বিএনপি কর্মী খুনে বিদেশি পিস্তল, ধরা পড়ল ছয় শ্যুটার

চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ : ১০ নভেম্বর ২০২৫, ০৫: ৫৫
আপডেট : ১০ নভেম্বর ২০২৫, ০৫: ৫৭

চট্টগ্রামের রাউজানে বিএনপি কর্মী ও ব্যবসায়ী আবদুল হাকিম হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বিদেশি পিস্তল, রিভলভার, গুলি ও মোটরসাইকেলসহ ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

রোববার গভীর রাতে রাউজানের নোয়াপাড়া ইউনিয়নের চৌধুরীহাট এলাকায় আইয়ুব আলী সওদাগরের বাড়িতে এ অভিযান চালানো হয়।

বিজ্ঞাপন

জেলা পুলিশের মুখপাত্র রাসেল জানান, হত্যাকাণ্ডের তদন্তের ধারাবাহিকতায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে এবং তাদের কাছ থেকে হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করা হয়েছে।

পুলিশ জানায়, গত ৭ অক্টোবর বিকেলে রাউজানের বাগোয়ান ইউনিয়নের হামিম অ্যাগ্রো ফার্ম থেকে প্রাইভেট কারে চট্টগ্রাম শহরে ফেরার পথে মদুনাঘাট সেতুর পশ্চিম প্রান্তে পৌঁছালে মোটরসাইকেলে আসা কয়েকজন অস্ত্রধারী হাকিমের গাড়ি থামিয়ে এলোপাতাড়ি গুলি চালায়। ঘটনাস্থলেই মারা যান হাকিম (৫২), গুরুতর আহত হন তার গাড়িচালক।

তদন্তে জানা গেছে, কর্ণফুলী নদীর পাড়ে বালুমহাল ও চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ নিয়ে বিরোধের জেরে টাকার বিনিময়ে ভাড়াটে খুনি ভাড়া করা হয়। জেলা গোয়েন্দা পুলিশ ও রাউজান থানা যৌথভাবে তদন্ত শুরু করলে ৩১ অক্টোবর গরীব উল্লাহপাড়া এলাকা থেকে মো. আবদুল্লাহ খোকন নামে এক আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে সে হত্যায় নিজের সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করে এবং সহযোগীদের নাম প্রকাশ করে।

খোকনের তথ্যের ভিত্তিতে ২ নভেম্বর একই এলাকার চৌধুরীহাট থেকে মো. মারুফ নামে আরও এক আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের তথ্য অনুযায়ী ৫ নভেম্বর রাতে অভিযান চালিয়ে পুলিশ মো. সাকলাইন হোসেন ও জিয়াউর রহমানসহ আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করে। তাদের কাছ থেকে উদ্ধার হয় একটি বিদেশি পিস্তল, একটি রিভলভার, কয়েক রাউন্ড গুলি ও হত্যায় ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল।

পুলিশ জানিয়েছে, গ্রেপ্তার ছয়জনের মধ্যে দুজন সরাসরি গুলি চালিয়েছিল, বাকিরা পরিকল্পনা ও সহযোগিতায় যুক্ত ছিল। তদন্তে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে, হত্যাকাণ্ডে দুটি আলাদা সন্ত্রাসী চক্র অংশ নেয় এবং এর সঙ্গে স্থানীয় বালুমহাল ব্যবসায়ী একটি প্রভাবশালী গোষ্ঠীর যোগসূত্র রয়েছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) তারেক আজিজ বলেন, এটি ছিল পরিকল্পিত হত্যা। প্ররোচনাকারীরা ভাড়াটে খুনি নিয়োগ দিয়ে ঘটনাটি ঘটিয়েছে। আমরা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছি, মূল অর্থদাতা ও পরিকল্পনাকারীদের শনাক্ত করা হয়েছে।

নিহত আবদুল হাকিম রাউজানের বাগোয়ান ইউনিয়নের বাসিন্দা ও স্থানীয় বিএনপি কর্মী ছিলেন। তিনি হামিম অ্যাগ্রো ফার্মের মালিক। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, বালুমহাল ও নদী দখল নিয়ে প্রতিপক্ষের হুমকি পেয়ে তিনি সম্প্রতি আতঙ্কে ছিলেন।

পুলিশ জানিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদ ও প্রযুক্তিগত তথ্য বিশ্লেষণে হত্যাকাণ্ডে জড়িত আরও ১০–১২ জনকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারে বিশেষ অভিযান চলছে।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত