সাজেক পর্যটক শূন্য, ব্যবসায়ীদের কপালে ভাঁজ

আমার দেশ অনলাইন
প্রকাশ : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯: ০৭
আপডেট : ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৯: ১৯

চলতি সপ্তাহের পুজোর ছুটিকে সামনে রেখে শ খানেক রিসোর্টের সব ফুল বুকড থাকলেও এখন সব বুকিং ক্যান্সেল হচ্ছে বলে জানিয়েছে সাজেক কটেজ অ্যান্ড রিসোর্ট ওনার্স এসোসিয়েশন।

খাগড়াছড়ি সদরে সুপরিচিত একটি আবাসিক হোটেল হলো হোটেল গাইরিং। এর ব্যবস্থাপক প্রান্ত বিকাশ ত্রিপুরা বলেন, তাদের হোটেল এখন পুরোপুরি খালি। চলতি সপ্তাহের সব বুকিং বাতিল হয়ে গেছে। হোটেল এখন সম্পূর্ণ খালি, বলেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

খাগড়াছড়িতে সহিংসতার প্রেক্ষাপটে সংকটে পড়েছে পার্বত্য অঞ্চলের পর্যটন; বিশেষ করে পর্যটকদের কাছে জনপ্রিয় রাঙ্গামাটির সাজেক পর্যটক শূন্য হয়ে গেছে। কারণ খাগড়াছড়ি থেকে সাজেকে যাওয়ার পথ তুলনামূলক সহজ হওয়ায় পর্যটকরা এ পথেই বেশী সাজেক যান।

সহিংসতার জের ধরে জেলা প্রশাসনের ঘোষণা করা ১৪৪ ধারা এবং আন্দোলনকারীদের 'পর্যটন সাময়িক বন্ধের' ঘোষণার কারণে এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

পাহাড়ি একজন কিশোরী গত ২৩ সেপ্টেম্বর ধর্ষণের শিকার হওয়ার পর জেলা প্রশাসন শনিবার থেকে ১৪৪ ধারা ঘোষণা করলে তার আগেই সাজেকে যাওয়া পর্যটকরা আটকে পড়েন।

নিরাপত্তা পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় তিন জেলার মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র সাজেক থেকে দুই হাজারের বেশী পর্যটকদের নিরাপত্তা বাহিনীর প্রহরায় সদরে ফিরে আসতে হয়েছে।

শহরের হোটেলগুলোও ফাঁকা হয়ে গেছে। একটি হোটেলের ব্যবস্থাপক বলছেন, শুক্রবার থেকে আগামী চলতি সপ্তাহে সব বুকিং বাতিল করতে বাধ্য হয়েছেন তারা। সেখানকার অধিকাংশ হোটেলেরই একই অবস্থা বলে জানিয়েছেন তিনি।

সাজেক পরিস্থিতি

খাগড়াছড়ি হয়ে সাজেক যাওয়া সুবিধাজনক হলেও সাজেক ভ্যালি মূলত রাঙ্গামাটি জেলার সবচেয়ে উত্তরে ভারতের মিজোরাম রাজ্যের সীমান্ত সংলগ্ন। এর উত্তর ও পূর্ব দিকে ভারতীয় সীমান্ত আছে। রুইলুইপাড়া ও কংলাক পাড়ার সমন্বয়ে গঠিত হয়েছে সাজেক।

খাগড়াছড়ি জেলা সদর থেকে সাজেকের দূরত্ব প্রায় ৭০ কিলোমিটার, যা এখন কার্যত বন্ধ হয়ে আছে। খাগড়াছড়ি ও সাজেকের রিসোর্ট ও হোটেল ব্যবসায়ীরা বলছেন, চলতি সপ্তাহে পূজার ছুটির জন্য তারা অনেক দিন ধরেই প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন।

সাজেক কটেজ অ্যান্ড রিসোর্ট ওনার্স এসোসিয়েশন বলছে, সেখানে এখন মোট ৮৫টি রিসোর্ট আছে। আর সদরে জেলা প্রশাসনের হিসেবে বেসরকারি হোটেল আছে আরও অন্তত ২০টি। এর বাইরে সরকারি কিছু প্রতিষ্ঠানেও ছুটির সময়গুলোকে পর্যটকরা ভিড় করেন।

অন্যদিকে সাজেক কটেজ অ্যান্ড রিসোর্ট ওনার্স এসোসিয়েশনের সহ-প্রচার সম্পাদক মাইনুজ্জামান সরকার বলছেন, সাজেকের ৮৫টি রিসোর্টে মোট ২৬০০-৩০০০ বুকিং ছিলো।

ফুল বুকড ছিলো। এখন যাতায়াত বন্ধ হয়ে গেছে। পর্যটকরা কেউ বলছেন তারা পরে যাবেন। কিন্তু অনেকেই টাকা ফেরত চাইছেন। পর্যটক শূন্যতার কারণে পূজার বন্ধের ব্যবসা একেবারেই শেষ হয়ে গেছে, বলেন তিনি।

স্থানীয়রা বলছেন, সড়ক অবরোধ ও সহিংস পরিস্থিতির কারণে সাজেকে আটকে পড়া প্রায় দুই হাজার পর্যটককে সেনাবাহিনীর নিরাপত্তায় শনিবার রাতেই খাগড়াছড়ি সদরে নিয়ে আসা হয়।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত