাদের আত্মমর্যাদা প্রচণ্ড রকমের। আপনি তাদের অপমান করতে পারবেন না পূর্ববর্তী প্রজন্মের মতো।

জেন জি’র সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে একটি হলো তারা খুব ডিরেক্ট, যা চায় সরাসরি বলবে, যা করতে চায় সরাসরি করবে। ঘোরানো-প্যাঁচানো ডিপ্লোম্যাসিতে তারা খুব বিরক্ত হয় এবং যেহেতু তারা পৃথিবীর সবকিছুরই কম-বেশি জ্ঞান রাখে (মিনিটে মিনিটে Google করে), তাই তারা খুব ভালো করেই বোঝে—কোনটা মুলা ঝোলানো আর কোনটা আন্তরিকতা।

উদাহরণ হিসেবে ড. জাফর ইকবালের মতো বুদ্ধিজীবীর কথা বলতে পারি, যাকে মোটামুটি মুছে দিতে তাদের এক দিনও সময় লাগেনি। বোধ করি এ রকম ভয়ংকর বুদ্ধিবৃত্তিক পতন বাংলাদেশের ইতিহাসে আর কখনো ঘটেনি। এর কারণ হলো জাফর ইকবাল ডিরেক্ট নন। তার ভুলকে ভুল, ঠিককে ঠিক বলার মতো সাহস কিংবা ইচ্ছা কোনোটাই ছিল না। ফলে তার বুদ্ধিজীবী থেকে বুদ্ধিপ্রতিবন্ধীতে রূপান্তরিত হতে এক দিনও লাগেনি।

মিলেনিয়ালদের মধ্যে যদি আপনি খোঁজ নেন দেখবেন, বিশজনে হয়তো পাঁচজন নিজের জীবনের বাইরে বর্তমান পৃথিবীর খবর রাখছে। কিন্তু জেন জি’র মধ্যে প্রতি দশে পাঁচজনই এসব খবর কম-বেশি রাখে।

এই যে গত ছয়-সাত বছরে অনেকগুলো আন্দোলন হলো দেশে যেগুলোর মধ্যে রয়েছে দুই দফা কোটা, এক দফা সড়ক আন্দোলন ও ছোট একটা কোভিড-আন্দোলন। খেয়াল করলে দেখবেন, তাদের কথা একটাই ছিল—‘বদলান। পরিবর্তন আনেন। পারলে করেন, আর না পারলে ছাড়েন; কিন্তু আঁকড়ে ধরে বসে থাকবেন না।’ একদম স্ট্রেইট ফরওয়ার্ড স্টেটমেন্ট।

আদতে তারা সরকার পরিবর্তন তো চায়নি, বরং চেয়েছিল সরকারের মন-মানসিকতার পরিবর্তন। পাঠক, একটু খেয়াল করুন, যখন সরকার নিজেকে বদলাতে অস্বীকার করল, তখন তারা বলল, ‘এবার তা হলে হোক সরকার পরিবর্তন।’

Gen Z-এর সহজাত প্রবৃত্তি এটাই। রাষ্ট্র বুঝেই উঠতে পারেনি তাদের সাইকোলজি। কেননা রাষ্ট্রের নীতিনির্ধারকদের কাছে এই জেনারেশনের ওপর কোনো প্রপার রিসার্চ ছিল বলে আমার মনে হয় না। সেই পুরোনো divide and rule পলিসি দিয়ে তাদের দমন করতে গিয়ে তারা উল্টো আগুনে ঘি ঢেলে দিলেন।

এরপর পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘাত হলো। পুলিশের কর্মতৎপরতা তাদের মোটেও ভালো লাগেনি, যদিও আওয়ামী ফ্যাসিস্ট আমলে কখনো পুলিশের ভূমিকা জনবান্ধব ছিল না। তারা স্লোগান দিল— ‘পুলিশ কোন চেটের বাল, পুলিশ... দি না।’ আপনি-আমি এটাকে গালি হিসেবে নেব, কিন্তু তারা বোঝাচ্ছে আমরা পুলিশকে কেয়ার করি না। ঘুম থেকে উঠে ঘুমানোর আগ পর্যন্ত তারা দিনে কম করে হলেও বিশবার ‘I don't give a fuck. (I don't care.)’ কথাটা শোনে। তারই স্রেফ বাংলা অনুবাদ এইটা। এই যে গালি, এটা তাদের রাগ-ক্রোধ প্রকাশের ভাষা। এই ভাষাকে অস্বীকৃতি দিতে পারেন, কিন্তু অস্বীকার করার কোনো ফুরসত নেই।

একইভাবে তাদের ওপর গুলি করার পর তারা বলল, ‘বন্দুক... দি না।’ এ কথা বলে বন্দুকের সামনে দাঁড়িয়ে গিয়েছে। আপনি হয়তো অনেক লম্বা লম্বা শব্দ চয়ন করতেন।

যেমন ধরুন ‘যুগে যুগে বন্দুকের নল কিংবা বুলেট দিয়ে কোনোদিন কোনো রাষ্ট্র ছাত্র-আন্দোলন দমিয়ে রাখতে পারেনি’ অথবা ‘আমরা বীর বাঙালি ছাত্রসমাজ এসব বন্দুকের গুলির পরোয়া করি না।’ সঙ্গে ’৫২-’৬৯-’৭১—এ রকম কত কিছুই! কিন্তু দেখেন, তারা এক লাইনে শেষ করে দিয়েছে এই বলে, ‘বন্দুক... দি না।’

মনে করুন, রাষ্ট্র গালি খেয়ে গুলি করে দিল। যেমনটি এবার ভয়ংকরভাবে করেছে। তখন তারা কি ভয় পায়, ভীতসন্ত্রস্ত হয়—না হয়নি! কেননা রাষ্ট্র তাদের আত্মসম্মানে আঘাত করেছে। তারা জানে রাষ্ট্র ভুল করছে এবং রাষ্ট্রকে তার ভুল সংশোধন করে রাইট ট্রেকে ফিরে আসতে হবে।

তথাকথিত সাবেক ফেসিস্ট প্রধানমন্ত্রী তাদের আউটরেইজ করেছেন। তারা সঙ্গে সঙ্গে রাস্তায় আন্দোলনে নেমে পড়েছে। ছাত্রলীগকে দিয়ে তাদের পেটানো হয়েছে, তারা আরও বেশি স্লেন্ডার বোধ করেছে, ফলে আন্দোলন আরো তীব্র থেকে তীব্রতর হয়েছে। আর গুলি করা তো ছিল রীতিমতো ভিমরুলের চাকে ঢিল মারার মতো অবস্থা বৈকি!

তারা তখন বন্দুকের সামনে দাঁড়িয়ে চোখে চোখ রেখে বলেছে, ‘...নকির পোলা, গুলি করলি কেন?’ এই ডিরেক্টনেসের কারণে তারা প্রথাগত chain of command ভাঙতে একটুও দ্বিধাবোধ করে না এবং আন্দোলনেও করেনি।

পাঠক, একটা বিষয় অবলোকন করেছেন কি না জানি না, এই শিক্ষার্থীরা আগে নিজেরা আন্দোলনে নেমেছে, তারপর তাদের বাবা-মায়েদেরও সেই আন্দোলনে নিয়ে এসেছে। এটা যে কী ভীষণ রকমের একটা বৈপ্লবিক কাজ হয়েছে, চিন্তা না করলে বোঝা যাবে না। একটু ঠাণ্ডা মাথায় ভাবলে ব্যাপারটা বুঝতে পারবেন। যেখানে নিরাপত্তার জন্য পরিবার আন্দোলনে যেতে বাধা দেয়, সেখানে তারা পরিবারকে উল্টো নিয়ে এসেছে আন্দোলনে।

এটা আওয়ামী অপসংস্কৃতির ছোবল ও গোলামির জিঞ্জির থেকে মুক্তিলাভ করার আন্দোলনকে যেমন নতুন একটা ডাইমেনশন দিয়েছে, তেমনি সালভেইশন মুভমেন্টকে আরো বেগবানও করেছে বটে। তাদের এই সহজাত ডিরেক্টনেস এক অসাধারণ ও সুনিপুণ নেতৃত্বের সক্ষমতা প্রদর্শন করেছে। কারণ তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ খুবই ফাস্ট। যেসব তথ্য-উপাত্ত ঘেঁটে একটা সিদ্ধান্তে যেতে হয়, তারা অলরেডি সেগুলো মাথায় নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। আর এ কারণেই তাদের মতামতও পরিবারের কাছে এখন অগ্রাধিকার পায়। এরকম একটা দৃশ্য বলি। মনে করুন, অফিসের বস তাদের পাত্তা দিচ্ছে না, বা তাদের চাহিদা মেটাতে গদাইলস্করি চাল চালছে। এ অবস্থায় তারা ডিরেক্ট ওই বসের ওপরের লেভেলের বসের কাছে তাদের দাবি নিয়ে চলে যাবে, বা ইমেইল করবে, কিংবা লিংকডইনে সরাসরি যোগাযোগ করবে। এর পরও না পোষালে চাকরি ছেড়ে দেবে। তবে, কিন্তু, যদি, অথবা—এসব প্যাঁচানো বিশ্লেষণ দিয়ে তাদের বোঝানো যাবে না, পারবেনও না। তারা সোজাসাপ্টা মানুষ। প্যাঁচ কম।

এর কারণ হচ্ছে, তারা জন্মের পর থেকেই মাল্টিপল অপশনের দুনিয়ায় বেড়ে উঠেছে। মুভি দেখছে, পছন্দ হয়নি, বন্ধ করে আরেকটায় চলে যাবে।

নেটফ্লিক্সের মতো প্ল্যাটফর্মের কারণে তাদের কাছে লাখ লাখ অপশন তৈরি হয়ে আছে। একই হাল গান শোনা, বই পড়া ও রাজনীতি থেকে শুরু করে প্রেম-ভালোবাসা প্রভৃতির বেলায়ও। না পোষালে আবেগের ভার নিয়ে তারা বসে থাকে না।

তারা ইউটিউব, নেটফ্লিক্স কিংবা টুইটারে ভিডিও দেখে 1.5x গতিতে। মানে যে গতিতে ভিডিওটা করা হয়েছে, তার দেড়গুণ গতিতে। কারণ স্লো কোনোকিছুই এই জেনারেশন পছন্দ করে না।

মোটামুটি সব বড় গবেষণায়ই দেখা গেছে, অনলাইনে সাত সেকেন্ড হচ্ছে তাদের অ্যাটেনশন টাইম। এই টাইমের মধ্যে তাদের অ্যাটেনশন ধরতে পারলে পেরেছেন, না পারলে আর পারবেন না। এই হলো আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম।

তারা নেতা হিসেবে বুর্জোয়া ডিপ্লোমেট, ধান্দাবাজ, ফন্দিবাজ, চাঁদাবাজ জবরদখলবাজ ও দুর্নীতিবাজদের চায় না; তারা চায় স্বচ্ছ ভাবমূর্তির স্ট্রেট ফরওয়ার্ড কথা বলা মানুষদের, যারা কথা কম বলে কাজের কাজটা যথাযথভাবে করে এবং অগ্রাধিকার ভিত্তিতে অ্যাকশন নেবে। একইভাবে তারা সিদ্ধান্ত গ্রহণেও কোনো শরিয়তি ও মারফতি প্যাঁচগোচ পছন্দ করে না।

আমাদের পূর্ববর্তী জেনারেশনের নেতাদের জন্য সামনের সময়টা খুব কঠিন হবে বলে আমি মনে করি, বিশেষ করে Boomers ও X জেনারেশনের জন্য। কারণ তারা যেসব ধ্যানধারণা ধারণ করে রাজনীতি করে আসছেন, তা এই সময়ে অপ্রাসঙ্গিক ও অকার্যকর হয়ে পড়েছে, আর তা ছাড়া তারা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নিজেদের যদি ডায়নামিক করতে না পারেন এবং এ জেনারেশনকে যথাযথভাবে ট্রিট করতে না পারেন, তাহলে তাদেরও পূর্ববর্তী প্রজন্মের মতো আম-ছালা দুটাই যাবে।

সাবধান!

লেখক : সাবেক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক; লেখক ও গবেষক, ফ্রাই ইউনিভার্সিটি, বার্লিন, জার্মানি

অসদাচারণের দায়ে টঙ্গী পাইলট স্কুলের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে শোকজ

জরুরি অবস্থা জারি করলেন পেরুর প্রেসিডেন্ট

গুম-খুনে জড়িত ১৫ সেনা কর্মকর্তা চাকরিচ্যুত। ট্রাইব্যুনালে হাজির। সাবজেলে প্রেরণ

এবার ১ টাকায় গরুর মাংস বিতরণের ঘোষণা সেই এমপি প্রার্থীর

অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তাদের বহন করা সেই প্রিজন ভ্যানে কী আছে

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত