নেপালের অভ্যুত্থান

ভারতের কূটনীতিতে নতুন চ্যালেঞ্জ

আমার দেশ অনলাইন
প্রকাশ : ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯: ০৮
ছবি: সংগৃহীত

চলতি মাসে নেপালে গণবিস্ফোরণ শুরু হওয়ার মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে দেশটির প্রধানমন্ত্রীকে রাষ্ট্রীয় সফরে নয়াদিল্লিতে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল ভারত। দক্ষিণ এশিয়ার এ দুই প্রতিবেশী দেশের কিছুটা টানাপোড়েনের সম্পর্ক মেরামত করাই ছিল ওই আমন্ত্রণের মূল উদ্দেশ্য। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি সেই সুযোগ পাননি। হঠাৎ করে সারা দেশে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ায় তিনি পদত্যাগ করতে বাধ্য হন। দুর্নীতি, অভিজাততন্ত্র ও ক্রমবর্ধমান বৈষম্যের বিরুদ্ধে তরুণদের তীব্র ক্ষোভই এই ছোট হিমালয়ান দেশে বিদ্রোহকে উসকে দেয়।

একইরকম এক বিদ্রোহ গত বছর বাংলাদেশে শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী সরকারকে উৎখাত করেছিল। আর ২০২২ সালে শ্রীলঙ্কায় ভেঙে পড়া অর্থনীতির কারণে হওয়া বিক্ষোভ একটি প্রেসিডেন্টকে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করেছিল, যিনি এমন এক রাজনৈতিক বংশের সদস্য ছিলেন, অনেক শ্রীলঙ্কান যাদের নির্লজ্জভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত বলে মনে করতেন।

বিজ্ঞাপন

দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে এ ধরনের অস্থিতিশীলতা ভারতের মনোযোগকে তার বৈশ্বিক পরাশক্তি হওয়ার উচ্চাকাঙ্ক্ষা থেকে সরিয়ে দেয়। কিন্তু ভারত তার পশ্চাৎপদ বিষয়গুলো উপেক্ষা করতে পারছে না। ভারতকে ইতোমধ্যেই অভিযোগের মুখে পড়তে হচ্ছে। তার ছোট ও দরিদ্র প্রতিবেশীরা মনে করে, ভারত কখনো তাদের উপেক্ষা করে, আবার কখনো তাদের ভয় দেখায়। আর এসব আচরণ উন্নয়ন সহায়তার চেয়ে বরং নিজের স্বার্থেই পরিচালিত।

নেপালের মতো প্রতিবেশীরা মানবিক সহায়তা ও অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার জন্য মাঝে মাঝে ভারতের ওপর নির্ভর করেছে; আবার ভারতের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের কারণে ক্ষুব্ধও হয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, প্রতিবেশী দেশগুলোতে ক্ষমতার শূন্যতা তৈরি হতে দেওয়া বা নেতৃত্ব প্রদর্শনে ব্যর্থতা ভারতের স্বার্থের জন্য আরো ক্ষতিকর ঝুঁকি তৈরি করে। এটি চীনকেও উৎসাহিত করে, যে ধীরে ধীরে হিমালয় থেকে ভারত মহাসাগর পর্যন্ত ভারতের ঐতিহ্যগত প্রভাববলয়ে জায়গা করে নিচ্ছে শক্তি, নির্মাণ ও অন্যান্য অবকাঠামো প্রকল্পের জন্য ভারতের প্রতিবেশীদের অর্থায়ন করার মাধ্যমে।

কানাডার এশিয়া প্যাসিফিক ফাউন্ডেশনের সিনিয়র ফেলো ও দক্ষিণ এশিয়া বিশ্লেষক মাইকেল কুগেলম্যান বলেন, ভারত নির্বিকার থাকতে পারে না এবং ধরে নিতে পারে না যে, প্রতিবেশীদের ভারতের প্রতি নেতিবাচক মনোভাব ভারতের সহায়তার প্রয়োজনের কারণে প্রশমিত হয়ে গেছে। ভারতের জন্য ঝুঁকি হলো, এই অস্থিরতা নতুন নেতাদের জন্ম দেবে বা এমন রাজনৈতিক শক্তিকে জায়গা দেবে, যারা ভারতের স্বার্থের প্রতি বৈরী।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, নেপালের অভ্যুত্থান ভারতের জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ। কারণ, এই অভ্যুত্থান সীমান্ত নিরাপত্তা, চীনা প্রভাব, আঞ্চলিক নেতৃত্ব, অর্থনৈতিক স্বার্থ ও কূটনৈতিক বিশ্বাসযোগ্যতা— সব ক্ষেত্রেই ভারতের জন্য ঝুঁকি তৈরি করেছে।

দক্ষিণ এশিয়ায় বিশ্বের এক-চতুর্থাংশ মানুষের বসবাস। এর মধ্যে রয়েছে নেপাল, শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, ভুটান, পাকিস্তান ও মালদ্বীপ এবং এখানেই বিশ্বের সবচেয়ে বড় তরুণ জনগোষ্ঠী রয়েছে। ক্রমশ ভারতের আঞ্চলিক কূটনীতি চীনের সঙ্গে তাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে কেন্দ্র করে পরিচালিত হচ্ছে। কারণ, দুপক্ষই দক্ষিণের বৈশ্বিক নেতৃত্বের জন্য প্রতিযোগিতা করছে।

নেপালের মতো কয়েকটি দেশের অভিযোগ, তারা দুই এশীয় দানবের (ভারত ও চীন) ভূরাজনৈতিক দ্বন্দ্বের হাতিয়ার হয়ে গেছে, যদিও তারা সুযোগমতো এক পক্ষকে অন্য পক্ষের বিপরীতে ব্যবহার করেছে।

সাব-জেলে অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তারা, সরকারের কাছে যে আহ্বান জানালেন ব্যারিস্টার আরমান

অসদাচারণের দায়ে টঙ্গী পাইলট স্কুলের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে শোকজ

জরুরি অবস্থা জারি করলেন পেরুর প্রেসিডেন্ট

গুম-খুনে জড়িত ১৫ সেনা কর্মকর্তা চাকরিচ্যুত। ট্রাইব্যুনালে হাজির। সাবজেলে প্রেরণ

এবার ১ টাকায় গরুর মাংস বিতরণের ঘোষণা সেই এমপি প্রার্থীর

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত