আল-আমিন ও রাফিউজ্জামান লাবী
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন হওয়া শুরু হয়েছে। ওই হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভিন্ন দিকে মোড় নেয়। যদিও এখন পর্যন্ত কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেনি। ঘটনার সময় তৃতীয়পক্ষ জড়িত কি না, তা তদন্ত করছে পুলিশ। থানা-পুলিশ বাদেও ডিবি, র্যাব ও পিবিআই আলাদাভাবে তদন্ত শুরু করেছে। পুলিশ বলছে, সাম্যের খুনের পেছনে বিশ্ববিদ্যালয় তথা রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করার চক্রান্ত থাকতে পারে।
এ ঘটনার সঙ্গে আর কারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। ঘটনায় সেদিন কী ঘটেছিল সেটি আমার দেশকে জানিয়েছেন ঘটনাস্থলে থাকা সাম্যের দুই বন্ধু আশরাফুল আলম রাফি ও মো. আব্দুল্লাহ আল বায়েজিদ। আশরাফুল আলম রাফি অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের এবং মো. আব্দুল্লাহ আল বায়েজিদ শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী। গত মঙ্গলবার শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে নবীনবরণের অনুষ্ঠান হয়। সেটি শেষ হতে রাত ১১টা বেজে যায়। পরে সাম্য বন্ধু রাফি ও বায়েজিদকে নিয়ে রাতের খাবার খেতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের টিএসসি-সংলগ্ন গেটের ভেতরের দোকানগুলোতে যায়।
বেশি রাত হয়ে যাওয়ায় টিএসসি-সংলগ্ন গেটটি বন্ধ ছিল। এ কারণে কালিমন্দিরের গেট দিয়ে তাদের যেতে হয়েছিল। রাতের হালকা খাবার খেয়ে ফেরার পথে আগে থেকে বাইকে দাঁড়িয়ে থাকা একটি গ্রুপের বাইকে ধাক্কা লাগলে অতর্কিত হামলা, কিল-ঘুসি ও অস্ত্র দিয়ে মারার ঘটনা ঘটে। সাম্যকে ছুরি বা অস্ত্র দিয়ে হঠাৎ করে পায়ে কোপ দেওয়া হয়। এতে প্রচুর রক্তপাত ঘটে। ঘটনাটি মুহূর্তের মধ্যে ঘটে যাওয়ায় নিজেরা হতবিহ্বল হয়ে পড়েন বলে জানান রাফি ও বায়েজিদ।
উদ্যানে রাতের খাবার খেতে যাওয়ার বিষয়ে রাফি বলেন, ‘আমরা দুপুর থেকে খাবার খাইনি। শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের নবীনবরণ অনুষ্ঠান শেষ হতে অনেক রাত হয়ে যায়। ক্যাম্পাসে তেমন খাবারের দোকান না থাকায় আমরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভেতরে কাবাব বা হালকা কিছু খেতে গিয়েছিলাম। আমরা তিনজন ছিলাম। সাম্য বাইক চালাচ্ছিল, ওটা তারই বাইক ছিল।’ তিনি বলেন, ‘ফেরার পথে সাম্যই বাইক চালাচ্ছিল। মুক্তমঞ্চ এলাকা পার হলে একটি ছেলে ইলেকট্রিক শক দেওয়া এবং একই সঙ্গে উচ্চ সাউন্ডের এমন একটি যন্ত্র দিয়ে আমাদের দিকে নিশানা করে। পরে সাম্যই তাকে বাধা দেয় এবং ধমক দেয়। পরে ছেলেটি দৌড়ে উদ্যানের মাঝামাঝিতে গেলে তাকে ধরতেই বাইক নিয়ে পিছু করি। এ সময় মাঠের মাঝে একটি গ্রুপ বাইকে বসে আড্ডা দিচ্ছিল। ভুল করে তাদের একটি বাইকে আমাদের বাইকের ধাক্কা লাগলে একটি বাইক মাটিতে পড়ে যায়। এরপর আচমকা কিল-ঘুসি, ইট দিয়ে আঘাত করা শুরু করে গ্রুপটির সদস্যরা। তাদের সঙ্গে সে সময় সাত থেকে আটজন থাকলেও মুহূর্তেই ১০ থেকে ১২ জন হয়ে যায়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমাদের মেরে আহত করে।’
রাফি আরো বলেন, ‘আমি বাইকে সবার পেছনে থাকায় বাকি দুজন বা সাম্যকে কীভাবে মেরেছে সেটা খেয়াল করতে পারিনি। সে জায়গায় কোনো আলো ছিল না। হঠাৎ দেখি সাম্যের পায়ে রক্ত। এটা দেখে আমরা চিৎকার শুরু করলে উদ্যানে থাকা আশপাশ থেকে ১০ থেকে ১৫ জন মানুষ সেখানে জড়ো হয়। পরে তাদের একজনকে ধরে উপস্থিত লোকদের কাছে দিয়ে আমরা সাম্যকে নিয়ে বাংলা একাডেমির গেট পর্যন্ত এসে রিকশায় হাসপাতালে যাই। এর মধ্যেই সে মারা যায়। আমরা এটা মেনে নিতে পারছি না।’
উদ্যানে যে গ্রুপটির কাছে মারধরের শিকার হন সাম্যরা সেই গ্রুপটি নেশা করতে সেখানে উপস্থিত ছিলেন বলে জানান বায়োজিদ। তিনি বলেন, ‘আমি বাইকের মাঝে বসা ছিলাম। আমরা নিজেরা প্রতিরোধের চেষ্টা করেছি। আমার মাথায় ঘুসি দেয় একজন। খুবই উগ্র মেজাজে ছিল তারা। হঠাৎ করে সাম্যের পায়ের দিকে তাকিয়ে দেখি ব্যাপক রক্তপাত হচ্ছে। ঘটনাটা দুই মিনিটের কম সময়ে ঘটে গেছে। খুব সাধারণ ঘটনা থেকে সাম্যকে তারা ছুরি দিয়ে কোপাবে এটা কল্পনাও করতে পারিনি। পরে আমি রাফি আর উদ্যানে বিড়ি-সিগারেট বিক্রি করে এমন একটি ছেলেসহ মোট তিনজন মিলে সাম্যকে কোলে নিয়ে কালিমন্দিরের গেটে এসে রিকশা নিই। কিন্তু হাসপাতালে নিলে ডাক্তার সাম্যকে মৃত ঘোষণা করেন।’
পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার রাতে ট্রিপল নাইনে পুলিশ খবর পেয়ে শাহবাগ থানা-পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে যায়। পরে পুলিশ জানতে পারে সাম্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছে। এরপরই পুলিশ আসামিদের ধরতে অভিযানে নামে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে জানতে পারে যারা খুনের সঙ্গে জড়িত তারা ফার্মগেটের রাজাবাজারে থাকে। ধস্তাধস্তির সময় পলাশ সরদার নামেও এক আসামি আহত হয়। তাকে ধরতে পুলিশ ঢামেক হাসপাতালে যায়। কিন্তু, আসামিরা চালাকি করে ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসা নেননি। পলাশকে তার সহকর্মীরা নিয়ে যায় রাজধানীর শমরিতা হাসপাতালে। পুলিশ প্রথাগত সোর্স কাজে লাগিয়ে জানতে পারে, শমরিতা হাসপাতালে একজন পায়ের ড্রেসিং করাচ্ছেন। এ সময় সেখানে গিয়ে পুলিশ পলাশ ও তার বন্ধু সম্রাটকে হাতেনাতে ধরে ফেলে। পরে তার অপর বন্ধু তামিমকে ফার্মগেটের একটি মেস থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সূত্র জানায়, তিনজন পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, তাদের গ্রামের বাড়ি মাদারীপুরের কালকিনি এলাকায়। গত দুই আগে তারা তিনজন ঢাকায় এসেছেন। তারা তেজগাঁওয়ের সেজান পয়েন্টে ভ্রাম্যমাণ হকার। রাতের বেলায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঘুরতে ও নেশা করতে যেতেন।
শাহবাগ থানা সূত্রে জানা গেছে, ওই ঘটনার সঙ্গে তৃতীয়পক্ষ জড়িত কি না, তা তারা তদন্ত করে দেখছেন। আসামিদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। খুনের বিষয়টি ঠুনকো ঘটনাকে কেন্দ্র করে, না পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে তা তদন্ত করা হবে।
সূত্র জানায়, ঘটনার পর থেকে রমনা কালিমন্দিরের আশপাশের ও মূল গেটের পাশ থেকে ৯টি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার (সিসি ক্যামেরা) ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। সেগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। সাম্যের একাধিক বন্ধুকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে তদন্ত চালানো হচ্ছে।
এদিকে, গতকাল সকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সরজমিনে দেখা গেছে, উদ্যানকে কেন্দ্র করে ১২টি লালনের আখড়া রয়েছে। সন্ধ্যা হলে সেখানে মাদকের জমজমাট আড্ডা বসে। পুলিশের নাকের ডগায় এসব চললেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এ ছাড়া উদ্যানে দেদার মাদক বিক্রি হয় বলেও জানা গেছে। উদ্যানে আড্ডা দেওয়া সোহেল নামে এক যুবক জানান, সময় পেলে আমরা ঘুরতে আসি। এই উদ্যানের পরিবেশ আগের মতো নেই। সন্ধ্যা হলেই মাদকের আড্ডা বসে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী আসাদ জানান, উদ্যানে নিরাপত্তার সংকট রয়েছে। আগে সন্ধ্যার পর থেকে পুলিশি টহল ছিল। আনসার সদস্যরাও সক্রিয় ছিল। কিন্তু, ৫ আগস্টের পর থেকে ঢিলেঢালা ভাব দেখা গেছে।
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় সব অবৈধ স্থাপনা। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় এ অভিযান চালায় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। রাজউকের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) শাহবাগ থানার সহযোগিতায় উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আলম সাম্য হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন হওয়া শুরু হয়েছে। ওই হত্যাকাণ্ডের মধ্য দিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভিন্ন দিকে মোড় নেয়। যদিও এখন পর্যন্ত কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটেনি। ঘটনার সময় তৃতীয়পক্ষ জড়িত কি না, তা তদন্ত করছে পুলিশ। থানা-পুলিশ বাদেও ডিবি, র্যাব ও পিবিআই আলাদাভাবে তদন্ত শুরু করেছে। পুলিশ বলছে, সাম্যের খুনের পেছনে বিশ্ববিদ্যালয় তথা রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করার চক্রান্ত থাকতে পারে।
এ ঘটনার সঙ্গে আর কারা জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চালাচ্ছে পুলিশ। ঘটনায় সেদিন কী ঘটেছিল সেটি আমার দেশকে জানিয়েছেন ঘটনাস্থলে থাকা সাম্যের দুই বন্ধু আশরাফুল আলম রাফি ও মো. আব্দুল্লাহ আল বায়েজিদ। আশরাফুল আলম রাফি অণুজীববিজ্ঞান বিভাগের এবং মো. আব্দুল্লাহ আল বায়েজিদ শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের স্নাতকোত্তরের শিক্ষার্থী। গত মঙ্গলবার শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটে নবীনবরণের অনুষ্ঠান হয়। সেটি শেষ হতে রাত ১১টা বেজে যায়। পরে সাম্য বন্ধু রাফি ও বায়েজিদকে নিয়ে রাতের খাবার খেতে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের টিএসসি-সংলগ্ন গেটের ভেতরের দোকানগুলোতে যায়।
বেশি রাত হয়ে যাওয়ায় টিএসসি-সংলগ্ন গেটটি বন্ধ ছিল। এ কারণে কালিমন্দিরের গেট দিয়ে তাদের যেতে হয়েছিল। রাতের হালকা খাবার খেয়ে ফেরার পথে আগে থেকে বাইকে দাঁড়িয়ে থাকা একটি গ্রুপের বাইকে ধাক্কা লাগলে অতর্কিত হামলা, কিল-ঘুসি ও অস্ত্র দিয়ে মারার ঘটনা ঘটে। সাম্যকে ছুরি বা অস্ত্র দিয়ে হঠাৎ করে পায়ে কোপ দেওয়া হয়। এতে প্রচুর রক্তপাত ঘটে। ঘটনাটি মুহূর্তের মধ্যে ঘটে যাওয়ায় নিজেরা হতবিহ্বল হয়ে পড়েন বলে জানান রাফি ও বায়েজিদ।
উদ্যানে রাতের খাবার খেতে যাওয়ার বিষয়ে রাফি বলেন, ‘আমরা দুপুর থেকে খাবার খাইনি। শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের নবীনবরণ অনুষ্ঠান শেষ হতে অনেক রাত হয়ে যায়। ক্যাম্পাসে তেমন খাবারের দোকান না থাকায় আমরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ভেতরে কাবাব বা হালকা কিছু খেতে গিয়েছিলাম। আমরা তিনজন ছিলাম। সাম্য বাইক চালাচ্ছিল, ওটা তারই বাইক ছিল।’ তিনি বলেন, ‘ফেরার পথে সাম্যই বাইক চালাচ্ছিল। মুক্তমঞ্চ এলাকা পার হলে একটি ছেলে ইলেকট্রিক শক দেওয়া এবং একই সঙ্গে উচ্চ সাউন্ডের এমন একটি যন্ত্র দিয়ে আমাদের দিকে নিশানা করে। পরে সাম্যই তাকে বাধা দেয় এবং ধমক দেয়। পরে ছেলেটি দৌড়ে উদ্যানের মাঝামাঝিতে গেলে তাকে ধরতেই বাইক নিয়ে পিছু করি। এ সময় মাঠের মাঝে একটি গ্রুপ বাইকে বসে আড্ডা দিচ্ছিল। ভুল করে তাদের একটি বাইকে আমাদের বাইকের ধাক্কা লাগলে একটি বাইক মাটিতে পড়ে যায়। এরপর আচমকা কিল-ঘুসি, ইট দিয়ে আঘাত করা শুরু করে গ্রুপটির সদস্যরা। তাদের সঙ্গে সে সময় সাত থেকে আটজন থাকলেও মুহূর্তেই ১০ থেকে ১২ জন হয়ে যায়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই আমাদের মেরে আহত করে।’
রাফি আরো বলেন, ‘আমি বাইকে সবার পেছনে থাকায় বাকি দুজন বা সাম্যকে কীভাবে মেরেছে সেটা খেয়াল করতে পারিনি। সে জায়গায় কোনো আলো ছিল না। হঠাৎ দেখি সাম্যের পায়ে রক্ত। এটা দেখে আমরা চিৎকার শুরু করলে উদ্যানে থাকা আশপাশ থেকে ১০ থেকে ১৫ জন মানুষ সেখানে জড়ো হয়। পরে তাদের একজনকে ধরে উপস্থিত লোকদের কাছে দিয়ে আমরা সাম্যকে নিয়ে বাংলা একাডেমির গেট পর্যন্ত এসে রিকশায় হাসপাতালে যাই। এর মধ্যেই সে মারা যায়। আমরা এটা মেনে নিতে পারছি না।’
উদ্যানে যে গ্রুপটির কাছে মারধরের শিকার হন সাম্যরা সেই গ্রুপটি নেশা করতে সেখানে উপস্থিত ছিলেন বলে জানান বায়োজিদ। তিনি বলেন, ‘আমি বাইকের মাঝে বসা ছিলাম। আমরা নিজেরা প্রতিরোধের চেষ্টা করেছি। আমার মাথায় ঘুসি দেয় একজন। খুবই উগ্র মেজাজে ছিল তারা। হঠাৎ করে সাম্যের পায়ের দিকে তাকিয়ে দেখি ব্যাপক রক্তপাত হচ্ছে। ঘটনাটা দুই মিনিটের কম সময়ে ঘটে গেছে। খুব সাধারণ ঘটনা থেকে সাম্যকে তারা ছুরি দিয়ে কোপাবে এটা কল্পনাও করতে পারিনি। পরে আমি রাফি আর উদ্যানে বিড়ি-সিগারেট বিক্রি করে এমন একটি ছেলেসহ মোট তিনজন মিলে সাম্যকে কোলে নিয়ে কালিমন্দিরের গেটে এসে রিকশা নিই। কিন্তু হাসপাতালে নিলে ডাক্তার সাম্যকে মৃত ঘোষণা করেন।’
পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার রাতে ট্রিপল নাইনে পুলিশ খবর পেয়ে শাহবাগ থানা-পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে যায়। পরে পুলিশ জানতে পারে সাম্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা গেছে। এরপরই পুলিশ আসামিদের ধরতে অভিযানে নামে। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে জানতে পারে যারা খুনের সঙ্গে জড়িত তারা ফার্মগেটের রাজাবাজারে থাকে। ধস্তাধস্তির সময় পলাশ সরদার নামেও এক আসামি আহত হয়। তাকে ধরতে পুলিশ ঢামেক হাসপাতালে যায়। কিন্তু, আসামিরা চালাকি করে ঢামেক হাসপাতালে চিকিৎসা নেননি। পলাশকে তার সহকর্মীরা নিয়ে যায় রাজধানীর শমরিতা হাসপাতালে। পুলিশ প্রথাগত সোর্স কাজে লাগিয়ে জানতে পারে, শমরিতা হাসপাতালে একজন পায়ের ড্রেসিং করাচ্ছেন। এ সময় সেখানে গিয়ে পুলিশ পলাশ ও তার বন্ধু সম্রাটকে হাতেনাতে ধরে ফেলে। পরে তার অপর বন্ধু তামিমকে ফার্মগেটের একটি মেস থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
সূত্র জানায়, তিনজন পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, তাদের গ্রামের বাড়ি মাদারীপুরের কালকিনি এলাকায়। গত দুই আগে তারা তিনজন ঢাকায় এসেছেন। তারা তেজগাঁওয়ের সেজান পয়েন্টে ভ্রাম্যমাণ হকার। রাতের বেলায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঘুরতে ও নেশা করতে যেতেন।
শাহবাগ থানা সূত্রে জানা গেছে, ওই ঘটনার সঙ্গে তৃতীয়পক্ষ জড়িত কি না, তা তারা তদন্ত করে দেখছেন। আসামিদের রিমান্ডে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। খুনের বিষয়টি ঠুনকো ঘটনাকে কেন্দ্র করে, না পরিকল্পিতভাবে করা হয়েছে তা তদন্ত করা হবে।
সূত্র জানায়, ঘটনার পর থেকে রমনা কালিমন্দিরের আশপাশের ও মূল গেটের পাশ থেকে ৯টি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার (সিসি ক্যামেরা) ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে। সেগুলো পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে। সাম্যের একাধিক বন্ধুকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। তাদের তথ্যের ভিত্তিতে তদন্ত চালানো হচ্ছে।
এদিকে, গতকাল সকালে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সরজমিনে দেখা গেছে, উদ্যানকে কেন্দ্র করে ১২টি লালনের আখড়া রয়েছে। সন্ধ্যা হলে সেখানে মাদকের জমজমাট আড্ডা বসে। পুলিশের নাকের ডগায় এসব চললেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। এ ছাড়া উদ্যানে দেদার মাদক বিক্রি হয় বলেও জানা গেছে। উদ্যানে আড্ডা দেওয়া সোহেল নামে এক যুবক জানান, সময় পেলে আমরা ঘুরতে আসি। এই উদ্যানের পরিবেশ আগের মতো নেই। সন্ধ্যা হলেই মাদকের আড্ডা বসে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকল্যাণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী আসাদ জানান, উদ্যানে নিরাপত্তার সংকট রয়েছে। আগে সন্ধ্যার পর থেকে পুলিশি টহল ছিল। আনসার সদস্যরাও সক্রিয় ছিল। কিন্তু, ৫ আগস্টের পর থেকে ঢিলেঢালা ভাব দেখা গেছে।
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হয়। এ সময় বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় সব অবৈধ স্থাপনা। গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় এ অভিযান চালায় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। রাজউকের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে এবং ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) শাহবাগ থানার সহযোগিতায় উচ্ছেদ অভিযান চালানো হয়।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে বিভিন্ন মেরূকরণ। এ নির্বাচনে কোন দল ক্ষমতায় আসবে, কোন দল কার সঙ্গে সমঝোতা বা জোট করে ভোট করবেÑএসব বিষয় নিয়ে আলোচনা ও তৎপরতাও জোরদার হচ্ছে। বিশেষ করে ইসলামি দলগুলোকে নিয়ে সাধারণ ভোটারদের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট মহলে বিশেষ আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
১৫ ঘণ্টা আগেনীলের দেশখ্যাত নীলফামারী দীর্ঘদিন শোষণ করেছিল ইংরেজরা। তাদের স্থানীয় নিপীড়ক নীলকরদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ ছিলেন উত্তরের এই জেলার চাষিরা। ২০০ বছর পর সেই নিষ্ঠুর ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি করেন আওয়ামী ‘কসাই’খ্যাত আসাদুজ্জামান নূর।
১৯ ঘণ্টা আগেআগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনায় জেলা প্রশাসকদেরই (ডিসি) রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ হিসেবে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকার দুজন বিভাগীয় কমিশনার এবং ৬৪ জন ডিসিসহ ৬৬ জন রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে।
২ দিন আগেবছরের প্রায় ১০ মাস পার হলেও মাধ্যমিক স্তরের বিনামূল্যের পাঠ্যবই ছাপানোর কাজ শুরু হয়নি। এমনকি পাঠ্যবইয়ের কনটেন্টও পুরোপুরি প্রস্তুত হয়নি; এখনো চলছে পরিবর্তন-পরিমার্জনের কাজ। এছাড়া ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদনও মেলেনি এখনো।
২ দিন আগে