মেলানিয়ার চিঠির জবাব যেভাবে দিলেন পুতিন

আমার দেশ অনলাইন
প্রকাশ : ১১ অক্টোবর ২০২৫, ১৮: ৩৪
আপডেট : ১১ অক্টোবর ২০২৫, ১৮: ৩৪

যুক্তরাষ্ট্রের ফার্স্ট লেডি মেলানিয়া ট্রাম্প জানিয়েছেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন তার পাঠানো মানবিক চিঠির জবাব দিয়েছেন। শনিবার ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।

শুক্রবার হোয়াইট হাউসে এক অনুষ্ঠানে মেলানিয়া বলেন, পুতিনের সঙ্গে তাঁর “খোলা যোগাযোগের মাধ্যম” স্থাপিত হয়েছে এবং সেই যোগাযোগের ফলেই আটজন ইউক্রেনীয় শিশু সম্প্রতি তাদের পরিবারের সঙ্গে পুনর্মিলিত হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

তিনি জানান, গত আগস্টে আলাস্কা সফরের সময় তাঁর “শান্তির চিঠি” পুতিনের হাতে পৌঁছে দেওয়া হয়েছিল। চিঠিতে মেলানিয়া অনুরোধ করেছিলেন, যুদ্ধের কারণে বাস্তুচ্যুত শিশুদের নিরাপদে তাদের পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হোক।

চিঠিতে ফার্স্ট লেডি লিখেছিলেন,“প্রত্যেক শিশু তাদের হৃদয়ে একই স্বপ্ন লালন করে — তারা ভালোবাসা, সম্ভাবনা এবং বিপদ থেকে সুরক্ষার স্বপ্ন দেখে।”

প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সোশ্যাল মিডিয়ায় চিঠির কিছু অংশ প্রকাশ করেছেন। মেলানিয়া জানান, পুতিন তার চিঠির উত্তর দিয়েছেন এবং ইউক্রেনীয় শিশুদের পুনর্মিলনের প্রক্রিয়া সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পাঠিয়েছেন।

মেলানিয়া বলেন, “গত ২৪ ঘণ্টায় আটটি ইউক্রেনীয় শিশু তাদের পরিবারের সাথে পুনরায় মিলিত হয়েছে। এটি ছোট হলেও একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ইউক্রেনের প্রতিটি শিশু আজও অনিশ্চয়তার মধ্যে বেঁচে আছে।”

তিনি জানান, যুদ্ধের কারণে বিচ্ছিন্ন হওয়া শিশুদের মধ্যে তিনজন রাশিয়ায় আশ্রয় নিয়েছিল, যাদের এখন ফেরত পাঠানো হয়েছে। আরও এক অল্পবয়সী মেয়েকে ইউক্রেন থেকে রাশিয়ায় ফিরিয়ে আনা হয়েছে, দুই দেশের সহযোগিতায় এই পুনর্মিলন সম্পন্ন হয়েছে।

ফার্স্ট লেডি বলেন, তাঁকে প্রতিটি শিশুর ছবি, পরিচয় এবং অবস্থাসহ একটি পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দেওয়া হয়েছে এবং মার্কিন সরকারও তা যাচাই করেছে।

মেলানিয়া জানান, পুতিনের উত্তর ছিল “সহানুভূতিশীল ও ইতিবাচক সুরে লেখা।” তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যে যুদ্ধবিধ্বস্ত শিশুদের পরিবারে ফেরাতে রাশিয়া ইউক্রেনের সঙ্গে সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে।

এই ঘোষণাকে হোয়াইট হাউস মেলানিয়ার দীর্ঘদিনের মানবিক উদ্যোগের ধারাবাহিকতা বলে উল্লেখ করেছে। ২০২১ সালে তিনি “Be Best” নামে একটি বৈশ্বিক শিশু কল্যাণ কর্মসূচি চালু করেন এবং এ বছর “Take It Down Act” বিল পাসে নেতৃত্ব দেন, যা অনলাইন প্রতিশোধমূলক পর্নোগ্রাফি নিষিদ্ধ করেছে।

ইউক্রেন সরকারের হিসাব অনুযায়ী, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে প্রায় ১৯,৫০০ ইউক্রেনীয় শিশু রাশিয়া বা রুশ-অধিকৃত অঞ্চলে বাস্তুচ্যুত হয়েছে, যার মধ্যে এখন পর্যন্ত মাত্র ১,৬০৫ জন দেশে ফিরতে পেরেছে।

২০২৩ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত শিশুদের বেআইনি নির্বাসনের অভিযোগে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও শিশু অধিকার কমিশনার মারিয়া লভোভা-বেলোভার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। তবে রাশিয়া দাবি করেছে, তারা “শিশুদের নিরাপত্তার জন্য যুদ্ধক্ষেত্র থেকে সরিয়ে নিয়েছিল।”

মেলানিয়া ট্রাম্পের উদ্যোগ ও পুতিনের প্রতিক্রিয়া নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে আলোচনা শুরু হয়েছে। কূটনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এটি দুই দেশের সম্পর্কের এক বিরল মানবিক অধ্যায়, যা যুদ্ধবিধ্বস্ত শিশুদের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশার বার্তা দিতে পারে।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিষয়:

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত