আবদুল লতিফ মাসুম
রাজনীতিতে বিরোধ বা বিতর্ক অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু অস্বাভাবিক তা, যা দেশ-জাতি-রাষ্ট্রকে আহত করে। দর্শনগতভাবে বলা হয় ‘যত মত তত পথ’ আর ‘শত ফুল ফুটতে দাও’। এও রাজনীতির আহ্বান। রাজনীতির জটিল ও কুটিল পথকে অতিক্রম করে ‘বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য’ সাধনেই সার্থকতা। রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা রাজনীতিকে বলেন সমঝোতার শিল্পকলা (Art of Compromise))।
এসব কথা যদি একটি শব্দে বিধিবদ্ধ করতে চাই, তার নাম হচ্ছে ‘গণতন্ত্র’। অনেক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জনক এরিস্টটল যা বলেছেন, তার মর্মার্থ হলো গণতন্ত্র মন্দের ভালো। বিস্ময়ের ব্যাপার মানবজাতির সভ্যতা এই মন্দের ভালোকেই ‘উত্তম শাসনব্যবস্থা’ বলে বিবেচনা করেছে।
গণতন্ত্র একটি রাজনৈতিক ব্যবস্থা। শাসন কাঠামোর একটি বাস্তব চিত্র। আবার গণতন্ত্র হচ্ছে একটি জীবনব্যবস্থা (A way of life)। গণতন্ত্র কখনোই সফল হতে পারে না যদি বিশ্বাস, মূল্যবোধ ও ব্যক্তি মননে ‘সমঝোতার মনোভাব’ না থাকে। অনেকেই মুখে গণতন্ত্রের মধু বিতরণ করেন, কিন্তু বুকে বিষ ধারণ করেন। সে ক্ষেত্রে গণতন্ত্র অসার, অকার্যকর ও অবাস্তব হওয়াই স্বাভাবিক। বাংলাদেশের বিগত অর্ধশতাব্দীর রাজনৈতিক ইতিহাস পর্যালোচনা করলে নেতিবাচক সিদ্ধান্তই নিতে হবে।
আমাদের জনমনস্তত্ত্ব, নৃ-তত্ত্ব, স্বভাব-চরিত্র, বিষয়-বৈশিষ্ট্য সাক্ষ্য দেয় যে আমরা ভালো মানুষ নই, ইতিহাস ও ভূগোলে এর প্রমাণ মিলবে (দেখুন আকবর আলি খান, অবাক বাংলাদেশÑবিচিত্র ছলনাজলে রাজনীতি : ২০১৭ : ২১-২৯ )।
আমাদের জীবনদৃষ্টি স্বচ্ছ নয়। ‘লতায় কণ্টক আছে, কুসুমে কীট আছে, গন্ধে বিষ আছে, স্ত্রী জাতি বঞ্ছনা জানে’Ñ বঙ্কিম চন্দ্রের উচ্চারণ মিথ্যে নয়। আর রবীন্দ্রনাথের উক্তিও সুখকর নয়। তিনি বলেন, ‘আমরা সকল কাজেই পরের প্রত্যাশা করি, অথচ পরের দোষ লইয়া আকাশ বিদীর্ণ করিতে থাকি।’ গত কয়েক দিনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ব্যক্তি, দল ও গোষ্ঠীর রাজনৈতিক বাদানুবাদ বুঝতে এই ভূমিকা অংশটুকু সহায়ক হতে পারে।
বাংলাদেশের ইতিহাসে ২০২৪-এর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান তথা গণবিপ্লব একটি অনন্য ঘটনা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত এই অভূতপূর্ব আন্দোলনে পুরো জাতি সিসাঢালা প্রাচীরের মতো ঐক্য রচনা করেছিল। খুব বিস্ময়ের ব্যাপারÑএর কোনো একক নেতৃত্ব ছিল না।
আমাদের দেশের প্রচলিত রাজনৈতিক ধারার মতো কোনো সম্মোহনী নেতা অথবা রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে এই গণবিপ্লব অনুষ্ঠিত হয়নি। অভ্যুত্থানটি এ দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে স্বকীয়তা, স্বাতন্ত্র্য ও ভিন্নতা দাবি করতে পারে। এই নেতৃত্ব নতুন ইতিহাস রচনা করেছে। প্রচলিত গতানুগতিক রাজনৈতিক প্রথা ও প্রক্রিয়ার বাইরে একটি নতুন ব্যবস্থাপনা নির্দেশ করেছে। এ যেন এক নতুন মিথস্ক্রিয়া। এই মিথস্ক্রিয়ায় বিশেষ কোনো আদর্শ মতবাদ বা ‘তন্ত্র-মন্ত্র’ স্থান পায়নি। বরং সবকিছুর মধ্য দিয়ে একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের দিকে এগিয়েছে।
ছাত্রনেতারা আন্দোলন পরিচালনা করতে গিয়ে যে ভাষা ও পরিভাষা প্রয়োগ করেছেন, তা সত্যিই অভিনব। তাদের এই অর্জনকে তারা একটি নতুন বয়ান বা ব্যাখ্যায় উপস্থাপিত করার চেষ্টা করছেন। পুরো জাতি তাদের অফুরন্ত ভালোবাসায় আদৃত করেছে। এই ছাত্রনেতারা ঘুচিয়ে দিয়েছে ছাত্ররাজনীতির সাম্প্রতিক বদনাম। মানুষের অপার ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছে তারা। এ কথা সত্য, ক্ষমতা কাঠামোর শীর্ষে তারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু নিরঙ্কুশভাবে তাদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়নি। প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস তাদের মূল্যায়নে কৃপণ ছিলেন না।
অনেককে অবাক করে দিয়ে তিনি তাদের যথার্থ সম্মান ও মর্যাদা দিয়েছেন। এই ক্ষমতার অধিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয়েছে রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে। সেখানে রাজনীতিবিদদের অবস্থান যেমন শক্ত ছিল, তেমনি ছিল সিভিল সোসাইটির প্রতিনিধিত্ব। আরো ছিল শেষ সম্বল সেনাবাহিনীর সমর্থন। সুতরাং দৃশ্যমানভাবেই সেখানে নিঃসন্দেহে জাতীয় ঐক্যের ভিত শক্তভাবে প্রতিষ্ঠিত ছিল। এটা তো সেই সেদিনের কথা। এখনো ছয় মাস অতিক্রান্ত হয়নি। তাহলে বাধা-বিপত্তি, দ্বন্দ্ব-বিদ্বেষ ও বাদ-বিতর্কের উৎস কী?
পৃথিবীর ইতিহাসে ক্ষমতাকেন্দ্রিক এত অঘটন ঘটেছে যে তা বর্ণনা করতে শিহরিত হতে হয়। পিতা পুত্রকে হত্যা করেছে অথবা পুত্র পিতাকে হত্যা করেছে। ভাই ভাইকে হত্যা করেছে এবং আত্মার আত্মীয়কে নির্মমভাবে নিঃশেষ করে দিয়েছে। এই ক্ষমতাকেন্দ্রিকতা মানুষকে অমানুষ করে। অন্যায়কে ন্যায় করে। রক্তপাতকে ন্যায্যতা দেয়। ইতিহাসের পাতা খুঁজে খুঁজে অস্থির হওয়ার প্রয়োজন নেই। বিগত ১৫ বছরে শেখ হাসিনা যে নিষ্ঠুরতা ও নির্মমতা দেখিয়েছেন, তা কি শুধু ক্ষমতার জন্য নয়? ক্ষমতা মানে শুধু রাজদণ্ড নয়।
ক্ষমতা মানে স্বার্থ সুবিধা, সম্মান, সুযোগ ইত্যাদি। মানুষ স্বভাবতই স্বার্থপর। এ ধরনের ক্ষমতা ও স্বার্থে যখনই কোনো ব্যাঘাত ঘটে, তখনই নানা বিরোধ ও বিভেদ নানা আকার প্রকারে দৃশ্যমান হয়ে ওঠে। অবশ্য ক্ষমতার একটি আদর্শিক বা নৈতিক অবস্থানও রয়েছে। সবাই ক্ষমতাপ্রিয়, সবাই স্বার্থবাদীÑএ রকম সাধারণ অভিযোগ দেওয়া যাবে না।
এই পৃথিবীতে ক্ষমতার জন্য চরম নিষ্ঠুরতার যেমন উদাহরণ আছে, তেমনি ন্যায় ও সত্যের জন্য প্রাণপাতের উদাহরণও আছে। বাংলাদেশের সমাজ ও রাষ্ট্রে যারা আছে, তারা মানুষ। মানুষ হিসেবে যে গুণপনা ও যে দোষপনার অধিকারী হওয়ার কথা, সবার মধ্যে তা রয়েছে। সুতরাং এই আপেক্ষিক সত্যকে অনুধাবন করে আমাদের পথচলাকে বিশ্লেষণ করতে হবে।
গত কয়েক দিনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব এবং প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি এর মধ্যে যে বাদ-বিতর্ক আমরা লক্ষ করি, তা অবশ্য সীমালঙ্ঘন করেনি। তবে নাগরিক সাধারণে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়িয়েছে। আর এভাবে বেড়েছে অনৈক্য, সংশয় ও সন্দেহ। ছোট ছোট সান্ত্বনার কথা যেমন প্রশমিতে পারে ব্যথা, তেমনি ছোট ছোট বিতর্ক অবশেষে পুরো জাতির জন্য বিবাদজনক পর্যায় তৈরি করতে পারে।
একটি রাজনৈতিক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, তিনটি ইস্যুতে সন্দেহ বাড়ছে বিএনপিতে। আর এসব হচ্ছে- অপ্রয়োজনীয় সংস্কার প্রস্তাব, গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র ও নতুন দল গঠন। সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে উত্থিত প্রশ্ন আরো উত্তাপ ছড়িয়েছে। এটি সত্যি, যে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে সরকার সংস্কার কমিশনগুলো গঠন করেছিল, তা এখন প্রস্তাবনার আধিক্যে ভরপুর। সেই সংস্কার প্রস্তাবনা রান্নাঘর থেকে বঙ্গভবন পর্যন্ত বিস্তৃত। সবচেয়ে বড় অবিশ্বাসের ক্ষেত্র সম্ভবত সংস্কার ক্ষেত্র।
বিএনপি সংগতভাবেই মনে করছে যে, সংস্কার প্রস্তাবনা বাস্তবায়নের আড়ালে ছাত্রনেতারা তাদের কর্তৃত্ব দীর্ঘায়িত করতে চাইছে। এ ক্ষেত্রে তারা অন্তর্বর্তী সরকারকে প্রভাবিত করার পরিকল্পনায় আসছে। ছাত্ররা যে ঘোষণাপত্রের কথা বলছেন, তা নিয়েও বিএনপির দ্বিমত রয়েছে। তারা মনে করছে, এটা কোনো প্রয়োজনীয় বা আবশ্যিক বিষয় নয়। অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নেতৃত্ব মনে করছে, ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে তারা রাজনৈতিক নেতৃত্বকে একটি কঠিন প্রতিজ্ঞায় আবদ্ধ করবেন। আর তা না হলে নব্বই সালের তিন জোটের ঘোষণাপত্রের মতো রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি অপূর্ণই থেকে যাবে। তৃতীয় বিষয়টি হচ্ছে ছাত্রনেতৃত্বের নতুন দল ঘোষণার কথা। বিএনপির জন্য এ বিষয়টি সবচেয়ে উদ্বেগজনক।
দলটির ভাষ্যÑযেকোনো নতুন দল গঠিত হলে বিএনপি তাকে স্বাগত জানাবে। কিন্তু সরকারের মধ্য থেকে কথিত ‘কিংস পার্টি’ গঠন করলে বিএনপির আপত্তি রয়েছে। বাস্তবতা এই যে, বিএনপি এখন নির্বাচন বিজয়ের প্রশ্নে ‘নিরঙ্কুশ’ অবস্থানে রয়েছে। আওয়ামী লীগ শাসনকালে গায়ের জোরে তারা যেমন নিরঙ্কুশ অবস্থার সৃষ্টি করেছিল, তেমনি একটি নিরঙ্কুশ অবস্থা বিএনপির জন্য আন্দোলন-পরবর্তী পর্যায়ে সৃষ্টি হয়েছে। এই নিরঙ্কুশতা গায়ের জোরে অর্জিত হয়নি। জনগণের সতত সমর্থনে এই বাস্তবতা অর্জিত হয়েছে। আওয়ামী লীগের ওই অবস্থানকে যদি আমরা বলি নেতিবাচক, বিএনপির অর্জিত এই অবস্থা ইতিবাচক। কিন্তু তবু তা নিরঙ্কুশ।
এখন বাংলাদেশে এমন অবস্থা রয়েছে, সব দল একত্র হয়েও যদি বিএনপির মোকাবিলা করে, তাহলেও তারা হয়তো জয়লাভ করবে না। আর এখানেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের অসহায়ত্ব। ক্রমাগতভাবে জামায়াতে ইসলামীর বর্ধমান জনপ্রিয়তা এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা স্বাভাবিকভাবেই তাদের বিব্রত করছে। বিশেষ করে সরকারের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে ছাত্রদের দলীয় ঘোষণা বিএনপিকে বিচলিত করছে।
দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি এবং ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্বদানকারী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই বিরোধ অনাকাঙ্ক্ষিত কিন্তু অস্বাভাবিক নয়। ক্ষমতাসূত্রের যে ব্যাকরণ আমরা আগে উল্লেখ করেছি, তাতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও প্রতিযোগিতা স্বাভাবিক। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব ও কর্তৃত্বে রাজনৈতিক দল গঠন নিয়ে দুটি ভিন্ন মত রয়েছে। একটি অভিমত এ রকম : ছাত্রদের রাজনীতি করার মৌলিক অধিকার রয়েছে। ভবিষ্যৎ সরকারকে চাপে রাখার স্বার্থে তাদের অবস্থান প্রয়োজনীয়।
তারা সংগঠিত না থাকলে ভবিষ্যতে রাজনৈতিক নিপীড়নের শিকার হতে পারে। অন্যদিকে বিপরীত ধারার অভিমত হচ্ছে, গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে তারা সমাজ ও রাষ্ট্রে একটি সম্মানজনক অবস্থান অর্জন করেছে। রাষ্ট্র কর্তৃত্বে অংশীদার হয়ে এখন যদি তারা রাজনীতি করে, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে, তাহলে সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে যেমন প্রশ্ন উঠবে, ঠিক তেমনি তাদের অর্জিত জাতীয় সম্মান ক্ষুণ্ণ হবে। সত্যিই যদি তারা রাজনীতি করতে চায়Ñস্বচ্ছতার স্বার্থে, ন্যায়ের স্বার্থে তাদের উচিত অপেক্ষা করা।
নির্বাচিত সরকারের পরই তাদের কার্যাক্রম শুরু হতে পারে। এই দুই মতের মাঝামাঝিও আরেকটি অভিমত আছে। আর সেটিই বোধহয় সাধারণ মানুষের অভিপ্রায়ের কাছাকাছি। আর সেটি হচ্ছে ভবিষ্যৎ রাজনীতিকে পর্যবেক্ষণ, পরীক্ষণ ও প্রযোজনার জন্য নিজেদের তৈরি করা। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ভাষায় তারা হতে পারবে চাপ সৃষ্টিকারী (Pressure group) । তারা ইচ্ছা করলে রাষ্ট্রের খোলনলচে, রাজা-উজির পাল্টে দিতে পারবে। নিকটবর্তী ক্ষমতা তাদের বহুধাবিভক্ত করবে। আর দূরবর্তী ক্ষমতা তাদের স্বচ্ছ, অভিজ্ঞ ও ঐক্যবদ্ধ করবে। সদ্য স্বৈরাচারমুক্ত দেশের নাগরিক সাধারণ-রাজনৈতিক এলিট, ছাত্রনেতৃত্ব এবং সমাজের সর্বস্তরের মানুষের একটি সু-দৃঢ় ঐক্য দেখতে চায়। একতায় বিজয়, বিভাজনে পরাজয়।
এমবি
রাজনীতিতে বিরোধ বা বিতর্ক অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু অস্বাভাবিক তা, যা দেশ-জাতি-রাষ্ট্রকে আহত করে। দর্শনগতভাবে বলা হয় ‘যত মত তত পথ’ আর ‘শত ফুল ফুটতে দাও’। এও রাজনীতির আহ্বান। রাজনীতির জটিল ও কুটিল পথকে অতিক্রম করে ‘বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য’ সাধনেই সার্থকতা। রাষ্ট্রবিজ্ঞানীরা রাজনীতিকে বলেন সমঝোতার শিল্পকলা (Art of Compromise))।
এসব কথা যদি একটি শব্দে বিধিবদ্ধ করতে চাই, তার নাম হচ্ছে ‘গণতন্ত্র’। অনেক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও রাষ্ট্রবিজ্ঞানের জনক এরিস্টটল যা বলেছেন, তার মর্মার্থ হলো গণতন্ত্র মন্দের ভালো। বিস্ময়ের ব্যাপার মানবজাতির সভ্যতা এই মন্দের ভালোকেই ‘উত্তম শাসনব্যবস্থা’ বলে বিবেচনা করেছে।
গণতন্ত্র একটি রাজনৈতিক ব্যবস্থা। শাসন কাঠামোর একটি বাস্তব চিত্র। আবার গণতন্ত্র হচ্ছে একটি জীবনব্যবস্থা (A way of life)। গণতন্ত্র কখনোই সফল হতে পারে না যদি বিশ্বাস, মূল্যবোধ ও ব্যক্তি মননে ‘সমঝোতার মনোভাব’ না থাকে। অনেকেই মুখে গণতন্ত্রের মধু বিতরণ করেন, কিন্তু বুকে বিষ ধারণ করেন। সে ক্ষেত্রে গণতন্ত্র অসার, অকার্যকর ও অবাস্তব হওয়াই স্বাভাবিক। বাংলাদেশের বিগত অর্ধশতাব্দীর রাজনৈতিক ইতিহাস পর্যালোচনা করলে নেতিবাচক সিদ্ধান্তই নিতে হবে।
আমাদের জনমনস্তত্ত্ব, নৃ-তত্ত্ব, স্বভাব-চরিত্র, বিষয়-বৈশিষ্ট্য সাক্ষ্য দেয় যে আমরা ভালো মানুষ নই, ইতিহাস ও ভূগোলে এর প্রমাণ মিলবে (দেখুন আকবর আলি খান, অবাক বাংলাদেশÑবিচিত্র ছলনাজলে রাজনীতি : ২০১৭ : ২১-২৯ )।
আমাদের জীবনদৃষ্টি স্বচ্ছ নয়। ‘লতায় কণ্টক আছে, কুসুমে কীট আছে, গন্ধে বিষ আছে, স্ত্রী জাতি বঞ্ছনা জানে’Ñ বঙ্কিম চন্দ্রের উচ্চারণ মিথ্যে নয়। আর রবীন্দ্রনাথের উক্তিও সুখকর নয়। তিনি বলেন, ‘আমরা সকল কাজেই পরের প্রত্যাশা করি, অথচ পরের দোষ লইয়া আকাশ বিদীর্ণ করিতে থাকি।’ গত কয়েক দিনে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ব্যক্তি, দল ও গোষ্ঠীর রাজনৈতিক বাদানুবাদ বুঝতে এই ভূমিকা অংশটুকু সহায়ক হতে পারে।
বাংলাদেশের ইতিহাসে ২০২৪-এর ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান তথা গণবিপ্লব একটি অনন্য ঘটনা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত এই অভূতপূর্ব আন্দোলনে পুরো জাতি সিসাঢালা প্রাচীরের মতো ঐক্য রচনা করেছিল। খুব বিস্ময়ের ব্যাপারÑএর কোনো একক নেতৃত্ব ছিল না।
আমাদের দেশের প্রচলিত রাজনৈতিক ধারার মতো কোনো সম্মোহনী নেতা অথবা রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বে এই গণবিপ্লব অনুষ্ঠিত হয়নি। অভ্যুত্থানটি এ দেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে স্বকীয়তা, স্বাতন্ত্র্য ও ভিন্নতা দাবি করতে পারে। এই নেতৃত্ব নতুন ইতিহাস রচনা করেছে। প্রচলিত গতানুগতিক রাজনৈতিক প্রথা ও প্রক্রিয়ার বাইরে একটি নতুন ব্যবস্থাপনা নির্দেশ করেছে। এ যেন এক নতুন মিথস্ক্রিয়া। এই মিথস্ক্রিয়ায় বিশেষ কোনো আদর্শ মতবাদ বা ‘তন্ত্র-মন্ত্র’ স্থান পায়নি। বরং সবকিছুর মধ্য দিয়ে একটি নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্তের দিকে এগিয়েছে।
ছাত্রনেতারা আন্দোলন পরিচালনা করতে গিয়ে যে ভাষা ও পরিভাষা প্রয়োগ করেছেন, তা সত্যিই অভিনব। তাদের এই অর্জনকে তারা একটি নতুন বয়ান বা ব্যাখ্যায় উপস্থাপিত করার চেষ্টা করছেন। পুরো জাতি তাদের অফুরন্ত ভালোবাসায় আদৃত করেছে। এই ছাত্রনেতারা ঘুচিয়ে দিয়েছে ছাত্ররাজনীতির সাম্প্রতিক বদনাম। মানুষের অপার ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছে তারা। এ কথা সত্য, ক্ষমতা কাঠামোর শীর্ষে তারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কিন্তু নিরঙ্কুশভাবে তাদের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠিত হয়নি। প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস তাদের মূল্যায়নে কৃপণ ছিলেন না।
অনেককে অবাক করে দিয়ে তিনি তাদের যথার্থ সম্মান ও মর্যাদা দিয়েছেন। এই ক্ষমতার অধিষ্ঠান প্রতিষ্ঠিত হয়েছে রাজনৈতিক ঐকমত্যের ভিত্তিতে। সেখানে রাজনীতিবিদদের অবস্থান যেমন শক্ত ছিল, তেমনি ছিল সিভিল সোসাইটির প্রতিনিধিত্ব। আরো ছিল শেষ সম্বল সেনাবাহিনীর সমর্থন। সুতরাং দৃশ্যমানভাবেই সেখানে নিঃসন্দেহে জাতীয় ঐক্যের ভিত শক্তভাবে প্রতিষ্ঠিত ছিল। এটা তো সেই সেদিনের কথা। এখনো ছয় মাস অতিক্রান্ত হয়নি। তাহলে বাধা-বিপত্তি, দ্বন্দ্ব-বিদ্বেষ ও বাদ-বিতর্কের উৎস কী?
পৃথিবীর ইতিহাসে ক্ষমতাকেন্দ্রিক এত অঘটন ঘটেছে যে তা বর্ণনা করতে শিহরিত হতে হয়। পিতা পুত্রকে হত্যা করেছে অথবা পুত্র পিতাকে হত্যা করেছে। ভাই ভাইকে হত্যা করেছে এবং আত্মার আত্মীয়কে নির্মমভাবে নিঃশেষ করে দিয়েছে। এই ক্ষমতাকেন্দ্রিকতা মানুষকে অমানুষ করে। অন্যায়কে ন্যায় করে। রক্তপাতকে ন্যায্যতা দেয়। ইতিহাসের পাতা খুঁজে খুঁজে অস্থির হওয়ার প্রয়োজন নেই। বিগত ১৫ বছরে শেখ হাসিনা যে নিষ্ঠুরতা ও নির্মমতা দেখিয়েছেন, তা কি শুধু ক্ষমতার জন্য নয়? ক্ষমতা মানে শুধু রাজদণ্ড নয়।
ক্ষমতা মানে স্বার্থ সুবিধা, সম্মান, সুযোগ ইত্যাদি। মানুষ স্বভাবতই স্বার্থপর। এ ধরনের ক্ষমতা ও স্বার্থে যখনই কোনো ব্যাঘাত ঘটে, তখনই নানা বিরোধ ও বিভেদ নানা আকার প্রকারে দৃশ্যমান হয়ে ওঠে। অবশ্য ক্ষমতার একটি আদর্শিক বা নৈতিক অবস্থানও রয়েছে। সবাই ক্ষমতাপ্রিয়, সবাই স্বার্থবাদীÑএ রকম সাধারণ অভিযোগ দেওয়া যাবে না।
এই পৃথিবীতে ক্ষমতার জন্য চরম নিষ্ঠুরতার যেমন উদাহরণ আছে, তেমনি ন্যায় ও সত্যের জন্য প্রাণপাতের উদাহরণও আছে। বাংলাদেশের সমাজ ও রাষ্ট্রে যারা আছে, তারা মানুষ। মানুষ হিসেবে যে গুণপনা ও যে দোষপনার অধিকারী হওয়ার কথা, সবার মধ্যে তা রয়েছে। সুতরাং এই আপেক্ষিক সত্যকে অনুধাবন করে আমাদের পথচলাকে বিশ্লেষণ করতে হবে।
গত কয়েক দিনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব এবং প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি এর মধ্যে যে বাদ-বিতর্ক আমরা লক্ষ করি, তা অবশ্য সীমালঙ্ঘন করেনি। তবে নাগরিক সাধারণে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বাড়িয়েছে। আর এভাবে বেড়েছে অনৈক্য, সংশয় ও সন্দেহ। ছোট ছোট সান্ত্বনার কথা যেমন প্রশমিতে পারে ব্যথা, তেমনি ছোট ছোট বিতর্ক অবশেষে পুরো জাতির জন্য বিবাদজনক পর্যায় তৈরি করতে পারে।
একটি রাজনৈতিক বিশ্লেষণে বলা হয়েছে, তিনটি ইস্যুতে সন্দেহ বাড়ছে বিএনপিতে। আর এসব হচ্ছে- অপ্রয়োজনীয় সংস্কার প্রস্তাব, গণঅভ্যুত্থানের ঘোষণাপত্র ও নতুন দল গঠন। সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে উত্থিত প্রশ্ন আরো উত্তাপ ছড়িয়েছে। এটি সত্যি, যে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে সরকার সংস্কার কমিশনগুলো গঠন করেছিল, তা এখন প্রস্তাবনার আধিক্যে ভরপুর। সেই সংস্কার প্রস্তাবনা রান্নাঘর থেকে বঙ্গভবন পর্যন্ত বিস্তৃত। সবচেয়ে বড় অবিশ্বাসের ক্ষেত্র সম্ভবত সংস্কার ক্ষেত্র।
বিএনপি সংগতভাবেই মনে করছে যে, সংস্কার প্রস্তাবনা বাস্তবায়নের আড়ালে ছাত্রনেতারা তাদের কর্তৃত্ব দীর্ঘায়িত করতে চাইছে। এ ক্ষেত্রে তারা অন্তর্বর্তী সরকারকে প্রভাবিত করার পরিকল্পনায় আসছে। ছাত্ররা যে ঘোষণাপত্রের কথা বলছেন, তা নিয়েও বিএনপির দ্বিমত রয়েছে। তারা মনে করছে, এটা কোনো প্রয়োজনীয় বা আবশ্যিক বিষয় নয়। অন্যদিকে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নেতৃত্ব মনে করছে, ঘোষণাপত্রের মাধ্যমে তারা রাজনৈতিক নেতৃত্বকে একটি কঠিন প্রতিজ্ঞায় আবদ্ধ করবেন। আর তা না হলে নব্বই সালের তিন জোটের ঘোষণাপত্রের মতো রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি অপূর্ণই থেকে যাবে। তৃতীয় বিষয়টি হচ্ছে ছাত্রনেতৃত্বের নতুন দল ঘোষণার কথা। বিএনপির জন্য এ বিষয়টি সবচেয়ে উদ্বেগজনক।
দলটির ভাষ্যÑযেকোনো নতুন দল গঠিত হলে বিএনপি তাকে স্বাগত জানাবে। কিন্তু সরকারের মধ্য থেকে কথিত ‘কিংস পার্টি’ গঠন করলে বিএনপির আপত্তি রয়েছে। বাস্তবতা এই যে, বিএনপি এখন নির্বাচন বিজয়ের প্রশ্নে ‘নিরঙ্কুশ’ অবস্থানে রয়েছে। আওয়ামী লীগ শাসনকালে গায়ের জোরে তারা যেমন নিরঙ্কুশ অবস্থার সৃষ্টি করেছিল, তেমনি একটি নিরঙ্কুশ অবস্থা বিএনপির জন্য আন্দোলন-পরবর্তী পর্যায়ে সৃষ্টি হয়েছে। এই নিরঙ্কুশতা গায়ের জোরে অর্জিত হয়নি। জনগণের সতত সমর্থনে এই বাস্তবতা অর্জিত হয়েছে। আওয়ামী লীগের ওই অবস্থানকে যদি আমরা বলি নেতিবাচক, বিএনপির অর্জিত এই অবস্থা ইতিবাচক। কিন্তু তবু তা নিরঙ্কুশ।
এখন বাংলাদেশে এমন অবস্থা রয়েছে, সব দল একত্র হয়েও যদি বিএনপির মোকাবিলা করে, তাহলেও তারা হয়তো জয়লাভ করবে না। আর এখানেই বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও অন্যান্য রাজনৈতিক দলের অসহায়ত্ব। ক্রমাগতভাবে জামায়াতে ইসলামীর বর্ধমান জনপ্রিয়তা এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা স্বাভাবিকভাবেই তাদের বিব্রত করছে। বিশেষ করে সরকারের আশ্রয়-প্রশ্রয়ে ছাত্রদের দলীয় ঘোষণা বিএনপিকে বিচলিত করছে।
দেশের প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি এবং ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্বদানকারী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এই বিরোধ অনাকাঙ্ক্ষিত কিন্তু অস্বাভাবিক নয়। ক্ষমতাসূত্রের যে ব্যাকরণ আমরা আগে উল্লেখ করেছি, তাতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও প্রতিযোগিতা স্বাভাবিক। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব ও কর্তৃত্বে রাজনৈতিক দল গঠন নিয়ে দুটি ভিন্ন মত রয়েছে। একটি অভিমত এ রকম : ছাত্রদের রাজনীতি করার মৌলিক অধিকার রয়েছে। ভবিষ্যৎ সরকারকে চাপে রাখার স্বার্থে তাদের অবস্থান প্রয়োজনীয়।
তারা সংগঠিত না থাকলে ভবিষ্যতে রাজনৈতিক নিপীড়নের শিকার হতে পারে। অন্যদিকে বিপরীত ধারার অভিমত হচ্ছে, গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে তারা সমাজ ও রাষ্ট্রে একটি সম্মানজনক অবস্থান অর্জন করেছে। রাষ্ট্র কর্তৃত্বে অংশীদার হয়ে এখন যদি তারা রাজনীতি করে, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে, তাহলে সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে যেমন প্রশ্ন উঠবে, ঠিক তেমনি তাদের অর্জিত জাতীয় সম্মান ক্ষুণ্ণ হবে। সত্যিই যদি তারা রাজনীতি করতে চায়Ñস্বচ্ছতার স্বার্থে, ন্যায়ের স্বার্থে তাদের উচিত অপেক্ষা করা।
নির্বাচিত সরকারের পরই তাদের কার্যাক্রম শুরু হতে পারে। এই দুই মতের মাঝামাঝিও আরেকটি অভিমত আছে। আর সেটিই বোধহয় সাধারণ মানুষের অভিপ্রায়ের কাছাকাছি। আর সেটি হচ্ছে ভবিষ্যৎ রাজনীতিকে পর্যবেক্ষণ, পরীক্ষণ ও প্রযোজনার জন্য নিজেদের তৈরি করা। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের ভাষায় তারা হতে পারবে চাপ সৃষ্টিকারী (Pressure group) । তারা ইচ্ছা করলে রাষ্ট্রের খোলনলচে, রাজা-উজির পাল্টে দিতে পারবে। নিকটবর্তী ক্ষমতা তাদের বহুধাবিভক্ত করবে। আর দূরবর্তী ক্ষমতা তাদের স্বচ্ছ, অভিজ্ঞ ও ঐক্যবদ্ধ করবে। সদ্য স্বৈরাচারমুক্ত দেশের নাগরিক সাধারণ-রাজনৈতিক এলিট, ছাত্রনেতৃত্ব এবং সমাজের সর্বস্তরের মানুষের একটি সু-দৃঢ় ঐক্য দেখতে চায়। একতায় বিজয়, বিভাজনে পরাজয়।
এমবি
এই বছর অর্থনীতির নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে উদ্ভাবন ও সৃজনশীল ধ্বংসের প্রক্রিয়া (creative destruction) কীভাবে দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে সেই গবেষণার ওপর। নতুন প্রযুক্তি ও ধারণা পুরোনো ব্যবস্থাকে প্রতিস্থাপন করে সমাজ যখন পরিবর্তনের জন্য উন্মুক্ত থাকে, তখনই টেক
১৩ ঘণ্টা আগে‘মনের তালা খুলল কে, চাবিওয়ালা, চাবিওয়ালা!’ প্রখ্যাত শিল্পী রুনা লায়লার সেই সুরেলা প্রশ্নের উত্তর আজও খুঁজে বেড়াচ্ছি! তবে ব্যক্তিগত জীবনে নয়, রাষ্ট্রীয় জীবনে। এই রাষ্ট্রের জীবনেও একটা বিশেষ তালা আছে, আর তার নাম আর্টিকেল ৭০! এই তালা লাগানো হয়েছিল সেই সব মাননীয়র জন্য, যাদের মধ্যে ‘ছাগলীয়’ প্রবৃত্তি রয়ে
১৩ ঘণ্টা আগেভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইসরাইলের যুদ্ধাপরাধী প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে প্রায়ই তার পরম বন্ধু বলে বেশ গৌরবের সঙ্গে প্রচার করে থাকেন। ভিন্ন দেশের এ দুই রাজনীতিবিদের প্রগাঢ় বন্ধুত্বের মূল সূত্র হলো মুসলমানদের প্রতি তাদের তীব্র ঘৃণা। বর্তমান বিশ্বে ইসলামোফোবিয়ায় আক্রান্ত শীর্ষ দুটি
১৪ ঘণ্টা আগেগাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে যখন হতাশা চরমে, তখনই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন এক নতুন ‘২০ দফার শান্তি পরিকল্পনা’। সেখানে তিনি নিজেকে বসিয়েছেন একটি তথাকথিত ‘বোর্ড অব পিস’-এর চেয়ারম্যান হিসেবে।
২ দিন আগে