শেরপুরের নালিতাবাড়িতে পোলট্রি ও হ্যাচারির বর্জ্যে দূষিত হচ্ছে বুড়ি ভোগাই নদীর পানি । এতে করে হুমকির মুখে পড়েছে জীববৈচিত্র্য ।
জানা গেছে, প্রায় ১০ বছর ধরে কোনো ধরনের বর্জ্য ব্যবস্থাপনা ছাড়াই প্রায় আট লাখ লেয়ার মুরগি থেকে প্রতিদিন ডিম উৎপাদন করে পরিবেশ দূষিত করছে ‘রানা ফার্ম এন্ড হ্যাচারি’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান। ফার্মটির প্রতিদিনের বর্জ্যে দূষিত হচ্ছে ফার্মের পাশে থাকা বুড়ি ভোগাই নদী ও নদীর অন্যান্য জীববৈচিত্র্য। আশপাশের এলাকায় বাড়ছে পানিবাহিত রোগ, মরছে ফসল। দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে আশপাশের বাসিন্দারা। দ্রুত এ সমস্যার সমাধান চান দুই উপজেলার কয়েক গ্রামের মানুষ।
জানা গেছে, নালিতাবাড়ী উপজেলার সোহাগপুর গ্রাম ও নালিতাবাড়ীর ‘বুড়ি ভোগাই’ নদী সংলগ্ন হালুয়াঘাটের যুগলী গ্রামে গড়ে ওঠেছে লেয়ার মুরগির ডিম উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ‘রানা ফার্ম এন্ড হ্যাচারি’। প্রায় ১০ বছর আগে প্রতিষ্ঠিত এ ফার্মে বর্তমানে এখানে লেয়ার মুরগি রয়েছে প্রায় আট লাখ। কোনো প্রকার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা না করে ফার্মের বায়োগ্যাস প্ল্যান্ট থেকে প্রতিনিয়ত এসব মুরগির কেমিক্যাল মেশানো বর্জ্য ফেলা হচ্ছে ‘বুড়ি ভোগাই’ নদীতে। নদীর পানি মারাত্মক দূষণের ফলে মরছে মাছ ও অন্যান্য জলজ প্রাণী। নদীর পানিতে গবাদি পশু আক্রান্ত হচ্ছে নানা চর্মরোগে। দূষিত পানির স্পর্শে চর্মরোগ দেখা দিচ্ছে মানুষের। এমনকি নদীর পানি সেচকাজে ব্যবহার করলে মরে যাচ্ছে ফসল।
এ বিষয়ে নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারজানা আক্তার ববি জানান, যেহেতু দুই আন্তঃ উপজেলার বিষয়। তাই প্রাণিসম্পদ বিভাগের মাধ্যমে তদন্ত করে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পরিবেশ অধিদপ্তর ময়মনসিংহের উপপরিচালক মেজ-বাবুল আলম জানান, ফার্মটির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সন্তোষজনক নয়। স্থানীয়দের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পরিদর্শন করে কম্পোস্ট প্ল্যান্ট স্থাপনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে আমার জানামতে এখনো তারা কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। তাই পুনরায় তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে রানা ফার্ম এন্ড হ্যাচারির ব্যবস্থাপক শাহিনুজ্জামান জানান, আমরা ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় চেয়েছি। চলতি বছরেই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

