বৃষ্টিতেই খেই হারাল বাংলাদেশ

স্পোর্টস রিপোর্টার
প্রকাশ : ১৯ জুন ২০২৫, ০৫: ০০
মুশফিকুর রহিম, ছবি : বিসিবি

খালি চোখে গল টেস্টের দ্বিতীয় দিন বাংলাদেশের জন্য সফল বলাই যায়। কারণ দ্বিতীয় দিনশেষে স্কোরবোর্ডে বাংলাদেশের রান যে ৯ উইকেটে ৪৮৪। আগের দিনের ২৯২ রানের সঙ্গে ৬ উইকেটে ১৯২ রান যোগ করেন লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা। অথচ বাংলাদেশের এই সংগ্রহটা আরো বড় হতে পারত। মূলত বৃষ্টিতে খৈই হারিয়ে ফেলা বাংলাদেশ আর ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। তাতে ৪৮৪ রানে দিন শেষ করতে হয়েছে। অবশ্য এই স্কোরে সমর্থকরা বড় আশা দেখতে পারেননি। কারণ ২০২৩ সালে একমাত্র আয়ারল্যান্ড ছাড়া শেষ ১০ বছরে গলে প্রথম ইনিংসে ৪০০ কিংবা এর চেয়ে বেশি রান করে টেস্ট হারেনি কোনো দল। প্রথম ইনিংসে ব্যাট করা দলই হেসেছে জয়ের হাসি। বোলিংটা ঠিকঠাক করতে পারলে এই ম্যাচ জয়ের সুযোগ আছে বাংলাদেশের সামনে।

প্রথম দিনে নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিমের গড়া ২৪৭ রানের জুটির সঙ্গে দ্বিতীয় দিনের সকালে যোগ হয় আরো ১৭ রান। অধিনায়ক শান্ত আসিথা ফার্নান্দোর বলে মিডঅফে ক্যাচ তুলে ফিরলে ভাঙে এই জুটি। শান্তর বিদায়ের পর লিটন দাস যেভাবে মুশফিককে সঙ্গ দিয়েছেন তাতে মনে হচ্ছিল ফের বড় জুটি গড়তে যাচ্ছে বাংলাদেশ। শেষ পর্যন্ত হয়েছেও তা-ই। পঞ্চম উইকেটে তারা দুজনে যোগ করেন ১৪৯ রান। দ্বিতীয় সেশনের শেষার্ধে নামা বৃষ্টির আগপর্যন্ত কোনো ভুলত্রুটি ছাড়াই এগোচ্ছিল এই জুটি।

বিজ্ঞাপন

তবে বৃষ্টির কারণে নষ্ট হওয়া খৈই আর ফিরে পাননি তারা দুজনে। তাই তো খানিকটা দিকভ্রান্ত হয়ে মুশফিক মিস করে যান আসিদা ফার্নান্দোর বলের লেন্থ। প্যাভিলিয়নে ফেরেন লেগ বিফোরের শিকার হয়ে। রিভিউ নিয়ে বাঁচার চেষ্টা করেছিলেন, তবে আম্পায়ার্স কল পক্ষে না থাকায় ১৬৩ রানে থামে তার ইনিংস। এরপর লিটন কী ভেবে যেন হুট করে বসলেন এক রিভার্স সুইপ।

নার্ভাস নাইন্টিজে থাকা লিটনের ওই রিভার্স সুইপেও ব্যাট-বলের টাইমিংটাও হয়নি ঠিকঠাক। বড় শটে হয়তো দলের রান ত্বরিতগতিতে বাড়িয়ে নেওয়ার চিন্তা থেকেই এমন শট করে বসেন লিটন। কিন্তু দুর্ভাগ্য! টাইমিং ঠিকঠাক না হওয়ায় উইকেটের পেছনে থাকা কুশল মেন্ডিস একটু দৌড়ে সামনে এসেই বল তালুবন্দি করে ফেরেন। তাতে ক্যারিয়ারে তৃতীয়বারের মতো নাভার্স নাইন্টিজের শিকার হয়ে প্যাভিলিয়নে ফিরতে হয় তাকে। পঞ্চম সেঞ্চুরির দ্বারপ্রান্তে থাকা লিটন দাস এ নিয়ে তিনবার নার্ভাস নাইন্টিজের শিকার হলেন, আর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে এ নিয়ে দ্বিতীয়বার।

এই লিটন-মুশফিক জুটি যখন ব্যাট করছিলেন, তখন স্ট্যাম্প মাইকে স্পষ্ট শোনা যাচ্ছিল মুশফিকের কথা। তখন লিটনের উদ্দেশে মুশফিক বলছিলেন, ‘উইকেট ভালো। টিকে থাকলে রান হবে।’ সে কারণেই হয়তো ধীরগতিতে এগোচ্ছিল লিটন-মুশফিক জুটি। দুজন মিলে ১৪৯ রানের জুটি গড়ার পথে খেলেছেন ২৬৫ বল। ৭ বলের ব্যবধানে এই জুটির বিদায়ের পর উইকেটে ছিলেন একমাত্র স্বীকৃত ব্যাটার জাকের আলী অনিক। নাঈম হাসান কিংবা তাইজুল ইসলামদের সঙ্গ নিয়ে ইনিংস বড় করার ইচ্ছা তার ছিল।

কিন্তু খেই হারিয়ে ফেলা মুশফিক-লিটনের মতো তিনিও দ্রুতই ফেরেন প্যাভিলিয়নে। ১৬ বলে তার ব্যাটে আসে মাত্র ৮ রান। তার বিদায়ের পর তাইজুল ইসলাম ও নাঈম হাসানও প্যাভিলিয়নে ফিরে যান দ্রুতই। নাঈম ১১ আর তাইজুল করেন ৬ রান। চোখের পলকে এতগুলো ব্যাটারের যাওয়া-আসার মিছিলে দিনের শেষভাগটা মোটেও ভালো কাটেনি বাংলাদেশের জন্য। শেষ সেশনে বাংলাদেশ ২০.৪ ওভারে বাংলাদেশের সংগ্রহ ছিল ৫ উইকেটে ৬১ রান। যেখানে আগের দুই সেশনে বাংলাদেশের রান ছিল যথাক্রমে ৯১ (২৭ ওভার) ও ৪০ (১৩.২ ওভার)।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিষয়:

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত