বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেছেন, ইসলামী ছাত্র শিবির কখনো কোনো ব্যক্তি বা দলের বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া না। তবে হ্যাঁ, যে অন্যায় করবে ইসলামী ছাত্রশিবির তার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যাবে। তিনি যদি আমার বাবাও হন আমার ভাইও হন তিনি যদি অন্যায় করেন তবে আমি তার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যাবো। এজন্য আমরা বলতে চাই, আপনাদের চিন্তার পরিবর্তন করুন। এই প্রজন্মের পালস বুঝে রাজনীতি করুন। বস্তাপচা ফ্যাসিবাদী রাজনীতির কাঠামোকে এই প্রজন্মের উপর চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করবেন না।
বুধবার বিকেলে দিনাজপুরের ফুলবাড়ী পৌর এলাকার সুজাপুর বিদ্যালয় মাঠে দিনাজপুর-৫ উন্নয়ন ফোরাম আয়োজিত ছাত্র-যুব-নাগরিক সমাবেশে প্রধান বক্তা হিসেবে তিনি এসব কথা বলেন।
জাহিদুল ইসলাম বলেন, গত দু বছর আগেও এখানে ফ্যাসিবাদ কায়েম ছিল। খুনি হাসিনা এই জনপদকে একটি অন্যায়ের একটি জুলুমের অঙ্গ রাজ্যে পরিণত করেছিল। আমাদের এই বাংলাদেশকে পার্শ্ববর্তী রাষ্ট্রের কাছে আধিপত্যবাদী, কর্তৃত্ববাদী শক্তির কাছে নতজানু রাষ্ট্রে পরিণত করেছিল। আমাদের এই সমাজে যারাই ন্যায়ের পক্ষে অন্যায়ের বিরুদ্ধে কথা বলত তাদেরকে হয়ত খুন করত অথবা গুম করে আয়না ঘরে বন্দি করে রাখা হত। হাত পা কেটে বা চোখ তুলে নিয়ে বিভিন্ন ভাবে অঙ্গহানি করা হত। রিমান্ডের নামে চরম নির্যাতন করা হত অথবা জেলখানায় ভরিয়ে রাখা হত। কিন্তু আলহামদুলিল্লাহ, ২০২৪ সালে বাংলাদেশের ছাত্রজনতা সকল পেশাজীবী মানুষ দল মত নির্বিশেষে অন্যায়ের বিপক্ষে জুলুমের বিপক্ষে এককাতারে লড়াইয়ে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি তখনই আল্লাহ এই জমিনকে একটি খুনি হাসিনা মুক্ত একটি ফ্যাসিবাদ মুক্ত রাষ্ট্র উপহার দিয়েছে।
তিনি বলেন, আমরা এই প্রজন্ম অনেক স্বপ্ন দেখেছি- জুলাই আগস্টের পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন হবে। রাজনীতির সংস্কৃতি পরিবর্তন হবে। রাজনীতিবিদদের মাঝে চিন্তার আমূল পরিবর্তন সাধিত হবে। কিন্তু আমরা দেখছি কারো কারো মাঝে পুুুরোনা ধারার সেই রাজনীতি করার প্রবণতা রয়ে গেছে। খুনি হাসিনা তার ফ্যাসিবাদ কায়েমে যে উচ্ছিষ্ট রেখে গিয়েছে অথবা অবশিষ্ট কাজগুলো রেখে গিয়েছে আজকে কোন কোন ব্যক্তি বা দল সেই অবশিষ্ট কাজগুলো নিজেদের কাঁধে তুলে নিয়েছেন। আমরা তাদেরকে বলতে চাই, যে প্রজন্ম খুনি হাসিনার মত ফ্যাসিস্টকে এই বাংলাদেশ থেকে পতন করে হেলিকপ্টারে করে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছিলো- অদূর ভবিষ্যতে যদি কেউ আবার ফ্যাসিবাদ কায়েমের চিন্তা করেন, ফ্যাসিবাদের উপকরণকে আপনাদের রাজনীতির উপকরণে পরিণত করেন, তবে এই প্রজন্ম আপনাদের কাউকে পরোয়া করবেনা।
তিনি আরও বলেন, এই উত্তরাঞ্চলের মানুষ সবসময় উন্নয়ন থেকে- অধিকার থেকে বঞ্চিত হয়েছে। অথচ বাংলাদেশের কৃষি প্রধান দেশ হিসেবে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখে উত্তরাঞ্চলের মানুষ। উত্তরাঞ্চল থেকে যারা নেতা নির্বাচিত হয় তাদের ভাগ্যের পরিবর্তন হয়। কিন্তু উত্তরাঞ্চলের মানুষের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন হয়না।
দিনাজপুর জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি মো. সাইদুল ইসলাম সৈকতের সভাপতিত্বে ও শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় দাওয়াহ সম্পাদক হাফেজ মুজাহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, জামায়াত মনোনীত দিনাজপুর-৫ (ফুলবাড়ী-পার্বতীপুর) আসনের প্রার্থী আনোয়ার হোসেন।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, ইসলামী ছাত্র শিবিরের কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক আজিজুর রহমান আজাদ, রাকসু ভিপি ও রাবি শিবিরের সভাপতি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ, শিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি রাজিবুর রহমান পলাশ।

