পিআরে সংশয় থাকলে গণভোট দেন: ইসলামী আন্দোলন

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৭: ২৮

অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্দেশে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম বলেছেন, পিআর পদ্ধতির নির্বাচন নিয়ে কোনো সংশয় থাকলে গণভোট দেন। জনগণ চাইলে পিআরে নির্বাচন হবে, না চাইলে হবে না।

জুলাই গণহত্যার বিচার, নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা, জুলাই সনদের ভিত্তিতে পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন এবং জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের বিচার এবং বিচার চলাকালে তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করার দাবিতে বৃহস্পতিবার বাদ জোহর বায়তুল মোকাররমের উত্তর গেটে দলটির ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ শাখা আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল পূর্ব সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, পিআর পদ্ধতির নির্বাচনে ফ্যাসিস্ট তৈরি হবে না, কালো টাকা সাদা করার সুযোগ থাকবে না, ভোট ছিনতাইয়ের সুযোগ থাকবে না। পিআরে সব ধরনের মানুষের সংসদ হবে। যেকোনো দাবি আদায়ে রাস্তায় নামতে হবে না।

মুফতি ফয়জুল করিম বলেন, পিআরে তো বিএনপির আপত্তি থাকার কথা না। কারণ তাদের উচ্চপর্যায়ের এক নেতা দাবি করেছেন, নির্বাচনে তারা ৯০ শতাংশ ভোট পাবেন। আর তারা যেহেতু সবার সম্পৃক্ততায় নির্বাচন এবং জাতীয় সরকার গঠন চান সেহেতু পিআর তো তাদেরই চাওয়ার কথা।

তিনি আরও বলেন, আমি মনে করি, ভারত জুলাই চায় না। জুলাইয়ের আইনি ভিত্তি দিতে হবে। আপনারা কি ভারতের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করছেন? অন্তর্বর্তী সরকার শুধু নির্বাচন দেয়ার জন্য ক্ষমতায় আসেনি। নির্বাচনের আগে ৩টি কাজ করতে হবে। সংস্কার, দৃশ্যমান বিচার এবং নির্বাচন। নির্বাচন পিআর পদ্ধতিতে দিতে হবে। ৮০ শতাংশ জনগণ পিআরের পক্ষে।

প্রাইমারি স্কুলে গান এবং নাচের শিক্ষক নিয়োগ না দেয়ারও দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, মুসলমানদের ট্যাক্সের টাকায় এই দেশে নাচ-গানের শিক্ষক নিয়োগ দেয়া যাবে না। এরপরও কেউ যদি করতে চায় তাহলে সে মসনদে থাকতে পারবে না। যদি টিচার দিতে চান তাহলে কম্পিউটারের টিচার দেন। আর ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ বাধ্যতামূলক করতে হবে।

সমাবেশে অন্য বক্তারা বলেন, সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হবে না। পিআর পদ্ধতিতেই হতে হবে। জুলাই সনদের আইনের ভিত্তিতে নির্বাচন হতে হবে। যারা নির্বাচনে বানচাল করতে চায় তাদের আগামী নির্বাচনে জনগণ তাদের বঙ্গোপসাগরে পাঠাবে।

বৃহস্পতিবার জোহরের নামাজের পর মিছিলের আগে বাইতুল মোকাররমের উত্তর গেটে সমাবেশ করে দলটি। দলটির ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি ইমতিয়াজ আলমের সভাপতিত্বে সহকারী মহাসচিব মাওলানা আহমদ আব্দুল কাউয়ুম, মুফতি রেজাউল করীম আবরার, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, কেএম শরীয়াতুল্লাহ, মাওলানা আরিফুল ইসলাম, মাওলানা দেলওয়ার হোসাইন সাকি, মাওলানা খলিলুর রহমানসহ দলটির শীর্ষস্থানীয় নেতারা বক্তৃতা করেন।

সমাবেশ শেষে বিকাল ৩টায় বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। মিছিলটি বাইতুল মোকাররমের উত্তর গেট সংলগ্ন রাস্তা দিয়ে শুরু হয়ে পল্টন মোড় পর্যন্ত গিয়ে আবার বাইতুল মোকাররমের সামনে গিয়ে শেষ হয়।

এই কর্মসূচিতে নেতাকর্মীদের ব্যাপক অংশগ্রহণ লক্ষ্য করা গেছে। বিক্ষোভ-মিছিলে তারা ‘যদি না হয় পিআর, আবার ফিরবে স্বৈরাচার’ সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন।

প্রসঙ্গত, ঐকমত্য কমিশনে আলোচনার মধ্যেই রাজপথে জামায়াতসহ কয়েকটি ইসলামী দল। জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ও পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনসহ বিভিন্ন দাবি জানিয়েছে দলগুলো। এসব দাবি আদায়েই জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের উত্তর ও দক্ষিণ গেটসহ রাজধানীর কয়েকটি স্থানে বৃহস্পতিবার সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে জামায়াতে ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ ও বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসসহ সাতটি রাজনৈতিক দল।

এছাড়া শুক্রবার বিভাগীয় শহরে এবং ২৬ সেপ্টেম্বর সব জেলা ও উপজেলায় বিক্ষোভ মিছিলের কর্মসূচি পালন করবে দলগুলো।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিষয়:

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত