‘দরিদ্র প্রেসিডেন্ট’ খ্যাত হোসে মুজিকা আর নেই

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ১৪ মে ২০২৫, ১৭: ৫৭

বিশ্বজুড়ে সমাদৃত এক কিংবদন্তি গেরিলা যোদ্ধা হিসেবে পরিচিত উরুগুয়ের সাবেক প্রেসিডেন্ট হোসে মুজিকা ‘পেপে’ আর নেই। গত এক বছর তিনি খাদ্যনালির ক্যানসারের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পর ৮৯ বছর বয়সে মৃত্যু বরণ করেন।

মুজিকা চারবার কারাবরণ করেন। ১৯৭০ সালে তিনি ছয়বার গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুর খুব কাছ থেকে বেঁচে ফিরেন।

বিজ্ঞাপন

প্রেসিডেন্ট, রাজনৈতিক কর্মী, পথপ্রদর্শক এবং নেতা সম্বোধন করে উরুগুয়ের বর্তমান রাষ্ট্রপতি ইয়ামান্দু ওরসি শোকবার্তায় বলেন, ‘গভীর দুঃখের সাথে আমরা আমাদের কমরেড পেপে মুজিকার মৃত্যুর খবর জানাচ্ছি। প্রিয় বন্ধু, আপনাকে আমরা খুব মিস করব।’

বলিভিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট ইভো মোরালেস তার ‘অভিজ্ঞতা ও প্রজ্ঞা’কে স্মরণ করেন। ব্রাজিল সরকার তাকে ‘আমাদের সময়ের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মানবতাবাদী’ হিসেবে অভিহিত করে শোক প্রকাশ করেছে। স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ বলেছেন, ‘মুজিকা একটি উন্নত বিশ্বের জন্য বেঁচে ছিলেন।’ গুয়াতেমালার বার্নার্ডো আরেভালো তাকে ‘নম্র এবং মহৎ’ হিসেবে উল্লেখ করেছেন তার শোকবার্তায়।

মন্টেভিডিওর উপকণ্ঠে নিজ ছোট্ট খামারে বসবাসকারী মুজিকা ২০১০-১৫ মেয়াদে প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রাপ্য তার বেতনের বেশির ভাগ অংশ দাতব্য প্রতিষ্ঠানে দান করে ‘বিশ্বের দরিদ্রতম প্রেসিডেন্ট’ হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন। তিনি স্যান্ডেল পরে সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দিতেন।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি খুব সাধারণ জীবনযাপন করতেন, ভোগবাদের সমালোচনা করতেন এবং সামাজিক সংস্কার নিয়ে কাজ করতেন। এতে মুজিকা লাতিন আমেরিকার বাইরেও সুপরিচিত রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হয়ে ওঠেন।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে বিশ্বব্যাপী তার জনপ্রিয়তা ছিল কল্পনাতীত।

তার রাজনীতি, বই পড়া ও জমিতে কাজ করতে ভালো লাগার স্বভাব তিনি মায়ের কাছ থেকে পেয়েছিলেন। মুজিকা দেশটির রাজধানী মন্টেভিডিওতে একটি মধ্যবিত্ত পরিবারে বড় হন।

তরুণ বয়সে মুজিকা উরুগুয়ের ঐতিহ্যবাহী রাজনৈতিক শক্তি ন্যাশনাল পার্টির সদস্য ছিলেন।

১৯৬০-এর দশকে তিনি একটি শহুরে বামপন্থী গেরিলা গ্রুপের সদস্য ছিলেন।

তিনি দু'বার কারাগার থেকে পালান। তার মধ্যে একবার সহবন্দীদের সঙ্গে একটি টানেলের মধ্য দিয়ে। এটি ছিল উরুগুয়ের ইতিহাসে সবচেয়ে সর্বাধিক আলোচিত পালানোর ঘটনা।

১৯৭০ ও ৮০ দশকে মুজিকা ১৪ বছরের বেশি সময় কারাবাসে ছিলেন। এ সময় তিনি নির্যাতনের শিকার হন। বেশির ভাগ সময় তাকে একা রাখা হতো। ১৯৮৫ সালে তিনি কারামুক্ত হন।

এমএস

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত