শনিবার সকাল ৮টা থেকে রোববার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীসহ সারা দেশে ৪২০ ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন। এর মধ্যে বরিশালে সর্বোচ্চ ১১৬ জন। সবচেয়ে কম তিনজন ভর্তি হয়েছেন রংপুরে।
গত শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে শনিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীসহ সারা দেশে ৩৯১ ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। এর মধ্যে বরিশালেই সর্বোচ্চ ১২৮ জন। এদিন সবচেয়ে কম দুজন ভর্তি হয়েছে উত্তরের বিভাগ রংপুরে।
নতুন আক্রান্তদের মধ্যে সর্বোচ্চ ৯৮ জন বরিশাল বিভাগে। সবচেয়ে কম দুইজন ভর্তি হয়েছেন সিলেটে। সবমিলিয়ে এ বছর হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ১৩ হাজার ৫৯৪ জনে দাঁড়িয়েছে।
দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ৩ জন আর আক্রান্ত হয়ে ৪২৫ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। আর চলতি বছর এখন পর্যন্ত ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ৫১ জনের এবং হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৩ হাজার ১৮৮ জন।
পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জ উপজেলা হাসপাতাল ৫০ শয্যায় উন্নীত করলেও জনবল রয়েছে ৩১ শয্যার। চিকিৎসক নার্সসহ ১৫২ পদের বিপরীতে কর্মরত আছেন ৭৪ জন। শূন্য রয়েছে ৭৮ টি পদ। ডেঙ্গু রোগীসহ অতিরিক্ত রোগীদের সামলাতে হিমশিম খাচ্ছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন সম্রাট বাহাদুর শাহ জাফর উদ্যান সংলগ্ন ডিএসসিসি অঞ্চল-৪ এলাকায় ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে এডিস মশার প্রজনন স্থল ধ্বংসে এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে বিশেষ পরিচ্ছন্নতা ও মশক নিধন অভিযান পরিচালনা করেছে। শনিবার সকাল ৬টায় মশক নিধন অভিযান পরিচালনা করা হয়।
সারা দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ২০৪ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তবে এই সময়ে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি। শুক্রবার (৪ জুলাই) স্বাস্থ্য অধিদফতরের হেলথ ইমার্জেন্সি অপারেশন সেন্টার ও কন্ট্রোল রুম থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
গত বুধবার সকাল ৮টা থেকে বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা পর্যন্ত সারা দেশে ভর্তি রোগীর মধ্যে ১৫০ জনই বরিশাল বিভাগের বাসিন্দা। সব মিলিয়ে এ বছর হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়া ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ১১ হাজার ৪৫৬ জন বলে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে।
দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে দাবি করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. মো. সায়েদুর রহমান। তিনি বলেন, ডেঙ্গুর হটস্পটগুলোতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, অ্যাম্বুলেন্স ও ডায়াগনস্টিক কিট পাঠানোসহ সব ধরনের সহযোগিতা অতিদ্রুত পাঠাচ্ছে। এমনকি আজকে চীন
রাজধানীসহ সারা দেশের স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রতিনিয়ত জ্বর, শরীর ব্যথাসহ নানা জটিলতা নিয়ে আসছেন রোগীরা। যাদের সাধারণ পরীক্ষায় ডেঙ্গু শনাক্ত না হলেও অ্যান্টিবডি পরীক্ষায় উপস্থিতি পাওয়া যাচ্ছে ভাইরাসটির।
বরগুনায় ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব এখন মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। বাসায় রক্ষিত ফুলের টব, বাথরুমে ব্যবহৃত বালতি, বৃষ্টির পানি সংরক্ষণের পাত্রসহ বিভিন্ন স্থানে জমে থাকা পানিতে পাওয়া গেছে এডিস মশার লার্ভা। এ ছাড়া বাড়ির উন্মুক্ত স্থানে জমে থাকা পানিতেও মিলেছে লার্ভা
এবারও প্রকট হচ্ছে ডেঙ্গু পরিস্থিতি। গত ছয় মাসে মশাবাহিত এই রোগে আক্রান্ত ও মৃত্যুর পরিসংখ্যান বিগত বছরগুলোর মতোই ভয়াবহ বার্তা দিচ্ছে। ইতোমধ্যে ১০ সহস্রাধিক আক্রান্ত ব্যক্তিকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৪২ জনের।
সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে কমেছে ডেঙ্গু পরীক্ষার ফি। সরকারিতে এখন থেকে ৫০ টাকায় এবং বেসরকারি হাসপাতাল সর্বোচ্চ ৪শ টাকায় করা যাবে ডেঙ্গু পরীক্ষা।
ডেঙ্গুতে প্রায় দিনই ঘটছে প্রাণহানি। শনিবারও একজনের মৃত্যু হয়েছে ভাইরাসটিতে। মারা যাওয়া ব্যক্তি ৫ বছর বয়সী শিশু বরিশালের বাসিন্দা। এই নিয়ে চলতি বছরে ৪১ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করেছে সরকার।
বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে শুক্রবার সকাল ৮টা পর্যন্ত (একদিনে) দেশে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে নতুন করে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ১৫৯ জন। সবচেয়ে বেশি ১০৭ জন আক্রান্ত হয়েছেন বরিশাল বিভাগে। এসময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। তারাও বরিশাল বিভাগের।
চলতি বছর দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্ত প্রায় সাড়ে ৮ হাজারের প্রায় ৪ হাজারই বরিশাল বিভাগের। এবং এই বিভাগের বরগুনা জেলায় আক্রান্ত সর্বোচ্চ। জেলাটিতে ডেঙ্গুর এমন ভয়াবহ অবস্থার পেছনে সুপেয় পানির সংকট মেটাতে ধরে রাখা বৃষ্টির পানি বলে মাঠ পর্যায়ের গবেষণায় উঠে এসেছে।
ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে ২৪ ঘণ্টায় দুইজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে ডেঙ্গু আক্রান্ত ৩৯২ জন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। সোমবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে।