আজাদুল আদনান
শুরুতে প্রতিমন্ত্রী পরে পূর্ণ মন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পরই পুরো স্বাস্থ্য খাতের প্রকল্প ও কেনাকাটায় একক আধিপত্য গড়ে তোলেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। মন্ত্রী থাকাকালে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন হাসপাতালের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ইকুইপমেন্ট, ওষুধ সরবরাহ, যন্ত্রপাতি কেনাকাটা এবং বিভিন্ন প্রকল্পের উন্নয়নমূলক কাজে ভাগ বসিয়ে হাতিয়েছেন কোটি কোটি টাকা।
আর বাবার মন্ত্রিত্বে ভর করে দাদাগিরি করেন ছেলে রাহাত মালেক। এক্ষেত্রে ব্যবহার করেন আওয়ামীপন্থি চিকিৎসক ও কর্মকর্তাদের। শুধু স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে তিন বছরের কেনাকাটাতেই প্রায় ৭০ কোটি টাকা হাতিয়েছেন এই মন্ত্রীপুত্র।
বাবা-ছেলের বিরুদ্ধে প্রায় শতকোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদক সূত্রে জানা গেছে, জাহিদ মালেক হাজার কোটি টাকার সম্পদের মালিক। এর মধ্যে ঢাকার গুলশানে আলিশান বাড়ি, বনানীতে ১৪ তলা বিটিএ টাওয়ার, মানিকগঞ্জ শহরে ১০ তলা বাণিজ্যিক ভবন, সভা-সমাবেশ করার জন্য গড়েছেন শুভ্র সেন্টার।
গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর জাহিদ মালেকের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করে আদালত। তবে তার আগেই সপরিবারে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায় মালেক পরিবার।
ইডিসিএল কারখানার জমিকাণ্ড
সরকারি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের (ইডিসিএল) কারখানা স্থাপনের জন্য মানিকগঞ্জে জায়গা নির্ধারণ করা হয়। যার অনেকটা একক সিদ্ধান্ত ছিল সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২২ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) প্রকল্পটি পাস হয়। এতে মোট ব্যয় ধরা হয় ১ হাজার ৯০৫ কোটি টাকা। প্রকল্পের জন্য মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার জাগীর ইউনিয়নের মেঘশিমুল এলাকায় সাড়ে ৩১ একর জমি প্রস্তাব করা হয়। যেসব মৌজায় এসব জমি পড়েছে তার অধিকাংশই পরিবারের সদস্যদের নামে আগেই কিনে রাখেন জাহিদ মালেক।
বিষয়টি ধরতে পেরে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেন তৎকালীন জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আবদুল লতিফ। পরে প্রকল্পটি স্থগিত করা হয়।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান আমার দেশকে বলেন, ‘তার দুর্নীতির বিষয়ে কিছু বলতে চাই না। তবে এই প্রকল্পসহ অন্যান্য প্রকল্পও নতুন করে পর্যালোচনা করা হচ্ছে।’
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুধু মানিকগঞ্জেই মালেক পরিবারের নামে ছয় হাজার ৫৩ শতাংশ জমির তথ্য পেয়েছে দুদক। জেলার বিভিন্ন মৌজায় কেনা এসব জমির মধ্যে ৪৬টি দলিলে জাহিদ মালেকের নামেই রয়েছে দুই হাজার ১৯৩ দশমিক ০৫৩ শতাংশ।
৯১টি দলিলে ছেলে রাহাত মালেকের নামে ১ হাজার ৭৪২ দশমিক ০১৬ শতাংশ এবং ২২টি দলিলে মেয়ে সিনথিয়া মালেকের নামে রয়েছে ১ হাজার ১১৮ দশমিক ৭৮ শতাংশ জমি। বিপুল পরিমাণ এই জমির বাজারমূল্য হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা দুদক কর্মকর্তাদের।
এসব বিষয় নিয়ে গত এক সপ্তাহে দুদকের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। আমার দেশকে কর্মকর্তারা জানান, ‘রেকর্ডপত্র সংগ্রহে জেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে চিঠি দেওয়া হচ্ছে। যেহেতু অনেক বড় অনিয়ম, ফলে এগুলোর তথ্য পেতে সময় লাগবে। অনেক জমিজমা, আর্থিক লেনদেনের তথ্য রয়েছে।’
করোনায় ৩৫০ কোটি টাকার অনিয়ম
সরকারি আইন ও বিধি না মেনে ২০২০ সালে ৩৫০ কোটি টাকার জরুরি চিকিৎসা সরঞ্জাম ও সুরক্ষা সামগ্রী কেনা হয়। পিপিআর (পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা) না মেনেই এসব কেনাকাটা করা হয়। পুরো প্রক্রিয়ায় পণ্যের মান নিশ্চিত করার বিষয়টি দেখেননি সংশ্লিষ্টরা। প্রায় প্রতিটি পণ্য ও যন্ত্র বাজারদরের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি দামে কেনা হয়। তদন্ত ও অডিটে বিষয়টি ধরা পড়ে।
কেন্দ্রীয় ঔষধাগার (সিএমএসডি) সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনার প্রকোপ শুরু হলে ওই বছরের জুনে ১ হাজার ২৮৫ কোটি টাকার কোভিড-১৯ সামগ্রী কেনার পরিকল্পনা করা হয়। এর মধ্যে ৩৪৪ কোটি টাকা চুক্তিমূল্যে আরটি-পিসিআর, মাস্কসহ অন্যান্য সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি কেনা হয়।
সে সময় সিএমএসডির পরিচালক ছিলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শহীদুল্লাহ। অভিযোগ রয়েছে, এসব কেনাকাটায় রফাদফা হতো সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের ফোনে। আর মূলে ছিলেন স্বাস্থ্যের আলোচিত ঠিকাদার মোতাজজেরুল ওরফে মিঠু।
গত রোববার একাধিক ঠিকাদার আমার দেশকে জানান, কেনাকাটায় চুক্তি বলতে তখন কিছুই ছিল না। সিএমএসডির তৎকালীন পরিচালক মুঠোফোনে বলে দিতেন কাজ হয়ে যেত।
কেনাকাটায় এসব অনিয়ম উদ্ঘাটনে দুই দফা তদন্ত কমিটি গঠন করে সরকার। প্রথম কমিটির প্রধান তৎকালীন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (আর্থিক ব্যবস্থাপনা ও অডিট অনুবিভাগ) শাহাদাত হোসেন আমার দেশকে বলেন, ‘এসব কেনাকাটায় আমরা বেশকিছু অনিয়ম পেয়েছিলাম। যেসব সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি কেনা হয়েছে তাতে কোনো নিয়মই মানা হয়নি। এতে জাহিদ মালেকের সম্পৃক্ততা ছিল কি না সঙ্গত কারণে সেটি জানা যায়নি। তখনকার সিএমএসডির পরিচালক জীবিত থাকলে হয়তো কিছু জানা যেত।’
দ্বিতীয় কমিটির প্রধান স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (হাসপাতাল অনুবিভাগ) নাজমুল হক খান বলেন, ‘নিয়মনীতি ছাড়াই কেনাকাটার প্রমাণ পেয়েছি। যে অনিয়ম হয়েছে, তাতে কোম্পানিগুলো বিল পাওয়ার কথা নয়।’
বাবা-ছেলের শতাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট
গত ১২ ডিসেম্বর জাহিদ মালেকের বিরুদ্ধে ৬১ কোটি ও ছেলে রাহাতের বিরুদ্ধে ১২ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেছে দুদক।
গত শনিবার দুদকের একজন কর্মকর্তা আমার দেশকে বলেন, ‘মামলা হওয়ার পরপরই জাহিদ মালেক, তার ছেলে রাহাত ও মেয়ে সিনথিয়াসহ তাদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের লেনদেন স্থগিত করা হয়েছে। তাদের সম্পদের অনুসন্ধান চলছে। এখন পর্যন্ত বাবা-ছেলের ১২৫টির মতো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট পাওয়া গেছে। আরো থাকতে পারে।’
রাহাতের পকেটে ৭০ কোটি
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কোনকাটায় রীতিমতো সাগরচুরির ঘটনা ঘটেছে। গত তিন অর্থবছরে ৩১৮ কোটি টাকার বেশি যন্ত্রপাতি ও সুরক্ষা সামগ্রী কেনাকাটায় বরাদ্দ বাণিজ্যের মাধ্যমে হাতানো হয়েছে ৮০ কোটি টাকার বেশি। যে অপকর্মের মূলে জাহিদ মালেকের ছেলে রাহাত মালেক (শুভ্র)।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, করোনা মহামারিতে ২০২০ সালে হাজার কোটি টাকার যন্ত্রপাতি কেনা হয় সিএমএসডির মাধ্যমে। তৎকালীন সিএমএসডির পরিচালক মোর্শেদ জামান দুর্নীতিকে প্রশ্রয় না দেওয়ায় তাকে সরিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন সে সময়ের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তাতেও কাজ না হওয়ায় কেনাকাটার সব দায়িত্ব অধিদপ্তরের অধীনে করার নির্দেশ দেন তিনি। এরপর থেকেই নিজের নামে কোনো কোম্পানি না থাকলেও কেনাকাটার সবটাই নিয়ন্ত্রিত হতো রাহাতের হাত ধরে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২১-২২ থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছর পর্যন্ত তিন বছরে ৩১৮ কোটি ৮৭ লাখ ৫৮ হাজার ৬৮৮ টাকার যন্ত্রপাতি কেনাকাটা হয়েছে। এসব কেনাকাটার ৯০ ভাগ হয়েছে সাবেক লাইন ডিরেক্টর মাজহারুল হক তপনের নেতৃত্বে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দুজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আমার দেশকে জানান, কারা কাজ পাবেন সেটি নির্ধারণ করে দিতেন রাহাত। নির্দিষ্ট কোম্পানি ছাড়া দরপত্রে কেউ যাতে অংশ নিতে না পারে, সে অনুযায়ী স্পেসিফিকেশন তৈরি করতেন লাইন ডিরেক্টর তপন।
ফলে ঘুরেফিরে ২৮ ঠিকাদার কোম্পানি বারবার কাজ পেয়েছে। কাজ পাওয়া প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার নিশ্চয়তা দিয়ে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ কমিশন নেওয়া হতো। এভাবে প্রায় ৮০ কোটি টাকা হাতানো হয়েছে। যার ৭০ কোটি গেছে রাহাতের পকেটে। আর অন্তত ১০ কোটি পান তপন। লেনদেনের এসব টাকা রাহাতের বারিধারার বাসা, বনানীর অফিস এবং গুলশানের একটি পার্কে তৃতীয় পক্ষের একজন বস্তা ভরে গাড়িতে রেখে আসত।
এসব অনিয়মের বিষয়ে বক্তব্য জানতে সম্প্রতি রাহাতের মালিকাধীন বনানীর বিটিএ টাওয়ারে গেলে সেখানকার কর্মকর্তারা জানান, গত বছরের ২৫ জুলাই এক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাহাত। এরপর থেকেই তিনি দেশের বাইরে। বর্তমানে জাহিদ মালেক সপরিবারে থাইল্যান্ডে আছেন বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।
সহযোগিতায় অধিদপ্তরের চার কর্মকর্তা
অনুসন্ধানে জানা গেছে, মালেকপুত্রের এমন ভয়াবহ দুর্নীতির প্রধান সঙ্গী ছিলেন লাইন ডিরেক্টর তপন। গত বছরের শুরুতে দুর্নীতির অভিযোগে তাকে সরানো হয়। একই পদে বসেন অধিদপ্তরের সাবেক সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার লাইন ডিরেক্টর (সিডিসি) অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম। তিনিও জড়িয়ে পড়েন বরাদ্দ বাণিজ্যে। এ দুই কর্মকর্তাই আওয়ামীপন্থি চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) শীর্ষ নেতা।
আরো বড় অভিযোগ, এসব অনিয়ম জেনেও পদ বাঁচাতে চুপ ছিলেন তৎকালীন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মুহাম্মদ খুরশীদ আলম। এতে সহায়তা করেছেন সাবেক পরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. শামিউল ইসলাম সাদী। এর মধ্যে সাদীর বিরুদ্ধেও অধিদপ্তরে টেকনোলজিস্ট নিয়োগ ও কেনাকাটায় অনিয়মে দুদকে অভিযোগ জমা পড়ে। কিন্তু রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোয় তা কখনোই তদন্ত হয়নি।
বর্তমানে তপন রাজধানীর জাতীয় অর্থপেডিকস হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (নিটোর) ব্লাড ট্রান্সমিশন বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন। সম্প্রতি ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কমকর্তা) করা হয়েছে নাজমুল ইসলামকে।
অভিযুক্ত সাবেক লাইন ডিরেক্টর তপনের দাবি কেনাকাটায় কোনো অনিয়ম হয়নি। তিনি বলেন, ‘সব কেনাকাটা ইজিপিতে স্বচ্ছতার সঙ্গে হয়েছে। কোনো জাল-জালিয়াতি কিংবা প্রভাব বিস্তারের সুযোগ ছিল না।’
আরেক অভিযুক্ত বর্তমান লাইন ডিরেক্টর নাজমুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলতে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টার পরও পাওয়া যায়নি। ফোন কেটে দেন আরেক অভিযুক্ত সামিউল ইসলামও। হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠালেও দেখেও সাড়া দেননি তিনি।
শপথ ভঙ্গ করেছেন জাহিদ মালেক
এ বিষয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-র নির্বাহী পরিচালক ও দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান আমার দেশকে বলেন, ‘কর্তৃত্ববাদী শাসনে যে কটি খাত সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত ছিল, স্বাস্থ্য তার একটি। বিশেষ করে কোভিডের সময় সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয়েছে। হাজার কোটি টাকা, বিপুল পরিমাণ জমি এগুলো তো অবশ্যই প্রশ্ন তোলে। এর মাধ্যমে তিনি শপথ ভঙ্গ করেছেন।’
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, কোম্পানি না থাকা সত্ত্বেও বাবার ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়েছেন মালেকপুত্র। দুদকের অনুসন্ধানে তাদের এসব অপকর্মের সঠিক তথ্য উঠে আসবে আশা করি। একই সঙ্গে তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা গেলে আগামীতে তা দুর্নীতিবাজদের জন্য সতর্কবার্তা হবে।
শুরুতে প্রতিমন্ত্রী পরে পূর্ণ মন্ত্রীর দায়িত্ব পাওয়ার পরই পুরো স্বাস্থ্য খাতের প্রকল্প ও কেনাকাটায় একক আধিপত্য গড়ে তোলেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। মন্ত্রী থাকাকালে ক্ষমতার অপব্যবহারের মাধ্যমে বিভিন্ন হাসপাতালের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ইকুইপমেন্ট, ওষুধ সরবরাহ, যন্ত্রপাতি কেনাকাটা এবং বিভিন্ন প্রকল্পের উন্নয়নমূলক কাজে ভাগ বসিয়ে হাতিয়েছেন কোটি কোটি টাকা।
আর বাবার মন্ত্রিত্বে ভর করে দাদাগিরি করেন ছেলে রাহাত মালেক। এক্ষেত্রে ব্যবহার করেন আওয়ামীপন্থি চিকিৎসক ও কর্মকর্তাদের। শুধু স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে তিন বছরের কেনাকাটাতেই প্রায় ৭০ কোটি টাকা হাতিয়েছেন এই মন্ত্রীপুত্র।
বাবা-ছেলের বিরুদ্ধে প্রায় শতকোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদক সূত্রে জানা গেছে, জাহিদ মালেক হাজার কোটি টাকার সম্পদের মালিক। এর মধ্যে ঢাকার গুলশানে আলিশান বাড়ি, বনানীতে ১৪ তলা বিটিএ টাওয়ার, মানিকগঞ্জ শহরে ১০ তলা বাণিজ্যিক ভবন, সভা-সমাবেশ করার জন্য গড়েছেন শুভ্র সেন্টার।
গত ৫ আগস্ট স্বৈরাচার শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর জাহিদ মালেকের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করে আদালত। তবে তার আগেই সপরিবারে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায় মালেক পরিবার।
ইডিসিএল কারখানার জমিকাণ্ড
সরকারি ওষুধ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের (ইডিসিএল) কারখানা স্থাপনের জন্য মানিকগঞ্জে জায়গা নির্ধারণ করা হয়। যার অনেকটা একক সিদ্ধান্ত ছিল সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০২২ সালে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) প্রকল্পটি পাস হয়। এতে মোট ব্যয় ধরা হয় ১ হাজার ৯০৫ কোটি টাকা। প্রকল্পের জন্য মানিকগঞ্জ সদর উপজেলার জাগীর ইউনিয়নের মেঘশিমুল এলাকায় সাড়ে ৩১ একর জমি প্রস্তাব করা হয়। যেসব মৌজায় এসব জমি পড়েছে তার অধিকাংশই পরিবারের সদস্যদের নামে আগেই কিনে রাখেন জাহিদ মালেক।
বিষয়টি ধরতে পেরে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেন তৎকালীন জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আবদুল লতিফ। পরে প্রকল্পটি স্থগিত করা হয়।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক ডা. সায়েদুর রহমান আমার দেশকে বলেন, ‘তার দুর্নীতির বিষয়ে কিছু বলতে চাই না। তবে এই প্রকল্পসহ অন্যান্য প্রকল্পও নতুন করে পর্যালোচনা করা হচ্ছে।’
সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শুধু মানিকগঞ্জেই মালেক পরিবারের নামে ছয় হাজার ৫৩ শতাংশ জমির তথ্য পেয়েছে দুদক। জেলার বিভিন্ন মৌজায় কেনা এসব জমির মধ্যে ৪৬টি দলিলে জাহিদ মালেকের নামেই রয়েছে দুই হাজার ১৯৩ দশমিক ০৫৩ শতাংশ।
৯১টি দলিলে ছেলে রাহাত মালেকের নামে ১ হাজার ৭৪২ দশমিক ০১৬ শতাংশ এবং ২২টি দলিলে মেয়ে সিনথিয়া মালেকের নামে রয়েছে ১ হাজার ১১৮ দশমিক ৭৮ শতাংশ জমি। বিপুল পরিমাণ এই জমির বাজারমূল্য হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে বলে ধারণা দুদক কর্মকর্তাদের।
এসব বিষয় নিয়ে গত এক সপ্তাহে দুদকের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা হয় এই প্রতিবেদকের। আমার দেশকে কর্মকর্তারা জানান, ‘রেকর্ডপত্র সংগ্রহে জেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে চিঠি দেওয়া হচ্ছে। যেহেতু অনেক বড় অনিয়ম, ফলে এগুলোর তথ্য পেতে সময় লাগবে। অনেক জমিজমা, আর্থিক লেনদেনের তথ্য রয়েছে।’
করোনায় ৩৫০ কোটি টাকার অনিয়ম
সরকারি আইন ও বিধি না মেনে ২০২০ সালে ৩৫০ কোটি টাকার জরুরি চিকিৎসা সরঞ্জাম ও সুরক্ষা সামগ্রী কেনা হয়। পিপিআর (পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা) না মেনেই এসব কেনাকাটা করা হয়। পুরো প্রক্রিয়ায় পণ্যের মান নিশ্চিত করার বিষয়টি দেখেননি সংশ্লিষ্টরা। প্রায় প্রতিটি পণ্য ও যন্ত্র বাজারদরের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি দামে কেনা হয়। তদন্ত ও অডিটে বিষয়টি ধরা পড়ে।
কেন্দ্রীয় ঔষধাগার (সিএমএসডি) সূত্রে জানা গেছে, ২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনার প্রকোপ শুরু হলে ওই বছরের জুনে ১ হাজার ২৮৫ কোটি টাকার কোভিড-১৯ সামগ্রী কেনার পরিকল্পনা করা হয়। এর মধ্যে ৩৪৪ কোটি টাকা চুক্তিমূল্যে আরটি-পিসিআর, মাস্কসহ অন্যান্য সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি কেনা হয়।
সে সময় সিএমএসডির পরিচালক ছিলেন ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. শহীদুল্লাহ। অভিযোগ রয়েছে, এসব কেনাকাটায় রফাদফা হতো সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেকের ফোনে। আর মূলে ছিলেন স্বাস্থ্যের আলোচিত ঠিকাদার মোতাজজেরুল ওরফে মিঠু।
গত রোববার একাধিক ঠিকাদার আমার দেশকে জানান, কেনাকাটায় চুক্তি বলতে তখন কিছুই ছিল না। সিএমএসডির তৎকালীন পরিচালক মুঠোফোনে বলে দিতেন কাজ হয়ে যেত।
কেনাকাটায় এসব অনিয়ম উদ্ঘাটনে দুই দফা তদন্ত কমিটি গঠন করে সরকার। প্রথম কমিটির প্রধান তৎকালীন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (আর্থিক ব্যবস্থাপনা ও অডিট অনুবিভাগ) শাহাদাত হোসেন আমার দেশকে বলেন, ‘এসব কেনাকাটায় আমরা বেশকিছু অনিয়ম পেয়েছিলাম। যেসব সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি কেনা হয়েছে তাতে কোনো নিয়মই মানা হয়নি। এতে জাহিদ মালেকের সম্পৃক্ততা ছিল কি না সঙ্গত কারণে সেটি জানা যায়নি। তখনকার সিএমএসডির পরিচালক জীবিত থাকলে হয়তো কিছু জানা যেত।’
দ্বিতীয় কমিটির প্রধান স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অতিরিক্ত সচিব (হাসপাতাল অনুবিভাগ) নাজমুল হক খান বলেন, ‘নিয়মনীতি ছাড়াই কেনাকাটার প্রমাণ পেয়েছি। যে অনিয়ম হয়েছে, তাতে কোম্পানিগুলো বিল পাওয়ার কথা নয়।’
বাবা-ছেলের শতাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্ট
গত ১২ ডিসেম্বর জাহিদ মালেকের বিরুদ্ধে ৬১ কোটি ও ছেলে রাহাতের বিরুদ্ধে ১২ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলা করেছে দুদক।
গত শনিবার দুদকের একজন কর্মকর্তা আমার দেশকে বলেন, ‘মামলা হওয়ার পরপরই জাহিদ মালেক, তার ছেলে রাহাত ও মেয়ে সিনথিয়াসহ তাদের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের লেনদেন স্থগিত করা হয়েছে। তাদের সম্পদের অনুসন্ধান চলছে। এখন পর্যন্ত বাবা-ছেলের ১২৫টির মতো ব্যাংক অ্যাকাউন্ট পাওয়া গেছে। আরো থাকতে পারে।’
রাহাতের পকেটে ৭০ কোটি
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কোনকাটায় রীতিমতো সাগরচুরির ঘটনা ঘটেছে। গত তিন অর্থবছরে ৩১৮ কোটি টাকার বেশি যন্ত্রপাতি ও সুরক্ষা সামগ্রী কেনাকাটায় বরাদ্দ বাণিজ্যের মাধ্যমে হাতানো হয়েছে ৮০ কোটি টাকার বেশি। যে অপকর্মের মূলে জাহিদ মালেকের ছেলে রাহাত মালেক (শুভ্র)।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান, করোনা মহামারিতে ২০২০ সালে হাজার কোটি টাকার যন্ত্রপাতি কেনা হয় সিএমএসডির মাধ্যমে। তৎকালীন সিএমএসডির পরিচালক মোর্শেদ জামান দুর্নীতিকে প্রশ্রয় না দেওয়ায় তাকে সরিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন সে সময়ের স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তাতেও কাজ না হওয়ায় কেনাকাটার সব দায়িত্ব অধিদপ্তরের অধীনে করার নির্দেশ দেন তিনি। এরপর থেকেই নিজের নামে কোনো কোম্পানি না থাকলেও কেনাকাটার সবটাই নিয়ন্ত্রিত হতো রাহাতের হাত ধরে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ২০২১-২২ থেকে ২০২৩-২৪ অর্থবছর পর্যন্ত তিন বছরে ৩১৮ কোটি ৮৭ লাখ ৫৮ হাজার ৬৮৮ টাকার যন্ত্রপাতি কেনাকাটা হয়েছে। এসব কেনাকাটার ৯০ ভাগ হয়েছে সাবেক লাইন ডিরেক্টর মাজহারুল হক তপনের নেতৃত্বে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দুজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আমার দেশকে জানান, কারা কাজ পাবেন সেটি নির্ধারণ করে দিতেন রাহাত। নির্দিষ্ট কোম্পানি ছাড়া দরপত্রে কেউ যাতে অংশ নিতে না পারে, সে অনুযায়ী স্পেসিফিকেশন তৈরি করতেন লাইন ডিরেক্টর তপন।
ফলে ঘুরেফিরে ২৮ ঠিকাদার কোম্পানি বারবার কাজ পেয়েছে। কাজ পাওয়া প্রতিটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কাজ পাইয়ে দেওয়ার নিশ্চয়তা দিয়ে ২০ থেকে ২৫ শতাংশ কমিশন নেওয়া হতো। এভাবে প্রায় ৮০ কোটি টাকা হাতানো হয়েছে। যার ৭০ কোটি গেছে রাহাতের পকেটে। আর অন্তত ১০ কোটি পান তপন। লেনদেনের এসব টাকা রাহাতের বারিধারার বাসা, বনানীর অফিস এবং গুলশানের একটি পার্কে তৃতীয় পক্ষের একজন বস্তা ভরে গাড়িতে রেখে আসত।
এসব অনিয়মের বিষয়ে বক্তব্য জানতে সম্প্রতি রাহাতের মালিকাধীন বনানীর বিটিএ টাওয়ারে গেলে সেখানকার কর্মকর্তারা জানান, গত বছরের ২৫ জুলাই এক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন রাহাত। এরপর থেকেই তিনি দেশের বাইরে। বর্তমানে জাহিদ মালেক সপরিবারে থাইল্যান্ডে আছেন বলে একটি সূত্র জানিয়েছে।
সহযোগিতায় অধিদপ্তরের চার কর্মকর্তা
অনুসন্ধানে জানা গেছে, মালেকপুত্রের এমন ভয়াবহ দুর্নীতির প্রধান সঙ্গী ছিলেন লাইন ডিরেক্টর তপন। গত বছরের শুরুতে দুর্নীতির অভিযোগে তাকে সরানো হয়। একই পদে বসেন অধিদপ্তরের সাবেক সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার লাইন ডিরেক্টর (সিডিসি) অধ্যাপক ডা. নাজমুল ইসলাম। তিনিও জড়িয়ে পড়েন বরাদ্দ বাণিজ্যে। এ দুই কর্মকর্তাই আওয়ামীপন্থি চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) শীর্ষ নেতা।
আরো বড় অভিযোগ, এসব অনিয়ম জেনেও পদ বাঁচাতে চুপ ছিলেন তৎকালীন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মুহাম্মদ খুরশীদ আলম। এতে সহায়তা করেছেন সাবেক পরিচালক (প্রশাসন) অধ্যাপক ডা. শামিউল ইসলাম সাদী। এর মধ্যে সাদীর বিরুদ্ধেও অধিদপ্তরে টেকনোলজিস্ট নিয়োগ ও কেনাকাটায় অনিয়মে দুদকে অভিযোগ জমা পড়ে। কিন্তু রাজনৈতিক প্রভাব খাটানোয় তা কখনোই তদন্ত হয়নি।
বর্তমানে তপন রাজধানীর জাতীয় অর্থপেডিকস হাসপাতাল ও পুনর্বাসন প্রতিষ্ঠানের (নিটোর) ব্লাড ট্রান্সমিশন বিভাগের প্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন। সম্প্রতি ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কমকর্তা) করা হয়েছে নাজমুল ইসলামকে।
অভিযুক্ত সাবেক লাইন ডিরেক্টর তপনের দাবি কেনাকাটায় কোনো অনিয়ম হয়নি। তিনি বলেন, ‘সব কেনাকাটা ইজিপিতে স্বচ্ছতার সঙ্গে হয়েছে। কোনো জাল-জালিয়াতি কিংবা প্রভাব বিস্তারের সুযোগ ছিল না।’
আরেক অভিযুক্ত বর্তমান লাইন ডিরেক্টর নাজমুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলতে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টার পরও পাওয়া যায়নি। ফোন কেটে দেন আরেক অভিযুক্ত সামিউল ইসলামও। হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা পাঠালেও দেখেও সাড়া দেননি তিনি।
শপথ ভঙ্গ করেছেন জাহিদ মালেক
এ বিষয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)-র নির্বাহী পরিচালক ও দুর্নীতি দমন সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. ইফতেখারুজ্জামান আমার দেশকে বলেন, ‘কর্তৃত্ববাদী শাসনে যে কটি খাত সবচেয়ে বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত ছিল, স্বাস্থ্য তার একটি। বিশেষ করে কোভিডের সময় সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি হয়েছে। হাজার কোটি টাকা, বিপুল পরিমাণ জমি এগুলো তো অবশ্যই প্রশ্ন তোলে। এর মাধ্যমে তিনি শপথ ভঙ্গ করেছেন।’
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক আরও বলেন, কোম্পানি না থাকা সত্ত্বেও বাবার ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে কোটি কোটি টাকা হাতিয়েছেন মালেকপুত্র। দুদকের অনুসন্ধানে তাদের এসব অপকর্মের সঠিক তথ্য উঠে আসবে আশা করি। একই সঙ্গে তাদের জবাবদিহির আওতায় আনা গেলে আগামীতে তা দুর্নীতিবাজদের জন্য সতর্কবার্তা হবে।
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে বিভিন্ন মেরূকরণ। এ নির্বাচনে কোন দল ক্ষমতায় আসবে, কোন দল কার সঙ্গে সমঝোতা বা জোট করে ভোট করবেÑএসব বিষয় নিয়ে আলোচনা ও তৎপরতাও জোরদার হচ্ছে। বিশেষ করে ইসলামি দলগুলোকে নিয়ে সাধারণ ভোটারদের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট মহলে বিশেষ আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
৬ ঘণ্টা আগেনীলের দেশখ্যাত নীলফামারী দীর্ঘদিন শোষণ করেছিল ইংরেজরা। তাদের স্থানীয় নিপীড়ক নীলকরদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ ছিলেন উত্তরের এই জেলার চাষিরা। ২০০ বছর পর সেই নিষ্ঠুর ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি করেন আওয়ামী ‘কসাই’খ্যাত আসাদুজ্জামান নূর।
১১ ঘণ্টা আগেআগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পরিচালনায় জেলা প্রশাসকদেরই (ডিসি) রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দেবে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এ হিসেবে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন এলাকার দুজন বিভাগীয় কমিশনার এবং ৬৪ জন ডিসিসহ ৬৬ জন রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগ করা হবে।
১ দিন আগেবছরের প্রায় ১০ মাস পার হলেও মাধ্যমিক স্তরের বিনামূল্যের পাঠ্যবই ছাপানোর কাজ শুরু হয়নি। এমনকি পাঠ্যবইয়ের কনটেন্টও পুরোপুরি প্রস্তুত হয়নি; এখনো চলছে পরিবর্তন-পরিমার্জনের কাজ। এছাড়া ক্রয়-সংক্রান্ত উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদনও মেলেনি এখনো।
১ দিন আগে