চ্যাম্পিয়নস ট্রফির ফাইনাল আজ

ভারত হট ফেভারিট, তবে ফেভারিটরা সব সময় জেতে না!

স্পোর্টস রিপোর্টার
প্রকাশ : ০৯ মার্চ ২০২৫, ১০: ০০
শিরোপা লড়াইয়ে মুখোমুখি ভারত-নিউজিল্যান্ড

আজকের ফাইনালের আগে একটা বিষয়ে কারো কোনো সন্দেহ নেই- ট্রফির লড়াইয়ে ভারত ফেভারিট। শুধু ফেভারিট নয়, একেবারে হট ফেভারিট। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে এখন পর্যন্ত খেলা সবগুলো ম্যাচে জিতেছে তারা। গ্রুপ পর্বে দাপুটে ক্রিকেট খেলে হারিয়েছে বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও নিউজিল্যান্ডকে। সেমিফাইনালেও অস্ট্রেলিয়ার ২৬২ রান টপকে গেছে ১১ বল হাতে রেখে, ম্যাচ জিতেছে ৪ উইকেটে। ছোট, মাঝারি, পার স্কোর-সব ধরনের টার্গেট এই টুর্নামেন্টে ভারত টপকে গেছে দাপট দেখিয়েই। ওপেনাররা ব্যর্থ হলে মিডলঅর্ডার সেই ক্ষতি পুষিয়ে দিচ্ছেন। লোয়ার অর্ডারও ভীষণ শক্তিমান। ১ থেকে ৭ পর্যন্ত ব্যাটাররা যা করার করে দিচ্ছেন। লেজের সারির ব্যাটিংয়ের তেমন প্রয়োজন পড়ছে না।


ব্যাটিং-বোলিং-ফিল্ডি-অধিনায়কত্ব সব বিভাগে কমপ্যাক্ট ক্রিকেট খেলছে ভারত। সাফল্য অর্জনের জন্য ঠিক কমপ্লিট একটা প্যাকেজ মনে হচ্ছে পুরো দলকে। আর হ্যাঁ, সেই সঙ্গে একই ভেন্যুতে খেলার বাড়তি সুবিধা তো পাচ্ছেই তারা। মূলত এই সুবিধা তারা নিশ্চিত করেছে টুর্নামেন্টে খেলতে নামার আগেই। এই ধরনের স্পিন সহায়ক উইকেটে যে দল যত বেশি খেলবে এই উইকেট ও কন্ডিশনের চাহিদা মেটাতে ততই সেই দল ক্রমশ দক্ষ হয়ে উঠবে। ভারত টুর্নামেন্টের একমাত্র দল হিসেবে সেই বাড়তি সুবিধা নিয়েই আজ ফাইনালে নিউজিল্যান্ডের মুখোমুখি হচ্ছে।
এখানকার উইকেটে নিউজিল্যান্ডকে গ্রুপ পর্বে হারিয়েছে তারা। ৪৪ রানে ভারতের সেই জয় জানাচ্ছে ওই ম্যাচটাও একতরফাই হয়েছিল। চলতি ফর্ম, একই ভেন্যুতে খেলার সুবিধা, স্পিন বোলিং শক্তি, স্পিনের বিরুদ্ধে খেলতে পারার দক্ষতা, বিরাট কোহলির ব্যাটে ‘বিরাট’ রান, ব্যাটিং গভীরতা, পেসার মোহাম্মদ সামির জ্বলে ওঠা-এসব যোগফলই দুবাইয়ের আজকের ফাইনালে ভারতকে হট ফেভারিটের ট্যাগ দিচ্ছে।

বিজ্ঞাপন


তবে স্পোর্টসের সেই বহু পুরোনো কথা নিশ্চয়ই সবার মনে আছে- ফেভারিটরা সব ট্রফি জেতে না। যদি জিততোই তাহলে ফুটবল বিশ্বকাপে প্রতিবার ব্রাজিল বা আর্জেন্টিনা চ্যাম্পিয়ন হতো!
নিউজিল্যান্ড চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভারতের কাছে গ্রুপ পর্বে হারা ওই ম্যাচ বাদে পুরো টুর্নামেন্টে যে মানের ক্রিকেট খেলেছে তাকে চোখ বন্ধ করে বলা যায়-এ প্লাস!
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচে দুজন সেঞ্চুরি করেছেন। ওপেনিংয়ে উইল ইয়াং এবং মিডলঅর্ডারে টম ল্যাথাম। রান তুলেছিল তারা ৩২০ রান। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ম্যাচ জিতেছে ৫ উইকেটে।

মিডলঅর্ডারে রাচিন রবীন্দু সেঞ্চুরি করেছেন। সেমিফাইনালে ৩৬২ রানের পাহাড় গড়ে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়েছে ৫০ রানে। এই ম্যাচেও দুটি সেঞ্চুরি পেয়েছে নিউজিল্যান্ড। টুর্নামেন্টে চার ম্যাচে সবচেয়ে বেশি পাঁচ সেঞ্চুরি নিউজিল্যান্ডের। বিপরীতে ভারতের সেঞ্চুরির সংখ্যা দুটো। শুভমান গিল করেছেন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সেঞ্চুরি। বিরাট কোহলির ব্যাট সেঞ্চুরির হাসি হেসেছে পাকিস্তান ম্যাচে। নিউজিল্যান্ডের পাঁচ সেঞ্চুরির দুটোর মালিক রাচিন রবিন্দু একাই, তাও আবার মাত্র তিন ম্যাচে তার এই কৃতিত্ব! টুর্নামেন্টে এখন পর্যন্ত একটা ম্যাচেই তিনি ব্যর্থ হয়েছেন, আর সেটা হলো ভারতের বিরুদ্ধে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে।


আজ ফাইনালে বড়সড় একটা ইনিংস খেলে শোধবোধ নেওয়ার একটা সুযোগ থাকছে তার সামনে। সেই সঙ্গে টুর্নামেন্ট সেরা হওয়ারও দারুণ সম্ভাবনা ডাকছে তাকে।
দুবাইয়ে আগের মোকাবিলায় ভারতের বিরুদ্ধে হারের পর নিউজিল্যান্ড ড্রইং বোর্ডে অনেক কাটাকুটি করেছে। ওই ম্যাচে কোথায় ভুল হয়েছে সঠিক পথে সেই অংশ কষার চেষ্টা চালিয়েছে। ফাইনালে সেই ভুল আর করতে চায় না তারা। ভারতের স্পিনের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ গড়ার পরিকল্পনা নিয়েই ফাইনালে নামছে নিউজিল্যান্ড।


ভালোই জানে তারা, দুবাইয়ের এই উইকেট সম্পর্কে সবচেয়ে ভালো রিডিং ভারতেরই। ফাইনালেও বোলিং আক্রমণের বেশির ভাগ অংশ জুড়েই থাকবে ভারতের চার স্পিনার। দুবাইয়ের উইকেটের সঙ্গে লাহোর বা রাওয়ালপিন্ডির উইকেটের কোনো মিল নেই। ভারত আগে ব্যাটিং করেও ম্যাচ জিতেছে। রান তাড়ায়ও জয় পেয়েছে। জেতার জন্য সব বিভাগে প্রায় সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন তাদের। গ্যালারির অকুণ্ঠ সমর্থনও ভারতের পক্ষেই থাকবে। এমন টগবগে ভারতীয় দলকে আটকাতে হলে নিউজিল্যান্ডকে ফাইনালে ‘আউট অব দ্য বক্স’ ক্রিকেট খেলতে হবে। ভারতকে চাপে রাখতে হবে ম্যাচের প্রতিটি ধাপে। নিউজিল্যান্ডের ফাইনাল জেতার মন্ত্র মূলত ওটাই।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত