বাজারে নকল মোবাইলের দাপট, চালু হয়নি এনইআইআর

আল-আমিন
প্রকাশ : ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৬: ১৭

দেশে মোবাইল হ্যান্ডসেটের বাজারে প্রায় ৪০ শতাংশই নকল ও অবৈধ হ্যান্ডসেট। ফলে মোবাইল কারখানার বিনিয়োগ ও ব্যবসা ঝুঁকিতে রয়েছে। অন্যদিকে সরকার হারাচ্ছে মোটা অঙ্কের রাজস্ব।

বিজ্ঞাপন

সূত্র জানায়, অবৈধ ফোন বন্ধে বিটিআরসি পুরো ফাংশনালভাবে ন্যাশনাল ইকুইপমেন্ট আইডেন্টিটি রেজিস্টার (এনইআইআর) সচল রাখার উদ্যোগ নিয়েছে। নিয়ন্ত্রণ সংস্থাটি এখন তা কত দ্রুত চালু করতে পারে, তা দেখার বিষয়।

অন্যদিকে এমন পরিস্থিতি হতে উত্তরণে দ্রুত এনইআইআর পুরোদমে চালু করাকে সমাধান হিসেবে দেখছেন ব্যবসায়ী, বিশেষজ্ঞ ও নীতিনির্ধারকরা।

জানা গেছে, দেশে মোবাইল ফোন অপারেটরের নেটওয়ার্কে সচল ১৯ লাখ ৭৬ হাজার আইফোনের মধ্যে ১৯ লাখ ৫৫ হাজারই অবৈধ। এনইআইআর সিস্টেম চালুর মাধ্যমে অবৈধভাবে ও কর ফাঁকি দিয়ে মোবাইল ফোনের আমদানি বন্ধ করা হবেÑ এমন আশ্বাসের ভিত্তিতেই দেশের প্রধান প্রধান মোবাইল আমদানিকারক স্থানীয়ভাবে কারখানা স্থাপন করেছিলেন।

এ খাতে দিনের পর দিন বিনিয়োগও বাড়ছিল। ২০২০ সালে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন এনইআইআর সিস্টেম বাস্তবায়ন করে। কিন্তু সেখানে অবৈধ ও নকল ফোন বন্ধের মূল ফাংশনই আর চালু করা হয়নি। অথচ এনইআইআর সরকারের কার্যকর ও অত্যাধুনিক একটি সিস্টেম।

এ বিষয়ে ফরেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির নির্বাহী পরিচালক ও সিইও টিআইএম নূরুল কবীর আমার দেশকে জানান, সরকারের রাজস্ব সুরক্ষা, বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিতে দ্রুত এনইআইআর চালু করা উচিত বিটিআরসির।

জানা যায়, রহস্যজনক কারণে ফ্যাসিবাদী সময়ের শীর্ষ পর্যায় হতেই সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়েছিল যে, এনইআইআরের মূল পরিকল্পনা ও ডিজাইন হতে কিছু মূল ফাংশন বা সিস্টেম বন্ধ রাখতে হবে, যা দিয়ে অবৈধ মোবাইল স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ করা যেত।

মোবাইল ফোন প্রস্তুতকারকদের সংগঠন, মোবাইল ফোন অপারেটর, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীসহ সব অংশীজনের সঙ্গে কয়েক বছরের পর্যালোচনা শেষে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন ২০২১ সালে এনইআইআর চালু করে। এ সিস্টেমের মাধ্যমে কার্যকরভাবে মোবাইল ফোনের অবৈধ আমদানি ও বিক্রি রোধ করা সম্ভব।

সূত্র জানায়, উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের কাছে চ্যালেঞ্জিং অবস্থার কথা তুলে ধরে সুরক্ষা চেয়েছে। বিষয়টি তারা জানিয়েছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের কাছেও।

সূত্র আরও জানায়, আন্ডারওয়ার্ল্ডের সন্ত্রাসীরা সিমকার্ড ছাড়া ওয়াইফাই বা অন্য কোনো প্রযুক্তির মাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপন করতে সক্ষম। যদি মুঠোফোনের আইএমইআই নম্বরটি সিমের সঙ্গে রেজিস্ট্রি করা থাকে, তবে আইপি অ্যাড্রেস ও আইএমইআইর মাধ্যমে ওইসব সন্ত্রাসীকে মোকাবিলা সম্ভব। এনইআইআর পদ্ধতি এ নিরাপত্তা খুব সহজেই প্রতিষ্ঠা করতে পারে।

বিষয়টি দ্রুতই কার্যকর সমাধানের জন্য পথ খুঁজছে বিটিআরসি। দ্রুতই অংশীজনদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে এর একটি সুরাহা করতে চায় সংস্থাটি। দ্রুতই পদপক্ষেপের মাধ্যমে এর সমাধান হবে জানানো হয়েছে।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিষয়:

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত