
রায়হান রাশেদ

ছোট মেঘনা নদীর কোল ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে ইতিহাসের সাক্ষীÑনরসিংদী জেলার রায়পুরার আটকান্দি মসজিদ। চতুর্দিকে সবুজের সমারোহ। নানা জাতের গাছের ঘন ছায়ায় মায়াময় এক পরিবেশ। ঠান্ডা আবহ খেলা করে সব সময়। গ্রামের এক পাশে এবং নদীর কাছে হওয়ায় সব সময় নীরবতায় আচ্ছন্ন থাকে মসজিদ এলাকা। ৩৪টি খিলানের ওপর দাঁড়িয়ে আছে মসজিদটি। খিলানের ওপরের অংশে মোহন কারুকাজ। দুই ফুট পুরু দেয়াল। পাথর বসানো মেঝে।
মেহরাবজুড়ে মোজাইক পাথর বসানো। বিভিন্ন ফুলের দৃষ্টিনন্দন কাজ। আঁকা হয়েছে গাছের পাতা। সাদা আর নীল রঙের কারুকাজ চোখ জুড়িয়ে দেয়। গম্বুজ আছে আটটি, মূল মসজিদে রয়েছে তিনটি। মাঝখানেরটি অপেক্ষাকৃত বড়। মূল মসজিদের বাইরে আছে পাঁচটি গম্বুজ। এগুলো মসজিদের গম্বুজ থেকে কিছুটা ছোট। মসজিদের বারান্দা দিয়ে মূল মসজিদে প্রবেশের দরজা আছে পাঁচটি। বারান্দার দুই পাশে দুটি। ভেতরে প্রবেশের পথ তিনটি। মসজিদটি দেখতে আগ্রার তাজমহলের মতো।
বহু বছরের পুরনো এই মসজিদের প্রায় জায়গায় পলেস্তরা খসে পড়েছে। ছোট পাথর পড়ে যাচ্ছে দিন দিন। কোথাও কোথাও বৃক্ষের চাড়া গজাচ্ছে। শেওলা জমে আছে মসজিদের গায়ে। কিছু জায়গায় এলাকাবাসী মিলে আস্তর করেছে এর মধ্যে।
আমিরগঞ্জের মাওলানা আলিম উদ্দিন মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি স্থানীয় জমিদার ছিলেন। ৪০ বিঘা জমি ছিল তাঁর। মসজিদের পাশে ৯ ঘরবিশিষ্ট থাকার একতলা ভবন ছিল।
ইতিহাসের সন্ধানে
মসজিদের কোনো শিলালিপি নেই। সঠিক নির্মাণ তারিখও কেউ বলতে পারে না। স্থানীয়রা জানালেন, প্রায় ১৫০ বছরের পুরনো মসজিদ। প্রাচীন এ মসজিদটি মোগল স্থাপত্যের আদলে গড়া। সুদূর মহীশূর থেকে কারিগর এনে নির্মাণ করা হয়েছে। অনেকে মসজিদের গম্বুজকে তাজমহলের গম্বুজের সঙ্গে তুলনা করেন।
স্থানীয় আব্দুল লতিফ (৭৫) বলেন, ‘মাওলানা আলিম উদ্দীন ছিলেন দেওবন্দ পাস আলেম। বগুড়ার নবাবের মেয়ে বিয়ে করে এলাকায় চলে আসেন। দাদার কাছ থেকে শুনেছি, দেড় শ বছরের পুরনো এই মসজিদ।’ নরসিংদীর শিকড়সন্ধানী লেখক সরকার আবুল কালাম ‘কিংবদন্তির নরসিংদী’ বইয়ে লিখেন, ‘আটকান্দি মসজিদটি নির্মাণ করেন মাওলানা আলিম উদ্দিন। তিনি দেওবন্দ পাস আলেম। একসময় ঢাকার নবাববাড়ির (পূর্বে খাজা বাড়ি) মাদ্রাসা ও পরে চিঠি লেখা ও উত্তর প্রদানের দায়িত্ব পান। নবাবদের অত্যাচার, জুলুম ও ট্যাক্স প্রথার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের লক্ষ্যে কৌশলে বিয়ে করেন বগুড়ার নবাববাড়ির মেয়েকে। মাওলানা তাঁর গিন্নিকে নিয়ে চলে আসেন নিজ এলাকায়। প্রতিষ্ঠা করেন মসজিদ। অনুমান করা হয়, এটি ১৮৯০ সালের দিকে নির্মাণ করা হয়। মসজিদটি মোগল আমলের আদলে তৈরি করা হয়েছে।’
গ্রামে ফিরে মসজিদ করলেন
স্থানীয় আব্দুল লতিফ বললেন, ঢাকার নবাববাড়িতে মাওলানা আলিম উদ্দিনের চাকরি হয়েছিল। বাচ্চাদের মক্তবে পড়াতেন সেখানে। দেখতে সুন্দর ও হৃষ্টপুষ্ট ছিলেন মাওলানা। নবাবরা তাঁকে আদর যতœ করতেন। এক বিকেলে নবাব বাড়িতে পিয়ন আসে চিঠি নিয়ে। মাওলানার হাতে চিঠি দেন। বগুড়ার নবাব পাঠিয়েছেন ঢাকার নবাবের কাছে। তিনি গোপনে চিঠি পড়েন। চিঠিতে পাত্র তলব করা হয়েছে। বন্ধুদের সঙ্গে পরামর্শ করেন। বন্ধুরা বগুড়া যেতে জোর দেন। গেলেন নবাববাড়ি। বগুড়ার নবাব তাঁকে পছন্দ করলেন। বিয়ে হলো তৎকালীন নবাবের মেয়ে সাদেতুন্নেছার সঙ্গে। নবাব মহলে দিনাতিপাত করছেন মাওলানা। বগুড়ার নবাব বিয়ের সংবাদ পাঠালেন ঢাকায়।
ঢাকা থেকে জানানো হলো, তারা কোনো পাত্র পাঠাননি। এই সংবাদ নবাব মহলে চাউর হলে সাদেতুন্নেছার মা রাতে পালানোয় সহযোগিতা করলেন তাদের। দিয়ে দিলেন ব্যাগভর্তি স্বর্ণ, হীরা আর নগদ টাকা। স্টিমারে করে চলে আসেন নিজ শহর নরসিংদীর রায়পুরার আটকান্দি গ্রামে। এখানে এসে ৪০ বিঘা জমি কিনেন। ইটভাটা করেন। এখনো মাটি খুঁড়লে ইটভাটার নিদর্শন পাওয়া যায়। নিজের ইটভাটার ইটে মসজিদ আর থাকার ঘর নির্মাণ করেন। মেঘনা নদীর পারে বানান শানবাঁধানো ঘাট। অল্প সময়ে হয়ে উঠেন স্থানীয় জমিদার। সমাজ পরিচালনা করেন মসজিদকেন্দ্রিক।

ছোট মেঘনা নদীর কোল ঘেঁষে দাঁড়িয়ে আছে ইতিহাসের সাক্ষীÑনরসিংদী জেলার রায়পুরার আটকান্দি মসজিদ। চতুর্দিকে সবুজের সমারোহ। নানা জাতের গাছের ঘন ছায়ায় মায়াময় এক পরিবেশ। ঠান্ডা আবহ খেলা করে সব সময়। গ্রামের এক পাশে এবং নদীর কাছে হওয়ায় সব সময় নীরবতায় আচ্ছন্ন থাকে মসজিদ এলাকা। ৩৪টি খিলানের ওপর দাঁড়িয়ে আছে মসজিদটি। খিলানের ওপরের অংশে মোহন কারুকাজ। দুই ফুট পুরু দেয়াল। পাথর বসানো মেঝে।
মেহরাবজুড়ে মোজাইক পাথর বসানো। বিভিন্ন ফুলের দৃষ্টিনন্দন কাজ। আঁকা হয়েছে গাছের পাতা। সাদা আর নীল রঙের কারুকাজ চোখ জুড়িয়ে দেয়। গম্বুজ আছে আটটি, মূল মসজিদে রয়েছে তিনটি। মাঝখানেরটি অপেক্ষাকৃত বড়। মূল মসজিদের বাইরে আছে পাঁচটি গম্বুজ। এগুলো মসজিদের গম্বুজ থেকে কিছুটা ছোট। মসজিদের বারান্দা দিয়ে মূল মসজিদে প্রবেশের দরজা আছে পাঁচটি। বারান্দার দুই পাশে দুটি। ভেতরে প্রবেশের পথ তিনটি। মসজিদটি দেখতে আগ্রার তাজমহলের মতো।
বহু বছরের পুরনো এই মসজিদের প্রায় জায়গায় পলেস্তরা খসে পড়েছে। ছোট পাথর পড়ে যাচ্ছে দিন দিন। কোথাও কোথাও বৃক্ষের চাড়া গজাচ্ছে। শেওলা জমে আছে মসজিদের গায়ে। কিছু জায়গায় এলাকাবাসী মিলে আস্তর করেছে এর মধ্যে।
আমিরগঞ্জের মাওলানা আলিম উদ্দিন মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি স্থানীয় জমিদার ছিলেন। ৪০ বিঘা জমি ছিল তাঁর। মসজিদের পাশে ৯ ঘরবিশিষ্ট থাকার একতলা ভবন ছিল।
ইতিহাসের সন্ধানে
মসজিদের কোনো শিলালিপি নেই। সঠিক নির্মাণ তারিখও কেউ বলতে পারে না। স্থানীয়রা জানালেন, প্রায় ১৫০ বছরের পুরনো মসজিদ। প্রাচীন এ মসজিদটি মোগল স্থাপত্যের আদলে গড়া। সুদূর মহীশূর থেকে কারিগর এনে নির্মাণ করা হয়েছে। অনেকে মসজিদের গম্বুজকে তাজমহলের গম্বুজের সঙ্গে তুলনা করেন।
স্থানীয় আব্দুল লতিফ (৭৫) বলেন, ‘মাওলানা আলিম উদ্দীন ছিলেন দেওবন্দ পাস আলেম। বগুড়ার নবাবের মেয়ে বিয়ে করে এলাকায় চলে আসেন। দাদার কাছ থেকে শুনেছি, দেড় শ বছরের পুরনো এই মসজিদ।’ নরসিংদীর শিকড়সন্ধানী লেখক সরকার আবুল কালাম ‘কিংবদন্তির নরসিংদী’ বইয়ে লিখেন, ‘আটকান্দি মসজিদটি নির্মাণ করেন মাওলানা আলিম উদ্দিন। তিনি দেওবন্দ পাস আলেম। একসময় ঢাকার নবাববাড়ির (পূর্বে খাজা বাড়ি) মাদ্রাসা ও পরে চিঠি লেখা ও উত্তর প্রদানের দায়িত্ব পান। নবাবদের অত্যাচার, জুলুম ও ট্যাক্স প্রথার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের লক্ষ্যে কৌশলে বিয়ে করেন বগুড়ার নবাববাড়ির মেয়েকে। মাওলানা তাঁর গিন্নিকে নিয়ে চলে আসেন নিজ এলাকায়। প্রতিষ্ঠা করেন মসজিদ। অনুমান করা হয়, এটি ১৮৯০ সালের দিকে নির্মাণ করা হয়। মসজিদটি মোগল আমলের আদলে তৈরি করা হয়েছে।’
গ্রামে ফিরে মসজিদ করলেন
স্থানীয় আব্দুল লতিফ বললেন, ঢাকার নবাববাড়িতে মাওলানা আলিম উদ্দিনের চাকরি হয়েছিল। বাচ্চাদের মক্তবে পড়াতেন সেখানে। দেখতে সুন্দর ও হৃষ্টপুষ্ট ছিলেন মাওলানা। নবাবরা তাঁকে আদর যতœ করতেন। এক বিকেলে নবাব বাড়িতে পিয়ন আসে চিঠি নিয়ে। মাওলানার হাতে চিঠি দেন। বগুড়ার নবাব পাঠিয়েছেন ঢাকার নবাবের কাছে। তিনি গোপনে চিঠি পড়েন। চিঠিতে পাত্র তলব করা হয়েছে। বন্ধুদের সঙ্গে পরামর্শ করেন। বন্ধুরা বগুড়া যেতে জোর দেন। গেলেন নবাববাড়ি। বগুড়ার নবাব তাঁকে পছন্দ করলেন। বিয়ে হলো তৎকালীন নবাবের মেয়ে সাদেতুন্নেছার সঙ্গে। নবাব মহলে দিনাতিপাত করছেন মাওলানা। বগুড়ার নবাব বিয়ের সংবাদ পাঠালেন ঢাকায়।
ঢাকা থেকে জানানো হলো, তারা কোনো পাত্র পাঠাননি। এই সংবাদ নবাব মহলে চাউর হলে সাদেতুন্নেছার মা রাতে পালানোয় সহযোগিতা করলেন তাদের। দিয়ে দিলেন ব্যাগভর্তি স্বর্ণ, হীরা আর নগদ টাকা। স্টিমারে করে চলে আসেন নিজ শহর নরসিংদীর রায়পুরার আটকান্দি গ্রামে। এখানে এসে ৪০ বিঘা জমি কিনেন। ইটভাটা করেন। এখনো মাটি খুঁড়লে ইটভাটার নিদর্শন পাওয়া যায়। নিজের ইটভাটার ইটে মসজিদ আর থাকার ঘর নির্মাণ করেন। মেঘনা নদীর পারে বানান শানবাঁধানো ঘাট। অল্প সময়ে হয়ে উঠেন স্থানীয় জমিদার। সমাজ পরিচালনা করেন মসজিদকেন্দ্রিক।

ধর্ম উপদেষ্টা বলেন, উন্নত চরিত্রের অধিকারী ব্যক্তিরাই সমাজে শান্তি, ন্যায়বিচার ও সৌহার্দ্যের পরিবেশ তৈরি করে। চরিত্রবান মানুষ সমাজকে করে তোলে সুন্দর, নিরাপদ ও মানবিক। আর চরিত্রহীন মানুষ অনাচার, দুর্নীতি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। চরিত্রবান মানুষ যেমন নিজের কল্যাণ বয়ে আনে, তেমনি সমাজকেও আলোকিত করে তোল
১০ ঘণ্টা আগে
চলতি বছরের জুনে শুরু হওয়া ওমরাহ মৌসুমে এরই মধ্যে রেকর্ড ৪০ লাখের বেশি বিদেশি হাজি সৌদি আরবে পৌঁছেছেন, যা আগের বছরের পুরো মৌসুমের তুলনায়ও বেশি।
১৭ ঘণ্টা আগে
মসজিদ শুধু নামাজের স্থান নয়। এটি মুসলিম সমাজের হৃদয়কেন্দ্র। যেখানে আধ্যাত্মিকতা, নৈতিকতা ও সামাজিক চেতনাসমবেত হয়। ইসলামের সূচনালগ্নে মসজিদ ছিল জ্ঞান, নেতৃত্ব, ন্যায়বিচার এবং সমাজকল্যাণের কেন্দ্র। নবী করিম (সা.) মসজিদের মিম্বর থেকে যেমন ঈমান ও আমলের দাওয়াত দিতেন, তেমনি সমাজে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা
২০ ঘণ্টা আগে
সম্প্রতি একজন বক্তা প্রিয় নবীজিকে ‘সাংবাদিক’ অভিধায় অভিহিত করে চরম বিতর্ক সৃষ্টি করেছেন। দেশের ধর্মীয় অঙ্গনে পক্ষে-বিপক্ষে এ নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে। বিষয়টি অত্যন্ত স্পর্শকাতর। এ ধরনের বিষয়ে পক্ষপাতদুষ্ট না হয়ে বস্তুনিষ্ঠভাবে বিশ্লেষণ করা আবশ্যক।
২০ ঘণ্টা আগে