হবিগঞ্জ-৪ (মাধবপুর-চুনারুঘাট) আসনে বিএনপির মনোনয়ন না পেয়ে কেন্দ্রীয় নেত্রী শাম্মী আক্তারের প্রকাশ্যে ক্ষোভ ও দলবিরোধী বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। এ নিয়ে স্থানীয় বিএনপিতে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইঙ্গিতপূর্ণ পোস্ট থেকে শুরু করে টেলিভিশনের টকশো সর্বত্রই তার দলবিরোধী মন্তব্যে নেতাকর্মীদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এ কারণে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছেন স্থানীয় নেতারা।
দলীয় সূত্র জানায়, আসন্ন সংসদ নির্বাচনে শাম্মী আক্তার হবিগঞ্জ-৪ আসনে প্রার্থী হতে আগ্রহী ছিলেন। তবে যাচাই-বাছাই শেষে জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়সলকে মনোনয়ন চূড়ান্ত করে দলের হাইকমান্ড। এরপর শাম্মী আক্তার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে লেখেন ‘ছি!’ এবং পরের দিন পোস্ট করেন ‘তুই গাদ্দার!’
নেতাকর্মীদের দাবি, এসব মন্তব্য দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে উদ্দেশ্য করেই করা হয়েছে।
শুধু সামাজিক মাধ্যম নয়, বিভিন্ন টেলিভিশন টকশোতেও তিনি দলের সিদ্ধান্ত নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে যাচ্ছেন। এতে শুধু স্থানীয় পর্যায়েই নয়, কেন্দ্রীয় কমান্ডেও বিব্রতকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ করেন সংগঠনের নেতারা।
দলীয় নেতারা বলছেন, মনোনয়ন না পেয়ে ব্যক্তিগত ক্ষোভ থাকাটা স্বাভাবিক। কিন্তু তা দলের নিয়ম মেনে অভ্যন্তরীণভাবে জানানো উচিত। অথচ শাম্মী আক্তার প্রকাশ্যে যেসব আক্রমণাত্মক মন্তব্য করছেন, তা দলের ঐক্য, মাঠের প্রচারণা ও ভোটারদের কাছে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এদিকে, এ আসনে বিএনপির প্রাথমিক প্রার্থী সৈয়দ ফয়সলকে পরিবর্তন করে কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক সাবেক এমপি শাম্মী আক্তারকে দেওয়ার দাবি উঠছে রাজপথে। প্রতিদিনই গণমিছিল ও গণসমাবেশ করছেন শাম্মীর অনুসারীরা।
শাম্মী আক্তারের অনুসারীদের দাবি, আসনটিতে পুনর্বিবেচনা করে তাদের নেত্রীকে মনোনয়ন না দেওয়া হলে বিএনপি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
চুনারুঘাট উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব মারুফ আহমেদ বলেন, আওয়ামী আমলে হামলা মামলার শিকার হয়ে যখন জেলে ছিলাম তখন শাম্মী আপাই আমাদের পাশে ছিলেন। আমার পরিবারের খোঁজ খবর নিয়েছেন। সর্বোপরি দলের দুর্দিনে আপা আমাদের পাশে ছিলেন। তাই পুনর্বিবেচনা করে আপাকে মনোনয়ন দেওয়ার জোর দাবি জানাই।
মাধবপুর উপজেলা বিএনপি সভাপতি শামসুল ইসলাম কামাল বলেন, দলের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। মনোনয়ন না পেয়ে দলের বিরুদ্ধে বিষোদগার এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এখন মাঠে ধানের শীষের পক্ষে জোয়ার উঠছে। এ সময়ে এমন বক্তব্য প্রচারণাকে বাধাগ্রস্ত করছে।
এদিকে উপজেলা বিএনপি সাধারণ সম্পাদক হামিদুর রহমান হামদু বলেন, তিনি প্রকাশ্যেই দলের শীর্ষ নেতাদের টার্গেট করে অপপ্রচার করছেন। এতে নেতাকর্মীরা বিভ্রান্ত হচ্ছেন। তাকে এখনই সাংগঠনিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা জরুরি।
চুনারুঘাট উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক ইউপি চেয়ারম্যান এজাজ ঠাকুর চৌধুরী বলেন, শাম্মী আপা সাবেক এমপি এবং কেন্দ্রীয় নেত্রী। রাজপথ ও এলাকায় দুই জায়গাতেই তিনি জনপ্রিয়। দলীয় হাইকমান্ডের কাছে দাবি একটা, মনোনয়ন পুনর্বিবেচনা করে তাকে ধানের শীষ দিলে সবাই মিলে এ আসনটি দলকে উপহার দিকে সক্ষম হব।
কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-স্থানীয় সরকারবিষয়ক সম্পাদক সাবেক এমপি শাম্মী আক্তার বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে দলের হয়ে আন্দোলন সংগ্রাম করে আসছি। এলাকার জনগণের পাশে থেকেছি সবসময়। রাজপথে বহুবার হামলা-মামলার শিকার হয়েছি। এ সব বিবেচনায় আমি এখনো আশাবাদী দল আমার বিষয়ে পুনর্বিবেচনা করবে।


বিএনপিতে প্রার্থী নিয়ে জটিলতা ঐক্যবদ্ধ প্রচারে জামায়াত
পাসপোর্টে ৮ মাসেও বহাল হয়নি ‘একসেপ্ট ইসরাইল’