রিয়ালের আরও একটি চ্যাম্পিয়নস লিগের বছর

স্পোর্টস রিপোর্টার, সিলেট থেকে
প্রকাশ : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭: ০৮

ফুটবলপ্রেমীরা অনেকটা মজা করেই বলেন, চ্যাম্পিয়নস লিগ রিয়াল মাদ্রিদের সম্পত্তি। অবশ্য একটু ভালো করে খেয়াল করলে এর যৌক্তিকতা খুঁজে পাওয়া যাবে। টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ ১৫ বার শিরোপা ঘরে তুলেছে স্প্যানিশ ক্লাবটি। চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা জেতায় তাদের ধারেকাছেও নেই আর কোনো ইউরোপিয়ান পরাশক্তি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাতবার শিরোপা গেছে ইতালিয়ান জায়ান্ট এসি মিলানের ঘরে। এই পরিসংখ্যানে স্পষ্ট ইউরোপের ক্লাবসেরার লড়াইয়ে একচ্ছত্র আধিপত্য আছে রিয়ালের।

মাদ্রিদের ক্লাবটি সবশেষ শিরোপা ঘরে তুলেছে মাস ছয়েক আগে। ২০২৩-২৪ মৌসুমে চ্যাম্পিয়নস লিগে শুরুটা দাপুটে হলেও শেষদিকে পরিস্থিতি খানিকটা কঠিন হয়ে পড়ে তাদের। সেই ঝড়ঝাপ্টা সামলে শেষ পর্যন্ত তারা পরেছে ইউরোপসেরার মুকুট। ‘সি’ গ্রুপে মাদ্রিদের দলটির প্রতিপক্ষ ছিল ইউনিয়ন বার্লিন, নাপোলি ও ব্রাহা। নিজেদের প্রথম ম্যাচে ইউনিয়ন বার্লিনকে ১-০ গোলে হারায় গ্যালাক্টিকোসরা। পরের পাঁচ ম্যাচেও ছিল দলটির জয়ধারা। তাতে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে সবার আগে রাউন্ড অব সিক্সটিনে রিয়ালের জায়গা হয়।

বিজ্ঞাপন

শেষ ১৬তে রিয়াল মাদ্রিদের প্রতিপক্ষ ছিল আরবি লাইপজিগ। প্রথম লেগে রেডবুল অ্যারেনা থেকে ১-০ গোলের জয় নিয়ে ফেরে কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যরা। ফিরতি লেগে সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে জার্মান ক্লাবটির সঙ্গে ১-১ ব্যবধানে ড্র করে। দুই লেগ মিলিয়ে ২-১ গোলে এগিয়ে থেকে কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠে রিয়াল মাদ্রিদ। কোয়ার্টার ফাইনাল রিয়ালের জন্য হয়ে ওঠে প্রতিশোধের মঞ্চ। ইংলিশ ক্লাব ম্যানচেস্টার সিটিকে প্রতিপক্ষ হিসেবে পায়। চ্যাম্পিয়নস লিগের আগের মৌসুমে সেমিফাইনালে ইংলিশ ক্লাবটির কাছে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে বিদায় নেয় রিয়াল। স্প্যানিশ ক্লাবটি সে ক্ষতে প্রলেপ দিয়েছে ঠিকই। তবে এর জন্য ঝরাতে হয়েছে ঘাম।

কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে ঘরের মাঠে টানটান উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে ম্যানসিটির সঙ্গে ৩-৩ গোলে ড্র করে রিয়াল। ইতিহাদ স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় লেগে প্রায় হারতেই বসেছিল তারা। ম্যাচে দাপুটে ফুটবল খেললেও নিজেদের ভুলে বেশ কয়েকটি গোলের সুযোগ হাতছাড়া করে ম্যানসিটি। এটাই শাপেবর হয়ে ওঠে রিয়ালের জন্য। পেনাল্টি শুটআউটে পাশার দান উল্টে ম্যাচ জয় নিশ্চিত করে দলটি। এর আগে নির্ধারিত ও অতিরিক্ত সময়ের খেলা শেষ হয় ১-১ সমতায়।

চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনাল খেলার পথে রিয়ালের সবচেয়ে কঠিন লড়াই ছিল জার্মান ক্লাব বায়ার্ন মিউনিখের বিপক্ষে। অ্যাওয়ে ম্যাচে হারতে বসা ম্যাচ ২-২ গোলে ড্র করে। এক গোলে পিছিয়ে থাকা দলটির হয়ে ম্যাচে প্রায় অন্তিম মুহূর্তে স্কোরশিটে নাম তোলেন ভিনিসিয়াস জুনিয়র। তাতে ২-২ ব্যবধানে ড্র করে ঘরে ফেরে। ফিরতি লেগেও খুব একটা স্বাচ্ছন্দ্যে ছিল না রিয়াল মাদ্রিদ। ৮৭ মিনিট পর্যন্ত দলটি পিছিয়ে ছিল ১-০ ব্যবধানে। অন্তিম মুহূর্তে জোসেলুর কল্যাণে ম্যাচে ফেরে স্বাগতিকরা। অতিরিক্ত সময়ে আরও একবার জালের দেখা পান জোসেলু। তাতে ঘুরে দাঁড়িয়ে ২-১ গোলের জয়ে ফাইনালে পা রাখে টুর্নামেন্টের সবচেয়ে সফল দলটি।

শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে রিয়ালের প্রতিপক্ষ ছিল বরুশিয়া ডর্টমুন্ড। ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ম্যাচটি মিটিয়েছে দর্শকচাহিদা। শক্তি কিংবা ইতিহাসে পিছিয়ে থাকলেও জায়ান্টদের ছেড়ে কথা বলেনি ডর্টমুন্ড। আক্রমণে রিয়ালের চোখে চোখ রেখে কথা বলেছে তারা।

প্রতিপক্ষের সীমানায় ত্রাসও ছড়িয়েছে জার্মান ক্লাবটি। কিন্তু কাজের কাজ সেই গোলটিই কেবল করতে পারেনি। বিপরীতে ৭৪ মিনিটে দানি কারভাহালের গোলে লিড নেয় রিয়াল। ৯ মিনিট পর ডর্টমুন্ডের জালে শেষ পেরেক ঠুঁকে দেন ভিনিসিয়াস। এই দুই গোলেই জয় নিশ্চিত হয় তাদের। সে সঙ্গে আরও একটি চ্যাম্পিয়নস লিগ জয়ের আনন্দে মাতে ইউরোপের অন্যতম সেরা ক্লাবটি।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিষয়:

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত