নতুন টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক কে?

স্পোর্টস রিপোর্টার
প্রকাশ : ১৭ মার্চ ২০২৫, ০৯: ৪৫

ঢাকা তৃতীয় বিভাগ বাছাই লিগ উদ্বোধনের দিনে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ জানান, সাম্প্রতিক সময়ে যারা টি-টোয়েন্টিতে অধিনায়কত্ব করেছেন তাদের মধ্য থেকেই কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। আবার গত পরশু বিসিবি আয়োজিত ইফতার আয়োজনের পর ফারুক আহমেদ বলেন, দ্রুতই নতুন টি-টোয়েন্টি অধিনায়কের নাম ঘোষণা করা হবে। বিসিবি সভাপতির এই কথার পর খানিকটা আন্দাজ করা যাচ্ছে- হয়তো লিটন দাস হতে পারেন বাংলাদেশের নতুন টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক। তবে এই তালিকায় লিটনের সঙ্গে সমস্বরে উচ্চারিত হচ্ছে মেহেদি হাসান মিরাজ ও তাসকিন আহমেদের নাম। এখন প্রশ্ন জাগছে এই তিনজনের মধ্যে কার কাঁধে উঠতে পারে বাংলাদেশের নতুন টি-টোয়েন্টি অধিনায়কের দায়িত্ব।

চলতি বছরের জানুয়ারিতে টি-টোয়েন্টি অধিনায়কত্ব থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন নাজমুল হোসেন শান্ত। সে সময় থেকেই নতুন টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক কে হবেন তা নিয়ে হচ্ছে আলোচনা। শান্ত অপারগতা প্রকাশের পর বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ জানান, আপাতত কোনো টি-টোয়েন্টি সিরিজ না থাকায় নতুন অধিনায়ক নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করছে না বিসিবি। এখনো অবশ্য কোনো টি-টোয়েন্টি সিরিজ নেই। আগামী মে মাসে পাকিস্তানের বিপক্ষে তাদের মাটিতে তিনটি করে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। ওই সিরিজের আগে নতুন টি-টোয়েন্টি অধিনায়কের দরকার হবে।

বিজ্ঞাপন

তবে এতদিন পর্যন্ত নতুন টি-টোয়েন্টি অধিনায়কের নাম লুকিয়ে রাখতে চায় না বিসিবি। সেটা স্পষ্ট বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদের কথায়। তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, দ্রুতই টি-টোয়েন্টি অধিনায়কের নাম ঘোষণা করা হবে। এই তালিকায় সবচেয়ে বেশি এগিয়ে আছে লিটন দাসের নাম। সবশেষ টি-টোয়েন্টি সিরিজে অধিনায়ক শান্তর অনুপস্থিতিতে দলকে নেতৃত্ব দেন তিনি। শুধু নেতৃত্ব দিয়েই ক্ষান্ত থাকেননি, দলকে সিরিজ জিতিয়েছেন। এমন পারফরম্যান্সের কারণেই অধিনায়ক হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে আছেন তিনি।

টি-টোয়েন্টি দলকে নেতৃত্ব দেওয়ার আগে কয়েক দফা ওয়ানডে ও টেস্টে বাংলাদেশের অধিনায়কত্ব করার অভিজ্ঞতা আছে লিটনের। এ সময় ৭ ওয়ানডেতে তার নেতৃত্বে ৩টি করে জয়-পরাজয় সঙ্গী হয়েছিল। তার অধীনে বাংলাদেশ একটি টেস্ট খেলেছিল। সে ম্যাচে বাংলাদেশ অবশ্য জয় পায়নি। তিন ফরম্যাটে অধিনায়কত্ব করার অভিজ্ঞতার কারণেই হয়তো এগিয়ে আছেন লিটন দাস।

অধিনায়কত্বের পাশাপাশি লিটনের সাম্প্রতিক টি-টোয়েন্টি পারফরম্যান্সও খুব একটা মন্দ নয়। গত বছর খেলা ২১ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ১০০.৬৫ স্ট্রাইক রেটে তার ব্যাটে এসেছে ৩০৯ রান। ওপেনিংয়ে দলকে বারবারই এনে দিয়েছেন দারুণ সূচনা। এরপর সবশেষ বিপিএলেও ঢাকা ক্যাপিটালসের হয়ে ১১ ম্যাচে এক সেঞ্চুরিতে করেন ৩৬৮ রান। এমন পারফরম্যান্সের কারণেই ওয়ানডে দল থেকে বাদ পড়া লিটন এখনো অটোচয়েস হিসেবে আছেন টি-টোয়েন্টিতে।

অন্যদিকে মেহেদি হাসান মিরাজ ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। এর আগে নিয়মিত অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তর ইনজুরির কারণে আফগানিস্তানের বিপক্ষে সিরিজে শেষ ওয়ানডেতে দলকে নেতৃত্ব দেন। তবে এই সময়ে চার ওয়ানডেতে মিরাজের নেতৃত্বে বাংলাদেশ পায়নি কোনো সাফল্য। তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অধিনায়কত্বের এই ব্যর্থতা তিনি কাটিয়ে উঠেছেন বিপিএলে। সবশেষ বিপিএলে খুলনা টাইগার্সকে নেতৃত্ব দেন। তার অধীনে খুলনা খেলেছিল কোয়ালিফায়ারে। এ ছাড়া বয়সভিত্তিক দলে অধিনায়কত্ব করার অভিজ্ঞতাও আছে তার। এসব কারণেই লিটনের সঙ্গে উচ্চারিত হচ্ছে মেহেদি হাসান মিরাজের নাম।

গত বছর হুট করেই টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট থেকে বাদ পড়েন মেহেদি হাসান মিরাজ। গত বছর মাত্র ৪ ম্যাচ খেলেছেন তিনি। এ সময় তার শিকার ছিল মাত্র ১ উইকেট আর ব্যাট হাতে রান করেছেন মাত্র ১০৬ রান। তবে ঝলক দেখান গত বিপিএলে। খুলনা টাইগার্সের হয়ে ১৪ ম্যাচে ১৩২ স্ট্রাইক রেটে ৩৫৫ রান করার পাশাপাশি বল হাতে শিকার ছিল ১৩ উইকেট। তাতে টুর্নামেন্টসেরা হওয়া মিরাজকে এখন বিবেচনা করা হচ্ছে টি-টোয়েন্টির জন্য।

পেসার তাসকিন আহমেদের নামও শোনা যাচ্ছে অধিনায়কত্বের গুঞ্জনে। সবশেষ বিপিএলে দুর্বার রাজশাহীকে নেতৃত্ব দেন। শেষ চার ম্যাচের জন্য অধিনায়কত্ব পাওয়া তাসকিন দলকে এনে দেন তিন জয়। এর কারণেই মূলত তাসকিনকে পরবর্তী অধিনায়কের বিবেচনায় রাখা হয়েছে। এ ছাড়া টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে সাম্প্রতিক পারফরম্যান্সও তার পক্ষে কথা বলছে। গত বছর বাংলাদেশের জার্সিতে ১৯ টি-টোয়েন্টি ম্যাচে ৩০ উইকেট শিকার করেছেন। এ ছাড়া সবশেষ বিপিএলে ১২ ম্যাচে ২৫ উইকেট নিয়ে শীর্ষ উইকেট শিকারি ছিলেন তিনি। তাতে টি-টোয়েন্টি দলের অটোচয়েস হয়ে ওঠা তাসকিনকে অধিনায়কত্ব দিলেও খুব একটা অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।

এই দিকে কে হতে পারেন পরবর্তী অধিনায়ক? এমন প্রশ্নের জবাবে, বিসিবির প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপু আমার দেশকে জানান, অধিনায়ক কে হবেন সেই সিদ্ধান্ত পুরোপুরি বোর্ডের। এ নিয়ে মন্তব্য করতে চান না। তিনি আরো জানান, নির্বাচক প্যানেলের কাজ দল নির্বাচন করা। কে অধিনায়কত্ব করবে সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বিসিবি।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত