বিএনপির ৩১ দফায় নারীর ক্ষমতায়ন

বীথিকা বিনতে হোসাইন
প্রকাশ : ০৯ জানুয়ারি ২০২৫, ১৩: ০৬
আপডেট : ১০ জানুয়ারি ২০২৫, ১২: ৩৮

এশিয়ায় মর্যাদার দিক থেকে সর্বোচ্চ অবস্থানে এখন বাংলাদেশের নারীরা। জেন্ডার সূচকে দক্ষিণ এশিয়ার শীর্ষ অবস্থানে বাংলাদেশ। নারীর রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে সপ্তম। এটা অবশ্যই আমাদের জন্য গর্বের।

নারীর ক্ষমতায়নের জন্য অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। নারীরা বিচারক হবেন, নারীরা ব্যারিস্টার হবেন এটা এক সময়ে স্বপ্ন ছিল। কিন্তু আজ নারীরা শুধু বিচারক আর ব্যারিস্টারই নন রাজনীতি, অর্থনীতি, পররাষ্ট্র নীতি সবখানেই নিজেদের যোগ্যতা প্রমাণ করছেন।

বিজ্ঞাপন

এছাড়াও নারীরা সফল ভাবে নিজেদের অংশীদারিত্ব রাখছেন আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে, প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি বাহিনীর উচ্চ পর্যায়ে এবং সীমান্ত রক্ষায়ও তারা অত্যন্ত দক্ষতার সাথে দায়িত্ব পালন করছেন। সাংবাদিকতা, তথ্যপ্রযুক্তি, শিল্প, সাহিত্য, সংস্কৃতি, খেলাধুলা- সবক্ষেত্রে এখন মেয়েরা দক্ষতার পরিচয় দিয়ে সুনাম বয়ে আনছেন।

এত অর্জন আর সাফল্য গাঁথার ইতিহাস পর্যালোচনা করতে গিয়ে যাঁর চিন্তা-চেতনা ও দূরদর্শিতার কথা চোখ বন্ধ করে খুঁজে পাওয়া যায়, তিনি শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। দেশপ্রেমিক এই নেতা সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে নিয়ে কাজ করতে গিয়ে নারীর কথা নতুন করে ভাবেন।

মা, মাটি, মানুষ নিয়ে ভাবতে গিয়ে নারীর মেধাশক্তি ও তার যোগ্যতার মূল্যায়নের কথা গভীরভাবে চিন্তা করেন। যে নারী অতীতে যুদ্ধ করেছে, রাজ্য শাসন করেছে, সংসার রক্ষা করেছে, প্রয়োজনে যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে এগিয়ে এসেছে, তাকে শুধু ঘরের ভিতর সীমাবদ্ধ রাখা সঙ্গত নয়। এই সত্য তিনি উপলব্ধি করেন এবং নারীর ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে কাজ করার সুযোগ করে দেন এবং জাতীয় অর্থনীতিতে নারীর অংশীদারিত্ব রেখে তাদের আত্মমর্যাদা বৃদ্ধি করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

নারী সমাজকে উপযুক্ত মর্যাদা দান করে তাদেরকে দেশের কাজে লাগাবার ব্যাপারে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানকেই অগ্রদূত বলা যায়। কারণ একজন রাষ্ট্রনায়কোচিত দৃষ্টিকোণ থেকে তিনি নারীর উচ্চ মর্যাদার ব্যাপারে পদক্ষেপ নেন।

সমাজে নারীর গুরুত্ব বোঝাতে তিনি নারী ও পুরুষকে একজন মানুষের দুটি সুস্থ সুন্দর হাতের সাথে তুলনা করেছেন। তিনি বোঝাতে চেয়েছেন যদি একজন মানুষের দুটি হাত সুস্থ থাকে তাহলে যেকোনো কাজকে সম্ভব করা যতটা সহজ একটি হাত না থাকলে তা ততটাই কঠিন। তাই ব্যক্তি সমাজ তথা রাষ্ট্রকে উন্নত করতে হলে দুটো হাতকে সচল রেখে কাজ করতে হবে।

নারীর ক্ষমতায়নে যে কাজগুলো জিয়াউর রহমান শুরু করেছিলেন।

  • মহিলাদের স্বাবলম্বী করতে তিনি সর্বপ্রথম চাকরি ক্ষেত্রে ১০% সংরক্ষিত কোটা নির্ধারণের নির্দেশ দেন।
  • মহিলাদের উন্নয়নে সমস্যার সমাধানের লক্ষ্যে জিয়াই ১৯৭৮ সালে প্রথম স্বতন্ত্র ‘মহিলা মন্ত্রণালয়’ চালু করেন এবং মহিলা মন্ত্রী নিয়োগ দেন।
  • নারীর কর্মক্ষেত্র তৈরির পর, নারীর থাকা খাওয়ার সুব্যবস্থা হিসেবে তিনি কর্মজীবী মহিলা হোস্টেল তৈরি করেন। ফলে চাকরি কালে তাদের বাসস্থানের সমস্যা অনেকাংশে দূর হয়।

নেপোলিয়নের বিখ্যাত উক্তি ‘আমাকে একটি শিক্ষিত মা দাও আমি তোমাদের একটি শিক্ষিত জাতি উপহার দেব’। শহীদ জিয়া বোধ হয় এ সত্যটা নিবিড় ভাবে অনুভব করেছিলেন। কারণ তিনি বলতেন মেয়েরা শিক্ষিত হলে সেই পরিবারের ছেলে মেয়েরাও শিক্ষিত হবে। তিনি নারীদের আত্মবিশ্বাস এবং সমাজে তাদের মর্যাদা বৃদ্ধির জন্য গ্রাম প্রতিরক্ষা দলেও তাদের অন্তর্ভুক্ত করেন। তার সময়ে গ্রাম প্রতিরক্ষা দলেও ৩৫ লাখ নারী সদস্য অন্তর্ভুক্ত হন।

প্রায় প্রতিটি জনসভায় তিনি মেয়েদের উদ্দেশ্যে স্বাবলম্বী হবার উপদেশ দিতেন। আর কোনো না কোনো কাজ করে সংসারের আয় বাড়ানোর পরামর্শ দিতেন। বেগম রোকেয়ার মতো তিনি উপলব্ধি করতেন নারীরা তোমাদের আর ঘুমানোর সময় নেই, এবার তোমাদের জেগে উঠতে হবে।

তিনি নারীদের তার নিজের স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন হবার জন্য পরামর্শ দান করতেন। পরিবার পরিকল্পনা গ্রহণে উৎসাহিত করতেন। ভিশনারি এ লিডার খুব সহজেই উপলব্ধি করতে পেরেছেন ছোট্ট এই বাংলাদেশের জনসংখ্যার আধিক্য রোধ করতে হলে একমাত্র নারীদেরকেই সচেতন করে তুলতে হবে। এই সচেতনতার পাশাপাশি তিনি একটি কালজয়ী শ্লোগান ও নির্মাণ করেন। ‘ছেলে হোক মেয়ে হোক দুটো সন্তানই যথেষ্ট ’।

শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আগে কোনো নেতা নারীদের স্বাস্থ্য রক্ষার ব্যাপারে কোনো সক্রিয় মনোভাব বা পদক্ষেপ গ্রহণ করেন নি।

কাজী নজরুল ইসলাম সমাজে নারীর গুরুত্ব বোঝাতে কবিতা লিখেছেন-

‘কোন কালে হয়নিকো একা জয়ী পুরুষের তরবারি,

প্রেরণা দিয়েছে উৎসাহ দিয়েছে বিজয় লক্ষী নারী’

সেই প্রেরণা ও উৎসাহের জায়গায়ই শুধু জিয়া নারীদের সীমাবদ্ধ রাখেননি তিনি নারীদের দেশের অর্থনৈতিক কাঠামোয় অংশীদারিত্ব দিয়ে তাদের আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠিত করেছেন।

দীর্ঘ স্বৈরশাসনের অবসানের পর দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া যখন দেশ পরিচালনার সুযোগ পান তখন তিনি এসকল সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় সুযোগ-সুবিধা সুরক্ষিত রেখে নারী শিক্ষার ব্যাপারে আরো কয়েক ধাপ এগিয়ে প্রথমে দশম, পরবর্তীতে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত মেয়েদের শিক্ষাকে অবৈতনিক করে বিনা বেতনে পড়ার সুযোগ করে দেন। তিনিই সর্বপ্রথম দেশে মেয়েদের জন্য উপবৃত্তি কর্মসূচি চালু করেন।

  • বেগম জিয়া দুস্থ মহিলাদের স্বাবলম্বী করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ তহবিল থেকে অর্থ বরাদ্দ দিয়ে মহিলাদের ঋণদান কর্মসূচি চালু করেন।
  • দেশে প্রথমবারের মতো সরকারি কর্মকর্তা কর্মচারীদের পেনশন জটিলতা নিরসন ও সহজীকরণ করে অবসর গ্রহণের পর সঙ্গে সঙ্গে পেনশন পাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি এবং প্রথমবারের মতো অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীদের মৃত্যুর পর তাদের স্ত্রী এবং প্রতিবন্ধী সন্তানদেরও আজীবন পেনশন পাওয়ার ব্যবস্থা করেন।
  • বেগম রোকেয়া নারীদের শিক্ষার প্রসার ঘটাতে নারীকে উজ্জীবিত করতে নানান পদক্ষেপ গ্রহণ করেন- লেখালেখির মাধ্যমে, আর বেগম জিয়া যেন একে একে তার বাস্তব রূপ প্রদান করতে লাগলেন।

প্রথমেই তিনি দশম পরবর্তীতে দ্বাদশ এবং তারপরে ডিগ্রী লেভেল পর্যন্ত নারী শিক্ষা অবৈতনিক করেন।

এখানে তিনি ক্ষান্ত হননি, বাংলাদেশ তথা এশিয়ার অবহেলিত নারীদের উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্র বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা রাখেন বেগম জিয়া। তারই সক্রিয় ভূমিকায় চট্টগ্রামে ১০৪ একর জমির উপর প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বিশ্বমানের এশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উমেন।

প্রথম থেকেই ভারত এই ইউনিভার্সিটি সেখানে স্থাপনের জন্য জোর চেষ্টা চালায়। কিন্তু খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে সরকারের জোর কূটনৈতিক তৎপরতায় বাংলাদেশের কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নাগরিকের চেষ্টায় এবং আমেরিকার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিলারি ক্লিনটনসহ অনেকের অবদানে এই ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশে স্থাপনের জন্য চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয় আন্তর্জাতিক কমিটি।

বিশ্বের বিভিন্ন নাম করা প্রতিষ্ঠানে ক্রেডিট ট্রান্সফার যোগ্য এই ইউনিভার্সিটির মূল কাজ উদ্বোধন করেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী বিএনপির চেয়ারপার্সন বেগম জিয়া ২০০৪ সালের জানুয়ারিতে।

২০০৮ সালে ১৩১ জন ছাত্রী নিয়ে ইউনিভার্সিটি টির কার্যক্রম শুরু হয় । এতে ২৫ পার্সেন্ট আসন বাংলাদেশ থেকে এবং ৭৫ পার্সেন্ট আসন এশিয়ার অন্যান্য দেশ থেকে ভর্তি হবার সুযোগ পায়। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য বিষয় তখন ১০ হাজার আমেরিকান ডলার টিউশন ফি হলেও এখানকার ৫০% ছাত্রী বিনা বেতনে পড়ার সুযোগ পায়। বাকি ছাত্রীরাও অভিভাবকের আয়ের ওপর নির্ভর করে টিউশন ফি দিতে হয়। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটি অনেকটা আমাদের ক্যাডেট কলেজ গুলোর মতো ।

বাংলাদেশের অবহেলিত নারীদের জন্য এই অনন্য সুযোগ এনে দেয়ার জন্য বাংলাদেশের মানুষ খালেদা জিয়াকে চিরদিন মনে রাখবে। নারী শিক্ষার উল্লেখযোগ্যে অবদানগুলোর জন্য তাকে আধুনিক নারী শিক্ষা জাগরণের অগ্রদূত বলা যায়। কারণ বেগম রোকেয়া নারীদের জাগিয়ে তুলবার আহ্বান জানিয়ে নারী জাগরণের অগ্রদূত হলে বেগম জিয়া এসব পদক্ষেপ বাস্তবায়নের মাধ্যমে আধুনিক নারী শিক্ষার অগ্রদূত হতে বাধা কিসের?

বেগম জিয়া বিশ্বাস করতেন নারীকে আর্থ-সামাজিক কর্মকান্ডের মূলধারায় সম্পৃক্ত করতে না পারলে দেশের সার্বিক এবং সুষম উন্নয়ন সম্ভব নয়। এজন্য তিনি নারী শিক্ষার বিস্তার ঘটনোর লক্ষ্যে উল্লেখযোগ্য চারটি প্রকল্প গ্রহণ করেন। এগুলো হলো-

  • সেকেন্ডারি এডুকেশন সেক্টর ইমপ্রুভমেন্ট প্রজেক্ট
  • মাধ্যমিক স্তরের ছাত্রীদের উপবৃত্তি প্রদান প্রকল্প
  • ফিমেল সেকেন্ডারী স্কুল অ্যাসিস্ট্যান্ট প্রজেক্ট
  • ফিমেল সেকেন্ডারি এডুকেশন স্টাইপেন্ড প্রজেক্ট যা ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত ছাত্রীদের উপবৃত্তি প্রদান করেছে।

গ্রামীণ বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সকল শিক্ষকের ৩০% মহিলা শিক্ষক নিয়োগ বাধ্যতামূলক করা হয় এবং তাদের জন্য হোস্টেল নির্মাণ, রিসোর্স সেন্টার নির্মাণ, ফেলোশিপ প্রদান সহ নারীদের উন্নয়নের সুযোগ সৃষ্টির জন্য প্রমোট প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন ছিল। নারী কারিগরি পেশাজীবী সৃষ্টির লক্ষ্যে- রাজশাহী, খুলনা, ও চট্টগ্রাম বিভাগীয় সদরে তিনটি নতুন মহিলা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট স্থাপন প্রকল্প সমাপ্তির পথে ছিল।

২০০২-২০০৩ অর্থবছরে এসিড দগ্ধ মহিলা ও শারীরিক প্রতিবন্ধীদের পুনর্বাসনের কর্মসূচি চালু করেন বেগম জিয়া।

২০০৪ সালে তিনি ঢাকা গাজীপুর মানিকগঞ্জ নারায়ণগঞ্জ নরসিংদী ও মুন্সিগঞ্জ জেলার এসিড দগ্ধ ও শারীরিক প্রতিবন্ধীদের মধ্যে সুদমুক্ত ঋণ ও ব্ল্যাক বেঙ্গল গোট বিতরণ করে এ কার্যক্রমে নতুন প্রাণের সঞ্চার করেন।

নারীদের অধিকার ও মর্যাদা বৃদ্ধিতে খালেদা জিয়ার সরকারের পদক্ষেপ ছিল অত্যন্ত কার্যকর। তিনি নারী নির্যাতন ও এসিড নিক্ষেপ রোধে কঠোর আইন প্রণয়ন করে তার বাস্তবায়ন করেন। নারীর ক্ষমতায়ন মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং আত্ম কর্মসংস্থান দারিদ্র্য বিমোচন, উদ্যোক্তা উন্নয়ন, নারী ও শিশু পাচার নির্যাতন প্রতিরোধ এবং নারী ও শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে সহায়তার লক্ষ্যে ২০০১ থেকে ২০০৪ পর্যন্ত অনেক উন্নয়ন প্রকল্প কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়। যেমন-

  • ইমপাওয়ারমেন্ট এন্ড প্রটেকশন অফ ওমেন এন্ড চিলড্রেন প্রজেক্ট
  • খাদ্য নিরাপত্তাহীন দরিদ্র মহিলাদের জন্য ভিজিডি কর্মসূচি
  • বিত্তহীন মহিলা উন্নয়ন কর্মসূচি- এফ এস ভি জি ডি দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রকল্প
  • নারী নির্যাতন রোধে মাল্টি সেক্টরাল প্রকল্প
  • ডে কেয়ার সেন্টার
  • কর্মজীবী মহিলাদের আবাসন প্রকল্প ইত্যাদি

নারী শিক্ষার ব্যাপক প্রসার ঘটিয়ে নারীদের ক্ষমতায়ন আর্থ-সামাজিক কর্মকান্ডে নারীদের অংশগ্রহণ এবং নারী উন্নয়নের সার্বিক বাস্তবতায় ১৯৯৬ সালে বিএনপি যখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কাছে রাষ্ট্র ক্ষমতা ছেড়ে দেয় তখন আমেরিকার বিখ্যাত টাইম ম্যাগাজিন খালেদা জিয়ার শাসনামল বিশ্লেষণ ও প্রশংসা করেন। ম্যাগাজিনটি উপমহাদেশের সাবেক অন্য দুই প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও বেনজির ভুট্টোর সাথে তুলনা করে উল্লেখ করে- খালেদা জিয়ার সরকার আমলে অবহেলিত ও উপেক্ষিত নারীদের জন্য এ অক্সফোর্ড শিক্ষিত সরকার প্রধানদের চেয়ে বাংলাদেশে নারী শিক্ষার যে প্রসারতা লাভ করে ম্যাগাজিনটি তার ভূয়সী প্রশংসা করে।

এ সকল কিছু অক্ষত রেখে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও বেগম খালেদা জিয়ার সুযোগ্য সন্তান বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ১৯ দফা ও বেগম খালেদা জিয়ার ভিশন ২০৩০ এবং ২৪ শে জুলাই আন্দোলনে জেনারেশন জি ‘যে বৈষম্যহীন, সাম্য ও মানবিক মর্যাদার নতুন বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বুনছে তারই আলোকে ৩১টি দফার সম্মেলনে তৈরি করেন রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের রূপরেখা। এর ২৪ নম্বর অনুচ্ছেদে নারীর ক্ষমতায়নের বিষয়টি উল্লেখ থাকলেও অধিকাংশ অনুচ্ছেদে নারীর ক্ষমতায়নের বিষয়টি বিভিন্নভাবে উঠে এসেছে।

১৯ দফা এবং ভিশন ২০৩০ এর সকল কিছু সুরক্ষিত রেখে নতুন যে প্রকল্পটি জনমনে আগ্রহের সৃষ্টি করেছে তা হলো ‘ফ্যামিলি কার্ড’।

প্রান্তিক মানুষগুলোকে সহযোগিতার মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতিকে শক্তিশালী করাই ফ্যামিলি কার্ডের মূল লক্ষ্য।

কারা পাবেন এই ফ্যামিলি কার্ড? ফ্যামিলি কার্ড পাবেন- মসজিদের ইমাম, মুদি দোকানদার, বিভিন্ন শ্রেণীর ব্যবসায়ী, শিক্ষক কৃষক, ডিসি, পুলিশ, এসপি, ক্লিনার

মোটকথা সমাজের সকল শ্রেণীর মানুষের জন্য এই ফ্যামেলি কার্ড বরাদ্দ থাকবে। যার প্রয়োজন হবে সে নিবে যার প্রয়োজন নেই সে নিবে না।

প্রথমত এই ফ্যামিলি কার্ড বরাদ্দ থাকবে- পরিবারের স্ত্রী কিংবা মায়ের নামে নারীর ক্ষমতায়ন বৃদ্ধি করবার নিমিত্তে। কি কি সুবিধা থাকছে এ ফ্যামিলি কার্ডে?

প্রথমত: এই কার্ডের মাধ্যমে এক একটি পরিবারকে মাসে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকা মাসিক ভর্তুকি( ভাতা?) প্রদানের ঘোষণা দিয়েছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। (রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেলে) এতে কি সুবিধা থাকছে?

ধরুন একজন গৃহিণীর মাসে আট হাজার টাকার বাজার খরচ লাগে। তারেক রহমান দেশ পরিচালনার সুযোগ পেলে একজন গৃহিণীকে প্রতিমাসে আড়াই থেকে তিন হাজার টাকার সাপোর্ট দিবেন। যার ফলে এ সাপোর্টিং মানি দিয়ে সে তার পরিবারের বাচ্চাদের শিক্ষার মান উন্নয়ন স্বাস্থ্য সুরক্ষা কিংবা পারিবারিক বিনোদনের কাজে খরচ করতে পারবেন।

কখনো কখনো প্রতিমাসে ১০০০/২০০০ কিংবা ৩০০০ টাকা সঞ্চয় করে এক বছর কিংবা দুই বছর পরে একটা বিশাল এমাউন্ট জমা হয়ে সে নারীকে একজন উদ্যোক্তা হবার শক্তি যোগাতে পারে কিংবা তার ছেলে মেয়ের উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্রে তা যোগান দিতে পারে। আবার কখনো পরিবারে কারো সুচিকিৎসার জন্য সেই সঞ্চিত অর্থ দ্বারা পরিবারটি উপকৃত হতে পারে।

রাষ্ট্র কাঠামো মেরামতের এই ৩১টি দফার মধ্যেই সুরক্ষিত রয়েছে সাম্য মানবিক ও বৈষম্যহীন সমাজ ও রাষ্ট্র বিনির্মাণে বাংলা বসন্তকে ছুঁয়ে যাওয়া জেনারেশন জি এর স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ার প্রকল্প।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত