আমার দেশ জনপ্রিয় বাংলা নিউজ পেপার

যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও সীমান্তে আতঙ্ক, ঘরে ফিরতে অনিচ্ছুক থাই-কম্বোডিয়ানরা

আমার দেশ অনলাইন

যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও সীমান্তে আতঙ্ক, ঘরে ফিরতে অনিচ্ছুক থাই-কম্বোডিয়ানরা

কয়েক সপ্তাহের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর থাইল্যান্ড–কম্বোডিয়া সীমান্তে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও বাস্তুচ্যুত বহু মানুষ এখনও ঘরে ফিরতে সাহস পাচ্ছেন না। সহিংসতা আবার শুরু হতে পারে—এই আশঙ্কায় অনেকেই আশ্রয়কেন্দ্রেই অবস্থান করছেন।

থাইল্যান্ডের সুরিন শহরের একটি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আশ্রয় নেওয়া ২১ বছর বয়সী কানলায়া সোমজেত্তানা বলেন, যুদ্ধবিরতির পর কিছু মানুষ ঘরে ফিরতে শুরু করলেও তিনি কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে এলাকা নিরাপদ—এমন নিশ্চয়তা না পাওয়া পর্যন্ত ফিরবেন না। অতীত অভিজ্ঞতায় যুদ্ধবিরতি ভেঙে পড়ার নজির থাকায় প্রতিবেশী দেশের প্রতিশ্রুতির ওপর অনেকের আস্থা নেই বলেও জানান তিনি।

বিজ্ঞাপন

কম্বোডিয়াতেও পরিস্থিতি প্রায় একই। বান্তেয় মিয়ানচে প্রদেশে একটি বৌদ্ধ প্যাগোডায় অস্থায়ী আশ্রয়ে থাকা ৩৫ বছর বয়সী সো চেউন বলেন, শিগগিরই সন্তান জন্ম দেওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও এখনই সীমান্তসংলগ্ন নিজের বাড়িতে ফেরার সাহস পাচ্ছেন না। কয়েক দিন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে শান্তি বজায় থাকলে তবেই ফেরার সিদ্ধান্ত নেবেন বলে জানান তিনি।

উভয় দেশের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রোববার যুদ্ধবিরতি কার্যকর ছিল। তবে অধিকাংশ এলাকায় এখনও স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে এসেছে—এমন ঘোষণা দেওয়া হয়নি। নতুন করে শুরু হওয়া তিন সপ্তাহের সংঘর্ষে অন্তত ৪৭ জন নিহত হন এবং দুই দেশের মিলিয়ে এক মিলিয়নের বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হন। এর আগেও জুলাইয়ে পাঁচ দিনের সংঘর্ষের পর যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হলেও তা টেকেনি।

তবে কেউ কেউ আর অপেক্ষা করতে চান না। থাইল্যান্ডের সিসাকেত প্রদেশের ধান ও কাসাভা চাষি সাইচন ওয়ংপিটাক বলেন, গবাদিপশু ও খামারের কাজের কারণে তিনি বাড়ি ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। যদিও যুদ্ধবিরতির খবরে স্বস্তি পেয়েছেন, তবু তার আশঙ্কা—এটি দীর্ঘস্থায়ী নাও হতে পারে।

যুদ্ধবিরতির আওতায় দুই দেশ গোলাবর্ষণ বন্ধ, সেনা চলাচল স্থগিত এবং সীমান্ত এলাকার বেসামরিক মানুষের দ্রুত প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে সম্মত হয়েছে। পাশাপাশি থাইল্যান্ড জুলাইয়ে আটক ১৮ জন কম্বোডিয়ান সেনাকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।

কম্বোডিয়ার আরেকটি আশ্রয়কেন্দ্রের বাসিন্দা কট নিক বলেন, যুদ্ধবিরতির ফলে শিশুদের স্কুলে ফেরার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে—এতে তিনি কৃতজ্ঞ। তবে এখনও অনিশ্চয়তা কাটেনি বলে জানান তিনি।

অনেক আশ্রয়প্রার্থী এখনও আতঙ্কে আশ্রয় ছাড়তে প্রস্তুত নন। তবু সো চেউনের মতো কেউ কেউ বলছেন, বিস্ফোরণের শব্দ থেমে যাওয়া অন্তত কিছুটা আশার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

সূত্র: এএফপি

এসআর

Google News Icon

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন