জনসংযোগে বিএনপির এক ডজন নেতা, জামায়াতের একক প্রার্থী

ইমরান হোসাইন রুবেল, সারিয়াকান্দি (বগুড়া)
প্রকাশ : ০২ জুলাই ২০২৫, ১০: ০৯
আপডেট : ০২ জুলাই ২০২৫, ১০: ১৯

বগুড়া-১ (সারিয়াকান্দি-সোনাতলা) এলাকা নিয়ে আসনটি গঠিত। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ইতোমধ্যে এই নির্বাচনি এলাকায় একক প্রার্থী হয়েছেন জামায়াতের অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন। গণসংযোগে ব্যস্ত সময় পার করছেন তিনি।

অন্যদিকে বিএনপির ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত এ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য ডজন খানেক প্রার্থীর মধ্যে আটজনই নতুন মুখ। দেড় দশক ধরে আওয়ামী লীগের অপশাসন চাপিয়ে দেওয়ায় মানুষ ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেননি। জুলাই বিপ্লবের পর আবার মানুষ ভোট উৎসবের দিন ফিরে পাচ্ছে। এ আসনটিতে মূলত ভোট যুদ্ধে লড়াই হবে বিএনপি ও জামায়াত প্রার্থীর মধ্যে।

বিজ্ঞাপন

বিএনপি প্রার্থী হিসেবে মাঠে আছেন জেলা মহিলা দলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক মহিলা এমপি মমতাজ বেগম, কর্নেল (অব.) জগলুল আহসান, অ্যাডভোকেট রবিউল হোসেন রবি, জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক শহীদুন নবী সালাম, অধ্যক্ষ এএসএম রফিকুল ইসলাম, সারিয়াকান্দি উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়াম্যান মাসুদুর রহমান হিরু মন্ডল, জেলা ড্যাব নেতা ডা. শাহ্ মো. শাহজাহান আলী, জিয়া শিশু-কিশোর সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতা এ কে এম মোশারফ হোসেন চৌধুরী, কেন্দ্রীয় বিএনপি নেতা মহিদুল ইসলাম রিপন, কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক দল নেতা তৌহিদুল ইসলাম টিটু, সোনাতলা উপজেলা পরিষদের সাবেক মেয়র একেএম আহসান তৈয়ব জাকির, সাবেক এমপি ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী রফিকুল ইসলাম নির্বাচনি এলাকায় বেশ সরব। তারা গণসংযোগের পাশাপাশি ঢাকায় কেন্দ্রীয় নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করে চলেছেন। জানা গেছে, মনোনয়নপ্রত্যাশীদের অনেকেই বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে লন্ডনে বিভিন্নভাবে যোগাযোগ করছেন।

এ আসনে বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা ঈদের আগে ও পরে বিভিন্ন ধরনের পোস্টার করে জনগণকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। বিএনপির সম্ভাব্য প্রার্থীরা কর্মী সম্মেলন, সভা, সমাবেশ করছেন। নিজ নিজ বলয়ের নেতাকর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষিদের নিয়ে মাঠে, হাটে-বাজারে নিয়মিত কুশল বিনিময় করছেন। নানা প্রতিশ্রুতির কথা বলছেন। ভোটার ও মানুষের দুঃখ কষ্টের কথা শুনে সমাধানের আশ্বাস দিচ্ছেন। এখন ঈদুল আজহার পর কোনো কোনো প্রার্থী ঈদ পুনর্মিলনী করে ভোটারদের সমর্থন কুড়াতে নানা কাজ করছেন নির্বাচনি এলাকায়।

১৯৯১ ও ১৯৯৬ সালে ডা. হাবিবুর রহমান এমপি থাকলেও পরবর্তীতে ২০০১ সালে কাজী রফিকুল ইসলামকে মনোনয়ন দেয় বিএনপি । সংসদ সদস্য থাকাকালীন তিনি এলাকায় জননন্দিত নেতা হিসেবে পরিচিত হন। এ ছাড়াও সারিয়াকান্দি এলাকার প্রধান সমস্যা যমুনা নদীর ভাঙন রক্ষায় এলাকার জনগণের প্রাণের দাবি তিনি পূরণ করতে সক্ষম হয়েছেন। তাছাড়াও কাজী রফিকুল ইসলাম ক্লিন ইমেজের লোক হিসেবে পরিচিত। ২০০৮ সালে তার পরিবর্তে ব্যবসায়ী শোকরানাকে মনোনয়ন দেন।

এর আগে স্বাধীনতা যুদ্ধের পরবর্তী শেখ মুজিবুর রহমানের আমলের দুঃশাসনের কারণে আসনটি আওয়ামী লীগের হাতছাড়া হওয়ার পর বিএনপির দুর্গ হিসেবে স্থান লাভ করে। ১৯৯১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির ডা. হাবিবুর রহমানের কাছে জামায়াত প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী হলেও জামানত হারানো আওয়ামী লীগ পরবর্তীতে সংসদ নির্বাচনে ভোট জালিয়াতি, দিনের ভোট রাতে করে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রী নেতা আব্দুল মান্নান টানা তিনবার সংসদ সদস্য হন। ২০২০ সালে আব্দুল মান্নানের মৃত্যুর পর স্ত্রী সাহাদারা মান্নান ভোট বিহীন উপনির্বাচনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০২৪ সালে ড্যামি ভোটে সাহাদারা মান্নান পুনরায় সংসদ সদস্য বনে যান।

এ আসনে জামায়াত প্রার্থী অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন প্রচারাভিযান চালিয়ে যাচ্ছেন। প্রত্যন্ত এলাকার মানুষের বিপদ-আপদে কাছে যাচ্ছেন। তিনি বলেন, জনগণ আমাদের গ্রহণ করছেন। জনগণের কাছ থেকে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছি। জামায়াত প্রার্থী অধ্যক্ষ শাহাবুদ্দিন চমক দেখাতে চান এ আসনে ।

অপরদিকে ২০২৪ সালে নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন বোর্ড থেকে ছিটকে পড়া আওয়ামী লীগ নেত্রী ড্যামি প্রার্থী হিসেবে তবলা প্রতীকে শাহাজাদী আলম লিপি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন। এবারও প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য প্রচার চালাচ্ছেন। তলে তলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পুনর্বাসিত করছেন। উপজেলায় দল আছে, তবে দল গোছানো নিয়ে ব্যস্ত থাকায় নির্বাচনি মাঠে নেই এনসিপির নেতাকর্মীরা।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত