বিএনপির সালাহউদ্দিনের বিরুদ্ধে লড়বেন জামায়াত নেতা ফারুক

স্টাফ রিপোর্টার, কক্সবাজার
প্রকাশ : ০৪ জুলাই ২০২৫, ১১: ১৭
আপডেট : ০৪ জুলাই ২০২৫, ১২: ১৭
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ ও জামায়াত নেতা আবদুল্লাহ আল ফারুক। ছবি: আমার দেশ

দেশের সর্বদক্ষিণের কক্সবাজার জেলা চারটি সংসদীয় আসন নিয়ে গঠিত। এই জেলাটি বিএনপি ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঘাঁটি হিসেবেই দীর্ঘ বছর ধরে পরিচিত। সাধারণত অনিয়ম, প্রতারণা ও ভোট ডাকাতির আশ্রয় না নিলে জেলার চারটি আসনের প্রত্যেকটিতে বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থীরা জয়ী হয়ে আসেন।

তবে সেটা অবশ্য জোটবদ্ধ নির্বাচনে। এবার কিন্তু সেই চিত্র ভিন্ন। বিএনপি-জামায়াতের প্রার্থীরা এবার নির্বাচনে আলাদা হয়ে লড়বে। সেই সমীকরণে ভোটের মাঠে আধিপত্য কেবল বিএনপিরই। সাংগঠনিকভাবে জামায়াতে ইসলামী শক্ত অবস্থানে থাকলেও ভোটের মাঠে তার কতটা ছাপ রাখতে পারবে দলটি তা এখন আলোচনায়। যদিও এবার চারটি আসনেই জামায়াতে ইসলামী ভাগ বসাতে চায় বিএনপির ভোটব্যাংকে।

খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, কক্সবাজার জেলার চারটি আসনে অনেক প্রবীণ ও নবীন মুখের সম্ভাবনা দেখা গেলেও সবকটি আসনেই মূল লড়াই হবে বিএনপি ও জামায়াতের প্রার্থীদের মধ্যে । এ ছাড়া জুলাই বিপ্লবের নেতৃত্ব দেওয়া শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি, নেজামে ইসলাম পার্টি কিংবা অন্য কোনো সমমনা দলের নাম থাকলেও ভোটের মাঠে তেমন তৎপরতা নেই।

এদিকে দেশের অন্য জেলাগুলোতে আসনভিত্তিক প্রার্থিতার জন্য অনেক নতুন-পুরোনো মুখ দেখা গেলেও সেখানেও কিছুটা ভিন্ন কক্সবাজারে। এখানে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী ছাড়া তেমনভাবে বেশি প্রার্থী দেখা যাচ্ছে না। চারটি আসনে এখন পর্যন্ত ১০ থেকে ১৫ জনের নাম শোনা যাচ্ছে।

জেলার বৃহত্তর উপজেলা চকরিয়া আর উপকূলীয় উপজেলা পেকুয়া নিয়ে কক্সবাজার-১ আসন। আসনটিতে রয়েছেন বিএনপির হেভিওয়েট প্রার্থী সালাহউদ্দিন আহমেদ। তিনি বিএনপির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং এ মুহূর্তে দলটির মুখপাত্রের দায়িত্ব পালন করছেন। বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া সরকারের প্রথম মেয়াদের সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) থেকে রাজনীতির মাঠে আসা সালাহউদ্দিন আহমেদ এই আসনে একবারের জন্যও হারেননি। ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের ১৬ বছর বাদ দিলে তার আগের একটি নির্বাচনেও হারেননি তিনি। রাজনৈতিক মামলাজনিত কারণে তিনি নিজে প্রার্থী হতে না পারলেও এই আসন থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন তারই সহধর্মিণী হাসিনা আহমেদ, তিনিও হারেননি। এসব কারণে আসনটিতে সালাহউদ্দিন আহমেদকে মনে করা হয় ‘অপরাজেয়’। এবারও এই আসনে বিএনপি থেকে প্রার্থী হচ্ছেন সালাহউদ্দিন।

এ আসনে অনেক আগেই প্রার্থী ঘোষণা করেছে জামায়াতে ইসলামী। দলটির কক্সবাজার শহর শাখার আমির ও সাবেক ছাত্রনেতা আবদুল্লাহ আল ফারুককে প্রার্থী ঘোষণার পর থেকে তিনি নিজেও সাংগঠনিকভাবে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন। প্রায় প্রতিদিনই আসনটির বিভিন্ন এলাকায় নানা কর্মসূচি পালন করছেন তিনি। জামায়াতে ইসলামীর সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, চকরিয়া-পেকুয়ায় তাদের নিজস্ব ভোট ব্যাংক রয়েছে। ৫ আগস্টের পর তাদের দলের প্রতি মানুষের আস্থা বেড়েছে। সেই হিসেবে প্রার্থী যত হেভিওয়েটই হোক না কেন, ভোটের মাঠে জেতার জন্য তারা কাজ করে চলেছেন।

জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী আবদুল্লাহ আল ফারুক বলেন, রাজনীতির মাঠে শেষ বলে কিছু নেই। প্রয়োজন মানুষকে সামনে নিয়ে আসে। জামায়াতে ইসলামীও পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে চকরিয়া-পেকুয়ায় মানুষের মধ্যে আস্থা ও বিশ্বাস তৈরি করতে পেরেছে। বাকিটা সময়ের অপেক্ষা।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘আমাকে এখন পুরো দেশকে নিয়ে ভাবতে হচ্ছে। আমার এলাকার মানুষ আমাকে ভালোবাসে। আমি প্রতিদিন মাঠে যেতে না পারলেও তারা আমার প্রতি বিশ্বস্ত। আমারও জনগণের প্রতি বিশ্বাস ও আস্থা আছে।’

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত