উনিশ বছর ধরে ‘বাবার স্বীকৃতির’ অপেক্ষায় মৌমি

চট্টগ্রাম ব্যুরো
প্রকাশ : ২৫ মে ২০২৫, ১৭: ৫২

তার নাম মৌমি। চট্টগ্রামের কোতোয়ালি এলাকার এক কলেজছাত্রী। উনিশ বছর ধরে তিনি শুধু একটি জিনিসের জন্য অপেক্ষা করছেন— বাবার স্বীকৃতি। তার বাবা মোহাম্মদ মুছা। স্থানীয়ভাবে ‘প্যাকেজ মুসা’ নামে পরিচিত। তিনি চট্টগ্রামের বাকলিয়া এলাকায় বসবাস করেন। মাত্র দু’বছর বয়সে বাবা-মায়ের বিচ্ছেদের পর থেকে মৌমি কখনোই বাবার স্নেহ পায়নি।

বিজ্ঞাপন

অভাব-অনটনে বেড়ে ওঠা

মৌমির মা সুমি পোশাক কারখানায় কাজ করে তাকে বড় করেছেন। দ্বিতীয় সংসারে গেলেও মা মৌমিকে সঙ্গেই রেখেছেন। পড়াশোনার খরচ চালানোর জন্য মৌমি টিউশনি করেন। স্কুল-কলেজে সহপাঠীরা যখন বাবার কথা জিজ্ঞেস করে, তিনি শুধু চুপ করে থাকেন।

বাবার ওপর ক্ষোভ

মৌমি বলেন, ‘বাবার বাড়ি সবার কাছে আপন, কিন্তু আমার কাছে বাবা শুধু একটি হতাশার নাম। উনিশ বছর ধরে আমি তার অপেক্ষায় আছি। যদি কখনো দেখা হয়, শুধু একবার 'বাবা' ডেকে জিজ্ঞাসা করব— কেন আমাকে জন্ম দিয়েছিলেন? আমার অপরাধ কী ছিল?"

মৌমির মা সুমি জানান, ২০০৩ সালে প্রেম করে বিয়ে হলেও মুসার অনিয়মিত জীবনযাপন ও অন্যান্য নারীদের সঙ্গে সম্পর্কের কারণে তাদের সংসার ভেঙে যায়। আদালতে মামলা করলে মুসা মাত্র ৫০ হাজার টাকা দেন, কিন্তু নিয়মিত ভরণপোষণ দেননি। তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা থাকলেও পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করছে না বলে অভিযোগ করেন সুমি।

মৌমির আইনজীবী মোমেনুল হক বলেন, মুসা নানাভাবে মৌমিকে স্বীকৃতি দিতে এড়িয়ে গেছেন। আদালতের রায় সত্ত্বেও তিনি সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছেন না। মৌমির অধিকার আদায়ে আইনি ব্যবস্থা চলমান রয়েছে।

অভিযোগের মোহাম্মদ মুছা এই প্রসঙ্গে বলেন, আমি ষড়যন্ত্রের শিকার। মৌমি মায়ের দায়ের করা মামলার বিষয়গুলো শীঘ্রই মিটমাট করে ফেলবো। এর আগেও কয়েকজন সাংবাদিক আমার কাছে এসেছিলেন। তাদের মাধ্যমে বিষয়টি দিন দিন লম্বা হচ্ছে বলে তিনি জানান। বাবা হিসেবে মেয়ের স্বীকার বিষয়ে জানতে চাইলে প্রতিবেদককে কোনো উত্তর না দিয়ে পাশ কেটে চলে যান তিনি।

এমএস

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত