চ্যাম্পিয়নস ট্রফি

কেমন হবে দুবাইয়ের উইকেট

স্পোর্টস ডেস্ক
প্রকাশ : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১০: ০০

এবারের চ্যাম্পিয়নস ট্রফি হচ্ছে হাইব্রিড মডেলে। ওয়ানডের এ মেজর টুর্নামেন্টের নবম আসর বসছে পাকিস্তানের মাটিতে। কিন্তু ভারত এ টুর্নামেন্টে খেলতে যাচ্ছে দুবাইয়ের মাটিতে। সংযুক্ত আরব আমিরাতের এ শহরেই সম্প্রতি শেষ হয়েছে আইএলটি টোয়েন্টি। ২০ ওভারের এ আসরের পর্দা নেমেছে ৯ ফেব্রুয়ারি। বাংলাদেশের বিপক্ষে ভারতের উদ্বোধনী ম্যাচের ঠিক ১১ দিন আগে। তার মানে যেটা দাঁড়াল, সেটা হলো দুবাই ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামের পিচ মূলত মন্থরই থেকে যাচ্ছে। টুর্নামেন্ট সামনে এগোলে পিচ কী খেলার উপযোগী থাকবে?

শেষের প্রশ্নটি নিয়ে কোনো মন্তব্যই করলেন না দুবাই স্টেডিয়ামের প্রধান কিউরেটর ম্যাথু স্যান্ডেরি। তবে তার দৃঢ় আত্মবিশ্বাস, আইএলটি টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট শেষে ‘সেরা পিচ’ তৈরির জন্য যথেষ্ট সময় পেয়েছে তার টিম। যেখানে ভারত তাদের গ্রুপ পর্বের তিন ম্যাচ খেলবে। এমনকি নকআউট পর্বে নাম লিখলেও রোহিত শর্মাদের ম্যাচও হবে এ মাঠেই।

বিজ্ঞাপন

দুবাইয়ের পিচ তৈরির জন্য দুই সপ্তাহ সময় পেয়েছেন মাঠকর্মীরা। এ নিয়ে স্যান্ডেরি ইএসপিএনক্রিকইনফোকে বলেন, ‘যে উইকেটগুলোতে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির খেলা হবে, আইএলটি টোয়েন্টির শেষ ম্যাচের পর সেগুলো স্বাভাবিক হতে দুই সপ্তাহ সময় পেয়েছে। দুবাইয়ে সম্ভাব্য সেরা পিচ ও কন্ডিশন রাখার চেষ্টা করব। আমি আত্মবিশ্বাসী যে, সারা বিশ্বে ওয়ানডে ক্রিকেটের জন্য যেমন পিচ প্রত্যাশা করা হয়, এখানকার পিচও তেমন উপযোগী থাকবে।

পিচ স্লো হলে ভারতের আপত্তি থাকার কথা নয়। উল্টো খুশি হওয়ার কথা। ভারত টুর্নামেন্টে খেলবে অন্যতম ফেভারিট দল হিসেবেই। যদিও তাদের পেস আক্রমণের মূল অস্ত্র জশপ্রীত বুমরা দলে নেই। পিঠের চোটের জন্য মিস করছেন তিনি আইসিসির এ ফ্লাগশিপ টুর্নামেন্ট।

পিচের কথা মাথায় রেখেই হয়তো দলে পাঁচজন স্পিনার রেখেছে ভারত। তাদের মধ্যে তিনজনই আবার ফিঙ্গারস্পিনিং অলরাউন্ডার। রবীন্দ্র জাদেজা, অক্ষর প্যাটেল ও ওয়াশিংটন সুন্দর ব্যাটিংয়ের গভীরতা বাড়িয়ে দিতে পারেন। বাকি দুজন এক্স-ফ্যাক্টর রিস্টস্পিনার কুলদ্বীপ যাদব ও বরুণ চক্রবর্তী। এমনসব ঈর্ষণীয় বোলার অধিকাংশ পিচেই প্রতিপক্ষের ওপর চাপ সৃষ্টি করতে পারেন। কিন্তু শ্লথগতির পিচে তারা হয়ে উঠতে পারেন আরও ভয়ানক। সাম্প্রতিক সময়ে ভারতের লাইনআপই বলে দিচ্ছে, তারা টুর্নামেন্ট শুরু করতে পারে তিন সিমার ও তিন স্পিনারের সমন্বয় নিয়ে। এ কারণে স্লো উইকেটে তাদের হারানোটা কঠিন হয়ে পড়বে।

ফাইনালসহ আইএলটি টোয়েন্টির ১৫ ম্যাচ হয়েছে দুবাইতে। যার মধ্যে ১৪টি ছিল দিবা-রাত্রির। এ মাঠের কন্ডিশন বেশ ভারসাম্যপূর্ণ। ব্যাটারদের সঙ্গে উভয় ধরনের বোলারদের জ্বলে ওঠার সুযোগ দিয়েছে। টুর্নামেন্টটিতে ৮.০৮ ইকোনমি রেটে ফাস্ট বোলারদের গড় ছিল ২৫.০৬। বিপরীতে স্পিনারদের এই পরিসংখ্যানটা ছিল যথাক্রমে ২৯.১৬ ও ৭.৪৬।

দুবাইয়ে আইসিসির পূর্ণ সদস্যদের নিয়ে ওয়ানডে হচ্ছে না ২০১৯ সালের জুন থেকে। তাই এই ভেন্যুর সাম্প্রতিক সময়ের ৫০ ওভারের ম্যাচের পরিসংখ্যান বিবেচনায় নেওয়াটা এখন কঠিন। সেরা দলগুলোর পরিসংখ্যান বিচার করলে ফিরে তাকাতে হবে ২০১৮ সালের ওয়ানডেগুলোতে। এই ভেন্যুতে ৩৫ ম্যাচের মধ্যে কেবল অস্ট্রেলিয়া ও পাকিস্তান ৩০০ ঊর্ধ্ব দুটি সংগ্রহ করতে পেরেছে। দুটি স্কোরই ছিল একই ম্যাচে। ২০১৮ সাল থেকে দুবাইয়ে ওয়ানডেতে প্রথম ইনিংসের গড় ২১৩। জয়ী দলের সংগ্রহের গড় ২৫২। প্রথমে ব্যাট করা দল জিতেছে ১৪টি ম্যাচ। হার মেনেছে ১৯ বার। একটি ম্যাচ হয়েছে টাই। পরিত্যক্তও হয়েছে একটি।

স্যান্ডেরি বলেন, শিশির মাঠের লড়াইয়ে তেমন কোনো প্রভাব রাখতে পারবে না। দুবাইয়ের দিন-রাতের তাপমাত্রার ব্যবধানটা কম থাকবে বলেই ধারণা করা হচ্ছে। এ নিয়ে তার অভিমত, ‘শিশির মজার বিষয়। গত মাসে আইএলটি টোয়েন্টির তৃতীয় মৌসুমে দারুণ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ একটি আসর শেষ করেছি। আমার মতে, খেলায় শিশির খুব বেশি প্রভাব বিস্তার করতে পারবে না।’

২০২১ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর চ্যাম্পিয়নস ট্রফিই পুরুষদের ক্রিকেটের প্রথম কোনো বৈশ্বিক আসর, যেটা বসতে যাচ্ছে দুবাইয়ে। দুবাইয়ের মাঠে আগের বিশ্ব আসরের স্মৃতি মোটেই ভালো নয় ভারতের জন্য। সেই বিশ্বকাপে রোহিত-কোহলিরা সেমিফাইনালেই উঠতে পারেননি।

এবার কতদূর যাবে? তার প্রাথমিক একটা হিসাব মিলবে আজ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে টুর্নামেন্টে তাদের প্রথম ম্যাচের পর।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত