রায়হান আল ইমরান
সুখী দাম্পত্য জীবন আল্লাহতায়ালার এক অপূর্ব নিয়ামত। এটি শুধু ভালোবাসা, সম্মান ও দায়িত্বের মিশেলেই গড়ে ওঠে। স্বামী-স্ত্রীর বন্ধন যেন গভীর ও মজবুত হয়, সেজন্য ইসলাম কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিয়েছে, যেগুলোর প্রতিফলন সুখী দাম্পত্য জীবনের জন্য জরুরি। নিচে এ বিষয়ে আটটি নির্দেশনা তুলে ধরা হলো-
১. আত্মিক সংযোগ বৃদ্ধি করা
বিয়ের বন্ধন শুধু সামাজিক চুক্তি নয়; বরং এটি প্রেম-ভালোবাসা ও মানসিক প্রশান্তির এক গভীর সম্পর্ক। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আর তিনি তোমাদের মাঝে ভালোবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল মানুষের জন্য রয়েছে নিদর্শন।’ (সুরা রুম : ২১)
সফল দাম্পত্য জীবনের মূল হলো আত্মিক বন্ধন, যা একটি স্থায়ী ও সুখী সংসার গঠনে অত্যন্ত কার্যকর।
২. গোপনীয়তা রক্ষা করা
স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক একান্তই ব্যক্তিগত। নবীজি (সা.) গোপনীয়তা বজায় রাখতে কঠোরভাবে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘কিয়ামতের দিন আল্লাহর কাছে সবচেয়ে নিকৃষ্ট ব্যক্তি সে, যে স্ত্রীর সঙ্গে মিলনের পর তা লোকদের মাঝে প্রকাশ করে।’ (মুসলিম : ১৪৩৭)
পরস্পরের দোষ ঢেকে রাখা এবং গোপনীয়তা রক্ষা করা দাম্পত্য জীবনে বিশ্বস্ততার অন্যতম ভিত্তি।
৩. ক্ষমাশীল ও ধৈর্যশীল হওয়া
দাম্পত্য জীবনে ভুল-ভ্রান্তি হতে পারে। এ ক্ষেত্রে মহানবী (সা.) ধৈর্যধারণ ও ক্ষমাশীলতার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি ক্ষমা করে আল্লাহ তার মর্যাদা বৃদ্ধি করেন। আর কেউ আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভে বিনীত হলে তিনি তার সম্মান প্রতিষ্ঠিত করেন।’ (মুসলিম : ২৫৮৮)
ক্ষমা ও ধৈর্য ব্যক্তির দাম্পত্য জীবন সুখময় ও স্থায়ী করে। আর এ গুণের অভাব সম্পর্ককে দুর্বল ও দাম্পত্য জীবনকে অস্থির করে তোলে।
৪. একে অপরের সহযোগী হওয়া
আমাদের প্রিয়নবী (সা.) ছিলেন পরিবারের প্রতি দায়িত্বশীল ও সহানুভূতিশীল। বাইরে কাজ শেষে তিনি যখন ঘরে ফিরতেন, তখনো পরিবারের কাজে অংশগ্রহণ করতেন। আসওয়াদ (রহ.) বলেন, ‘আমি আয়েশা (রা.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, নবীজি (সা.) ঘরে কী করতেন? আয়েশা (রা.) উত্তর দেন, তিনি ঘরের কাজে নিজেকে নিয়োজিত রাখতেন।’ (বুখারি : ৬৭৬)
পরিবারের কাজ ভাগ করে নেওয়া কেবল দায়িত্ব নয়; বরং এটি ভালোবাসার উত্তম দৃষ্টান্ত, যা পরিবারে সুখ ও শান্তি নিশ্চিত করে।
৫. আনন্দ ভাগাভাগি করা
নবীজি (সা.) স্ত্রীদের নিয়ে ভ্রমণে যেতেন, সময় কাটাতেন, প্রতিযোগিতাও করতেন। হাদিসে আছে, তিনি আয়েশা (রা.)-এর সঙ্গে দৌড় প্রতিযোগিতাও করেছেন। (আবু দাউদ : ২৫৭৮)
স্ত্রীকে সময় দেওয়া, একসঙ্গে বাইরে যাওয়া ও আনন্দ ভাগ করে নেওয়া দাম্পত্য জীবনের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে।
৬. প্রশংসা করতে শেখা
স্ত্রীর প্রশংসা দাম্পত্য জীবনে উন্নতি আনতে সক্ষম। তাই নবীজি (সা.) স্বীয় স্ত্রীদের প্রশংসা করতেন। তিনি বলতেন, ‘সারিদ খাবার যেমন অন্যান্য খাবারের তুলনায় শ্রেষ্ঠ, তেমনি আয়েশা অন্য সব নারীর মধ্যে শ্রেষ্ঠ ।’ (বুখারি : ৩৭৬৯)
প্রশংসা আত্মিক তৃপ্তি আনে এবং সম্পর্ককে গভীর করে তোলে।
৭. স্ত্রীকে কষ্ট না দেওয়া
ইসলাম স্ত্রীকে ভালোবাসা ও সম্মানের শিক্ষা দেয়। স্ত্রীকে আঘাত নয়; বরং মর্যাদায় রাখা—এটাই সুন্নাহ। নবীজি (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যেন স্বীয় স্ত্রীকে গোলামের মতো প্রহার না করে। অথচ দিনশেষে তার সঙ্গেই সে শয্যা গ্রহণ করবে।’ (বুখারি : ৫২০৪)
সুখী দাম্পত্য জীবনের জন্য আত্মসংযম ও নম্রতা অত্যন্ত জরুরি। স্ত্রীর প্রতি অবিচার পরিবারে অশান্তি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে।
৮. উত্তম আচরণে মনোযোগী হওয়া
সংসারে শান্তি ও আস্থার জন্য জরুরি পারস্পরিক সম্মান ও সদাচরণ। আমাদের প্রিয় নবী (সা.) নিজেই ছিলেন এর অনুপম দৃষ্টান্ত। তিনি বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি উত্তম, যে তার স্ত্রীর সঙ্গে সদাচরণ করে। আর আমি আমার স্ত্রীর সঙ্গে তোমাদের সবার চেয়ে উত্তম আচরণ করি।’ (তিরমিজি : ৩৮৯৫)
এই শিক্ষা শুধু ধর্মীয় আদর্শ নয়, দৈনন্দিন জীবনের জন্যও এক জরুরি নির্দেশনা। উত্তম ব্যবহারেই গড়ে ওঠে একটি সুন্দর ও সুখী সংসার।
ইসলামের এই নির্দেশনাগুলো প্রতিটি দাম্পত্য জীবনেই গুরুত্বপূর্ণ। এগুলোর মাধ্যমে গড়ে ওঠে বিশ্বাস, ভালোবাসা, দয়া ও সহযোগিতার পরিবেশ, যা মূলত সুখী ও কল্যাণময় পরিবার গঠনের পূর্বশর্ত।
সুখী দাম্পত্য জীবন আল্লাহতায়ালার এক অপূর্ব নিয়ামত। এটি শুধু ভালোবাসা, সম্মান ও দায়িত্বের মিশেলেই গড়ে ওঠে। স্বামী-স্ত্রীর বন্ধন যেন গভীর ও মজবুত হয়, সেজন্য ইসলাম কিছু গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনা দিয়েছে, যেগুলোর প্রতিফলন সুখী দাম্পত্য জীবনের জন্য জরুরি। নিচে এ বিষয়ে আটটি নির্দেশনা তুলে ধরা হলো-
১. আত্মিক সংযোগ বৃদ্ধি করা
বিয়ের বন্ধন শুধু সামাজিক চুক্তি নয়; বরং এটি প্রেম-ভালোবাসা ও মানসিক প্রশান্তির এক গভীর সম্পর্ক। আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আর তিনি তোমাদের মাঝে ভালোবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয় এতে চিন্তাশীল মানুষের জন্য রয়েছে নিদর্শন।’ (সুরা রুম : ২১)
সফল দাম্পত্য জীবনের মূল হলো আত্মিক বন্ধন, যা একটি স্থায়ী ও সুখী সংসার গঠনে অত্যন্ত কার্যকর।
২. গোপনীয়তা রক্ষা করা
স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্ক একান্তই ব্যক্তিগত। নবীজি (সা.) গোপনীয়তা বজায় রাখতে কঠোরভাবে নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘কিয়ামতের দিন আল্লাহর কাছে সবচেয়ে নিকৃষ্ট ব্যক্তি সে, যে স্ত্রীর সঙ্গে মিলনের পর তা লোকদের মাঝে প্রকাশ করে।’ (মুসলিম : ১৪৩৭)
পরস্পরের দোষ ঢেকে রাখা এবং গোপনীয়তা রক্ষা করা দাম্পত্য জীবনে বিশ্বস্ততার অন্যতম ভিত্তি।
৩. ক্ষমাশীল ও ধৈর্যশীল হওয়া
দাম্পত্য জীবনে ভুল-ভ্রান্তি হতে পারে। এ ক্ষেত্রে মহানবী (সা.) ধৈর্যধারণ ও ক্ষমাশীলতার নির্দেশ দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘যে ব্যক্তি ক্ষমা করে আল্লাহ তার মর্যাদা বৃদ্ধি করেন। আর কেউ আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভে বিনীত হলে তিনি তার সম্মান প্রতিষ্ঠিত করেন।’ (মুসলিম : ২৫৮৮)
ক্ষমা ও ধৈর্য ব্যক্তির দাম্পত্য জীবন সুখময় ও স্থায়ী করে। আর এ গুণের অভাব সম্পর্ককে দুর্বল ও দাম্পত্য জীবনকে অস্থির করে তোলে।
৪. একে অপরের সহযোগী হওয়া
আমাদের প্রিয়নবী (সা.) ছিলেন পরিবারের প্রতি দায়িত্বশীল ও সহানুভূতিশীল। বাইরে কাজ শেষে তিনি যখন ঘরে ফিরতেন, তখনো পরিবারের কাজে অংশগ্রহণ করতেন। আসওয়াদ (রহ.) বলেন, ‘আমি আয়েশা (রা.)-কে জিজ্ঞেস করলাম, নবীজি (সা.) ঘরে কী করতেন? আয়েশা (রা.) উত্তর দেন, তিনি ঘরের কাজে নিজেকে নিয়োজিত রাখতেন।’ (বুখারি : ৬৭৬)
পরিবারের কাজ ভাগ করে নেওয়া কেবল দায়িত্ব নয়; বরং এটি ভালোবাসার উত্তম দৃষ্টান্ত, যা পরিবারে সুখ ও শান্তি নিশ্চিত করে।
৫. আনন্দ ভাগাভাগি করা
নবীজি (সা.) স্ত্রীদের নিয়ে ভ্রমণে যেতেন, সময় কাটাতেন, প্রতিযোগিতাও করতেন। হাদিসে আছে, তিনি আয়েশা (রা.)-এর সঙ্গে দৌড় প্রতিযোগিতাও করেছেন। (আবু দাউদ : ২৫৭৮)
স্ত্রীকে সময় দেওয়া, একসঙ্গে বাইরে যাওয়া ও আনন্দ ভাগ করে নেওয়া দাম্পত্য জীবনের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে।
৬. প্রশংসা করতে শেখা
স্ত্রীর প্রশংসা দাম্পত্য জীবনে উন্নতি আনতে সক্ষম। তাই নবীজি (সা.) স্বীয় স্ত্রীদের প্রশংসা করতেন। তিনি বলতেন, ‘সারিদ খাবার যেমন অন্যান্য খাবারের তুলনায় শ্রেষ্ঠ, তেমনি আয়েশা অন্য সব নারীর মধ্যে শ্রেষ্ঠ ।’ (বুখারি : ৩৭৬৯)
প্রশংসা আত্মিক তৃপ্তি আনে এবং সম্পর্ককে গভীর করে তোলে।
৭. স্ত্রীকে কষ্ট না দেওয়া
ইসলাম স্ত্রীকে ভালোবাসা ও সম্মানের শিক্ষা দেয়। স্ত্রীকে আঘাত নয়; বরং মর্যাদায় রাখা—এটাই সুন্নাহ। নবীজি (সা.) বলেন, ‘তোমাদের কেউ যেন স্বীয় স্ত্রীকে গোলামের মতো প্রহার না করে। অথচ দিনশেষে তার সঙ্গেই সে শয্যা গ্রহণ করবে।’ (বুখারি : ৫২০৪)
সুখী দাম্পত্য জীবনের জন্য আত্মসংযম ও নম্রতা অত্যন্ত জরুরি। স্ত্রীর প্রতি অবিচার পরিবারে অশান্তি ও বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে।
৮. উত্তম আচরণে মনোযোগী হওয়া
সংসারে শান্তি ও আস্থার জন্য জরুরি পারস্পরিক সম্মান ও সদাচরণ। আমাদের প্রিয় নবী (সা.) নিজেই ছিলেন এর অনুপম দৃষ্টান্ত। তিনি বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তি উত্তম, যে তার স্ত্রীর সঙ্গে সদাচরণ করে। আর আমি আমার স্ত্রীর সঙ্গে তোমাদের সবার চেয়ে উত্তম আচরণ করি।’ (তিরমিজি : ৩৮৯৫)
এই শিক্ষা শুধু ধর্মীয় আদর্শ নয়, দৈনন্দিন জীবনের জন্যও এক জরুরি নির্দেশনা। উত্তম ব্যবহারেই গড়ে ওঠে একটি সুন্দর ও সুখী সংসার।
ইসলামের এই নির্দেশনাগুলো প্রতিটি দাম্পত্য জীবনেই গুরুত্বপূর্ণ। এগুলোর মাধ্যমে গড়ে ওঠে বিশ্বাস, ভালোবাসা, দয়া ও সহযোগিতার পরিবেশ, যা মূলত সুখী ও কল্যাণময় পরিবার গঠনের পূর্বশর্ত।
মক্কার মসজিদুল হারামের অন্যতম পবিত্র স্থান হাতিম। কাবার মূল কাঠামোর অংশ হিসেবে বিবেচিত এ স্থানটি মুসল্লিদের জন্য অত্যন্ত সম্মানিত ও নামাজ আদায়ের আকাঙ্ক্ষিত জায়গা। এখানে শৃঙ্খলাপূর্ণ উপায়ে ইবাদত নিশ্চিত করতে পুরুষ ও নারী উভয়ের জন্য আলাদা সময় নির্ধারণ করেছে কর্তৃপক্ষ।
১ দিন আগেখাদ্যগ্রহণ যেমন ক্ষুধা মেটানোর জন্য অপরিহার্য, প্রাত্যহিক জীবনের অংশ হিসেবে খাদ্যগ্রহণের ক্ষেত্রে উত্তম সংস্কৃতি ও শিষ্টাচার অনুসরণ করাও গুরুত্বপূর্ণ। মানুষ যা খায়, যেভাবে খায়—তা তার চরিত্র, নীতি ও রুচির পরিচয় বহন করে। তাই ইসলাম আমাদের খাওয়ার উত্তম সংস্কৃতি ও শিষ্টাচার শিখিয়েছে।
২ দিন আগেসম্প্রতি ইসলামি আলোচক আমীর হামজা আল্লাহর রাসুল (সা.)–কে ‘সাংবাদিক’ বলেছেন। তিনি যুক্তি দিয়েছেন, যেহেতু নবী (সা.) ছিলেন আল্লাহর বার্তাবাহক, তাই রূপক অর্থে তাঁকে সাংবাদিক বলা যেতে পারে। কিন্তু বাস্তবে এই তুলনা ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে বিভ্রান্তিকর এবং রাসুলের মর্যাদার পরিপন্থী।
৫ দিন আগেআমাদের সমাজে বেশ পরিচিত দুটি শব্দ হলো অলি-আওলিয়া। বাঙালি মুসলমান সমাজে সাধারণত মুসলমানদের একটি বিশেষ শ্রেণিকে অলি-আওলিয়া মনে করা হয়। অলি-আওলিয়াদের বিশেষ মর্যাদা ও ক্ষমতা আছে এমন বিশ্বাসও সাধারণ মুসলমানদের রয়েছে।
৫ দিন আগে