জিয়াউর রহমানের হাতে বীমার অগ্রযাত্রা

মো. মানসুর আলম সিকদার
প্রকাশ : ১৪ মার্চ ২০২৫, ১২: ৩৮

বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭৬ থেকে ১৯৮২ পর্যন্ত বীমা সেক্টরের নিয়ন্ত্রণভার অভিজ্ঞতাসম্পন্ন বীমা ব্যক্তিত্বের হাতে ন্যস্ত ছিল। তখন কোনো ধরনের অবৈধ কমিশনের প্রচলন ছিল না।

বিজ্ঞাপন

১৯৭৬ সালে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান অর্থ মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত উপদেষ্টা হিসেবে ১৯৭৬-৭৭ সালের অর্থবছরের বাজেট পেশ করেন, সেই বাজেটে বীমা উন্নয়নের কিছু বরাদ্দ রেখে ছিলেন। তখন থেকেই বাংলাদেশে সত্যিকারের বীমা উন্নয়নের অগ্রযাত্রা শুরু হয়েছিল। তার আমলে কোনো ধরনের অবৈধ কমিশন বলতে কিছুই ছিল না। রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান তার সময়ে বাংলাদেশে অর্থনৈতিক শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনেন।

১৯৭৮ সালে খাল-খনন কর্মসূচির মাধ্যমে তিনি সবুজ বিপ্লব ঘটান এবং দেশকে করেছিলেন অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধিশালী। ১৯৭৪ সালে চরম দুর্ভিক্ষ থেকে তিনি দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেন। এমনকি তার আমলে নেপালসহ অন্যান্য দেশেও চাল রপ্তানি করেছিলেন।

কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে ১৯৮০ সালের ডিসেম্বর মাসে তিনি বাংলাদেশের বরেণ্য বীমাবিদদের সঙ্গে কুশলবিনিময়ের আয়োজন করেন এবং তিনি সেখানে বলেছিলেন, ‘জীবন বীমা করপোরেশন এবং সাধারণ বীমা করপোরেশনের পাশাপাশি বীমাশিল্পকে বেসরকারি খাতে ছেড়ে দিতে হবে। ফরে বহু কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে এবং সঙ্গে বেকারত্ব দূর হবে।’

১৯৮৩ সালে মটর অর্ডিন্যান্সের মাধ্যমে মোর তৃতীয়পক্ষের বীমাটি চালু হয়েছিল। পরে ১৯৮৫-৮৬ ‘জীবন বীমা করপোরেশন এবং সাধারণ বীমা করপোরেশনের পাশাপাশি ১৯৮৫-৮৬ সালে হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের আমলে উপরোক্ত ধারাবাহিকতাস্বরূপ তার কিছুটা বাস্তবায়ন হয়েছিল। ১. ন্যাশনাল লাইফ, ২. ডেল্টা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি নন-লাইফ : ১. বিজিআইসি, ২. গ্রিন ডেল্টা ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড, ৩. ইউনাইটেড ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড, ৪. বাংলাদেশ কো-অপারেটিভ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড, ৫. পিপলসসহ ১১টি কোম্পানিকে অনুমোদন দিয়েছিল। তখন পর্যন্ত বীমা সেক্টরের অবস্থা শোচনীয় পর্যায়ে যায় নেই।

বিগত সরকারের আমলে অর্থাৎ ২০০৮ সাল থেকেই ব্যাংক এবং বীমাসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর ভয়াবহ পতন শুরু হতে থাকে, যা এখনো চলমান। যারা ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে দৈত্য-দানবের মতো ব্যাংক, বীমাসহ আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোয় প্রভাব-প্রতিপত্তি ছিল, তারা আজও বহাল-তবিয়তে আছে।

পৃথিবীর কোথাও এমনই নজির নেই যে, প্রিমিয়ামের টাকা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ৫০ থেকে ৭০ শতাংশ টাকা লোপাট হয়। বাংলাদেশে বীমা ক্ষেত্রে এসব বন্ধ করতে হলে বাস্তব অভিজ্ঞতাসম্পন্ন বীমা ব্যক্তিত্বদের সম্পৃক্ততা দরকার। অবৈধ কমিশন সম্পূর্ণ মানি-লন্ডারিংয়ের আওতায় পড়ে। ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলের লন্ডারদের হাত থেকে বীমা প্রতিষ্ঠানগুলো রক্ষা করতে এখনই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ দরকার।

১৯৭৬ সালে রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আমল থেকেই বাংলাদেশে সত্যিকারের বীমা উন্নয়নের অগ্রযাত্রা শুরু হয়েছিল। তার আদর্শকে ধারণ করে অনৈতিক কমিশন কন্ধ করে আমাদের সবাইকে বীমা উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে হবে।

লেখক : বীমা লেখক

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত