বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলার খলিশাকান্দি গ্রামে মা ও দুই শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে নয়টার দিকে এ মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে। নিহত গৃহবধূ সাদিয়া বেগম (২৮), তার পাঁচ বছরের মেয়ে এবং তিন বছরের ছেলেসহ তিনজনের মরদেহ উদ্ধার হয় ঘর থেকে। সাদিয়ার গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় এবং দুই শিশুর গলাকাটা অবস্থায় লাশ পাওয়া যায়।
খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে এবং সাদিয়ার স্বামী সেনা সদস্য শাহাদাত হোসেন কাজল (৩০)–কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেয়। তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সদস্য এবং বর্তমানে ময়মনসিংহ ক্যান্টনমেন্টে কর্মরত। কয়েক দিন আগে তিনি ৭ দিনের ছুটিতে বাড়িতে এসেছিলেন।
নিহত সাদিয়া বেগম ভান্ডার পাইকার গ্রামের মোফাজ্জল হোসেনের মেয়ে। ছয় বছর আগে তার বিয়ে হয় খলিশাকান্দি গ্রামের সেনা সদস্য শাহাদাত হোসেন কাজলের সঙ্গে।
কাজলের মা দাবি করেন, সকালে পাশের ঘরে ঘুমিয়ে ছিলেন তার ছেলে কাজল। সেই সুযোগে দুই সন্তানকে গলা কেটে হত্যা করে সাদিয়া ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন। তিনি আরও জানান, এর আগেও পারিবারিক কলহের জেরে সাদিয়া আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিলেন।
স্থানীয় বাসিন্দা সুমন জানান, রান্না শেষে ঘরের দরজা বন্ধ দেখে কাজল ডাকাডাকি করেন। কোনো সাড়া না পেয়ে দরজা ভেঙে ভেতরে গিয়ে তিনজনকে মৃত অবস্থায় দেখতে পান। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় লাশ নিচে নামিয়ে পুলিশে খবর দেওয়া হয়।
তবে নিহত সাদিয়ার বাবা মোফাজ্জল হোসেন আত্মহত্যার কথা মানতে নারাজ। তিনি অভিযোগ করে বলেন, আমার মেয়ের স্বামী পাশের ঘরেই ছিল, কিন্তু দুটি শিশুকে হত্যার পরও কিছুই টের পেল না— এটা কীভাবে সম্ভব? এটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড। তিনি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচারের দাবি জানান।
খলিশাকান্দি গ্রামের ইউপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ঘটনা অত্যন্ত মর্মান্তিক। সাদিয়া ও তার শাশুড়ির মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। জমি–সংক্রান্ত দ্বন্দ্বও ছিল। তবে এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা এখনই নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।
শাজাহানপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শফিকুল ইসলাম বলেন, ঘটনাটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা এখনো নিশ্চিত নয়। নিহত সাদিয়ার স্বামী শাহাদাত হোসেন কাজলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষ হলে ঘটনার প্রকৃত কারণ জানা যাবে।

