
আমার দেশ অনলাইন

রাজনৈতিক ইতিহাসে নেতাদের পতন অনেক সময় সহিংস ও নাটকীয় হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বিরল ও প্রতিফলিত ঘটনা হলো কোনো রাষ্ট্রপ্রধানের আনুষ্ঠানিক বা বিচারিক মৃত্যুদণ্ড। সাধারণত বিপ্লব, অভ্যুত্থান, গৃহযুদ্ধ বা গণ-অপরাধের বিচারের পর এ ধরনের ঘটনা ঘটে।
আদালতের রায় বা বিপ্লবীদের হাতে এমন বেশ কয়েকজন রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ, রাষ্ট্রদ্রোহ, সংবিধান লঙ্ঘন থেকে শুরু করে বিদেশি শক্তির সঙ্গে ষড়যন্ত্র—বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ ছিল তাদের বিরুদ্ধে। ফায়ারিং স্কোয়াড, ফাঁসি, গিলোটিনের মতো পদ্ধতি ব্যবহার করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল এসব নেতার।
সাদ্দাম হোসেন (ইরাক, ১৯৭৯–২০০৩)
যুক্তরাষ্ট্র–নেতৃত্বাধীন আগ্রাসনের পর দুজাইল গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইরাকি ট্রাইব্যুনালে দোষী সাব্যস্ত হন। ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। এটি আধুনিক রাষ্ট্রপ্রধানদের সবচেয়ে আলোচিত মৃত্যুদণ্ডগুলোর একটি।
নিকোলায় চাউশেস্কু (রুমানিয়া, ১৯৬৫–১৯৮৯)
২৪ বছর শাসন শেষে রুমানিয়ার কমিউনিস্ট শাসক চাউশেস্কু ও তার স্ত্রী দ্রুতগতির সামরিক ট্রাইব্যুনালে দোষী সাব্যস্ত হন গণহত্যা ও অর্থনৈতিক ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের জন্য। বড়দিনে তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়। এটি আধুনিক রুমানিয়ার শেষ মৃত্যুদণ্ড হিসেবে ইতিহাসে স্বীকৃত।
১৬৪৯ সালের ৩০ জানুয়ারি, ইংল্যান্ডের রাজা প্রথম চার্লসকে শিরশ্ছেদ করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। কর্তৃত্ববাদী শাসন এবং পার্লামেন্টের সঙ্গে বিরোধের জেরে রাষ্ট্রদ্রোহের জন্য দোষী সাব্যস্ত করে তার এই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। রাজা প্রথম চার্লসের মৃত্যুদণ্ড ইংরেজ গৃহযুদ্ধের পরিণতি এবং সাংবিধানিক রাজতন্ত্রের জন্ম দেয়, যা আধুনিক গণতন্ত্রের ভিত্তি স্থাপন করে।
১৭৯৩ সালের ২১ জানুয়ারি, ফ্রান্সের রাজা ষোড়শ লুইকে প্যারিসের রিভোল্যুশনারি ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। ফরাসি বিপ্লবের সময় রাজতান্ত্রিক শাসন এবং জনগণের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে তাকে গিলোটিনের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। এই ঘটনা বিপ্লবীদের জয়ের প্রতীক হিসেবে চিহ্নিত হয়, যা ইউরোপীয় রাজতন্ত্রের পতনের সূচনা করে।
১৯৫৮ সালের ১৬ জুন বুদাপেস্টে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয় হাঙ্গেরির সমাজতান্ত্রিক নেতা ইমরে ন্যাগির। ১৯৫৬ সালের ব্যর্থ বিপ্লবে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে। তবে এটি একটি ‘শো ট্রায়াল’ হিসেবে পরিচিত, যা পরবর্তীকালে হাঙ্গেরিয়ান কমিউনিস্ট পার্টি নিজেরাই অবৈধ বলে স্বীকার করে।
১৯৭৯ সালের ৭ এপ্রিল ইসলামী বিপ্লবের পর ইরানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী আমির-আব্বাস হোবেইদাকে রাজনৈতিক দমন-পীড়ন এবং দুর্নীতির অভিযোগে ফায়ারিং স্কোয়াডের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভির অধীন হোবেইদার সরকারকে বিপ্লবীদের ‘দমনকারী’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। তবে তার বিচার ছিল অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত। অনেকের মতে, এটি বিচারবহির্ভূত মৃত্যুদণ্ডের খুব কাছাকাছি ছিল।
জুলফিকার আলী ভুট্টো (পাকিস্তান, ১৯৭১–১৯৭৭)
প্রেসিডেন্ট ও পরে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ভুট্টোকে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। ১৯৭৯ সালে বিতর্কিত হত্যা মামলায় তাকে ফাঁসি দেওয়া হয়। ২০২৪ সালে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট তার বিচারের মারাত্মক ত্রুটিপূর্ণ ঘোষণা করে, যা মরণোত্তর পুনর্বাসনের উদাহরণ।
মুয়াম্মার গাদ্দাফি (লিবিয়া, ১৯৬৯–২০১১)
৪২ বছরের শাসন শেষে গাদ্দাফিকে আদালতের রায় ছাড়াই আটক এবং তাৎক্ষণিক হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় লিবিয়া রাজনৈতিকভাবে বিভক্ত অবস্থায় পড়ে।
মেংগিস্তু হাইলি মারিয়াম (ইথিওপিয়া, ১৯৭৭–১৯৯১)
‘রেড টেরর’-এর সঙ্গে যুক্ত এই সাবেক নেতা অনুপস্থিতিতে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পেয়েছিলেন। তিনি জিম্বাবুয়েতে নির্বাসনে বসবাস করছেন এবং প্রত্যর্পণ হয়নি।
চুন দু-হোয়ান (দক্ষিণ কোরিয়া, ১৯৭৯–১৯৮৭)
দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক শাসন শেষে চুনকে ১৯৭৯ সালের অভ্যুত্থান ও গওয়াংজু দমন-পীড়ণের দায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। পরে তা বাতিল হয়ে তিনি ক্ষমা পান।
জোসেফ কাবিলা (ডিআর কঙ্গো, ২০০১–২০১৯)
২০২৫ সালে সামরিক আদালত তাকে রাষ্ট্রদ্রোহ, বিদ্রোহ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অনুপস্থিতিতে মৃত্যুদণ্ড দেয়। তিনি গ্রেপ্তার হননি এবং অভিযোগ অস্বীকার করছেন।
এসআর

রাজনৈতিক ইতিহাসে নেতাদের পতন অনেক সময় সহিংস ও নাটকীয় হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বিরল ও প্রতিফলিত ঘটনা হলো কোনো রাষ্ট্রপ্রধানের আনুষ্ঠানিক বা বিচারিক মৃত্যুদণ্ড। সাধারণত বিপ্লব, অভ্যুত্থান, গৃহযুদ্ধ বা গণ-অপরাধের বিচারের পর এ ধরনের ঘটনা ঘটে।
আদালতের রায় বা বিপ্লবীদের হাতে এমন বেশ কয়েকজন রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারপ্রধানের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে। মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ, রাষ্ট্রদ্রোহ, সংবিধান লঙ্ঘন থেকে শুরু করে বিদেশি শক্তির সঙ্গে ষড়যন্ত্র—বিভিন্ন ধরনের অভিযোগ ছিল তাদের বিরুদ্ধে। ফায়ারিং স্কোয়াড, ফাঁসি, গিলোটিনের মতো পদ্ধতি ব্যবহার করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়েছিল এসব নেতার।
সাদ্দাম হোসেন (ইরাক, ১৯৭৯–২০০৩)
যুক্তরাষ্ট্র–নেতৃত্বাধীন আগ্রাসনের পর দুজাইল গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ইরাকি ট্রাইব্যুনালে দোষী সাব্যস্ত হন। ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে তার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। এটি আধুনিক রাষ্ট্রপ্রধানদের সবচেয়ে আলোচিত মৃত্যুদণ্ডগুলোর একটি।
নিকোলায় চাউশেস্কু (রুমানিয়া, ১৯৬৫–১৯৮৯)
২৪ বছর শাসন শেষে রুমানিয়ার কমিউনিস্ট শাসক চাউশেস্কু ও তার স্ত্রী দ্রুতগতির সামরিক ট্রাইব্যুনালে দোষী সাব্যস্ত হন গণহত্যা ও অর্থনৈতিক ধ্বংসাত্মক কর্মকাণ্ডের জন্য। বড়দিনে তাদের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়। এটি আধুনিক রুমানিয়ার শেষ মৃত্যুদণ্ড হিসেবে ইতিহাসে স্বীকৃত।
১৬৪৯ সালের ৩০ জানুয়ারি, ইংল্যান্ডের রাজা প্রথম চার্লসকে শিরশ্ছেদ করে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। কর্তৃত্ববাদী শাসন এবং পার্লামেন্টের সঙ্গে বিরোধের জেরে রাষ্ট্রদ্রোহের জন্য দোষী সাব্যস্ত করে তার এই মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। রাজা প্রথম চার্লসের মৃত্যুদণ্ড ইংরেজ গৃহযুদ্ধের পরিণতি এবং সাংবিধানিক রাজতন্ত্রের জন্ম দেয়, যা আধুনিক গণতন্ত্রের ভিত্তি স্থাপন করে।
১৭৯৩ সালের ২১ জানুয়ারি, ফ্রান্সের রাজা ষোড়শ লুইকে প্যারিসের রিভোল্যুশনারি ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। ফরাসি বিপ্লবের সময় রাজতান্ত্রিক শাসন এবং জনগণের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগে তাকে গিলোটিনের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। এই ঘটনা বিপ্লবীদের জয়ের প্রতীক হিসেবে চিহ্নিত হয়, যা ইউরোপীয় রাজতন্ত্রের পতনের সূচনা করে।
১৯৫৮ সালের ১৬ জুন বুদাপেস্টে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয় হাঙ্গেরির সমাজতান্ত্রিক নেতা ইমরে ন্যাগির। ১৯৫৬ সালের ব্যর্থ বিপ্লবে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনা হয় তার বিরুদ্ধে। তবে এটি একটি ‘শো ট্রায়াল’ হিসেবে পরিচিত, যা পরবর্তীকালে হাঙ্গেরিয়ান কমিউনিস্ট পার্টি নিজেরাই অবৈধ বলে স্বীকার করে।
১৯৭৯ সালের ৭ এপ্রিল ইসলামী বিপ্লবের পর ইরানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী আমির-আব্বাস হোবেইদাকে রাজনৈতিক দমন-পীড়ন এবং দুর্নীতির অভিযোগে ফায়ারিং স্কোয়াডের মাধ্যমে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা হয়। শাহ মোহাম্মদ রেজা পাহলভির অধীন হোবেইদার সরকারকে বিপ্লবীদের ‘দমনকারী’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। তবে তার বিচার ছিল অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত। অনেকের মতে, এটি বিচারবহির্ভূত মৃত্যুদণ্ডের খুব কাছাকাছি ছিল।
জুলফিকার আলী ভুট্টো (পাকিস্তান, ১৯৭১–১৯৭৭)
প্রেসিডেন্ট ও পরে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করা ভুট্টোকে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। ১৯৭৯ সালে বিতর্কিত হত্যা মামলায় তাকে ফাঁসি দেওয়া হয়। ২০২৪ সালে পাকিস্তানের সুপ্রিম কোর্ট তার বিচারের মারাত্মক ত্রুটিপূর্ণ ঘোষণা করে, যা মরণোত্তর পুনর্বাসনের উদাহরণ।
মুয়াম্মার গাদ্দাফি (লিবিয়া, ১৯৬৯–২০১১)
৪২ বছরের শাসন শেষে গাদ্দাফিকে আদালতের রায় ছাড়াই আটক এবং তাৎক্ষণিক হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় লিবিয়া রাজনৈতিকভাবে বিভক্ত অবস্থায় পড়ে।
মেংগিস্তু হাইলি মারিয়াম (ইথিওপিয়া, ১৯৭৭–১৯৯১)
‘রেড টেরর’-এর সঙ্গে যুক্ত এই সাবেক নেতা অনুপস্থিতিতে মৃত্যুদণ্ডাদেশ পেয়েছিলেন। তিনি জিম্বাবুয়েতে নির্বাসনে বসবাস করছেন এবং প্রত্যর্পণ হয়নি।
চুন দু-হোয়ান (দক্ষিণ কোরিয়া, ১৯৭৯–১৯৮৭)
দক্ষিণ কোরিয়ার সামরিক শাসন শেষে চুনকে ১৯৭৯ সালের অভ্যুত্থান ও গওয়াংজু দমন-পীড়ণের দায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। পরে তা বাতিল হয়ে তিনি ক্ষমা পান।
জোসেফ কাবিলা (ডিআর কঙ্গো, ২০০১–২০১৯)
২০২৫ সালে সামরিক আদালত তাকে রাষ্ট্রদ্রোহ, বিদ্রোহ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে অনুপস্থিতিতে মৃত্যুদণ্ড দেয়। তিনি গ্রেপ্তার হননি এবং অভিযোগ অস্বীকার করছেন।
এসআর

যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরের এক মাসের মাথায় ইসরাইলে স্থগিত থাকা অস্ত্র রপ্তানি পুনরায় চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে জার্মানি। সোমবার (১৭ নভেম্বর) এক সরকারি মুখপাত্র জানান, আগামী সপ্তাহ থেকে বার্লিন কেস-বাই-কেস মূল্যায়নের ভিত্তিতে পূর্বে আরোপিত নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করবে। এর ফলে ২৪ নভেম্বর থেকে আগস্টে স্
৩৯ মিনিট আগে
কাশ্মীর ইস্যুকে কেন্দ্র করে পাকিস্তানের প্রতি কঠোর সতর্কবার্তা দিয়েছেন ভারতের সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী। তিনি জানিয়েছেন, যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় ভারত সম্পূর্ণ প্রস্তুত রয়েছে। সোমবার এ বিষয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করে ভারতীয় মিডিয়া এনডিটিভি।
৪ ঘণ্টা আগে
শেখ হাসিনার রায় নিয়ে প্রতিবেদন করেছে আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গণমাধ্যম। ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়েছে। বলা হয়, দিনটি বাংলাদেশের জন্য ঐতিহাসিক।
৬ ঘণ্টা আগে