আমার দেশ জনপ্রিয় বাংলা নিউজ পেপার

রামগঞ্জে নির্বাচনি টকশোতে জুতা প্রদর্শন, হাতাহাতি ও উত্তেজনা

উপজেলা প্রতিনিধি, রামগঞ্জ (লক্ষ্মীপুর)

রামগঞ্জে নির্বাচনি টকশোতে জুতা প্রদর্শন, হাতাহাতি ও উত্তেজনা

লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জে নির্বাচনি টকশোতে উন্মুক্ত প্রশ্ন করায় প্রশ্নকারীকে জুতা প্রদর্শনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে হাতাহাতি ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।

বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) দুপুরে রামগঞ্জ সরকারি কলেজ মাঠে একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেল আয়োজিত নির্বাচনি টকশো-২৬ এর নির্বাচন এর রেকর্ডিং চলাকালে এ ঘটনা ঘটে।

বিজ্ঞাপন

জানা গেছে, লক্ষ্মীপুর-১ (রামগঞ্জ) আসনের বিএনপি মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ও সদ্য বিলুপ্ত বিএলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম, জামায়াতের প্রার্থী নাজমুল হাসান পাটওয়ারী এবং ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী জাকির হোসেন পাটওয়ারীকে নিয়ে এই টকশোর আয়োজন করা হয়।

টকশো চলাকালীন রামগঞ্জ সরকারি কলেজ মাঠে বেলা ১২টার সময় দর্শক সারি থেকে মো. আল আমীন নামের ঢাকা তেজগাঁও কলেজের এক শিক্ষার্থী ইসলামী আন্দোলনের সংসদ সদস্য প্রার্থী জাকির হোসেন পাটওয়ারীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “আমরা জানতে পেরেছি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আপনি জাতীয় পার্টি থেকে ২ কোটি টাকা দিয়ে রামগঞ্জ আসনে নির্বাচন করতে চেয়েছিলেন। এখন সামনে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইসলামী আন্দোলন থেকে প্রার্থী হয়েছেন। আমার প্রশ্ন হলো—আপনি কি জাতীয় পার্টি থেকে আনুষ্ঠানিক বিদায় নিয়েছেন? আর ইসলামী আন্দোলনে কবে যোগ দিয়েছেন? জেলা সহ-সভাপতি পদ পেতে আপনার কত টাকা খরচ করতে হয়েছে?”

এই ধরনের প্রশ্ন করার পর ইসলামী আন্দোলনের একজন সমর্থক উত্তেজিত হয়ে ওই শিক্ষার্থীকে জুতা প্রদর্শন করেন। এ সময় বিএনপি নেতৃবৃন্দ পরিস্থিতি শান্ত করতে গেলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এক পক্ষ অন্য পক্ষকে লক্ষ্য করে ১০-১৫টি চেয়ার ছুঁড়ে মারে। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার সময় ৪-৫ জন কর্মী-সমর্থক আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।

এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিএনপি, জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলনের নেতাকর্মীরা একে অপরকে দোষারোপ করে ব্যাপক পোস্ট করছেন।

বিষয়টি নিয়ে ইসলামী আন্দোলন সমর্থিত হাতপাখা প্রতীকের মনোনয়ন প্রত্যাশী জাকির হোসেন পাটওয়ারী বলেন, “আমাদের প্রোগ্রামটি নষ্ট করার জন্য আলোচনার বাইরে একটি মিথ্যা ও বানোয়াট প্রশ্ন করা হয়। এটি কে করেছে, তা জামায়াতে ইসলামী বা বিএনপি স্বীকার করছে না। প্রশ্নকারীকে শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে। এই প্রশ্নের কারণে কিছুটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে।”

উপজেলা জামায়াতের আমির ও দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের মনোনয়ন প্রত্যাশী নাজমুল হাসান পাটওয়ারী বলেন, “যে ছেলেটি প্রশ্ন করেছে, আমরা তাকে চিনি না। তবে এ ধরনের প্রোগ্রামে এমন প্রশ্ন করা তার ঠিক হয়নি। ছেলেটি প্রশ্ন করার সাথে সাথে ইসলামী আন্দোলনের এক কর্মী জুতা খুলে তেড়ে গেলে বিএনপির কর্মীরা তাকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন। তখন কিছুটা ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। আমাদের লোকজন চেয়ার থেকেই ওঠেনি, তবে ছেলেটির পরিচয় জানার চেষ্টা করছি।”

এ প্রসঙ্গে বিএনপি থেকে ধানের শীষ প্রতীকের মনোনয়ন প্রত্যাশী শাহাদাত হোসেন সেলিম বলেন, “মূলত একটি প্রশ্নের জেরে ইসলামী আন্দোলন ও শিবিরের নেতাকর্মীদের মাঝে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। বিএনপি নেতাকর্মীরা না থাকলে যে জুতা নিয়ে তেড়ে এসেছিল, তাকে লোকজন পিষে ফেলতো।”

রামগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মো. ফিরোজ জানান, অতিরিক্ত পুলিশ পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ থানায় অভিযোগ দায়ের করেনি।

Google News Icon

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর

খুঁজুন