পাকিস্তান মুসলিম বিশ্বের সবচেয়ে বড় সামরিক শক্তি এবং একমাত্র মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ পারমাণবিক শক্তিধর দেশ। অন্যদিকে সৌদি আরব ইসলামের আধ্যাত্মিক কেন্দ্র হিসেবে ঐতিহাসিকভাবে পাকিস্তানের ঘনিষ্ঠ মিত্র। উভয় দেশই নিজ নিজ অঞ্চলে যুক্তরাষ্ট্রের ঘনিষ্ঠ অংশীদার হিসেবে পরিচিত।
জার্মানভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ডয়েচে ভেলেতে হারুন জানজুয়ার বিশ্লেষণে বিষয়টি উঠে এসেছে।
সৌদি আরব ও পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক নিরাপত্তা চুক্তি দু’দেশের দীর্ঘদিনের কৌশলগত অংশীদারিত্বকে নতুন মাত্রায় নিয়ে গেছে। পর্যবেক্ষকদের মতে, এ চুক্তি শুধু সামরিক সহযোগিতাই নয়, বরং দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক ও ভূরাজনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রেও একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।
দীর্ঘদিন ধরে পাকিস্তানি সেনারা সৌদি আরবের নিরাপত্তা রক্ষায় নিয়োজিত রয়েছে। বর্তমানে দেশটিতে ১৫০০ থেকে ২০০০ পাকিস্তানি সেনা সৌদি বাহিনীকে সাংগঠনিক, প্রযুক্তিগত ও প্রশিক্ষণ সহায়তা প্রদান করছে।
অপরদিকে আর্থিক সংকটে থাকা পাকিস্তানকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ শক্তিশালী করতে সৌদি আরব নিয়মিত সহায়তা দিয়ে আসছে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশেষজ্ঞ ও প্রাক্তন পাকিস্তানি রাষ্ট্রদূত মলীহা লোধি বলেন, ‘পারস্পরিক প্রতিরক্ষা চুক্তি একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রযাত্রা যা তাদের শক্তিশালী নিরাপত্তা সম্পর্ককে আরও উচ্চ স্তরে নিয়ে যাবে।’
ওয়াশিংটনভিত্তিক স্টিমসন সেন্টারের দক্ষিণ এশিয়া প্রোগ্রামের পরিচালক এলিজাবেথ থ্রেলকেল্ডও এ মতের প্রতিধ্বনি করে বলেন, ‘যদিও চুক্তির বিস্তারিত এখনও অস্পষ্ট, তবুও এটি তাৎপর্যপূর্ণ। পাকিস্তান এখন মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তায় বড় খেলোয়াড় হিসেবে নিজের অবস্থান শক্ত করছে।’
লন্ডনভিত্তিক নিরাপত্তা বিশ্লেষক গফফার হুসেইন মনে করেন, এ চুক্তি কৌশলগত দিকের পাশাপাশি প্রতীকী গুরুত্ব বহন করছে।
তার মতে, ‘পারমাণবিক সক্ষমতাসম্পন্ন সামরিক শক্তির পাকিস্তানের সঙ্গে অংশীদারিত্ব সৌদি আরবের ভাবমূর্তি উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে।’
পর্যবেক্ষকরা বলছেন, ধর্মীয় বিশ্বাস, অর্থনৈতিক সহায়তা ও কৌশলগত নিরাপত্তা— এই তিন ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে সৌদি আরব-পাকিস্তান সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরো গভীর হবে।


পাক-ভারত দ্বন্দ্বে চীনের অবস্থান পাকিস্তানের সার্বভৌমত্বের পক্ষে