৫০ কোটি টাকা ফাঁকি দেয়ার চেষ্টা, বসুন্ধরার এজিএম গ্রেপ্তার

স্টাফ রিপোর্টার, চট্টগ্রাম
প্রকাশ : ১৬ মে ২০২৫, ১২: ৫১
আপডেট : ১৬ মে ২০২৫, ১২: ৫৩

চট্টগ্রাম বন্দরে জাল কাগজপত্র দেখিয়ে ৫০ কোটি টাকা রাজস্ব ফাঁকি দেয়ার চেষ্টা চালিয়েছে দেশের অন্যতম শিল্পগোষ্ঠী বসুন্ধরা গ্রুপ। এ ঘটনায় গ্রেপ্তার হয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির সহকারী মহাব্যবস্থাপক (এজিএম) মো. ফয়েজ।

বিজ্ঞাপন

বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সন্ধ্যায় শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) একটি সূত্র জানায়, বন্দর কর্তৃপক্ষের অভিযোগের ভিত্তিতে ডিবির একাধিক টিম অভিযানে নামে। ফয়েজের সঙ্গে আরও একজনকে আটক করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সংশ্লিষ্টতা না পাওয়ায় পরে ছেড়ে দেয়া হয় তাকে।

বন্দর থানার ওসি কাজী মুহাম্মদ সুলতান আহসান বলেন, ‘জালিয়াতি ও রাজস্ব ফাঁকির অভিযোগে বন্দর কর্তৃপক্ষ বাদী হয়ে মামলা করেছে। মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ফয়েজকে শুক্রবার আদালতে পাঠানো হয়েছে।’

বন্দর সূত্রে জানা যায়, বসুন্ধরা মাল্টি স্টিল ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে গত বছরের ১২ জুন থেকে চলতি বছরের ২ জানুয়ারি পর্যন্ত মোট ২০৪টি টিইইউ (২০ ফুট দীর্ঘ একক) কনটেইনারে মূলধনী যন্ত্রপাতি আমদানি করে। তবে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এসব কনটেইনার খালাস করেনি প্রতিষ্ঠানটি। এর মধ্যে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) একটি পত্রের বরাত দিয়ে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ে পোর্ট ডেমারেজ বা স্টোররেন্ট মওকুফের আবেদন করে বসুন্ধরা।

এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৫ জানুয়ারি মন্ত্রণালয় থেকে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের মতামত চাওয়া হয়। ১৯ জানুয়ারি বন্দরের পক্ষ থেকে আদায়যোগ্য স্টোররেন্টের পরিমাণ উল্লেখ করে মন্ত্রণালয়কে জানানো হয়।

বন্দরের এক শীর্ষ কর্মকর্তা জানান, ‘গত ১৫ মে পর্যন্ত বসুন্ধরার কনটেইনারগুলোর ওপর আদায়যোগ্য স্টোররেন্ট দাঁড়ায় প্রায় ৭২ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১২ মে প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, তারা নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পেয়েছে এবং মোট পাওনা থেকে ৬০ শতাংশ মওকুফ করা হয়েছে। তারা একটি সরকারি চিঠিও দেখায়, যাতে উপসচিব নজরুল ইসলাম আজাদের স্বাক্ষর রয়েছে।’

তবে বন্দর কর্তৃপক্ষ বিষয়টির সত্যতা যাচাই করতে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করলে জানা যায় চিঠিটি জাল। ১৪ মে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আরেকটি চিঠি পাঠিয়ে জানানো হয়, আগের চিঠিটি ভুয়া এবং উপসচিব নজরুল ইসলামের স্বাক্ষর নকল করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, বন্দর কর্তৃপক্ষের সতর্কতা ও দ্রুত পদক্ষেপের ফলে বসুন্ধরা গ্রুপের অন্তত ৫০ কোটি টাকার রাজস্ব ফাঁকির চেষ্টা নস্যাৎ করা সম্ভব হয়েছে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত