নাগরিক সমাবেশে শামসুজ্জামান দুদু

নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নিয়োগ যেন দলীয় প্রভাবে প্রভাবিত না হয়

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ১৬: ১৫

বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু নির্বাচন পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তাদের নিয়োগে দলীয় প্রভাবমুক্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, জেলা প্রশাসক (ডিসি), পুলিশ সুপার (এসপি) বা নির্বাচন-সম্পর্কিত কর্মকর্তাদের নিয়োগ কোনো বিশেষ দলের প্রভাবে প্রভাবিত হলে দেশের গণতন্ত্র আশাহত হবে এবং মানুষ নিরাশ হয়ে পড়বে।

বিজ্ঞাপন

বুধবার রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে 'দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলন'-এর উদ্যোগে আয়োজিত "জাতীয় নির্বাচন ঘিরে দেশ-বিদেশে ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে" এক নাগরিক সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপি নেতা দুদু তার বক্তব্যে নির্বাচিত সরকারের গুরুত্ব তুলে ধরে বলেন, অনির্বাচিত সরকার নয়—নির্বাচিত সরকারই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার নেতৃত্ব দিতে পারে। যদি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত না হয়, তাহলে স্বৈরতন্ত্রের পতনের মধ্য দিয়ে মানুষের সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার যে অনুভূতি সৃষ্টি হয়েছিল, তা কোনো না কোনোভাবে বাধাগ্রস্ত হবে। মানুষ হতাশ হয়ে পড়বে।

তিনি বর্তমান সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, যারা এখন সরকারে আছেন, তাদের উচিত মানুষের পাশে দাঁড়ানো এবং নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া।

শামসুজ্জামান দুদু একটি রাজনৈতিক দলের বিরুদ্ধে সরকারকে ব্ল্যাকমেইল করার চেষ্টার অভিযোগ তোলেন। তিনি বলেন, কোনো এক রাজনৈতিক দল সরকারকে ব্ল্যাকমেইল করতে চাইছে নাকি তারা কী করতে চাইছে আমি জানি না। তারা সরকারের অভ্যন্তরের কিছু কথা উল্লেখ করে বলেছেন—প্রয়োজনে তা ফাঁস করবে। এটি অত্যন্ত মর্মান্তিক এবং সরকারের জন্য শুভ কিছু বয়ে আনবে না।

তিনি এই ধরনের কাজকে 'অশোভনীয়', 'দণ্ডনীয়' এবং 'বেআইনি' আখ্যা দিয়ে সরকারকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন।

বিএনপির এই নেতা শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনা উভয়ের কঠোর সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, এই দেশে গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিল শেখ মুজিব। ৭৩-৭৫-এর কথা স্মরণ করলে দেখবেন শেখ মুজিবুর রহমান গণতন্ত্র স্বাধীনতার কথা বলে তিন বছরে বাকশাল গঠন করেছিলেন, রক্ষী বাহিনী গঠন করে প্রায় ৪০ হাজার বিরোধী দলের নেতা-কর্মীকে হত্যা করেছে।" তিনি আরও বলেন, "গত ১৫-১৬ বছর মুজিব কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশে হাজার হাজার মানুষকে খুন করেছে শুধুমাত্র ক্ষমতায় থাকার জন্য। এই পরিবার আগা-গোরা খুনি, গণহত্যাকারী এবং লুটপাটকারী। তাদের বিচার অবশ্যই দৃশ্যমান হতে হবে। এই খুনিদের কোনোভাবে পুনর্বাসন করা যাবে না।

ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি দেশের বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবিলায় সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এই খুনিরা (আওয়ামী লীগ) যতদিন পর্যন্ত থাকবে, পার্শ্ববর্তী একটা দেশ বাংলাদেশকে বিপন্ন করবে এবং এই দেশ গত ৫৪ বছর ধরে শোষণ করেছে। গত তিনটি নির্বাচনে তারা একবারের জন্য বলে নাই এটা নির্বাচনের মতো নির্বাচন হয় নাই।

তিনি হুঁশিয়ারি দেন, এইসব বিপদ-আপদ ষড়যন্ত্র রুখতে হলে আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে এবং ঐক্যবদ্ধ না থাকলে আমাদের যা অর্জন, গণতন্ত্রের যে সম্ভাবনা সেটা ধ্বংস হয়ে যাবে। গণতন্ত্র আমরা প্রতিষ্ঠা করতে পারবো না।

দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপনের সভাপতিত্বে নাগরিক সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন ন্যাশনাল লেবার পার্টির চেয়ারম্যান লায়ন ফারুক রহমান, পিরোজপুর জেলা বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেন, জাতীয়তাবাদী চালক দলের সভাপতি জসিম উদ্দিন কবির সহ প্রমুখ।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত